Wednesday, 17 December 2014
aj 08-12-2014 daily chandpur kantha shahitto patay amar kobita<< tnx forid hasan k
অথবা তুমি জানতে
সোহানুর রহমান অনন্ত
হাসিটা ছন্দহীন তবু মূল্যহীন নয়
কত শতবার, হয়তো হাজার বার
দৃষ্টির মায়াতে কিংবা হৃদয় নকশী কাঁথাতে
গেঁথে ছিল এই হাসিটি
তোমার মুখের হাসিটি.....
কখনো কি ভেবেছিলে, কী তুমি! কী আমি
মাঝখানে দেয়ালটাই বা কতখানি স্পষ্ট
হাত বাড়ালেই তুমি পাও অন্য কারো হাত
আমি বাড়ালেই পাই সীমাহীন কষ্ট।
অভিমান সেতো শিশিরের শেষ বিন্দু
তুমি ছুঁয়ে দিলেই ঝরে পড়বে।
ভেবেছো কি কখনো তোমার শূন্যতায়
আমার হৃদয়মন্দির কতখানি পুড়বে?
আমার ক্যানভাস বর্ণহীন তবু সুখহীন নয়
সে কথা তুমি জেনেছিলে অথবা জানতে
হেমন্ত গেলো তবু পাইনি প্রেমের ফুল
পারিনি হৃদয়টাকে হৃদয় দিয়ে টানতে।
ভয় নেই তবু, হারিয়ে যাবো না
আমি বেঁচে আছি, তোমারি মাঝে
হয়তো বা পেয়ে কিংবা সবি হারিয়ে
সুখের মাঝে নয়তো দুঃখের ভাঁজে।
আমি হতে চাই শেষ দৃশ্যের হাসি
বেলা শেষে আবার তোমার মুখে
অসমাপ্ত থেকে যাক না হয় গল্পটা
কবিতাটা ভরে উঠুক অনাবিল সুখে।
অথবা তুমি জানতে
সোহানুর রহমান অনন্ত
হাসিটা ছন্দহীন তবু মূল্যহীন নয়
কত শতবার, হয়তো হাজার বার
দৃষ্টির মায়াতে কিংবা হৃদয় নকশী কাঁথাতে
গেঁথে ছিল এই হাসিটি
তোমার মুখের হাসিটি.....
কখনো কি ভেবেছিলে, কী তুমি! কী আমি
মাঝখানে দেয়ালটাই বা কতখানি স্পষ্ট
হাত বাড়ালেই তুমি পাও অন্য কারো হাত
আমি বাড়ালেই পাই সীমাহীন কষ্ট।
অভিমান সেতো শিশিরের শেষ বিন্দু
তুমি ছুঁয়ে দিলেই ঝরে পড়বে।
ভেবেছো কি কখনো তোমার শূন্যতায়
আমার হৃদয়মন্দির কতখানি পুড়বে?
