join facebook page

Wednesday, 2 March 2016

আজ ১-৩-২০১৬ দৈনিক কালের কণ্ঠের ঘোড়ার ডিম-এ................

এশিয়া কাপ এক্সক্লুসিভ টিপস
চলছে এশিয়া কাপ টুর্ণামেন্ট। যেহেতু দেশের মাটিতে খেলা—তাই খেলা দেখা নিয়ে হয়তো আপনি অনেক টেনশনে আছেন। কিভাবে ঠাণ্ডা মাথায় খেলা দেখবেন, তারই টিপস দিয়েছে সোহানুর রহমান অনন্ত

বসকে তেল মারুন

খেলা দেখতে হলে আপনাকে অফিস থেকে একটু আগেই বের হতে হবে। কারণ আমাদের দেশের জ্যামগুলো আবার অলস টাইপের, কখন ছাড়বে বলা মুশকিল। তাই সঠিক সময়ে টিভির সামনে বসে খেলা দেখতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে বসকে তেল মেরে আগে বের হতে হবে। দরকার হলে বসকে চাপা খিলান, ‘আপনাকে তাসকিনের মতো দেখা যায়। আরেকটু হলেই মিলে যেত।’ ব্যস, একবার বস তেলে ডুবে গেলেই কাম শেষ।





বউকে বিজি রাখুন

খেলা দেখার জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ঘরের বউ। যদি কায়দা মতো বউকে অন্য কাজে আটকাতে না পারেন, তাহলে সিরিয়াল দেখেই খেলার স্বাদ নিতে হবে। যেটা করতে পারেন, ঘরে ঢুকেই বউকে বলুন, ‘তোমার অমুক রান্নাটা আমার আজ খেতে ইচ্ছা করছে। খাবারটা তৈরি করে দাও।’ জানেন তো মেয়েরা প্রশংসা শুনলে ব্যাপক খুশি হয়। একবার রান্না ঘরে ঢোকাতে পারলে হলো, আরামে খেলা দেখা কেউ ঠেকাতে পারবে না।





স্টেটাস রেডি রাখুন

আপনি যেহেতু ফেসবুকপ্রেমী, তাই সবার আগে স্টেটাস দেওয়া আপনার জন্য বাধ্যতামূলক। সেটি করতে চাইলে আগে থেকেই স্টেটাস লিখে রাখুন। টি-টোয়েন্টি খেলায় হুটহাট বাউন্ডারি হয়। একটা লিখতে লিখতে আরেকটা হয়ে গেলে আপনার স্টেটাস ভেস্তে যাবে। এ রকম পরিস্থিতি এড়াতে সাহায্য করবে আগে থেকে লিখে রাখা স্টেটাস। ছক্কা মারার সঙ্গে সঙ্গে লিখে রাখা স্টেটাস কপি করে পেস্ট করে দিন। ব্যস, কেল্লা ফতে।
- See more at: http://www.kalerkantho.com/feature/ghorar-dim/2016/03/01/330809#sthash.cOsrt49R.dpuf

আজ ২৯-২-২০১৬ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন এর রকমারি রম্য-তে

এশিয়া কাপ ও আপনি

চলছে এশিয়া কাপ। এই উন্মাদনা সামলাতে কিছু গাইডলাইন থাকলে মন্দ হয় না। আপনি কী করবেন সেটাই সরাসরি জানাচ্ছেন— সোহানুর রহমান অনন্ত



ক্যামেরাম্যানের মন জয় : যেহেতু ক্যামেরাম্যান সুন্দরী মেয়েদের বেশি দেখায়, তাই আপনার প্রথম লক্ষ্য হতে পারে সুন্দরী মেয়েদের কাছাকাছি বসা। যেন আপনার চেহারাটাও টিভিতে দেখাতে পারেন। আর বন্ধুদের সঙ্গে চাপা মারতে পারেন— আপনার স্মার্টনেস দেখেই ক্যামেরাম্যান আসলে ক্যামেরা তাক করেছিলেন আপনার দিকে।



একটু পর পর স্ট্যাটাস দিন : আপনি খেলার মাঠে আছেন সেটা তো পাবলিককে বোঝাতে হবে ভাই। একটু পরপরই স্ট্যাটাস আর সেলফি আপলোড করুন। দরকার হলে আগে থেকেই স্ট্যাটাস লিখে রাখুন। যেহেতু চার-ছয় একটু পরপরই হচ্ছে সুতরাং লেখার তো টাইম-ই পাইবেন না। এর ফলে একদিকে যেমন আপনার মেয়ে ফলোয়ার বেড়ে যাবে। অন্যদিকে সবাই মনে করবে আপনি বিশুদ্ধ ক্রিকেটপ্রেমী।



বাঘ সেজে যান : আমাদের প্রিয় টিমকে সাপোর্ট করতে টাইগার সেজে যান, এতে ডাবল লাভ। আপনি হয়তো অফিস থেকে মিথ্যা বলে আগে বের হয়েছেন। সেক্ষেত্রে বাঘ সেজে গেলে অফিসের বস, বউ, গার্লফ্রেন্ড সবাই আঁতেল হয়ে যাবে। উল্টো দিকে ক্যামেরা আপনার দিকে ধরলেও কেউ চিনবে না।

একাধিক মেরি মি কার্ড নিয়ে যান : আপনি যেহেতু টাইগারদের রিয়েল সাপোর্টার, তাই দলকে যেতাতে, বিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানরা মাঠে নামলেই তাদের উদ্দেশে মেরি মি কার্ড ধরুন। ব্যাস! ব্যাটসম্যানরা সেই দিকে তাকাতে গিয়ে আউট হয়ে যাবে। ফিল্ডিং এর সময় ক্যাচ উঠলে তাই করুন, ক্যাচ মিস করবে। আর বাংলাদেশও জিতে যাবে সহজে।



বউয়ের কানে হেডফোন লাগান : আপনি হয়তো খেলা দেখার সময় একাধিকবার চিল্লাপাল্লা করেন। তাই আপনার উচিত ঘুমানোর সময় বউয়ের কানে হেডফোন লাগিয়ে রাখা। কেননা ঘুমের মধ্যে আপনি যদি ছয় ছয় বলে চিত্কার দিয়ে ওঠেন তাহলে মাঝরাতে রিমোটের বাড়ি খেয়ে মাথায় বড় সাইজের একটা আলু হতে পারে।
- See more at: http://www.bd-pratidin.com/rokomari-rommo/2016/02/29/129870#sthash.JjHmADGt.dpuf

বই মেলা শ্যাষ!

সোহানুর রহমান অনন্ত

বইমেলার মাসে বিয়ে করলে এমনটা হতেই পারে!
১ম বন্ধু : দোস্ত, তুই হুট করে ফুটপাতে বইয়ের ব্যবসা শুরু করলি! তোদের না ফার্মের মুরগির ব্যবসা ছিল?

২য় বন্ধু : হ, এই মাসে বিয়ে করে বস্তায় বস্তায় বই উপহার পাইছি, তাই মুরগি বাদ দিয়া বইয়ের ব্যবসায় নাইমা পড়ছি।

শেষ সময়ে এমন বিরল ঘটনা ঘটতেই পারে!

ক্রেতা : কী ব্যাপার ভাই, লেখক অটোগ্রাফ না দিয়া কাতলা মাছের মতো চিৎ হয়ে পড়লো ক্যান?

প্রকাশক : পুরো বইমেলায় ওনার আত্মীয় ছাড়া আর কেউ বই কিনে নাই, আপনি প্রথম আম আদমি, উনার বই কিনলেন। এই খুশিতে বেচারা সেন্সলেস হয়ে গেছে!

এমন প্রশ্ন আসতেই পারে!

১ম ব্যক্তি : মেলা তো শেষ হয়ে গেল, তা এইবার বইমেলায় আপনার কি কোনো বই ছিল?

২য় ব্যক্তি : বইমেলায় আমার বই না থাকলেও বউ ছিল, মানে আমার বউ স্টলে সেলস গার্ল হিসেবে ছিল আর কি!

এশিয়া কাপ বনাম বউ সমস্যা!

সোহানুর রহমান অনন্ত

আমার বউ হিন্দি সিরিয়াল দেখে না, এটাকে সৌভাগ্য ভাবার কোনো কারণ নেই। কারণ সে হিন্দি সিরিয়াল না দেখলেও ভারতীয় বাংলা সিরিয়ালগুলো ঠিকই দেখে। রিমোটের সাইজ বড় না হলে সেটাকে রকেট বানিয়ে গলায় ঝুলিয়ে রাখত মে বি। এশিয়া কাপ খেলা শুরু হলেও রিমোট আমার দখলে আসেনি। আমার বউকে আমি ভয় পাই, শুধু আমি না আমার ধারণা ভূতও ভয় পায়। সেদিন বউকে বলেছিলাম বাপের বাড়ি থেকে এ কয়দিন ঘুরে আসো, অনেক দিন তো যাও না। বিষয়টা টের পেয়ে উল্টো আমাকে বলল, 'বউয়ের চেয়ে খেলা বড় হয়ে গেল! আরেকবার যদি এই কথা বলেছ তোমার...।'

বাকিটুকু আর শোনার দরকার নেই বন্ধুরা। আমি আরও কিছু একটা বলতে গিয়েও গিলে ফেললাম। কিছু না বলা থেকে যদি ভালো কিছু হয় তাহলে না বলাই ভালো। অফিস থেকে চিন্তিত মনে বাড়ি ফিরছি, তখনই মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। বাসায় গিয়ে বউকে বললাম, 'চলো একটা গেইম খেলি।'

'কী গেইম?' খেলায় চার-ছয় হলে যে আগে চিক্কুর দিতে পারবে তার পকেটে একশ' টাকা যাবে। এমন লোভনীয় প্রস্তাব বউ মেনে নেবে জানতাম। খেলা শুরু হওয়ার পরই ঘটল বিপত্তি, যেটা জানা ছিল না। ব্যাটসম্যান শট নেওয়ার আগেই বউ চিক্কুর দিয়ে ওঠে ছক্কককাআআআ...! এত জোরে চিক্কুর দেয় যে আশপাশের দুই-তিন বাড়ির লোকের কানের ওপর ঠাডা পড়ার মতো অবস্থা। একেকটা চার, ছক্কা হয় আর আমার ঘরে চলে ভূমিকম্প। কখন যেন খাট ভেঙে পড়ে সেই আতঙ্কে আছি আমি। কানে বালিশ চেপে ধরেও কাজ হয় না। একেই বলে উল্টা বুদ্ধির রিঅ্যাকশন। কিছুক্ষণ পর প্রতিবেশী এসে বলল, 'খেলা কি একা আপনারাই দেখতাছেন, আমরা দেখি না? এমন জোরে চিল্লান কেন?' আমি কোনো রকম বুঝিয়ে বিদায় করলাম। বউকে বললাম আর খেলা দেখার দরকার নাই। বউ বলল, 'না আজকেই তো ইনকাম করার দিন। অলরেডি এক হাজার টাকা পাওনা হয়ে গেছি।'

কাম সারছে! কী আর করার, বসে বসে বউয়ের চিক্কুর শুনতে লাগলাম। আর বাইরে পাবলিকের চিল্লানি। খেলা শেষ হতেই বউ মানিব্যাগ থেকে সব টাকা নিয়ে গেল। খেলা দেখা একেবার শিকায় উঠেছে আমার। রাগে-দুঃখে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লাম। মাঝ রাতে হঠাৎ বউয়ের চিক্কুরে ঘুম ভাঙল ছক্ককককা...। লাফিয়ে উঠলাম বিছানায়, ঘুমের মধ্যেও চিল্লাইতাছে। কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না। ঘুম থেকে জাগালে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধিয়ে দেবে এখন। চিক্কুর হজম করতে না পেরে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লাম।

মাঝ রাতের শহর এমনিতেই ফাঁকা থাকে। রাস্তা দিয়ে হাঁটছি, হঠাৎ কে যেন নাম ধরে ডাকল। আশপাশে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই। আবারও ডাকল, এবার ডর খেয়ে গেলাম। কান পেতে শুনলাম ডাকটা আম গাছ থেকে আসছে। কাছে যেতেই দেখি আমার বন্ধু আকবর। বলল, 'গাছে উঠে পড়।' উঠে পড়লাম চট করে। বন্ধুকে গিয়ে আমার দুঃখের কথা বলার আগেই ও নিজের দুঃখের কথা বলতে লাগল। খেলা দেখার জন্য আত্মীয়দের মধ্য থেকে সবচেয়ে বাচাল মহিলাকে বাসায় নিমন্ত্রণ করে এনেছিল।

ভেবেছিল বউ বাচালের সঙ্গে কথা বলবে আর এই সুযোগে সে খেলা দেখবে। কিন্তু হলো তার বিপরীত! খেলা শেষ হয়ে মাঝ রাত হয়ে গেলেও তাদের কথা শেষ হওয়ার নাম নেই। মাঝে মাঝে হো হো করে হেসে উঠে বাচাল মহিলা। বেশ কয়েকবার ডাকতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছে আমার বন্ধুটি। তাই কানে হেডফোন লাগিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করেছিল কিছুক্ষণ। মহিলা যখন হো হো করে হেসে উঠে তখন মনে হয় পুরো বাড়ি হো হো করে কাঁপছে। তাই বাধ্য হয়ে গাছে এসে ঘুমানোর ব্যবস্থা। আমার দিকে তাকিয়ে বলল, 'তুই এত রাতে কী করিস?'

