দৈনিক আমাদের সময়ের ঘটাংঘট পাতায়.... সময় থাকলে পড়তে পারেন গল্পটা.....
সূচনার চড়–ই বিকেল
সোহানুর রহমান অনন্তর গল্প
বারান্দায় অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছে সূচনা। মেঘ দেখছে। মা বলেছেন মেঘ কীভাবে সৃষ্টি হয়, তা একদিন বুঝিয়ে বলবেন। ঠিক সেই মুহূর্তে একটা চড়–ই পাখি বারান্দা দিয়ে এসে ঢুকে পড়ল। সূচনা ভালো করে তাকিয়ে দেখল। বারান্দার ওপরের অংশে একটা পাইপের মতো দেখা যাচ্ছে। সেখানে চড়–ই পাখির বাসা। এটা আবার কবে হলো? নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করে। মা টিভি দেখছিলেন। সূচনা গিয়ে বললÑ ‘মা, আমরা তো এ বাসায় ভাড়া থাকি, তাই না? মা মাথা নেড়ে সায় দিলেন।
আমাদের তো অনেক টাকা ভাড়া দিতে হয়, তাই না?
হ্যাঁ, কেন মা?
তাহলে ওই চড়–ই পাখিগুলোর তো উচিত আমাদের সঙ্গে ভাড়া দেওয়া।
মা অবাক হয়ে বললেনÑ কোন চড়–ই পাখি?
ওই যে বারান্দায় যে চড়–ই থাকছে।
মেয়ের কথায় হেসে ওঠে মা। ওরা তো আর মানুষ না মা, যে ভাড়া দেবে।
নাহ, মাকে বোঝানো সম্ভব নয়, সূচনা নিজে বারান্দায় ছুটে যায়। একটা ছোট মইয়ের মতো আছে সেটা দিয়ে ওপরে ওঠে। পাইপের কাছে মুখ নিয়ে বলেÑ তোমরা কতদিন ধরে আছো? জলদি ভাড়া দাও। না দিলে এখানে থাকতে পারবে না। সূচনার কথায় চড়–ইগুলো ভয় পেয়ে গেল। তারা ছুটে পালাল। সূচনা দেখল, দুটো চড়–ই ছানা। ও আবার মায়ের কাছে ছুটে গেল। হাঁপাতে হাঁপাতে বললÑ মা জানো, ওদের দুটো ছানাও আছে। ওরাও কি কিছুদিন পর আমার মতো স্কুলে যাবে?
মা হেসে খুন মেয়ের কথা শুনে। হ্যাঁ রে, যাবেই তো।
সূচনা আবার বারান্দায় ছুটে যায়। ছানাদের বলেÑ তোমরা কি অ, আ বলতে পারো?
উত্তর না পেয়ে বললÑ বুঝেছি, পারো না। অবশ্য আমার মতো তো তোমাদের তো টিচার নেই। যা-ই হোক, আমিই তোমাদের পড়াব। তোমার আব্বুকে বলবে, তোমাকে খাতা-কলম কিনে দিতে।
মা মেয়ের কা- দেখে আর হাসে। সূচনা রোজ বিকেলে ছানাগুলো পড়ায়। এভাবে কিছুদিন কেটে যায়। ছানাগুলো বড় হয়। ততদিনে সূচনাও নতুন স্কুলে ভর্তি হয়। একদিন স্কুল থেকে ফিরে দেখে ছানাগুলো আর নেই। হঠাৎ ওর চোখ চলে যায় পাশের পেয়ারা গাছের দিকে। দেখে, ছানাগুলো মায়ের সঙ্গে এ ডাল থেকে ও ডালে উড়ে বেড়াচ্ছে। সূচনা অনেক ডাকল। কিন্তু শুনল না পাখিগুলো। এক সময় কোথায় যেন হারিয়ে গেল। সূচনা দাঁড়িয়ে রইল একলা বারান্দায়। ওর চোখ দিয়ে তখন শেষ বিকেলের বৃষ্টি ঝড়ছে।
http:// www.dainikamadershomoy.com/ todays-paper/features/ ghatangghat/8107/ সূচনার-চড়–ই-বিকেল
সূচনার চড়–ই বিকেল
সোহানুর রহমান অনন্তর গল্প
বারান্দায় অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছে সূচনা। মেঘ দেখছে। মা বলেছেন মেঘ কীভাবে সৃষ্টি হয়, তা একদিন বুঝিয়ে বলবেন। ঠিক সেই মুহূর্তে একটা চড়–ই পাখি বারান্দা দিয়ে এসে ঢুকে পড়ল। সূচনা ভালো করে তাকিয়ে দেখল। বারান্দার ওপরের অংশে একটা পাইপের মতো দেখা যাচ্ছে। সেখানে চড়–ই পাখির বাসা। এটা আবার কবে হলো? নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করে। মা টিভি দেখছিলেন। সূচনা গিয়ে বললÑ ‘মা, আমরা তো এ বাসায় ভাড়া থাকি, তাই না? মা মাথা নেড়ে সায় দিলেন।
আমাদের তো অনেক টাকা ভাড়া দিতে হয়, তাই না?