আমার ক্যানভাস বর্ণহীন তবু সুখহীন নয়
সে কথা তুমি জেনেছিলে অথবা জানতে
হেমন্ত গেলো তবু পাইনি প্রেমের ফুল
পারিনি হৃদয়টাকে হৃদয় দিয়ে টানতে।
ভয় নেই তবু, হারিয়ে যাবো না
আমি বেঁচে আছি, তোমারি মাঝে
হয়তো বা পেয়ে কিংবা সবি হারিয়ে
সুখের মাঝে নয়তো দুঃখের ভাঁজে।
আমি হতে চাই শেষ দৃশ্যের হাসি
বেলা শেষে আবার তোমার মুখে
অসমাপ্ত থেকে যাক না হয় গল্পটা
কবিতাটা ভরে উঠুক অনাবিল সুখে।
Aj 06-12-2014 Daily kalar kantha suvosonggo-ta amar অণুগল্প
এক সন্ধেবেলায়
সোহানুর রহমান অনন্ত
কপালের লাল টিপটি ছুঁয়ে এক ফোঁটা ঘাম এসে পড়ল চোখের সামনে। আজও মোহিনী ওর স্বামীকে দেখেছে আরেকটি মেয়ের সঙ্গে। যদিও এটা এখন আর নতুন কিছু নয়। মোহিনী নিজে একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করে। তার স্বামী দেশের নামকরা ব্যবসায়ীদের একজন। অনেক টাকা। হয়তো টাকার কাছেই বিক্রি হয়ে গেছে মোহিনী। বিক্রি হয়ে গেছে ২৫টি বছর ধরে বিন্দু বিন্দু করে গড়ে ওঠা সব চাওয়া-পাওয়া। প্রতিদিন এই সময়টিতে মোহিনীর বাড়ি যাওয়ার তাড়া থাকে। কিন্তু আজ আর তাড়া নেই। এর আগেও ওর স্বামীকে অন্য মেয়ের সঙ্গে দেখেছে। শুধু দেখা নয়, আরো বেপরোয়া জীবনযাপনের ব্যাপারটিও সে জানে। কখনো এত খারাপ লাগেনি যতটা আজ লাগছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি গাছের নিচে এসে বসল মোহিনী। অনেক দিন পর আসা হলো এখানে। একটি শুকনো পাতার দিকে তাকিয়ে আবারও ভাবতে থাকে সে। ওর স্বামীর চরিত্রে যে সমস্যা আছে, সেটা টের পায় বিয়ের দেড় বছরের মাথায়। হয়তো কাজের মেয়েটি প্রেগন্যান্ট না হলে, তা-ও জানা হতো না তার। প্রথম প্রথম খারাপ লাগলেও এখন কেমন যেন বিষয়টি সয়ে গেছে। যে মনের বাঁধনে আটকায়নি, সে কী করে মুখের কথায় আটকাবে? তার স্বামী যখন পাশের রুমে অন্য মেয়েদের সঙ্গে মধুর হাসাহাসি করে, সে তখন বারান্দায় দাঁড়িয়ে একদৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার চোখ দিয়ে ঝরে পড়া অশ্রুতে চাঁদের ফিকে আলো ঝলসে ওঠে। সে একটি মোমের পুতুল-সবই জানে, তবুও কিছুই যেন জানে না। প্রতিবাদ যে কখনো করেনি এমনটি নয়, করেছিল; কিন্তু লাভ হয়নি। মানুষ অনেক সময় অভ্যাসের দাস হয়ে যায়। তার স্বামীর বেলায় তেমনটিই ঘটেছে। মাঝেমধ্যে ইচ্ছা হয় ছেড়ে চলে যাই। সে ভাবে, বিয়ে তো মানুষ জীবনে একবারই করে। তাই বাধ্য হয়েই একসময় নিশ্চুপ হয়ে গেছে। চোখটা কেমন যেন ঝাপসা হয়ে আসে মোহিনীর। একটি ছোট্ট মেয়ে এসে বেশ জোর গলায়ই বলছে, 'ফুল লাগব আফা ফুল, তাজা ফুল।' মোহিনী একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ফুলগুলোর দিকে। মোহিনীর মনে পড়ে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় সুজয়ের সঙ্গে কাটানো সময়গুলোর কথা। তখন প্রতিটি সকাল হতো নতুন একটি স্বপ্নের সূচনা দিয়ে। পাগলের মতো