আমি হেসে বললাম, 'ছক্কা মারি। চল দু'জন মশার কামড় খেয়ে রাত পার করে দিই।'

'কেন তুই বাড়িতে যাবি না?'

হেসে বললাম, 'নাহ, বাড়িতে ছক্কা উৎসব চলছে। আজ রাতটা তোর সঙ্গে গাছের ডালেই কাটাব ভাবছি। গাছ থেকে সরাসরি অক্সিজেন নেব! নে, ঘুমিয়ে পড়। সকালে আবার অফিসে যেতে হবে।' হ

দৈনিক ইত্তেফাকের ফান ম্যাগাজিন ঠাট্টায় ২৮-২-২০১৬ ধন্যবাদ sanu khan ভাইকে....ইনবক্স করার জন্য



হরর পত্রিকা-৪
আজকের নয়াদিগন্তের থেরাপিতে

যেভাবে ক্রেতা বাড়াবেন

বইমেলা প্রায় শেষের দিকে, আপনি হয়তো এখনো চিন্তা করছেন কিভাবে স্টলে আদমিদের ভিড় বাড়াবেন, আপনার চিন্তা এবার আমাকে করতে দিন এবং জাস্ট টিপস্গুলো ফলো করুন, পাবলিকের সাইকোন শুরু হয়ে যাবে, সাথে আছে সোহানুর রহমান অনন্ত

খাওয়ানোর ব্যবস্থা করুন
মেলায় এমনিতেই খাওয়ার ব্যবস্থা তেমন একটা ভালো না। ব্যস দোকানের সামনে লিখে দিন একটা বই কিনলে এক বোতল ঠাণ্ডা পানি ফ্রি, সাথে হালকা-পাতলা বুটমুড়ির ব্যবস্থা তো আছেই। ব্যস বাঙালি আবার ফ্রি জিনিসের প্রতি অতি দুর্বল। দেখবেন আপনার স্টলে দল দলে পাবলিক আসতে শুরু করেছে। এমনটা করতে পারলে স্টলে ভিড় ভাড়বে বলে শতভাগ বিশ্বাস করি।

নিজস্ব ফটোগ্রাফার রাখুন
মেলায় গিয়ে অনেকেই লেখকের সাথে ছবি তুলতে পারেন না বলে আফসুস করেন। যদিও মোবাইলে তোলেন সেটা ভোটার আইডির ছবির চেয়েও খারাপ আসে। সুতরাং আপনার স্টলে যদি প্রফেশনাল একজন ফটোগ্রাফার থাকে এবং আম আদমিকে লেখকের সাথে কিন ছবি তুলে ফ্রি ডেলিভারি দেয়, তাহলে অবশ্যই আপনার স্টলে ক্রেতা সাধারণের উপচে পড়া ভিড় হতে বাধ্য।

এক্সকুসিভ চাপা মারুন
কোনো লেখক বই কিনতে এলেই গুজব রটিয়ে দিন ওমুক বইয়ের ফাস্ট এডিশন শেষ। বইটা বাজারে ব্যাপক হিট, এই বইটা না কিনলে লাইফে চরম মিস করবেন। ব্যস এমন চাপা মারতে পারলে, আপনার স্টলে পাবলিক আসবেই। কারণ বাঙালি চাপাকে ব্যাপক লাইক করে।

বই বহনকারী সার্ভিস
যেহেতু মেলায় এসে অনেকেই বই টানার ভয়ে কম বই কেনে। কিংবা কিনলেও এক স্টল থেকে কিনে কুইকলি কেটে পড়ে। তাই আপনি যদি বই কেনার সাথে মেলায় বইয়ের ব্যাগ টানার জন্য লোক সাথে দেন তাহলে পাবলিক স্টলের প্রতি আকর্ষিত বেশি হবে। কেননা খামোখা বইয়ের ব্যাগ না টেনে আপনার এখান থেকে বই কিনে পাবলিক দিয়ে টানাবে।

কিস্তিসে বিক্রির ব্যবস্থা
বেশির ভাগ জিনিস এখন কিস্তিতে পাওয়া গেলেও বইয়ের জন্য কিস্তির ব্যবস্থা এখনো চালু হয়নি। তাই আপনি যদি কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ করার ব্যবস্থা করেন তাহলে যারা বেশি বই টাকার অভাবে কিনতে পারে না। তারাও কেনার সুযোগ পাবে। মানে আপনার স্টলে আমজনতার উপস্থিতি বাম্পার হবে বলে মনে কি।

লাইক টোপ দিন
বতমান ফেসবুকের যুগে সবাই লাইকের পেছনে দৌড়ায়। তাই আপনি বড় করে ঘোষণা দিন, আপনার স্টল থেকে বই কিনলে ফ্রি হিসেবে একশো লাইক দেয়া হবে।
এভাবে যত কিনবে তত লাইক। এমনটা করতে পারলে যে আপনার স্টল লাইকম্যানদের উপস্থিতিতে ভরে যাবে সেটা হলফ করে বলতে পারি।
- See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/96550#sthash.gB6QxkzZ.dpuf

আজ ১৬-২-২০১৬ দৈনিক সমকালের সুহৃদ-এ

কষ্টের ক্যানভাস
সোহানুর রহমান অনন্ত

আজকাল নিজেকে বড্ড একা মনে হয়। মাঝরাতে জানালার শিক ধরে দাঁড়িয়ে থাকি। আমার দু'চোখের বৃষ্টিতে জ্যোৎস্নার আলো ঝলসে ওঠে। নন্দিনীকে আজ বড্ড বেশি মনে পড়ছে। খুব দেখতে ইচ্ছে করছে ওর চাঁদমুখটাকে। নন্দিনী, মনে কি আছে তোমার? কোনো এক জ্যোৎস্নামাখা রাতে, রেললাইনের পথ ধরে অনেক দূর হেঁটে গিয়েছিলাম। তুমি আর আমি হাত রেখে হাতে। আমার পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবি আর তুমি নীল শাড়িতে। বাতাসে উড়ছিল তোমার বাঁধনহারা চুলগুলো। তোমার হাতের চুড়িগুলো একটু পরপরই মৃদু শব্দ করছিল। নীরব কণ্ঠে বলেছিলে, এভাবেই যদি জীবনটা পার করে দিতে পারতাম। আমি তাকিয়ে ছিলাম তোমার দিকে। তোমার ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি, হেসেছিল ছোট্ট তিলটাও। এটাই বোধহয় ভালোবাসা এটাই বোধহয় প্রেম।

আজকাল স্মৃতিগুলো বড্ড বেশি জ্বালাতন করছে। বারবার ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুরনো সেই দিনগুলোতে। ধুলোপড়া ডায়রির কবিতাগুলোতে হাত বুলাই। কতশত রাত জেগে এই কবিতাগুলো তোমায় পড়ে শুনিয়েছিলাম। তোমাকে কাছে পাওয়াটা অনেকটা অসাধ্য সাধনের মতো ছিল। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে লুকিয়ে দেখাটা যদি তোমার কাছে ধরা না পড়ত তাহলে হয়তো কোনো দিন বলাই হতো না, মনের সেই কথাটা। কতটা বোকা ছিলাম আমি তাই না?। মাঝে মাঝে বড্ড হাসি পায় সেই কথাগুলো ভেবে। ল্যাম্পপোস্টের নরম আলোয় তোমার বাড়ির সামনে গিটারের টুংটাং শব্দ। জানালায় তোমার দাঁড়িয়ে থাকা। আর আমার চোখ তোমার দিকে। প্রতিটি মুহূর্ত যেন স্বপ্নের মতো ছিল। কত সুখে ছিলাম আমি তোমাকে ভালোবাসে। আমার নিঃশ্বাস ছিল নন্দিনী, যাকে ছাড়া বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব।

আমার জীবনের দুঃখের অধ্যয়টা বিধি এভাবে লিখে রেখেছে বুঝতে পারিনি। যেভাবে নন্দিনী চলন্ত রেলগাড়ির মতো আমার জীবনে এলো, ঠিক সেভাবে আবার হারিয়ে গেল। যখন বুঝতে পেরেছি আমার নন্দিনী আর আমার নেই, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। আমাকে রিক্ত করে, নন্দিনী অন্য কারও প্রাসাদের ঘরনী হয়ে গেল। এরপর কত জ্যোৎস্নামাখা রাত এলো। একা একা রেললাইনের পথ ধরে কত হেঁটে গেলাম। কিন্তু নন্দিনী আর ফেরেনি আমার জীবনে। গোলাপের পাঁপড়ি দিয়ে আর কখনও নন্দিনীর কপালে টিপ পরিয়ে দেওয়া হয়নি। কষ্টটাকেই নীরবে মেনে নিতে হলো। দিনগুলো স্রোতের মতো হারিয়ে যেতে লাগল একা একা। এখনও সন্ধ্যায় ল্যাম্পপোস্টের আলোয় টুংটাং গিটারের সুর তুলি। তাকিয়ে থাকি জানালার দিকে। নন্দিনী নেই বন্ধ জানালাটা তারই সাক্ষী হয়ে থাকে। নন্দিনী কেন এমন করল, এ প্রশ্নের জবাব আমি আজও খুঁজে ফিরি। উত্তর মেলে না হাজারো প্রশ্নের বৃষ্টিতে ভিজে যায় মনের দেয়াল। ডুকরে কেঁদে ওঠি, কষ্টের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে। আমার নন্দিনী যখন অন্য কারও বুকে সুখের স্বর্গ খোঁজে, আমি তখন একলা দাঁড়িয়ে থাকি জানালার শিক ধরে। ভালোবাসা না পাওয়ার কষ্টটা বড্ড বেশি যন্ত্রণা দেয় আমায়। তবুও একটি কথা, শতবার বলি, নন্দিনী যেখানে থাকুক ভালো থাকুক। রক্ত-মাংসের নন্দিনী আমাকে ছেড়ে গেলেও, ভালোবাসার নন্দিনী আজও ভালোবাসার মাঝে বেঁচে আছে। আর বেঁচে থাকবে যতদিন আমি বেঁচে থাকব। কেউ আলাদা করতে পারবে না। কেউ না।

সুহৃদ ঢাকা
- See more at: http://bangla.samakal.net/2016/02/16/193340#sthash.bjeeLw1o.dpuf

আজ ১৫-২-২০১৬ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর রকমারি রম্য-তে.....পড়ার পর হাসি না আসলেও কান্না যে আসবে না এই ব্যপারে গ্যারান্টি দিতে পারি.....

যে বইগুলো প্রকাশ হলে হিট করবেই
লেখকরা বই বের করার সময় অনেক টেনশনে থাকে বইটি পাবলিক কীভাবে নেবে, চলবে কি না ইত্যাদি। আপনার টেনশন বাড়াতে সরি কমাতে কিছু অপ্রকাশিত বইয়ের টিপস। যেগুলো হিট করবেই। অবশ্য হিট না করলেও কিছু করার নেই। লিখেছেন— সোহানুর রহমান অনন্ত



বিউটিক্যাম যুক্ত ছবি চেনার টিপস : বর্তমানে বিউটিক্যাম মানে ব্যাচেলরদের অন্যতম সমস্যা। কারণ মেয়েদের ছবি আর বাস্তব মুখের মাঝে এতটাই পার্থক্য থাকে যে, হুট করে ছবির মেয়েটিকে বাস্তবে দেখলে ক্ষেত্র বিশেষে ভূত ভেবে জ্ঞান হারাতে পারেন। তাই লেখকগণ বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বিউটিক্যাম যুক্ত ছবি চেনার উপায় নামে যদি কোনো বই বের করে। তাহলে ব্যাচেলরদের একদিকে যেমন উপকার হবে অন্যদিকে এটাই যে মেলায় হিট করবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।



যানজটে বসে ঘুমাবেন যেভাবে : প্রিয় যানজট। দেশে যানজট জোয়ার যেভাবে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে হয়তো অদূরেই দেখা যাবে বাসের মধ্যে ফ্ল্যাট ভাড়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আসল ব্যাপারটা হলো, আপনি যানজটে বসে কী করবেন। নিশ্চয় ঘুমাবেন? কীভাবে ঘুমাবেন, ঘুম না এলে কী করবেন? সেখানে তো আর ভেড়ার ছবি নেই যে সেটা গুনে ঘুমাবেন। লেখক যদি পাবলিকের কান গুনে ঘুমানোর বুদ্ধি দেয় তাহলে তো কোনো কথাই নাই। অতএব যানজটে আপনি আরামদায়ক ঘুম দিতে এই বইটি পড়ার বিকল্প নাই। সুতরাং বইটি ভালোই বিক্রি হবে।