হ্যাঁ, কেন মা?
তাহলে ওই চড়–ই পাখিগুলোর তো উচিত আমাদের সঙ্গে ভাড়া দেওয়া।
মা অবাক হয়ে বললেনÑ কোন চড়–ই পাখি?
ওই যে বারান্দায় যে চড়–ই থাকছে।
মেয়ের কথায় হেসে ওঠে মা। ওরা তো আর মানুষ না মা, যে ভাড়া দেবে।
নাহ, মাকে বোঝানো সম্ভব নয়, সূচনা নিজে বারান্দায় ছুটে যায়। একটা ছোট মইয়ের মতো আছে সেটা দিয়ে ওপরে ওঠে। পাইপের কাছে মুখ নিয়ে বলেÑ তোমরা কতদিন ধরে আছো? জলদি ভাড়া দাও। না দিলে এখানে থাকতে পারবে না। সূচনার কথায় চড়–ইগুলো ভয় পেয়ে গেল। তারা ছুটে পালাল। সূচনা দেখল, দুটো চড়–ই ছানা। ও আবার মায়ের কাছে ছুটে গেল। হাঁপাতে হাঁপাতে বললÑ মা জানো, ওদের দুটো ছানাও আছে। ওরাও কি কিছুদিন পর আমার মতো স্কুলে যাবে?
মা হেসে খুন মেয়ের কথা শুনে। হ্যাঁ রে, যাবেই তো।
সূচনা আবার বারান্দায় ছুটে যায়। ছানাদের বলেÑ তোমরা কি অ, আ বলতে পারো?
উত্তর না পেয়ে বললÑ বুঝেছি, পারো না। অবশ্য আমার মতো তো তোমাদের তো টিচার নেই। যা-ই হোক, আমিই তোমাদের পড়াব। তোমার আব্বুকে বলবে, তোমাকে খাতা-কলম কিনে দিতে।
মা মেয়ের কা- দেখে আর হাসে। সূচনা রোজ বিকেলে ছানাগুলো পড়ায়। এভাবে কিছুদিন কেটে যায়। ছানাগুলো বড় হয়। ততদিনে সূচনাও নতুন স্কুলে ভর্তি হয়। একদিন স্কুল থেকে ফিরে দেখে ছানাগুলো আর নেই। হঠাৎ ওর চোখ চলে যায় পাশের পেয়ারা গাছের দিকে। দেখে, ছানাগুলো মায়ের সঙ্গে এ ডাল থেকে ও ডালে উড়ে বেড়াচ্ছে। সূচনা অনেক ডাকল। কিন্তু শুনল না পাখিগুলো। এক সময় কোথায় যেন হারিয়ে গেল। সূচনা দাঁড়িয়ে রইল একলা বারান্দায়। ওর চোখ দিয়ে তখন শেষ বিকেলের বৃষ্টি ঝড়ছে।
http://
No comments:
Post a Comment