সুজয় তাকে ভালোবাসত। যখনই সুজয়ের সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসত, একটি গোলাপ কিনে তার খোঁপায় গুঁজে দিত। কপালে টিপ না থাকলে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে টিপ বানিয়ে দিত। যতই অভিমান করুক না কেন, সুজয়ের ভালোবাসার কাছে তার অভিমান পরাজিত হতো। সুজয় মোহিনীকে আলতো করে ছুঁয়ে বলত, 'মাঝেমধ্যে আমার মনে হয় আমার প্রতিটি রক্তের বিন্দুজুড়ে মিশে গেছ তুমি। তুমি না থাকলে কেমন যেন রক্তবিন্দুগুলো চলতে চায় না। থেমে যায়। তখন খুব কষ্ট হয় আমার। প্রচণ্ড কষ্ট হয়।' সুজয়ের চোখের দিকে তাকিয়ে লাজুক হাসি দিত মোহিনী। কিভাবে যে সময় চলে যেত! নিয়তির কাছে পরাজিত হয়ে, মা-বাবার পছন্দে সুজয়কে রিক্ত করে মোহিনী সংসার সাজায় ধনাট্য এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। সে তখনো বুঝতে পারেনি, জীবনের অঙ্কটা এভাবে ভুল হবে, যার ফল কেবল শূন্যই থেকে যাবে। এবার ঘাম নয়, চোখের কোণ থেকে অশ্রু ঝরে পড়ল মোহিনীর। ফুল হাতে মেয়েটি আবারও বলল, 'আফা নিবেন না?' 'হ্যাঁ নেব, দাম কত?' 'দুইটা ২০ টাকা।' ব্যাগ থেকে টাকা বের করে দেয়। নিজেই খোঁপায় ফুল গুঁজে দেয়। কপালে নতুন করে গোলাপের পাপড়ি ছিঁড়ে টিপ পরে।
আজ কেন যেন সুজয়কে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে মোহিনীর। আচ্ছা, সুজয় কি এখন দেখলে তাকে চিনতে পারবে? বড় একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে মোহিনী। সন্ধ্যার আঁধার নেমে এসেছে চারপাশে। মোহিনীর চোখে বৃষ্টি, নিজের প্রতি ঘৃণার বৃষ্টি। মনের আনাচে-কানাচে আজ সুজয়ের স্মৃতিগুলো ডুকরে কাঁদছে। অধিক সম্পত্তির চেয়েও যে ভালোবাসাটা বেশি জরুরি তা বোধ হয় বুঝতে পেরেছে মোহিনী। যদিও বড্ড দেরি হয়ে গেছে, নাগরিক জীবনে একটু ভালোবাসার বড্ড বেশি প্রয়োজন। অন্ধকারটা ভালো করেই নেমেছে এবার। হালকা আলোয় নিজেকে খুঁজে ফেরে মোহিনী। খুঁজে ফেরে হারানো অতীত। কপাল থেকে খসে পড়ে গোলাপের টিপ। বাতাসে এলোমেলো হয় চুলগুলো। অন্ধকারে সবুজ ঘাসের ওপর হেঁটে বেড়ায় একা একা। আকাশের তারাগুলো সাক্ষী হয়ে থাকে। আস্তে আস্তে নীরব হতে থাকে চারপাশ। নীরব হয়ে আসে মোহিনীর মনের উত্তাল সাগর। তবুও আজ অন্ধকারে হারাতে খুব ইচ্ছা করছে ওর। বাড়ি ফেরার তাড়া নেই আজ।
- See more at: http:// www.kalerkantho. com/feature/ shuvosongho/ 2014/12/06/ 159417#sthash.OH 28BKx5.dpuf
এক সন্ধেবেলায়
সোহানুর রহমান অনন্ত