ফেসবুকে নিরবচ্ছিন্ন লাইক পাওয়ার টিপস : বর্তমান সময়ে ফেসুবক মানেই— ‘একটা লাইক মারো আমার জন্য’ এই টাইপের কথাবার্তা। দিন দিন সবকিছু আপডেট হচ্ছে। লাইক কীভাবে পেতে হবে, কীভাবে চাইতে হবে, সুন্দরী মেয়ে লাইক মারলে তাত্ক্ষণিক ট্যারা চোখ কীভাবে সোজা করবেন ইত্যাদি। এই বিষয়গুলো লেখা থাকবে বইটিতে। সুতরাং লাইক কীভাবে পাওয়া যায় সেটা জানার জন্য এই বইটি অনেকেই কিনবে।



বেস্ট সেলার : যেহেতু বই বিক্রি নিয়ে আপনাকে ব্যাপক টেনশনে থাকতে হয়। এমন কি বন্ধুমহলেও চাপা মারতে গেলে ভয় ভয় লাগে। তাই বুদ্ধি করে নিজের বইয়ের নামটাই রেখে দিন বেস্ট সেলার। ব্যস, এবার বিক্রি হোক বা না হোক। মেলায় আপনার বই যে বেস্ট সেলার সেটা আপনার বন্ধুমহল থেকে শুরু করে সবাই মানতে বাধ্য।



সিরিয়ালপ্রেমী বউকে বসে আনার পদ্ধতি : বউয়ের ভয়ে বাসায় হয়তো আপনাকে চুপচাপ বসে থাকতে হয়। কারণ কথা বললেই রিমোটের বাড়ি খেয়ে মাথায় বড় সাইজের আলু হয়ে যাবে। কিন্তু চুপ থাকার দিন শেষ। সিরিয়ালপ্রেমী বউকে কীভাবে বসে আনবেন। বউকে কীভাবে শপিংয়ের টাকা ঘুষ হিসেবে দেবেন। সিরিয়াল সম্পর্কে কীভাবে গুজব রটাবেন। এমন অনেক সমাধান বিষয়ক বই এটি। এটি পড়লেই সিরিয়ালপ্রেমী বউকে বশে আনা সম্ভব হবে। এমন একটা বই যদি মেলায় আসে তাহলে ব্যাপক বিক্রি না হয়ে পারে?
- See more at: http://www.bd-pratidin.com/rokomari-rommo/2016/02/15/127178#sthash.nfeVC0gf.dpuf

আজ ১৪-২-২০১৬ ইত্তেফাকের ঠাট্টার কাল্পনিক ঠাট্টারুদের ভালোবাসা দিবস....কেউ সেন্সলেস হয়ে গেলে আমি দায়ী নই

ঠাট্টারুদের ভালোবাসা দিবস
ভালোবাসা দিবস আসে যায়, কিন্তু কেউ কি জানেন, ঠাট্টারুদের ভালোবাসা দিবস কীভাবে কাটে? তার-ই কাল্পনিক চিত্র তুলে ধরেছেন হালের বিখ্যাত কল্পমস্তিষ্কের অধিকারী সোহানুর রহমান অনন্ত

সাইফুল ইসলাম জুয়েল

আমার সহজ-সরল ভাইটার মাথায় ভালোবাসার ভূত চেপেছে। গোপনে শোনা গেছে, তিনি এখন ফেয়ার অ্যান্ড বাবলি ক্রিম মাখেন তরুণীদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। ভালোবাসা দিবসেও প্রেমিকা খোঁজার কাজটা অব্যহত থাকবে বলে গুজব নিউজ জানিয়েছে। সুতরাং বলাই যায়, তার ভালোবাসা দিবস খোঁজাখুঁজির মধ্যেই কাটবে।

রবিউল ইসলাম সুমন

দেশের এই একটি মাত্র ব্যক্তি যিনি নিজের ও সবার স্বাস্থ্য ভালো রাখার দায়িত্ব নিয়েছে। মানে কাকের ঠ্যাং বকের ঠ্যাং এঁকে পাবলিককে দিন দিন হাসির রোগী বানিয়ে ফেলছেন। ভালোবাসা দিবসেও এমন একটা স্ট্যাটাস দেবেন যে হাসতে হাসতে পাবলিকের দাঁত খুলে পড়বে। সুতরাং সুমন ভাই ভালোবাসা দিবসেও সবাইকে হাসির মাঝে রাখবেন বলে জাতি মনে প্রাণে বিশ্বাস করে।

ইকবাল খন্দকার

ইকবাল ভাই ভুলেও ভালোবাসা দিবসের দিন বাসা থেকে বের হবেন না। কারণ তার এত এত ফ্যান যে রাস্তায় বের হলেই চারদিক থেকে ঘিরে ধরতে পারে। শেষে কোনো রাজনীতিবিদের চোখে পড়লে দেখা যাবে তাকে রাজনীতির মাঠে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন! তখন সেখানেই লেখালেখির ইতি ঘটে যাবে।

জগলুল হায়দার

ছড়ার এই মহারাজা সেদিন এতটাই চাপে থাকবেন যে পাঠকের অনুরোধে সেদিন মুখ দিয়ে ছড়া বলতে বলতে, মুখ ব্যথা হয়ে যেতে পারে। তাই আগে থেকেই ব্যথার বড়ি সঙ্গে রাখবেন। এবং ছড়ায় ছড়ায় সবার সঙ্গে ভাব আদান-প্রদান করবেন।

শরীফ বিল্লাহ

এই ভাইজান তো এমনিতেই ভালোবাসায় টইটম্বুর। তার জন্য তো আর এক্সট্রা ভালোবাসা দিবস লাগে না। এরপরও তিনি ভালোবাসা দিবসে যথারীতি আমজনতাকে খাইয়ে বিল দেওয়ার গুরু দায়িত্বটা নেবেন। সুতরাং, ‘কেউ ফ্রি খাইতে চাইলে চামে খাইয়া লইতে পারেন এই দিনে’।

শামসুল হক শামস

এই ভাইজান এমনিতেই ব্যাপক বিনোদন ফ্রি ডেলিভারি দিয়ে থাকেন। ইদানীং আবার ফেস পাউডারও মাখা শুরু করছেন। মনে হয় মডেল হওয়ার ইচ্ছা আছে। যাই হোক, ভাইজানের মনে হয় ভালোবাসা দিবসটা একটু ভালোই কাটবে। কারণ ফেস পাউডারের কল্যাণে হয়তো কোনো তরুণী ইনবক্সে প্রপ্রোজ করে বসতে পারে। সুতরাং, ‘লাগে রাহো’।

সোহেল রানা

ভাইজান খুব হাসেন, কিন্তু আম-আদমিদের হাসাতে পছন্দ করেন বেশি। যেহেতু তিনি হাসেন কম, তাই ভাবছেন তার স্বাস্থ্য খারাপ? আরে ভাই না, তিনি তো ব্যাপক স্বাস্থ্যের অধিকারী, কম হাসলেও খান বেশি। চেহারা মাশাল্লাহ। আর তাই ভাই আপনার প্রতি একটা অনুরোধ ভালোবাসা দিবসের দিন ঘর থেকে বাইরে যাবেন না। রাস্তায় আগত তরুণীরা আপনার প্রেমে পড়ে সেন্সলেস হয়ে যেতে পারে।

সোহেল নওরোজ

একজন ভালো মনের অধিকারী আমার এই কবি বন্ধুটি। তিনি গোপনে একাধিক প্রেম করলেও চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই। ইনবক্সে কত মেয়ে যে তাক ‘হায় হ্যান্ডসাম’ বলে মেসেজ করে তা গুনতে গেলে ইহকাল শেষ। তাই এই ভাইটার ভালোবাসা দিবস যে চাঙা যাবে সেটা চোখ ট্যারা করেই বলে দেওয়া যায়।

ইয়াসিন খন্দকার লোভা

ইনি ডায়েট কন্ট্রোলে আছেন বেশ কয়েকটা ছ্যাঁকা খেয়ে। ছ্যাঁকা বলতে রান্না করতে গিয়ে ছ্যাঁকা খাওয়া আরকি। এই ভাইটার ভালোবাসা দিবস ছ্যাঁকা খাওয়ার মাঝেই কাটতে পারে। তাই ভাইটাকে টিপস দিই, এই দিন অন্তত রান্নাঘরে যাওয়ার দরকার নেই। প্রয়োজন হলে আমাকে সঙ্গে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খাবেন, ‘বিলটা আপনিই দিয়েন সমস্যা নাই’।

বিশ্বজিত্ দাস

স্যার তো সবাইকে আনলিমিটেড ভালোবাসেন। মনে হয় স্যারের কাছে ভালোবাসার খনি-টনি আছে। তাই চিন্তা করে দেখলাম, ভালোবাসা দিবসের দিন স্যারকে বলব কিছু ভালোবাসা ট্রান্সফার করেন, নইলে এইদিন ফতুর হয়ে যাওয়ার চান্স আছে।

মোহাম্মদ আলী জনি

কোন মেয়ে সুন্দর বলছে খোদা জানে, এই ভাইটা তার প্রোফাইল পিক চেঞ্জই করে না। হয়তো বেশি লাইক করে সেই পার্বতীকে। ভালোবাসা দিবসে ওবামা থেকে শুরু করে সবার দাবি প্রোফাইল পিকে ডাবল ছবি দেখতে চাই। অথাত্ আপনি এবং সে।

ফরিদুল ইসলাম নির্জন

ইনি তো প্রেমিক পুরুষ। প্রতিদিনই ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করেন। মানুষের থাকে ভুড়ি ভুড়ি টাকা আর তার আছে ভুড়ি ভুড়ি গার্লফ্রেন্ড। পাঠক এবার বুঝতেই পারছেন ভালোবাসা দিবসে তার অবস্থা কেমন হতে পারে।

রফিকুল ইসলাম কামাল

এই ভাইটা তো সুপারস্টার, একাধিক প্রেম করার অভিজ্ঞতা আছে। যেমন চেহারা, তেমন লেখালেখি। সুতরাং এমন আদমির প্রেমিকা যে ডজনে ডজনে থাকবে সে ব্যাপারে আমি স্বপ্নেও নিশ্চিত। ভালোবাসা দিবসটা একটু দৌড়ের ওপর কাটলেও ব্রেকআপ হওয়ার চান্সও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

সোহানুর রহমান অনন্ত

তিনি একাধিক প্রেমিকার সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া কথা বলে নিজেই নিখোঁজ হয়ে যাবেন। কারণ ভালোবাসা দিবসে তার অফিস ফুল দিবস খোলা।

নাইমুর লিখন

ইনি হচ্ছেন বর্তমান সময়ের রোমিও। মাঝে মাঝে ডুয়েল ছবি দিয়ে হিট হয়ে যান। তবে ভালোবাসা দিবসের দিন ডুয়েল ঘুরতে গিয়ে ভাইটা কোন টাইপের দৌড়ানি খায় কে জানে। কারণ পিরিতের পেত্নীরা যদি দেখে ফেলে তাহলে তো ম্যানহলে গিয়েও পালানোর সুযোগ থাকবে না।
আজ ৮-২-২০১৬ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর রকমারি রম্য-তে.......

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ব্যর্থ কাহিনী

একটা ছেলে একটা মেয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বলল—

আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তুমি চাইলে তোমার জন্য জীবনও দিতে পারি। মেয়েটি কিছুক্ষণ চিন্তা করে বলল—

জীবন দিতে হবে না, তুমি শীতের ভোরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে আধা ঘণ্টা গোসল করে দেখাও।

অতঃপর ছেলেটি মেয়েটিকে বিয়ে করার ইচ্ছা চিরতরে চলে গেল।
— অনন্ত
শীতের অভিজ্ঞতা
সোহানুর রহমান অনন্ত

তেল শুধু অন্যকে নয় বরং শীতকালে নিজের গায়েও দিতে হয়

দোকানদার : ভাই, এক নম্বর সরিষার তেল। গায়ে মাখা মাত্র শীত ভয়ে পালাইব।
ক্রেতা : শীত পালাইব কি, তেলের দাম শুইনা অলরেডি আমার শীত নিহত হইয়া গেছে।

শীতকালে ছিনতাইকারীর কবলে পড়া মানেই...
সাংবাদিক : ভাই আপনি দেখি পুরাই হটম্যান! এই শীতের মধ্যেও খালি গায়ে দৌড়াচ্ছেন?
পথচারি: দূর মিয়া, কিয়ের হটম্যান, ছিনতাইকারী একলা পাইয়া সব খুইলা রাইখা দিছে, তাই ইজ্জত সুইসাইড করার আগে দৌড়াইতাছি।

শীতকালে হাত-পাও সেন্সলেস হয়
প্রথম বন্ধু : কী রে, তোর হাত গলার সঙ্গে এমন বেঁধে রেখেছিস কেন, নিশ্চয় পিকেটিং করতে গিয়া ধরা খাইছস?
দ্বিতীয় বন্ধু : আর বলিস না বন্ধু, ঠাণ্ডায় মনে হয় আমার হাত সেন্সলেস হয়ে গেছে।
অলসদের শীত মানেই মৃগীরোগ জেগে ওঠার লক্ষণ
প্রথম বন্ধু : গোসল করতে গেলে পানি দেখলেই আমার মৃগীরোগ উঠে যায়, উপায় থাকলে কইয়া ফালা।
দ্বিতীয় বন্ধু : তুই আসলেই একটা বেকুব, কম্বল গায়ে দিয়ে গোসল কর, তাইলে আর শীত লাগব না।

গা গরম করতে বা শীতকে জয় করতে নাচতে পারেন
সাংবাদিক : ভাই আপনি এমন কাঁপতাছেন কেন? আপনার মনে হয় অনেক শীত লাগতেছে।
পাবলিক : দূর মিয়া, আপনার চোখে কি গুলমরিচ পড়ছে নাকি? কাঁপতাছি কই, আমি তো গাংনামা স্টাইলে নাচের প্রাকটিস করতাছি।

বিয়া করার সিজন মানেই শীতকাল
প্রথম বন্ধু :দোস্ত শীতকালে এত বিয়ার ধুম পড়ে কেন? ব্যাখ্যা থাকলে কইয়া ফালা।
দ্বিতীয় বন্ধু : আমার তো মনে হয় শ্বশুরবাড়ি থেকে অতিরিক্ত লেপ-কম্বল পাওয়ার আশায় শীতকালে এত বিয়ার ধুম পড়ে
জনগণের বন্ধু!