কপালের লাল টিপটি ছুঁয়ে এক ফোঁটা ঘাম এসে পড়ল চোখের সামনে। আজও মোহিনী ওর স্বামীকে দেখেছে আরেকটি মেয়ের সঙ্গে। যদিও এটা এখন আর নতুন কিছু নয়। মোহিনী নিজে একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করে। তার স্বামী দেশের নামকরা ব্যবসায়ীদের একজন। অনেক টাকা। হয়তো টাকার কাছেই বিক্রি হয়ে গেছে মোহিনী। বিক্রি হয়ে গেছে ২৫টি বছর ধরে বিন্দু বিন্দু করে গড়ে ওঠা সব চাওয়া-পাওয়া। প্রতিদিন এই সময়টিতে মোহিনীর বাড়ি যাওয়ার তাড়া থাকে। কিন্তু আজ আর তাড়া নেই। এর আগেও ওর স্বামীকে অন্য মেয়ের সঙ্গে দেখেছে। শুধু দেখা নয়, আরো বেপরোয়া জীবনযাপনের ব্যাপারটিও সে জানে। কখনো এত খারাপ লাগেনি যতটা আজ লাগছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি গাছের নিচে এসে বসল মোহিনী। অনেক দিন পর আসা হলো এখানে। একটি শুকনো পাতার দিকে তাকিয়ে আবারও ভাবতে থাকে সে। ওর স্বামীর চরিত্রে যে সমস্যা আছে, সেটা টের পায় বিয়ের দেড় বছরের মাথায়। হয়তো কাজের মেয়েটি প্রেগন্যান্ট না হলে, তা-ও জানা হতো না তার। প্রথম প্রথম খারাপ লাগলেও এখন কেমন যেন বিষয়টি সয়ে গেছে। যে মনের বাঁধনে আটকায়নি, সে কী করে মুখের কথায় আটকাবে? তার স্বামী যখন পাশের রুমে অন্য মেয়েদের সঙ্গে মধুর হাসাহাসি করে, সে তখন বারান্দায় দাঁড়িয়ে একদৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার চোখ দিয়ে ঝরে পড়া অশ্রুতে চাঁদের ফিকে আলো ঝলসে ওঠে। সে একটি মোমের পুতুল-সবই জানে, তবুও কিছুই যেন জানে না। প্রতিবাদ যে কখনো করেনি এমনটি নয়, করেছিল; কিন্তু লাভ হয়নি। মানুষ অনেক সময় অভ্যাসের দাস হয়ে যায়। তার স্বামীর বেলায় তেমনটিই ঘটেছে। মাঝেমধ্যে ইচ্ছা হয় ছেড়ে চলে যাই। সে ভাবে, বিয়ে তো মানুষ জীবনে একবারই করে। তাই বাধ্য হয়েই একসময় নিশ্চুপ হয়ে গেছে। চোখটা কেমন যেন ঝাপসা হয়ে আসে মোহিনীর। একটি ছোট্ট মেয়ে এসে বেশ জোর গলায়ই বলছে, 'ফুল লাগব আফা ফুল, তাজা ফুল।' মোহিনী একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ফুলগুলোর দিকে। মোহিনীর মনে পড়ে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় সুজয়ের সঙ্গে কাটানো সময়গুলোর কথা। তখন প্রতিটি সকাল হতো নতুন একটি স্বপ্নের সূচনা দিয়ে। পাগলের মতো সুজয় তাকে ভালোবাসত। যখনই সুজয়ের সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসত, একটি গোলাপ কিনে তার খোঁপায় গুঁজে দিত। কপালে টিপ না থাকলে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে টিপ বানিয়ে দিত। যতই অভিমান করুক না কেন, সুজয়ের ভালোবাসার কাছে তার অভিমান পরাজিত হতো। সুজয় মোহিনীকে আলতো করে ছুঁয়ে বলত, 'মাঝেমধ্যে আমার মনে হয় আমার প্রতিটি রক্তের বিন্দুজুড়ে মিশে গেছ তুমি। তুমি না থাকলে কেমন যেন রক্তবিন্দুগুলো চলতে চায় না। থেমে যায়। তখন খুব কষ্ট হয় আমার। প্রচণ্ড কষ্ট হয়।' সুজয়ের চোখের দিকে তাকিয়ে লাজুক হাসি দিত মোহিনী। কিভাবে যে সময় চলে যেত! নিয়তির কাছে পরাজিত হয়ে, মা-বাবার পছন্দে সুজয়কে রিক্ত করে মোহিনী সংসার সাজায় ধনাট্য এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। সে তখনো বুঝতে পারেনি, জীবনের অঙ্কটা এভাবে ভুল হবে, যার ফল কেবল শূন্যই থেকে যাবে। এবার ঘাম নয়, চোখের কোণ থেকে অশ্রু ঝরে পড়ল মোহিনীর। ফুল হাতে মেয়েটি আবারও বলল, 'আফা নিবেন না?' 'হ্যাঁ নেব, দাম কত?' 'দুইটা ২০ টাকা।' ব্যাগ থেকে টাকা বের করে দেয়। নিজেই খোঁপায় ফুল গুঁজে দেয়। কপালে নতুন করে গোলাপের পাপড়ি ছিঁড়ে টিপ পরে।
আজ কেন যেন সুজয়কে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে মোহিনীর। আচ্ছা, সুজয় কি এখন দেখলে তাকে চিনতে পারবে? বড় একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে মোহিনী। সন্ধ্যার আঁধার নেমে এসেছে চারপাশে। মোহিনীর চোখে বৃষ্টি, নিজের প্রতি ঘৃণার বৃষ্টি। মনের আনাচে-কানাচে আজ সুজয়ের স্মৃতিগুলো ডুকরে কাঁদছে। অধিক সম্পত্তির চেয়েও যে ভালোবাসাটা বেশি জরুরি তা বোধ হয় বুঝতে পেরেছে মোহিনী। যদিও বড্ড দেরি হয়ে গেছে, নাগরিক জীবনে একটু ভালোবাসার বড্ড বেশি প্রয়োজন। অন্ধকারটা ভালো করেই নেমেছে এবার। হালকা আলোয় নিজেকে খুঁজে ফেরে মোহিনী। খুঁজে ফেরে হারানো অতীত। কপাল থেকে খসে পড়ে গোলাপের টিপ। বাতাসে এলোমেলো হয় চুলগুলো। অন্ধকারে সবুজ ঘাসের ওপর হেঁটে বেড়ায় একা একা। আকাশের তারাগুলো সাক্ষী হয়ে থাকে। আস্তে আস্তে নীরব হতে থাকে চারপাশ। নীরব হয়ে আসে মোহিনীর মনের উত্তাল সাগর। তবুও আজ অন্ধকারে হারাতে খুব ইচ্ছা করছে ওর। বাড়ি ফেরার তাড়া নেই আজ।
- See more at: http://
Aj 14-12-14 daily nayadiganta Abokash
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
সোহানুর রহমান অনন্ত
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলাদেশ যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে মেধা ও মননে, সে জন্য বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আসন্ন পরাজয়ের প্রতিহিংসা আগাম চরিতার্থ করতে তারা বেছে নিয়েছিল ঘৃণ্য এই কৌশল। লিখেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত আজ ১৪ ডিসেম্বর। গভীর বেদনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক দুই দিন আগে আসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। আমরা স্মরণ করি জাতির সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের, স্বাধীনতাসংগ্রা
মের
সূচনা থেকে শুরু করে চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক আগমুহূর্ত পর্যন্ত যাদের আমরা
হারিয়েছি। এই হারানোর তালিকা একেবারে ছোট নয়। আবার সে রাতে আমরা যাদেও
হারিয়েছি তাদের অনেকেই নিখোঁজ। পরে তাদের লাশও পাওয়া যায়নি। বহু বছর তারা
বেঁচে আছেন না মরে গেছেনÑ তা-ও জানা ছিল না। আমরা এই দিনে হারিয়েছি জাতির
শ্রেষ্ঠ সন্তান অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, জহির রায়হান, ড. মোফাজ্জল হায়দার
চৌধুরী, রাশেদুল হাসান, ড. আনোয়ার পাশা, সাংবাদিক সিরাজুদ্দিন হোসেন,
শহীদুল্লাহ কায়সার, নিজামুদ্দীন আহমেদ, গিয়াসউদ্দিন আহমদ, ডা. ফজলে রাব্বী,