সম্প্রীতি একজন মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন পুলিশ জনগণের বন্ধু হতে সক্ষম হয়েছে! পুলিশ এবং জনগণের বন্ধুত্বের কিছু বিশেষ কাল্পনিক দিক নিয়ে হাজির হয়েছেন অনন্ত আকাশ (ছদ্দনাম)

বন্ধু যখন শত্রু
১ম পুলিশ : স্যার, ওই হালায় মনে হয় জন্মের কৃপণ! প্যান্টে কোনো পকেটই নাই, ইয়াবা কই রাখুম?
২য় পুলিশ : আরে বেকুব, দুইটা বাঁশডলা দিয়া মুখের মইধ্যে ঢুকাইয়া দে, বাকিটা থানায় নিয়া ব্যবস্থা করতাছি, বন্ধু হিসেবে একটা দায়িত্ব আছে না?
সবার বন্ধু
প্রেমিকা : কও কী! আমার বাপ আবার কবে থেইক্কা তোমার বন্ধু হইল? মাথাটা তো দেখছি পুরাই ঝিরঝিরা হয়ে গেছে!
প্রেমিক : হেইডা আমি কেমতে কমু। মন্ত্রীরে গিয়া জিগাও তোমার পুলিশ বাপ আমার কোন কালের বন্ধু আছিল!
এমন তো হতেই পারে
পাবলিক : স্যার, বন্ধু হইয়া বন্ধুরে সন্ত্রাসী বলে গ্রেফতার করতাছেন, আমি তো কিছুক্ষণ আগেই আপনার মোবাইলে মানি ট্রান্সফার করলাম।
পুলিশ : তাই নাকি, আমি তো তোমারে সন্ত্রাসী না সন্ন্যাসী বলতে চাইছিলাম, এত বড় চুল দেইখা কিঞ্চিৎ মিসটেক খাইছি! তুমি তো দেখতাছি পবিত্র পাবলিক।
মাইর চলছে চলবে
রাজনৈতিককর্মী : আমগোরে এমন কিলাইতাছেন কেন? সাবেক বিরোধী দলের কর্মী হলেও তো আমরা জনগণ এবং সে সূত্রে আপনাগো বন্ধু।
পুলিশ : এই জন্যই তো পিটাইতাছি! কয়েক বছর আগে এক বন্ধু আমার বউ নিয়া ভাইগা গেছে, সেই থেইক্কা বন্ধু নামটা শুনলেই...!
সবাই তো বন্ধু
স্ত্রী : তুমি নাকি পাশের বাড়ির ভাবিরে প্রত্যেক দিন বাইকে করে অফিস নিয়ে যাও, এইডা কি সত্যি কইতরের বাপ?
পুলিশ স্বামী : বেকুব মহিলা, শোনো নাই আমরা হইলাম জনগণের বন্ধু! বিরাট দায়িত্ব আমাদের, জনগণের সেবা করাই তো আমাদের কাজ!
গ্যাস নাই, যা করবেন?
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র গ্যাস সংকট চলছে। আপনি এখন কী করবেন? সেটা নিয়েই গবেষণা করেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত

সঅজুহাত দেখান :গ্যাসের অজুহাত দেখিয়ে অফিস থেকে ছুটি কাটান। কীভাবে? বলছি, বসকে বলুন গ্যাসের অভাবে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ। শরীর একেবারে শুঁটকি হয়ে গেছে, অফিসে আসার শক্তি নাই। ক্ষুধায় মাথা কেমন ভনভন করে। যে কোনো মুহূর্তে চিৎ হয়ে পড়তে পারি। এখন আপনিই বলেন এই অবস্থায় কি অফিসে আসা ঠিক?
সঅতিথি হয়ে যান : যেহেতু শীতকাল চলছে, তাই একটা ফুলকপি নিয়ে শ্বশুরবাড়ি চলে যান। যদি শ্বশুরবাড়ি গ্রামে হয় তাহলে তো কথাই নাই। গ্যাসের কোনো টেনশন নাই। আর ঢাকায় হলেও চিন্তার কারণ নাই। কারণ জামাইকে ভালো-মন্দ খাওয়ানোর জন্য ঠিকই শ্বশুরমশাই একটা ব্যবস্থা করবেন।
সলক্ষ রাখুন : শীতকালের কল্যাণে রাস্তার পাশে অনেকেই উত্তাপ নিতে আগুন জ্বালায়। চোখ-কান খোলা রাখুন। কোথাও আগুন জ্বলতে দেখলেই সেখান থেকে রান্নার কাজটা সেরে ফেলতে পারেন। গ্যাস নিয়ে কোনো টেনশন নাই।
সবিকল্প কিছু করুন : চায়নায় এক ধরনের চাল বের হয়েছে, যেটা পানিতে ভিজালেই ভাত হয়ে যায়। সুতরাং সেই চালটা কিনতে পারলে গ্যাস নিয়ে অন্তত আপনাকে মাথা খারাপ করতে হবে না।
সফলমূল খেয়ে বাঁচুন : আগের যুগের মানুষ ফলমূল খেয়ে বাঁচত। তাই আপনিও চাইলে ফলমূল খেয়ে বাঁচতে পারেন। এ ক্ষেত্রে গ্যাস দিয়ে রান্না করতে হবে না। আর বাড়তি টেনশন করে চুলও সাদা করতে হবে না।
সএই সুযোগে ডায়েট কন্টোল করুন : যেহেতু গ্যাস নেই, রান্নাও নেই_ এই সুযোগে ডায়েট কন্টোল করুন। আর চিকনরা আরও চিকন হন। অন্তত স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল_ এটা ভুলে চিকনই সকল সুখের মূল এটা ভাবতে শুরু করুন।

৩১-১-২০১৬ দৈনিক ইত্তেফাকের ঠাট্টায়

পাগল, ছিনতাইকারী ও জনৈক প্রেমিক

সোহানুর রহমান অনন্ত


আমি বরাবরই আড্ডাপ্রিয় মানুষ। রাত জেগে আড্ডা মারি, আমাদের টপিকের শেষ নেই। প্রেম, বিরহ, খাওয়া-দাওয়া সবই থাকে। একদিন আড্ডা দিতে দিতে অনেক রাত হয়েছে। বাসায় ফেরার সময় পাখিটার ফোন। ধরতেই বলল, আমাকে তার খুব দেখতে ইচ্ছে করছে, এখনই। ‘এত রাতে?’ ‘কেন রাতে কি দেখতে ইচ্ছে করতে পারে না?’ ‘আলবত্ পারে... একশ তিনবার পারে। আমি আসতাছি...।’ ঘটনা টাং টাং... যেতেই হবে। পাখিটার বাড়ি পাড়ার শেষ প্রান্তে, এই দিকটা সন্ধ্যার পরেই কেমন ঝিম মেরে যায়। দু-একটা নেড়ি কুকুর ছাড়া পাবলিকের দেখা পাওয়াটা অস্বাভাবিক ব্যাপার। তবুও সাহস করে গেলাম, প্রেমিকার দেখতে চাওয়া বলে কথা। শীতটা ভালোই পড়তে শুরু করেছে। পাখিটার বাসার সামনে যেতেই দেখি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। মুখে মুচকি হাসি। আমিও হাসলাম। পাখির মুখে হাসি অফ আমার মুখেও অফ। কী ব্যাপার বুঝে ওঠার আগেই পাখি কিছু একটা বুঝাতে চাইল। আমি আবার অদৃশ্য ভাষায় বিশেষজ্ঞ। অনেকটা ‘মাথা আছে মগজ নাই’-এর মতো। ভালো করে বুঝার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলাম না। হঠাত্ মনে হলো পোড়া গন্ধ আসছে, তাকিয়ে দেখি আমার পাঞ্জাবিতে কে যেন আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। পাশে ফিরে দেখি ট্যারা পাগলা। ট্যারা পাগলার পাগলামি নিয়ে ব্যাপক ঘটনার কথা কানে এসেছে। ডরে আমি লাফিয়ে উঠলাম। ট্যারা পাগলা বলল, ‘কীরে, লাফাছ কেন? একটু আগুন পোহাইতাছি।’ বুঝতে পারলাম আর কিছুক্ষণ থাকলে দুগ্ধ হয়ে প্রেমসহ স্বর্গবাসী হতে হবে। তাই দিলাম খিচ্চা দৌড়, ট্যারা পাগলাও আমার পিছনে দিলো দৌড়। কোনোরকম দৌড়ে একটা অন্ধকার গলিতে ঢুকলাম। ট্যারা পাগলা কোনদিক গেল, মালুম করতে পারলাম না। গলিটা বেশ অন্ধকার। ফিসফিস করে নিজে নিজেকে বললাম, ‘শালার সব রাইখা এমন অন্ধকার গলিতে একলা আইসা ঢুকলাম!’ ঠিক তখনি পাশ থেকে কে যেন বলে উঠল, ‘একলা কোথায়, আমরা তো আছি!’ আমি তো ভূত ভেবে হূদয় অ্যাটাক খেয়েছিলাম আরেকটু হলে। একজন লোক আমার সামনে এসে বলল, ‘ভাইজান মনে হয় অফসাইডে ঘুরতাছেন, ব্যাপার না, আমরাও অফসাইডের পাবলিক।’ ‘মানে?’ ‘বেকুব নাকি, আমরা হইলাম বিশুদ্ধ ছিনতাইকারী, এখন কুইকলি যা আছে বাইর কর।’ আমি আমতা আমতা করে বললাম, ‘ভাই, পকেটে একটা মোবাইল ছাড়া কিছু নাই।’ আরেকজন এসে বলল, ‘ওস্তাদ হালায় মনে হয় চাপা খিলাইতাছে, বরফ দেওয়া পানি গায়ে ঢাইলা দিই?’ ‘না, আগে ওর তল্লাশি নিয়া দেখ।’ একজন এসে আমার সবকিছু চেক করে বলল, ‘ওস্তাদ মোবাইল ছাড়া কিছু নাই।’ ‘ঠিক আছে সেইটাই নিয়া ব্যাটারে বিদায় কর।’ আমি বললাম, ‘ভাই, একটা ইচ্ছা ছিল।’ ‘কী?’ ‘মানে চাইছিলাম আপনাদের সাথে একটা সেলফি তুলতে।’ ‘সেইটা আবার কী?’ ‘ফটো... মানে জীবনেও ছিনতাইকারীর কবলে পড়ি নাই তো তাই...।’ পাশে থাকা একজন বলল, ‘ভাই একটু খাড়ান, ফেয়ার অ্যান্ড বাবলি ক্রিমটা মুখে লাগাইয়া লই।’ কী মাখল খোদা জানে। ‘ঠিক আছে তুলেন।’ ‘এই অন্ধকারে সেলফি তুলুম কেমতে, তার চেয়ে গলির থেকে বাইরে যাই।’ পাশে থাকা চামচাটা বলল, ‘ওস্তাদ ঠিকই তো কইছে... চলেন... একটা লুক-এর দরকার আছে না।’ গলি থেকে বের হয়ে ছিনতাইকারী আর আমি একসঙ্গে সেলফি তুলতে লাগলাম। হঠাত্ মনে হলো পোড়া পোড়া গন্ধ আসছে। তাকিয়ে দেখি ছিনতাইকারীদের লিডারের লুঙ্গিতে ট্যারা পাগলা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। মুহূর্তে সব গোলমাল লেগে গেল। লিডার বলল, ‘ছিনতাইয়ের গুষ্টি কিলাই। জলদি পালা, নইলে আন্ডারওয়্যারে আগুন লাগিয়ে দিব।’ ছিনতাইকারীরা দৌড়াতে লাগল। আমিও ডরে দৌড় দিলাম। পেছনে ট্যারা পাগলা দৌড়াচ্ছে। আমাদের অবস্থা এমন ছিল যে কে ছিনতাইকারী কে পাগল বোঝা মুশকিল। কোনোরকম দৌড়ে একটা পাবলিক টয়লেটে গিয়ে লুকালাম। জানে বাঁচলাম, কে জানে ছিনতাইকারী ব্যাটাদের আন্ডারওয়্যার ঠিক আছে কি না!
৩১-১-২০১৬ দৈনিক ইত্তেফাকের ঠাট্টায়