ডা. আলীম চৌধুরী, নাজমুল হক, আ ন ম গোলাম মোস্তফা, সুরকার আলতাফ মাহমুদ,
সাহিত্যিক সেলিনা পারভীন, দানবীর শিানুরাগী রণদাপ্রসাদ সাহা, গোবিন্দচন্দ্র
দেব প্রমুখ। পাকিস্তান বিজয়ের ঠিক দুই দিন আগে আমাদের জাতিকে চিরতরে পঙ্গু
করে দিতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও বিভিন্ন স্থান থেকে শিক,
সাংবাদিক, চিকিৎসক, সংস্কৃতিকর্মীসহ
বিভিন্ন পেশার বরেণ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে নিদারুণ
যন্ত্রণা দিয়ে রায়েরবাজার ও মিরপুরে তাদের হত্যা করে। এই দু’টি স্থান এখন
বধ্যভূমি হিসেবে সংরতি। মুক্তিযুদ্ধের শেষলগ্নে, ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের
মধ্যে অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং
ইনস্টিটিউটে নির্যাতনের পর রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর কবরস্থানে নিয়ে
হত্যা করে। কিন্তু কেন এই নির্মম হত্যাকাণ্ড? কারণ তারা জানত তাদের চরম
বিপর্যয় আসন্ন, তারা দাঁড়িয়ে আছে পরাজয়ের কিনারে, তখনই তারা সেই পরিকল্পনা
কার্যকর করে। তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যায় চোখ বেঁধে, সবাইকে হত্যা
করে তারা স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে হত্যা করার পাশবিক আনন্দ লাভ করে।
বুদ্ধিজীবীদের হত্যা ঘটনাটির এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, দেশেরই কিছু মানুষ তা
ঘটানোর েেত্র মূল ভূমিকা পালন করে। বলার অপেক্ষা রাখে না দেশদ্রোহীদের
সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া পাকিস্তানি হানাদারদের পে এতটা ব্যাপক এবং ল্যভেদী
হত্যাযজ্ঞ চালানো সম্ভব ছিল না। শহীদুল্লাহ কায়সারের মতো সাংবাদিক-সাহিত্ যিক আমরা আর কোথায় পাবো? কে আর আমাদের উপহার দিতে পারবেন সারেং বউ বা সংশপ্তক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
বাংলার অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী সাহিত্যভারতী খেতাব পেয়েছিলেন
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। একই বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ার পাশার কবিতা
ছাপা হয়েছিল বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত কবিতা পত্রিকায়। রাইফেল রোটি আওরাত নামে
যে উপন্যাস তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলার সময়ই লিখেছেন, তার কি কোনো তুলনা হয়?
এরাই ছিলেন আমাদের জাতির গৌরব, মেধাবী মানুষ, সবচেয়ে যোগ্য পেশাজীবী। কেউ
চিকিৎসক, কেউ প্রকৌশলী, কেউ লেখক, কেউ সাংবাদিক। আলতাফ মাহমুদের মতো
সুরকার, গণসঙ্গীতশিল্পী,
যিনি ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের সুর দিয়েছিলেন,
তার বিকল্প কোথায়? কোথায় বিকল্প পাবো দানবীর শিানুরাগী রণদাপ্রসাদ সাহার?
জহির রায়হানের জীবন থেকে নেয়া ছবিটিই বলে দেয় কতটা মেধাবী ছিলেন তিনি। তাই
১৪ ডিসেম্বর মানেই বিশাল এক শূন্যতা। যে শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। এ
ছাড়া আছে গোবিন্দচন্দ্র দেব, ডা. আলীম চৌধুরী, সাংবাদিক সিরাজুদ্দিন হোসেন,
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, ডা. আজহারুল হক, অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, সাংবাদিক
সেলিনা পারভীন, হাজারও নাম। একাত্তরে যারা শহীদ হয়েছেন, আর তাদের মধ্যে
অনেককেই ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তালিকা ধরে। সবচেয়ে বড় কথা তারা জাতির
শ্রেষ্ঠসন্তানদে র শুধু মেরেই
শান্ত হয়নি। বরং তাদের মেরে ফেলার আগে যে নির্যাতন করা হয় তা গা শিউরে ওঠার
মতো। এসব নির্যাতনের অনেক গল্পই হয়তো আমাদের অজানা। তাদের পরিবার আজো সেই
নির্যাতনের মর্মব্যথার কথা ভুলতে পারে না। ভুলতে পারার কথাও না। আমাদের
হাজারও বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী হারানোর তি আমরা আজো অনুভব করি, সে অভাব পূরণ
হওয়ার নয় জানি। আমাদের যে এতটা বছর লেগে যাচ্ছে উন্নতির সিঁড়িতে পা রাখতে,
বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড তার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। জাতির এই শ্রেষ্ঠ
সন্তানদের আত্মত্যাগ আজ আমাদেরও জেগে ওঠার হাতিয়ার। তরুণ প্রজন্ম শ্রদ্ধার
সাথে তাদের স্মরণ করে সামনে এগিয়ে যাবে, এটাই হোক আজকের অঙ্গীকার। া - See
more at: http:// www.dailynayadig anta.com/ details.php?naya diganta=OTM3MjE %3D&s=MjI%3D&c= NzY%3D#sthash.z agZg2FH.dpuf
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
সোহানুর রহমান অনন্ত
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলাদেশ যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে মেধা ও মননে, সে জন্য বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আসন্ন পরাজয়ের প্রতিহিংসা আগাম চরিতার্থ করতে তারা বেছে নিয়েছিল ঘৃণ্য এই কৌশল। লিখেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত আজ ১৪ ডিসেম্বর। গভীর বেদনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক দুই দিন আগে আসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। আমরা স্মরণ করি জাতির সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের, স্বাধীনতাসংগ্রা
Monday, 1 December 2014
Aj 30-11-2014 daily nayadiganta Abokash_a amar lakha
বিশ্বের সেরা বিষধর সাপ
সোহানুর রহমান অনন্ত
সাপ নিয়ে আমাদের যতটা না কৌতূহল, তার চেয়ে বেশি ভয়। পৃথিবীতে বছরে প্রায় এক লাখ মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়। প্রায় ৬০০ প্রজাতির বিষধর সাপ রয়েছে বিশ্বে। লিখেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত
বিভিন্ন প্রজাতির বিষধর সাপ পৃথিবীময় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। বিশেষ করে এন্টার্কটিকা ছাড়া বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই জলে-স্থলে কম-বেশি সাপের বসবাস রয়েছে। অন্যান্য প্রাণী থেকে সাপ কিছুটা ভিন্ন স্থান দখল করে আছে তাদের বিষের কারণে। ছোট থেকে শুরু করে বড় যে রকম সাপই হোক না কেন, প্রচণ্ড সাহসী মানুষকে ভয় পাইয়ে দিতে পারে এক মুহূর্তে। সাপ নিয়ে আমাদের যতটা না কৌতূহল, তার চেয়ে বেশি ভয়। বিভিন্ন রকম সাপ আমাদের চোখে পড়ে। তার মধ্যে এমনও কিছু সাপ আছে যেগুলোর দৈর্ঘ্য, রঙ ও বিষের কারণে অন্যতম। পৃথিবীতে বছরে প্রায় এক লাখ মানুষ সাপের দংশনে মারা যায়। প্রায় ৬০০ প্রজাতির বিষধর সাপ রয়েছে বিশ্বে। আজ তেমনই কিছু বিষধর সাপের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো।