অপ্রকাশিত ছিনতাইয়ের ঘটনা
সোহানুর রহমান অনন্ত

আনারকলির ভূতটা এখনো নামেনি মুকিত ভাইয়ের মাথা থেকে। সারাক্ষণ তিনি মজনুর মতো একই নাম জপে। আমাকে বলল, ‘কিছু একটা বুদ্ধি দে, কী করা যায়?’ আমি বললাম, ‘ভাই দামি একটা গিফট কেনেন বাণিজ্য মেলা থেকে। মেয়েরা গিফট পেলে গলে যায়।’ মনে হলো মুকিত ভাইয়ের বুদ্ধিটা পছন্দ হয়েছে। ‘কিন্তু টাকা?’ আমি বললাম, ‘ভাই, টাকা তো অনেক লাগব।’ মুকিত ভাই বলল, ‘এক কাম করি চল, কাউকে মুরগি বানাই।’ ‘মানে?’ ‘রিয়েল ছিনতাই।’ ‘বলেন কী ভাই, আমগো একটা সুনাম আছে। পাবলিক দেখে ফেললে?’ ‘আরে ব্যাটা আমগোরে চিনলে তো তারপর... শোন মাঙ্কি টুপি পরে আমরা ছিনতাই করুম। দেশে এত বড় বড় ছিনতাই হইতাছে, আমরা তো করব মিনি ছিনতাই। আর প্রেমের জন্য সাতখুন মাফ, তুই জানস না?’ ‘ওকে ভাই। আপনি গুরু মানুষ, যা বলবেন সেটাই হবে।’ করিমকে কথাটা বলতেই হেঁচকির ব্যারাম উঠে গেল। পানি খেয়ে বলল, ‘ভাই আপনার না কাঁপুনি রোগ আছে?’ ‘ধুর ব্যাটা, ইজ্জত তো নিহত করে দিলি। আমি তো সিরিয়াস মানুষ। আজ রাতেই অপারেশন হবে।’

কথামতো রাতে আমরা মাঙ্কি টুপি পরে রাস্তার মোড়ে দাঁড়ালাম। একটু পরেই একজনকে আসতে দেখে সামনে এগিয়ে গেলাম। করিম ছুরি বের করে ধরল। মুকিত ভাই ওর কানের নিচে থাপ্পর মেরে বলল, ‘ব্যাটা উল্টো ধরেছিস কেন? ঠিক করে ধর।’ আমি বললাম, ‘কী আছে বাইর কর।’ অন্ধকার, তাই ভালো করে লোকটার চেহারা দেখতে পাইনি। লোকটা এবার পেছন থেকে রামদা বের করে বলল, ‘এই লও এইডা আছে।’ ভালো করে চেয়ে দেখি কান পাকা মুজিব। মুকিত ভাই তো কাঁপতে কাঁপতে পড়ে গেল ডরে। আরেকটু হলে আমিও সেন্সলেস হয়ে যেতাম। যাউগ্গা তা হইনি। তবে ঝেড়ে দৌড় দিলাম। করিমও তাই করল। ছিনতাই গেল ভেস্তে। এসব আমাদের দিয়ে হবে না। পরের অনেক ঘটনা অনেক লম্বা, বলে শেষ করা যাবে না। তবে ‘ছিনতাইকারী’ শোনার পর আনারকলি মুকিত ভাইয়ের সঙ্গে ব্রেকআপ করে দেয়। আহারে এই শীতেও মুকিত ভাইয়ের বিয়েটা হলো না। আফসোস।

আজ ২৫-১-২০১৬ দৈনিক সমকালের প্যঁাচালে.............

দলের যেভাবে ভাঙন রোধ করা যেতে পারে

বিরোধী দলে নতুন করে ভাঙন নিয়ে শুরু হয়েছে কানাঘুষা। কী করে এই ভাঙন থেকে দলকে বাঁচানো যায় তারই আজাইরা টিপস দিয়েছেন নিখিল বাংলা বেকার লেখক পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান অনন্ত

সফটওয়্যার পদ্ধতি
একটা বিশেষ চুলকানিময় সফটওয়্যার তৈরি করতে হবে। তারপর দলের সবার সঙ্গে কানেক্ট করতে হবে। সফটওয়্যারটিতে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া থাকবে। যাতে দলটি ভাঙতে গেলেই সবার মধ্যে তীব্র চুলকানি শুরু হয়। ব্যস, এমনটা করা যেতে পারলে অন্তত চুলকানির ভয়ে নেতাকর্মীরা একসঙ্গে থাকবে।

চুম্বক পদ্ধতি
আমরা জানি এক চম্বুক আরেক চুম্বককে আকর্ষণ করে। এ পদ্ধতিতে সবার মধ্যে চুম্বক লাগিয়ে রাখতে হবে। যাতে কেউ কারও থেকে আলাদা হতে না পারে। আর এমনটা যদি করা যায় তাহলে দলটি ভাঙার আশঙ্কা কমে যাবে। সুতরাং দলকে মজবুত রাখতে চুম্বকের কোনো বিকল্প নেই।

পারফিউম পদ্ধতি
যারা টিভিতে চোখ রাখেন তারা অবশ্যই জানেন বিশেষ কিছু পারফিউমের বিজ্ঞাপন দেখায়। যেটা গায়ে মাখলেই দূরের মানুষও কাছে চলে আসে। সুতরাং সব সদস্যের মধ্যে মাঝে মাঝে পারফিউম মারা উৎসব করতে হবে। যাতে সবাই পাশাপাশি থাকে, দল ভাঙনের মুখে না পড়ে।

ফেভিকল পদ্ধতি
যেসব দল ভাঙনের মুখে পড়বে সেসব দলের নেতাকর্মীদের ফেভিকল লাগিয়ে আটকে দেওয়া উচিত। কারণ এই আঠা একবার লাগিয়ে দিলেই হলো, সহজে আর নেতারা একজন আরেকজনের কাছ থেকে আলাদা হতে পারবে না।

গান পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে দলের সবাইকে গান শিখতে হবে। ব্যস, কেউ যদি বিদ্রোহ করে তবে তাকে ফুলের মালা হাতে বরণ করে নিতে সবাই গান গাইবে, এসো এসো আমার ঘরে এসো...আমার ঘরে। ব্যস, এমন আবগে আপল্গুত হওয়া গান শোনার পর দলে ভাঙা তো দূরের কথা মরিচা পড়ারও আশঙ্কা নেই।

সেলফি পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে দলের সবাইকে সেলফি তোলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। যেহেতু সেলফি তুলতে হলে পাশাপাশি থাকতে হয়, আর পাশাপাশি থাকা মানেই দলের সবাই একত্রে থাকা। সুতরাং এটা বলাই যায় যে একত্রে থাকলে আর দল ভাঙার চান্স নেই।

কানে তুলা দেওয়া
যেহেতু আমাদের নেতা মাঝে মাঝে এটা সেটা বলে ফেলেন, সুতরাং তার কথা না শুনতে কানে তুলা সিস্টেম ফলো করা উচিত। তিনি সকালে মাছ দিয়ে ভাত খেয়েছেন বললে ধরে নিতে হবে বিকেলে বলবেন মাংস দিয়ে খেয়েছেন! সুতরাং মাঝে মাঝে কানে তুলা দিয়ে রাখতে হবে নেতাকর্মীদের। যাতে এসব আজগুবি কথা না শুনতে হয়। তার কথা যত কম শুনবে ততই নেতাকর্মীরা দলের সঙ্গে আঠার মতো লেগে থাকবে।
আজ ২৫-১-২০১৬ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর রকমারি রম্যতে

শীতে বিয়ের টিপস

চলছে শীত প্রযোজনায় বিয়ের সিজন। ফেসবুকে প্রতিদিনই বিয়ের ছবি আর খবরে মন ভাঙছে ব্যাচলরদের। তাই বিয়েতে আগ্রহ বাড়ছে তাদের। শুধুমাত্র ব্যাচলরদের জন্যই এই টিপস দিয়েছেন— সোহানুর রহমান অনন্ত



আইডি কার্ড পদ্ধতি : এই পদ্ধতির সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক কি? খুবই সাধারণ। কারণ বিয়ের সময় এখন বউরা এখন কড়া মেকআপ নেয়, তাকে আপনি তো দূরের কথা, বরও চিনতে পারে না। এ কারণে অন্য মেয়ের হাত ধরে পড়তে হয় বিপদে। তাই বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে বউয়ের ছবিযুক্ত আইডি কার্ড তার গলায় পরিয়ে দিন। যেন কার্ড দেখে শনাক্ত করতে পারেন।

অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস পদ্ধতি : যেহেতু ঘটক পাত্রের পক্ষেই বেশি কথা বলে। সে এটা সেটা, হেনতেন। তাই প্রথমে এই একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপসটি আপনার মোবাইলে ইনস্টল করতে হবে। তারপর ঘটক কথা বলার সময় তার দিকে মোবাইলের ক্যামেরা ধরে অ্যাপস চালু করুন। ব্যস, মিথ্যা বললেই বেটার দফা শেষ। ঘটকদের জারিজুরি ফাঁস করবে এই অ্যাপসটি।

নৃত্য পদ্ধতি : এই পদ্ধতিতে আপনাকে নাচ শিখতে হবে। যেহেতু বিয়ের সিজন চলছে আর আপনি যদি নাচ জেনে থাকেন তাহলে দ্বিগুণ লাভ। এক, এই শীতে নাচার কারণে আপনার শরীর গরম হবে। দুই, কিছু পয়সা কড়িও কামাতে পারবেন।

ফ্রি খাওয়া পদ্ধতি : যেহেতু আপনি বিয়ের কথা শুনলেই ফ্রি খেতে চলে যান সেহেতু আপনাকে এবার একটু ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। কারণ একই কমিউনিটি সেন্টারে বার বার খেতে গেলে ধরা খাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই ‘মাঙ্কি ক্যাপ’ পরে খেতে যান। শীতের কারণে কেউ আর আপনাকে জিজ্ঞেস করবে না এটা কেন পড়েছেন। ডু ফুর্তি। চামে খেয়ে আসুন।

সুপার গ্লু পদ্ধতি : যেহেতু শালা-শালিকারা পাত্রের জুতা, টুপি গায়েব করে ফেলে। তাই সুপার গ্লু দিয়ে জুতা আটকে রাখতে হবে যেন কেউ নিতে না পারে। সেই সঙ্গে পাত্রের যদি আলদা চুল মাথায় থাকে তাহলে মাথায়ও সুপার গ্লু লাগাতে হতে পারে।
- See more at: http://www.bd-pratidin.com/rokomari-rommo/2016/01/25/123041#sthash.SxyXZbtd.dpuf

আজকের কালের কণ্ঠের ঘোড়ার ডিম-এ

খুশিতে অজ্ঞান
আইডিয়া : সোহানুর রহমান অনন্ত আঁকা : মাসুম

প্রথমজন : ভাই, উনি এমন চিৎ হয়ে পড়ে আছেন কেন? বউ কি বেশি কেনাকাটা করেছে?

দ্বিতীয়জন : আরে না! মেলার জিনিসের দাম শুনে বউ নাকি কইছে, এই বছর কিছুই কিনব না। এই খুশিতেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন।

প্রথমজন : আপনি প্রতিদিনই মেলায় আসেন, কিন্তু কিছুই তো কিনতে দেখি না!

দ্বিতীয়জন : ঘটনা হইল, আমি একজন কাগজ বিক্রেতা, মেলার লিফলেট সংগ্রহ করে কেজি দরে বিক্রি করি।
- See more at: http://www.kalerkantho.com/feature/ghorar-dim/2016/01/19/314854#sthash.NeiLcZyZ.dpuf

আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন রকমারি রম্যতে--

বাণিজ্যমেলায় স্টলগুলো যেভাবে ক্রেতা বাড়াতে পারে

চলছে বাণিজ্যমেলা। মেলায় বেশির ভাগ স্টল চায় তাদের এখানে ভিড় লেগে থাকুক। ব্যাপক কেনাবেচা চলবে সেটাই কাম্য। তবে ক্রেতা টানতে এখন আধুনিকায়ন করা দরকার। কীভাবে ক্রেতা টানতে পারে তারই টিপস দিয়েছেন— সোহানুর রহমান অনন্ত



সেলিব্রেটি পদ্ধতি : এই পদ্ধতিতে স্টলে একজন জনপ্রিয় হেনতেন টাইপের সেলিব্রেটি এনে দোকানে বসিয়ে দিতে হবে। ব্যস, একবার বসিয়ে দিয়ে ঘোষণা দিন যে, এই স্টল থেকে কোনো পণ্য কিনলেই সেলিব্রেটি সেই ক্রেতার সঙ্গে সেলফি তুলবেন। এমন সুযোগ আমার মনে হয় কোনো ক্রেতা হাতছাড়া করতে চাইবে না।



অনুষ্ঠান পদ্ধতি : স্টলের সামনে বড় করে লিখে দিন, এই স্টলের সব ক্রেতার মুখ ভিডিও করে রাখা হচ্ছে। মেলা শেষে বিচারকদের মাধ্যমে স্মার্ট টাইপের মুখদের দিয়ে একটি অনুষ্ঠান করা হবে যার নাম ‘তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে অবস্থা শেষ।’ অতএব আপনারা স্টল থেকে পণ্য কিনে হয়ে যান সুপারহিট। দেখবেন ভিড় কাকে বলে।

মোবাইল হসপিটাল পদ্ধতি : মেলায় জিনিসপত্রের দাম শুনে অনেকেই মাথা ঘুরে জ্ঞান হারানোর উপক্রম হয়। কারও হাঁপানি, কাঁপুনি, জ্বর এসে যায়। তাদের কথা মাথায় রেখে আমাদের স্টলে রয়েছে মোবাইল হসপিটাল এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। আপনি দাম শুনে সেই স্কেলেই অজ্ঞান হন না কেন। সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান ফেরানোর দায়িত্ব আমাদের। পণ্য কিনলেই চিকিত্সা ফ্রি।

ফ্রি মেকআপ পদ্ধতি : মেলায় আসা তরুণী-মহিলাদের সংখ্যা কম নয়। তাই তাদের একটা টেনশন থাকে এত এত ক্যামেরা চারদিকে। মেকআপ যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে তো লাইভ টিভিতে চেহারার আসল রূপ রহস্য ফাঁস হয়ে যাবে। দোকানে লিখে দিন— টেনশন নেবেন না। আমাদের স্টলের পণ্য কিনলেই আপনি পাচ্ছেন অভিজ্ঞ মেকআপ ম্যানদের দ্বারা ফ্রি মেকআপ নেওয়ার সুবিধা।



ওয়াইফাই পদ্ধতি : যেহেতু মেলায় এসেই আপনি ফেসবুকে সেলফি, স্ট্যাটাস আপলোড দেবেন। তাই আপনাদের কথা মাথায় রেখেই আমাদের স্টলে ওয়াইফাই পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। পণ্য কিনুন ছবি তুলুন।
- See more at: http://www.bd-pratidin.com/rokomari-rommo/2016/01/18/121600#sthash.A6e3PW1t.dpuf

আজ প্রিয়জনে.... জনি হোসেন কাব্যকে ধন্যবাদ ইনবক্স করার জন্য

সাদা জোছনায় নীল কষ্ট

সোহানুর রহমান অনন্ত

বেশ কয়েকটা টোকা পড়ল জানালা দিয়ে। ‘দ্য ভিঞ্চি কোড’ বইটা নিয়ে মাত্র বসেছিল অধীর। শীতটা আজ খুব বেশি পড়েছে মনে হচ্ছে। ঠাণ্ডায় হাত-পা কেমন ঠকঠক করছে। অবশ্য বিকেল থেকেই আকাশ মেঘলা। জানালায় আবার টোকা পড়ার শব্দ। চাদরটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে জানালার কাছে এসে দাঁড়াল অধীর। এটা নতুন নয়, প্রায় রাতেই রুপা এসে জানালায় নক করে। তাই আর জিজ্ঞেস করতে হয় না। হাত বাড়িয়ে জানালাটা খুলে দিলো। ওপাশ থেকে ফিসফিস করে রুপা বলল, এত সময় লাগল কেন? ড্যান ব্রাউনের বই পড়ছিলাম, বইটি ওয়ার্ল্ড বেস্ট সেলার, তুমি পড়েছে? নাহ পড়িনি, আচ্ছা শোনো, তোমার মোবাইলে কি ব্যালান্স আছে। হ্যাঁ। একটু দাও, প্লিজ, জরুরি ফোন করতে হবে। এই বলে রুপা এদিক-ওদিক তাকায়। অধীর টেবিলের ওপর থেকে সেলফোনটা এনে রুপার হাতে দেয়। রুপা নম্বর ডায়াল করতে করতে ছাদের এক কোণে চলে যায়। অধীর জানালার কাছে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। ছাদের ওপর এই একটি মাত্র রুম। ভাড়া কম হওয়ায় অধীর অনেক দিন ধরেই আছে এখানে। রুপা অধীরের কাসমেট, এই বাসার তৃতীয়তলায় থাকে। বাবা পরহেজগার মানুষ, তাই রুপার হাতে কোনো মোবাইল ফোন দেয়নি। রুপা মাঝে মাঝেই এসে অধীরের ফোন দিয়ে কথা বলে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও আবার ব্যালান্স রিচার্জ করে দেয়। জানালা দিয়ে হু হু করে মাঘের হাওয়া ঘরে আসছে। অধীর দরজা খুলে রুপার দিকে হেঁটে গেল। রুপা অধীরকে দেখে কথা বন্ধ করে দেয়। কিছু বলবে? ইয়ে মানে... বাইরে অনেক ঠাণ্ডা তুমি চাইলে চাদরটা গায়ে জড়িয়ে নিতে পারো। না ঠিক আছে, আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে না, তুমি যাও। অধীর যেভাবে এলো আবার সেভাবেই চলে এলো রুমের মধ্যে। টেবিলে বসে আবার বইটা পড়তে লাগল। আধা ঘণ্টা পর রুপা এসে মোবাইলটা রেখে পাশের বিছানায় সটান বসে পড়ল। অধীর মোটা ফ্রেমের চশমার ফাঁক দিয়ে একবার তাকালো, তারপর আবার বইয়ে মনোযোগ দিলো। রুপার চোখে মুখে বিরক্তি, আচ্ছা বই পড়া ছাড়া কি আর কোনো কাজ নেই তোমার? আছে তো। কী? বই কেনা। হোয়াট? রেগে যাচ্ছ কেন? রাগার কথা বলবে আর আমি রাগতে পারব না? মেয়েরা অহেতুক উত্তেজিত হয়, তুমি জানো অহেতুক উত্তেজিত হলে শরীরের রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। হয়েছে হয়েছে, আর জ্ঞান দিতে হবে না। আচ্ছা শোনো, তোমার মোবাইলের ব্যালান্স শেষ করে ফেলেছি। কাল ভার্সিটিতে গিয়ে রিচার্জ করে দেবো। আমি তো তোমার কাছে চাইনি? তোমার চাইতে হবে নাকি? যাচ্ছি কাল দেখা হবে। শোনো? কী? তুমি রোজ রোজ কার সাথে কথা বলো? রুপা একেবারে অপ্রস্তুত হয়ে গেল। এমন প্রশ্ন এর আগে করিনি আমি, আজই প্রথম করলাম। আমতা আমতা করে বলল, আরেক দিন বলি? ঠিক আছে। রুপা চলে গেল, অধীর মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখল, আজো কল করা নাম্বারটা ডিলিট করে গেছে রুপা। হয়তো রুপা চায় না, অধীর জানুক রুপা কার সাথে কথা বলে। মুচকি হেসে বইয়ে চোখ রাখল অধীর।
এখন আর রুপাকে তেমন একটা দেখা যায় না। ছাদেও আসে না, ভার্সিটিতেও যায় না। একই বিল্ডিংয়ে থাকে তবুও যেন দূরের মানুষ রুপা। সে দিন রুপার ছোট বোনের সাথে দেখা হতেই জানতে পারল রুপার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। কথাটা শুনে কষ্ট পেলেও মুখে ম্লান এক টুকরো হাসি ফুটিয়ে বলল, বেশ তো, রুপা এবার সংসারী হবে। সে রাতে অনেক কেঁদেছে অধীর। রুপার থেকে অনেক দূরে চলে যাওয়ার জন্য শেষরাতে পা বাড়াল বাড়ির বাইরে। শান্ত নগরী তখনো ঘুমিয়ে আছে।
অনেকক্ষণ জানালায় টোকা দিলো রুপা। কিন্তু ভেতর থেকে জানালা খুলছে না অধীর। বিরক্ত হয়ে দরজায় টোকা দিতেই দরজাটা খুলে গেল। ঘরে প্রবেশ করতেই দেখে অধীর নেই। নজরে পড়ল টেবিলের ওপর রাখা একটা চিঠির ওপর। কাছে যেতেই দেখল। বড় করে লেখা ‘রুপা এই চিঠিটা তোমার জন্য’। রুপা কিছুই বুঝতে পারল না, চিঠিটা খুলে পড়তে শুরু করে...
‘এই চিঠিটা তুমি যখন পড়ছ, আমি তখন তোমার থেকে অনেক দূরে। রুপা, আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো না, কিন্তু বিধাতার কী অপরূপ খেলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। অথচ একবারও তোমায় সে কথাটা বলতে পারিনি। বিশ্বাস করো, তুমি যতবার আমার সামনে এসে দাঁড়াও, ততবারই আমার ভালোবাসা দিগুণ হয়ে যায়। তাই তোমার সুখের কথা ভেবে আমি অনেক দূর চলে যাচ্ছি। এই শহর ছেড়ে আমার সেই গ্রামে। যেখান থেকে এসেছিলাম, ঠিক সেখানে। এই জীবনে তোমার সাথে আর কখনো দেখা হবে কি না জানি না। শুধু এতটুকুই বলব, সুখে থাকো তুমি। অনেক বেশি সুখে থাকো।’ চিঠিটা শেষ হতেই রুপার দু’চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে থাকে। কেন, রুপা নিজেও জানে না। বাইরে তখন জ্যোৎস্নার আলো আরো তীব্র হয়ে উঠেছে।
পরিশেষ : স্কুল থেকে বের হয়ে সাইকেলে চড়ে বসল অধীর। বয়সের ভারে আজকাল তেমন একটা সাইকেল চালাতে পারে না। শহর থেকে আসার পর এই হরিরামপুর স্কুলে চাকরি নেয়। তারপর এখানে কেটে গেছে ত্রিশটি বছর। আজো বিয়ে করেনি।
sranontojugantor@gmail.com - See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/85597#sthash.0iyxkW3O.dpuf

একটি শীতের গল্প
সোহানুর রহমান অনন্ত
অলস সাহেব বউয়ের কিল খেয়ে গোসল করার জন্য ওয়াশরুমে ঢুকলেন। টিভিতে তখন বিশুদ্ধ বাংলা ছবি চলছিল। পেট মোটা নায়িকাদের গান ভালোই লাগছিল তার কাছে। পানির সামনে যেতেই তার কাঁপুনিসহ হাঁপানি উঠে গেল। একটা আঙুল পানিতে লাগাতেই মনে হলো, কারেন্টে শক করেছে। ঠিক তখনই তার মাথায় একটা বুদ্ধি এসে গেল। তিনি বালতিবর্তি ঠাণ্ডা পানি নিয়ে গিয়ে বউয়ের গায়ে ঢেলে দিলেন। তখনই ঠাণ্ডায় বউ অজ্ঞান হয়ে গেল। অতঃপর তিনি সুখে-শান্তিতে, আরাম করে বসে টিভি দেখতে লাগলেন।

ব্যাচেলরদের মনের কথা
সোহানুর রহমান অনন্ত
ভাড়া নেওয়ার সময় যা ভাবে : বাড়িতে গ্যাস, পানি থাকুক আর না থাকুক বাড়িওয়ালার একটা সুন্দরী মেয়ে থাকলেই চলবে। যদি না থাকে তাহলে বাড়িওয়ালা ভাড়া দিতে চাইলেও ভাড়া নেব না। সুন্দরী মেয়ে থাকাটা সময়ের দাবি।
ঘর ভাড়া দিতে গেলে যা ভাবে : মাসের শেষে ঘর ভাড়া দিতে গেলে ব্যাচেলররা মনে মনে ভাবে, ভাড়া দেওয়ার জন্য একটা নির্ধারিত সময় ঠিক করে নিতে হবে। দরজার আড়াল থেকে টেরা চোখে দেখতে হবে কখন বাড়িওয়ালা নিচে হাঁটতে যায়। ব্যস, এই সুযোগে ওপরে গিয়ে দরজা নক করলেই সুন্দরী মেয়েটাই খুলবে। আর ভদ্রতার খাতিরে চা খাওয়ার অফার তো দেবেই।
রাত হলে যা ভাবে : রাতে মশারি টানাতে গিয়ে বারবার চিন্তা করবে বিয়েটা সামনের মাসেই করে ফেলব। এমন ডেঙ্গু মশা মার্কা জীবন আর ভালো লাগে না। বিয়ে করে ব্যাচেলর স্ট্যাটাস পাল্টাতেই হবে।
প্রেম করার আগে যা ভাবে : দূর! প্রেম কি মানুষ করে! অহেতুক সময় নষ্ট, টাকা নষ্ট। কিন্তু বন্ধুরা যখন গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে তখন কলিজাটা এমন ছলাৎ ছলাৎ করে কেন। নাহ্ প্রেম একটা করতেই হবে।
প্রেম হয়ে গেলে যা ভাবে : আমারে কোন ভূতে কিলাইছিল, প্রেম যে কেন করলাম! গতকালই সেলারিটা পেয়েছি, আজই চাইনিজ, শপিংয়ে গিয়ে ফুতুর। নাকের কসম আর জীবনে প্রেম করুম না।
বন্ধুর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার আগে যা ভাবে : ধার তো মানুষই নেয়, নিমু আবার দিয়া দিমু কোনো ব্যাপার না। তা ছাড়া বন্ধুদের কাছ থেকে তো হেল্প আশা করতেই পারি। এইটা তো আমার নাগরিক অধিকার।
টাকা পেয়ে গেলে যা ভাবে : দূর হালায়! টেকা দেওয়ার সময় কেমন প্যানপ্যান করেছে। এই টাকা তিন বছর ঘুরিয়ে তারপর দিমু। বন্ধু হইয়া আমার লগে ফাইজলামি। এইবার দেখামু কত চাউলে কত ভাত!
ছবিতে সুন্দরী মেয়ে কমেন্ট দিলে : খাইছে! মেয়েটা এত যত্ন করে কমেন্ট দিল। একটু নক করে দেখি, যদি লাইগা যায়। বন্ধুদের তো বলতে পারব, সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে প্রেম হইছে।
বল্গক খেলে যা ভাবে : দূর! এইটা মনে হয় ফেইক আইডি। আজাইরা কথা নাই বার্তা নাই বল্গক মেরে দিল। আমার স্ট্যাটাস বুঝল না, পুরাই লুল হয়ে গেলাম।

এই ভয়ের মধ্যে থেকেও নিজ দায়িত্বে হাসুন>>> আজ ০৪-১-২০১৬ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর রকমারি রম্যতে

একটি ভুয়া সালতামামি
গত বছরে অনেক কিছুই ঘটেছে। তার মধ্যে কিছু কাল্পনিক দৃশ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো। কাল্পনিক সালতামামি তৈরি করেছেন— সোহানুর রহমান অনন্ত

ফেসবুক ক্যাঁচাল : বেশ কিছুদিন ফেসবুক বন্ধ থাকায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পক্ষে-বিপক্ষে নানা রকম গ্যাঞ্জামের কথা শোনা গেছে। আমাদের যার যার ঘরে থাকা প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। এখানে ফেসবুকের পক্ষে-বিপক্ষে দুই দলের গালিবর্ষণে এখন পর্যন্ত একজন অজ্ঞান এবং শতাধিক কানে কম শোনার খবর পাওয়া গেছে। সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী এখন শান্ত থাকলেও মাঝে মাঝে হুঙ্কারের শব্দে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে।

কাসেমের প্রেমের অক্কা : বিপিএলে গার্লফ্রেন্ডসহ খেলা দেখতে এসে মজনু কাসেমের প্রেম অক্কা পায়। বিভিন্ন ছ্যাঁকা খাওয়া দল শোকবাণী দিয়েছে। জানা যায়, বিপিএলে লাইভ ক্যামেরা গ্যালারিতে ধরতে কাসেম এবং তার গার্লফ্রেন্ডের মুখ বিশ্ববাসী টিভিতে দেখতে পায় এবং তার একাধিক প্রেমিকার চোখেও তা ধরা পড়ে। পরবর্তীতে বিনা নোটিসে তার অন্য প্রেমিকারা তাকে বিশাল সাইজের ছ্যাঁকার সনদপত্র প্রদান করে অন্য ছেলের হাত ধরে ভেগে গেছে। ব্যাপক দুঃখের বিষয়।

বিয়ে হলো যানজটে : বিয়ে করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত যানজটেই বিয়ে করে বসলেন আমাদের এক ভাই-ব্রাদার। তিনি বিয়ে করার জন্য বাসা থেকে বের হলেও যানজটে পড়ে তার বিয়ের চৌদ্দটা বেজে যায়। পরবর্তীতে তার দুঃখে হৃদয়বান তরুণীরা মেরি মি কার্ড হাতে বাসের পাশে এসে দাঁড়ায় এবং লটারির মাধ্যমে একজনকে তার কনে হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। যানজটে গায়ে হলুদ, বিয়ে, বৌভাত সম্পন্ন হয়।

ঠাণ্ডা পানিসহ তিন ছিনতাইকারী গ্রেফতার : শীতের আগমন উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাইকারীরা ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে। শীতের রাতে অভিযান চালিয়ে ঠাণ্ডা পানিসহ তিন ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়। তবে তাদের মূলহোতা ‘কোলড্রিংস মফিজ’ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তাকে খুব দ্রুতই বরফ দেওয়া পানিসহ ধরার আশা করছেন এলাকাবাসী।

পিয়াজের সঙ্গে সেলফি : সাহস করে পিয়াজের সঙ্গে সেলফি তুলে ভাগ্য বদলাল সেলফি মদনের। পিয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার পর কারও আর সাহস ছিল না পিয়াজের আশপাশে যাওয়ার। সেই অসাধ্য কাজটাই করেছে মদন। সে পিয়াজের সঙ্গে সেলফি তুলে বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। শেষ খবর অনুযায়ী আমার দেওয়া লাইক ছাড়াই সে আড়াই হাজার দুইশত সাড়ে নয়টা লাইক পেয়েছে। ভাবা যায়!
- See more at: http://www.bd-pratidin.com/rokomari-rommo/2016/01/04/118824#sthash.h2dLRKxe.dpuf

আজ ২৮-১২-২০১৫ দৈনিক সমকালের প্যাঁচালে (এই রাশিফল দেখে কারো মাথা ঘুরান্টি খেলে নিজ দায়িত্বে জ্ঞান হারান)

কেমন যাবে নতুন বছর?
নতুন বছর কার কেমন কাটবে, ঠিক তার কাল্পনিক (আজগুবিও বলতে পারেন) একটা রাশিফল তুলে ধরেছেন বিশিষ্ট জ্যোতিষী সোহানুর রহমান অনন্ত

মেষ : এই রাশির জাতকদের জন্য একটি সুসংবাদ হলো, অপরিচিত কারও সঙ্গে প্রেম হয়ে যেতে পারে। আলু চাষে ব্যাপক উন্নতি পেতে পারেন। দূরের যাত্রা শুভ। বউয়ের সঙ্গে ননস্টপ ঝগড়ার অবসান ঘটতে পারে। দিনের শেষে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ার আশঙ্কা আছে।

বৃষ : স্ত্রীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটবে। অনেকেই আপনাকে কান পড়া, কান মলা দিতে পারে, সুতরাং এদের থেকে কানটাকে দূরে রাখুন। ব্যবসায় উন্নতি হলেও শপিংয়ে গিয়ে ব্যাপক ধরা খেতে পারেন।

মিথুন : হঠাৎ ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড চুরি হয়ে যেতে পারে। সুতরাং পাসওয়ার্ড দেওয়ার সময় সাবধানে থাকুন। আনলিমিটেড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। হঠাৎ বিয়ের অফার চলে আসতে পারে। তবে পালিয়ে বিয়ে করতে গিয়ে ধরা পড়ার আশঙ্কা আছে। সংসারের ভেজাল কমবে। পুরনো সম্পর্ক সুপার গ্গ্নু ছাড়াই জোড়া লাগতে পারে।

কর্কট : ফেসবুকে প্রেম হতে পারে, তবে ফেক আইডি থেকে সাবধান। গৃহ নির্মাণ নিয়ে এলাকার ক্যাডারদের সঙ্গে গেঞ্জাম লাগতে পারে। তাই আগে থেকেই তাদের তবারক পাঠিয়ে দিন। ডেটিংয়ে গিয়ে প্রাক্তন প্রেমিকার কাছে ধরা পড়তে পারেন। দূরের যাত্রা শুভ।

সিংহ : ঝামেলা ছাড়াই টিকিট পেয়ে যেতে পারেন। তবে সেটা লটারির না, বাসের টিকিট। ভালোলাগার মানুষটিকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করার সম্ভাবনা আছে। অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাবনা থাকলেও বউয়ের দ্বারা অর্থ ব্যয়ের মারাত্মক আশঙ্কা আছে।
কন্যা : এই রাশির মেয়েদের ফেসবুকে ফলোয়ার এবং লাইকার কোনো ঘোষণা ছাড়াই বেড়ে যেতে পারে। ছেলেদের গোপন এক হালি প্রেম ফাঁস হয়ে মাইনকা চিপায় পড়ার আশঙ্কা বেশি। আবেগের বশে বড় ধরনের ভুলে জড়িয়ে যেতে পারেন। স্বামি-স্ত্রীর মাঝে কলহ মিটবে। বিনিয়োগে সাফল্য আসতে পারে, তবে শেয়ারবাজার থেকে দূরে থাকুন।

তুলা : খ্যাতির বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন। মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন (অস্থায়ী)। লোভে পড়ে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। অন্ধকারে সাবধানে চলুন, ঢাকনা খোলা ম্যানহোল আপনার যাত্রাভঙ্গ করতে পারে। বছরের মাঝামাঝি চাপাবাজিতে ধরা খেয়ে গণধোলাই খাওয়ার আশঙ্কা আছে।
বৃশ্চিক : মলম পার্টির কবলে পড়তে পারেন, দূরের যাত্রায় সাবধান। এই সিজনে বিয়ে করে ফ্রি লেপ-তোশক পেতে পারেন। ব্যবসা শুভ, রোমান্স শুভ, তবে মেয়েঘটিত কারণে স্ত্রীর সন্দেহের শিকার হতে পারেন। চাকরিতে ডিমোশন হওয়ার মারাত্মক আশঙ্কা আছে।

ধনু : হঠাৎ রং নাম্বার থেকে জিনের বাদশা ফোন করে টাকা-পয়সা চাইতে পারে। প্রেমিকার সঙ্গে ব্রেকআপ হওয়ার আশঙ্কা আছে। তবে পুরনো পাওনা টাকা পেতে পারেন। অফিসে বসকে তেল মেরে বছরের মাঝামাঝিতে হালকা প্রমোশন পেতে পারেন।

মকর : আলাপ-আলোচনায় সমস্যার সমাধান হতে পারে। ফেসবুক হ্যাকারদের দখলে যাওয়ার আছে। বউয়ের সঙ্গে টিভি দেখা নিয়ে গেঞ্জাম লাগতে পারে। তাই সিরিয়াল দেখার অভ্যাস করুন। একাধিক প্রেমের অফার পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বাজারে গিয়ে ইলিশ মাছের দাম শুনে বছরের যে কোনো দিন অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

কুম্ভ : বছরের যে কোনো দিন জনসম্মুখে পাওনাদারের হাতে ধরা খেয়ে শরীরিকভাবে লাঞ্ছিত হতে পারেন। হবে হবে করে বিয়ের তারিখ বারবার পিছিয়ে যেতে পারে। গোপন কথা ফাঁস হয়ে যাওয়ার চান্স আছে। প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করলে অর্থ ব্যয় হওয়ার আশঙ্কা আছে। প্রেমিকার বান্ধবীর সঙ্গে হালকা সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে।

মীন : দিনের শেষে জেমসের গান গেয়ে প্রেমিকার রাগ ভাঙাতে হতে পারে। সুখবর শুনে আনন্দে হাঁপানি রোগ উঠে যেতে পারে। উত্তেজনা পরিহার করুন। বাবার পকেট কেটে অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাবনা আছে। রোমান্স শুভ। বছরের শুরুতেই রাতে ঘুমের ঘোরে খাট থেকে পড়ে ঠ্যাং ভাঙার আশঙ্কা আছে।
- See more at: http://bangla.samakal.net/2015/12/28/182419#sthash.vZUgQbD4.dpuf

২১-১২-২০১৫ আজকের সমকালের প্যাঁচালে

আজ ২১-১২-২০১৫ বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর রকমারি রম্যতে

ভুঁড়ির সুবিধা

একটু ভুঁড়ি বাড়লেই আমরা ব্যাপক টেনশনে পড়ে যাই। তবে চিন্তা করে দেখলে ভুঁড়িরও কিছু উপকারিতা আছে। কী সেই উপকারিতা তারই একান্ত গবেষণা করেছেন— সোহানুর রহমান অনন্ত



বাসে ওঠার সুবিধা : যেহেতু আমাদের প্রায় সময় লোকাল বাসে চলাফেরা করতে হয়। আর সে কারণেই আপনি বিশুদ্ধ ভুঁড়ির অধিকারী হলে ব্যাপক সুবিধা। যেমন আপনি বাসে উঠে সিটতো পাবেনই না। যদি ঠিক মতো দাঁড়াতেও না পারেন তাহলে কীভাবে হবে? তবে এই সুযোগটা করে দেবে আপনার ভুঁড়ি। মানে ভুঁড়ির ধাক্কা খেয়ে সামনে থাকা পাবলিক আপনাকে বিশেষ বিবেচনায় জায়গা দিয়ে দেবে।

ভাব নিতে পারবেন : ভুঁড়ির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভার ও ভাব রয়েছে। তাই আপনি যদি ভুঁড়ির অধিকারী হয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চিন্তে ভাব নিন। মানে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে শুরু করুন।

বেড়াতে যাওয়া সুবিধা : ভুঁড়িওয়ালা লোকদের জায়গাটা একটু বেশি প্রয়োজন হয়। তাই তারা আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে একটু বেশি সুবিধা ভোগ করে। যেমন খাটে জায়গা কম থাকলে ভুঁড়িওয়ালা ব্যক্তির জন্য একাই একটি খাট বরাদ্দ থাকে।

মধ্যরাতে লিফট সুবিধা : আপনি অনেক রাত করে বাড়ি ফিরে দেখলেন লিফট বন্ধ করে দিয়েছে। চিকন স্বাস্থ্য হলে আপনাকে সিঁড়ি বেয়েই উঠতে হবে, কিন্তু আপনার মধ্যে যদি ভুঁড়িওয়ালা হয়ে থাকেন তাহলে লিফটম্যান টুঁ শব্দ না করে মধ্যরাতেও আপনাকে লিফটে করে উপরে পাঠাবে।

বউ বা প্রেমিকার হাত থেকে বাঁচবেন : যেহেতু ভুঁড়ির কারণে আপনি অল্প হাঁটলেই হাঁপিয়ে উঠবেন। তাই বউ বা প্রেমিকার সঙ্গে শপিংয়ে গিয়ে মালপত্র টানার হাত থেকে বাঁচবেন। কারণ আপনি এমনিতেই ভুঁড়ির ভার বহন করছেন, তার ওপর আর ভার দেওয়ার কথা অন্য কেউ নিশ্চয়ই ভেবে দেখছে না।
- See more at: http://www.bd-pratidin.com/rokomari-rommo/2015/12/21/116249#sthash.CtXiQD5f.dpuf

একটি ব্যর্থ নির্বাচনী প্রচারণার কাহিনি
l সোহানুর রহমান অনন্ত l



১.

প্রেমে পড়লে মানুষ দার্শনিক কিংবা কবি হয়, কিন্তু আমাদের মুকিত ভাই হয়েছে বাচাল। একেবারে বিশুদ্ধ বাচাল যাকে বলে। কাউকে পেলেই তার ‘অক্সিজেন’ কলির কথা বলে। কলি কে সেটা একটু পড়ে বলছি। এলাকায় যেহেতু নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তাই বাউণ্ডুলে গ্রুপেরও একটা দায়িত্ব আছে। পকেট যেভাবে মরুভূমির মতো শুকিয়ে থাকে তাতে ভেবেছিলাম, পকেট ছাড়াই প্যান্ট-শার্ট পড়ব। কিন্তু যেহেতু প্রার্থীর প্রচারণা চালাতে হবে তাই আপাতত সে সিস্টেমে যাচ্ছি না। এলাকার এক বড় ভাই পৌর মেয়র পদে দাঁড়িয়েছেন। তার প্রচারণা করতে হবে আমাদের। মুকিত ভাইকে পাওয়া গেল স্কুলের সামনে। তার ইয়ে আবার স্কুলের টিচার। আমাদের দেখে মুকিত ভাই বলল, ‘কীরে, তোরা এমন শুঁটকির মতো শুকিয়ে যাচ্ছিস কেন?’ মামুন হেসে বলল, ‘ভাই পারসোনাল কথা, সেটা গোপনে বলা যাবে। এখন প্রচারণা তো করতে হবে। টাকা নিয়ে তো অর্ধেক খেয়ে ফেলেছি।’ মুকিত ভাই হেসে বলল, ‘স্কুলের আশপাশে প্রচারণা করলেই তো হয়।’ আমি বিরক্তি নিয়ে বললাম, ‘ভাই, প্রেমের ম্যানহল থেকে একটু বের হন। প্রচারণা না চালালে প্রার্থী আমাদেরকেই পোস্টার বানিয়ে ঝুলিয়ে দেবে।’ মুকিত ভাই মনে হলো কিঞ্চিত্ ভয় পেয়েছে। ‘ঠিকই কইছত কিন্তু আমার কলি...।’ ‘এই ডিজিটাল যুগে আপনি এখনো গুহার মানুষের মতো জীবনযাপন করছেন, আরে ভাই কলির ছবি আপনার মোবাইলে আছে না।’ ‘হুম।’ ‘তাহলে যখন মন পড়বে, ছবি দেখবেন। বাস্তব আর ছবির মধ্যে তফাত্ এতটুকুই। আপনি বাস্তবে ওর দিকে তাকালে রেড সিগন্যাল দেয় আর ছবিতে গ্রিন সিগন্যাল দেবে।’

মনো হয় প্যাঁচটা কাজে লেগেছে। মুকিত ভাই হেসে বলল, ‘চল তাহলে।’ বাউণ্ডুলে ক্লাবের সামনে মাইকিং করে চলছে প্রচারণা, অমুক ভাইয়ের চরিত্র বুড়িগঙ্গার পানির চেয়ে পবিত্র। আমরা জনে জনে খবর দিয়ে এক প্যাকেট করে লবণ গিফট দিচ্ছি, সাথে লিফলেট। মুকিত ভাইকে চিমটি দিয়ে মামুন বলল, ‘ভাই, মানুষ চা খাওয়ায়, টাকা দেয়, আর আমরা লবণ দিতাছি কেন?’ মুকিত ভাই হেসে বলল, ‘দূর বেকুব! কথায় আছে, যার নুন খায় তার গুণ গায়। পাবলিক আমাদের প্রার্থীর নুন খেয়ে প্রার্থীর গুণ গাইব, অন্যদিকে আমাদের প্রাথীও লবণ মার্কায় দাঁড়িয়েছে, কী বুঝলি!’ ‘ভাই আপনি তো মানুষ না।’ ‘কস কী, আমি তাইলে কী?’ ‘আপনি বুদ্ধির খনি।’

এরমধ্যে কলির বড় ভাই এসে বলল, ‘এখানে কি লবণের ফ্যাক্টরি খোলা হইছে নাকি?’ খেয়াল করে দেখলাম মুকিত ভাইয়ের হাঁটু কাঁপছে। আর একটু হলে কাঁপতে কাঁপতে পড়েই যেত। কোনো রকমে আমাকে ধরে দাঁড়িয়ে রইলেন। মামুন হেসে বলল, ‘ভাই আপনাকে এক প্যাকেট লবণ দিই।’ কলির বড় ভাই কষে একটা চড় বসিয়ে দিয়ে বললেন, ‘বেটা ফাউ লবণ দিলে ভালো কোম্পানির দিবি, এমন হোলসেল খোলা লবণ দিয়ে তো পাবলিকরে ডায়রিয়ার রোগী বানিয়ে দিবি নাকি!’ এবার মুকিত ভাই ডরে চিত্ হয়ে পড়ে জ্ঞান হারালেন।



২.

‘দিন দিন সবকিছু আধুনিক হচ্ছে, তাই প্রচারণাও হতে হবে আধুনিক। যে যত বেশি আধুনিক, পাবলিক তার প্রতি আকৃষ্ট হয় তত বেশি।’ বুদ্ধিটা মুকিত ভাইয়ের মাথা থেকেই বের হলো—প্যারাসুট দিয়ে উড়ে উড়ে প্রচারণা করবে। আমার মাথা থেকে কখনোই উদ্ভট বুদ্ধি বের হয় না। ভাই আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘যেকোনো একজন উড়ে উড়ে লিফলেট বিলাবে।’ আমি হেসে বললাম, ‘ভাই, আপনি সিনিয়র মানুষ, আপনিই শুরু করেন।’ ‘কিন্তু...।’ ‘আপনার কাছে আবার ‘কিন্তু’ বলে কিছু আছে নাকি! আপনি হলেন বাউণ্ডুলে ক্লাবের গর্ব।’ ‘ঠিক আছে তোরা যখন সাহস দিতাছত, আমিই রিক্সটা নিমু।’

ব্যাপক প্রস্ততি নিয়ে আমরা প্রচারণায় নেমে পড়লাম। বিপক্ষ দল নিশ্চয় এমন প্রচারণা দেখে আমাদের বুদ্ধির তারিফ করবে। মুকিত ভাই প্রথম দশ মিনিট ভালোই উড়ে উড়ে প্রচারণা করলেন। তারপরই শুরু হলো তার কাঁপাকাঁপি। ঘটনা বুঝে উঠার আগেই দেখলাম ভাই মধ্যাকর্ষণ শক্তি কাজে লাগিয়ে নিচের দিকে লাফিয়ে পড়ছে। পড়বি তো পড় মালির ঘাড়ে। প্রচারণা ভেস্তে গেল, মুকিত ভাই পড়ল ম্যানহলে। পরে জানা গেল, সকালে তিনি রাস্তার পাশ থেকে এক গ্লাস খেজুরের রস খেয়েছিলেন। ব্যস উপরে উঠতেই নেগেটিভ পজিটিভ এক হয়ে গেল!



৩.

পোস্টার লাগানোর জন্য তিনজন মিলে পুরো মহল্লা ঘুরে শেষ। অবশ্য মাঝে মাঝে চা বিরতি ছিল। একটা সময় কলিদের বাড়ির সামনে যেতেই মুকিত ভাই বেঁকে বসল—কলিকে এক নজর দেখবে। কিন্তু বললেই তো আর দেখা যায় না। কলির ভাই সিরিয়াস টাইপের লোক। মুকিত ভাইকে বাড়ির একশ গজ দূরে থাকার জন্য বলে রেখেছে। যত সমস্যা তত সমাধানও আছে। একটা আম গাছের ডাল কলির ঘরের জানালার পাশ দিয়ে চলে গেছে। আপাতত সেটাই এভারেস্ট জয় করার রাস্তা। মুকিত ভাই বুকে ফু দিয়ে মাঙ্কি টুপি পরে উঠে পড়লেন। আমরা মাঙ্কি টুপি পরে নিলাম, বলা তো যায় না—কে দেখে ফেলে আবার। শীতকাল তাই এমনিতেই গাছের ডালপাতা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। তার ওপর মুকিত ভাইয়ের মতো কাতলা মাছের মতো একজন যদি গাছে ওঠে তাহলে তো ভূমিকম্প হয়ে যাওয়ার কথা। ডালের অর্ধেক যেতেই ক্যার ক্যার করে শব্দ হলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিকট বিস্ফোরণ। মানে ডাল ভেঙে মুকিত ভাই মাটিতে পড়েছে। এবার আর ম্যানহল নয়। পড়ল কুকুরের লেজের ওপর, তাত্ক্ষণিক ঘেউ ঘেউ শব্দ। কুকুর দিল মুকিত ভাইকে দৌড়ানি। আমরা দুজন কোনদিকে দৌড় দেব সেটা ভাবতে ভাবতেই মুকিত ভাই এসে বলল, ‘ক্যাবলার মতো দাঁড়ায় না থাইক্কা খিচ্চা দৌড় দে!’ মামুন বলল, ‘প্রচারণা?’ ‘প্রচারণার গুষ্টি কিলাই, চৌদ্দটা ইনজেকশন না খেতে চাইলে দৌড় দে।’ দিলাম দৌড়... একেবারে ভোঁ-দৌড় যাকে বলে। এলাকায় ডাকাত পড়েছে বলে হইচই পড়ে গেল। প্রেম মানুষকে কাছে টানে আবার প্রেম মানুষকে দৌড়ানি খাওয়ায়। ভাগ্য খারাপ হওয়ায় মুকিত ভাই কুকুরের কামড় খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলো। আর আমাদের প্রচারণাও সুইসাইড করল।

শীত এক্সক্লুসিভ
২০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ইং
শীত তো এসে পড়ল, আর এই শীত আসায় চারপাশে আপনি কেমন দৃশ্য দেখতে পান, তারই আজাইরা গবেষণা করে ঠাট্টার পাঠকদের জন্য ফলাফল তুলে ধরেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত ও কার্টুন এঁকেছেন রবিউল ইসলাম সুমন

আপনাদের সবার মুখ দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে, তাহলে মনে হয় সত্যি শীত চলে আসছে।

আপনি কিঞ্চিত্ মিসটেক খাইছেন কাগু, আমরা তো এখানে ধূমপান উত্সব করতাছি।

বলেন কি, ভাই আপনার ঘরে কখনোই শীত অনুভব করেন না, কথাটা তো বিলিভ খাইতাছে না।

ঠিকই কইছি, ঘরে ঢুকতেই আমার বউ যেভাবে চিল্লাপাল্লা শুরু করে তাতে শীতের গুষ্টিও যদি থাকে, নিহত হইয়া যাইব।

তুই কইলি শীতের মধ্যেই দোকানদারকে টাকা পরিশোধ করে দিবি, কিন্তু তোর তো চাকরিই নাই।

দূর বেকুব পুরো শীতের সিজনই তো মাঙ্কি টুপি পরে বাইরে ঘুরুম—দোকানদারের বাপও চিনতে পারবে না।

ভাই শীত এলেই তো গোসল করতে হাঁটু কাঁপে, পানি দেখলেই দৌড় মারতে মন চায়, কোনো টিপস থাকলে দেন।

ঘুমের টেবলেট খাইয়া কাউকে দিয়ে গোসল করাতে পারেন, যেহেতু আপনার হুঁশই থাকবে না, দৌড় মারার কোনো চান্স নাই।

উনি এমন ড্যান্স করে কীসের উত্সব পালন করতাছে, নাচ দেইখা তো মাথা ঘুরান্টি মারতাছে, লটারি পাইল নাকি?

আরে না আসলে উনি হলো কৃপণ বাড়িওয়ালা, শীত আসাতে বিদ্যুত্ বিল, পানি কম খরচ হবে তো তাই ড্যান্স করে সেলিব্রেশন করতাছে।

ওই মিয়া আপনি এত রাতে কল করেছেন কেন, আপনি দেখেন নাই সেখানে লেখা আছে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কল করার সময়।

কী করুম ভাই, হঠাত্ কইরা শীতটা বেশি পইড়া গেল তাই ভাবলাম আপনাদের হট লাইনে ফোন করি, এতে যদি একটু গরম হওয়া যায়।