১. স্থল তাইপেন (Inland Taipan)
বিশ্বের বিষধর সাপ হিসেবে স্থল তাইপেন শীর্ষে রয়েছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম : Oxyuranus microlepidotus. এ সাপটি দেখতে হালকা বাদামি রঙের। গোখরো সাপের চেয়েও এর বিষ ৫০ গুণ বেশি বিষাক্ত। এই সাপ অস্ট্রেলিয়ায় বেশি চোখে পড়ে। হিংস্র সাপটি এক ছোবলে প্রায় ১১০ মিলিগ্রাম বিষ নির্গত করতে পারে। এই সাপের কামড়ে একটি মানুষের মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে ৪০-৪৫ মিনিটই যথেষ্ট।
২. টাইগার সাপ (Tiger Snake)
টাইগার সাপ লম্বায় ৭ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। এটি বিষধর সাপের মধ্যে অন্যতম স্থান দখল করে আছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম : Notechis scutatus। নদী, সমুদ্র, বিশেষ করে উপকূলীয় স্থান এরা পছন্দ করে। এর গায়ের রঙ হালকা কালচে বাদামি ও ডোরাকাটা। এর বিষ রক্ত ও মস্তিষ্ক অকার্য করে দেয়ার মতা রাখে।
৩. ডেথ অ্যাডার (Death Adder)
আপনি যদি বনজঙ্গলে শিকার করতে পছন্দ করেন, তাহলে ডেথ অ্যাডার সম্পর্কে আপনার ভালো ধারণা থাকতে হবে। কেননা, সাপটি গাছের আড়ালে শিকারের আশায় লুকিয়ে থাকে। হুট করে আপনি যদি ওর সামনে পড়েন তাহলেই হয়েছে। মুহূর্তেই আপনার ওপর আক্রমণ করে বসবে। সাপটি দেখতে যতটা শান্ত, মূলত এটি ততটা শান্ত নয়। এর গায়ের রঙ লাল ও হুলুদ মিশ্রিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম : Acanthophis antarcticus.
৪. ডেজার্ট হর্ন
ভাইপার ডেজার্ট হর্ন ভাইপার মূলত ছদ্মবেশী সাপের মধ্যে অন্যতম। এ সাপের দুই চোখের ওপর দুটো ছোট ছোট শিং থাকে। এরা কোনাকুনিভাবে লাফিয়ে উঠে কামড়ে ধরতে পারে। শিকার করার জন্য এরা ছদ্মবেশ ধরে। কিন্তু তার মধ্যে যদি কোনো মানুষ সামনে পড়ে যায়, তাহলে ভয় না পেয়ে উল্টো আক্রমণ করে বসে। মধ্যপাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় এই সাপ বেশি চোখে পড়ে।
৫. ইস্টার্ন ব্রাউন স্নেক
অত্যন্ত বিষধর এই সাপ বাড়ির আনাচে-কানাচে বা মাঠঘাটে থাকে। ইঁদুরের লোভে প্রায়ই এরা বের হয় এবং শিকার করার জন্য ওঁৎ পেতে থাকে। এদের কামড় অত্যন্ত ভয়াবহ।
৬. চাপুল আইল্যান্ডের কালো টাইগার সাপ (Chappell Island Black tiger snake)-এর নাম কালো টাইগার হলেও মূলত এর রঙটিই শুধু কালো। এর শরীরে বাঘের মতো কোনো ডোরাকাটা দাগ নেই। বিষধর এ সাপের বৈজ্ঞানিক নাম : Notechis serventyi. সাপটি খুব দ্রুত দৌড়াতে পারে এবং উপকূলীয় স্থানে বেশি বসবাস করে। এরা লম্বায় ছয় ফুটের মতো হয়।
৭. গোয়ার্ডার (Gwardar)
দুর্ধর্ষ ও আক্রমণাত্মক সাপ হলো গোয়ার্ডার। এর গায়ের রঙ বাদামি বর্ণের। এর বসবাস অস্ট্রেলিয়ায়। বিষধর সাপের মধ্যে গোয়ার্ডার অন্যতম। একটি গোয়ার্ডার এক ছোবলে প্রায় ৩ মিলিগ্রাম বিষ ছাড়তে পারে, যা রক্ত ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়ার মতা রাখে। বৈজ্ঞানিক নাম : Pseudonaja nuchalis।
৮. জংলি গোখরা (Forest Cobra)
গোখরা সাপ বনজঙ্গলে থাকতে পছন্দ করে। এরা লম্বায় অনেক বড় হয় এবং বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। এরা সহজেই এক গাছ থেকে অন্য গাছে চলাফেরা করতে পারে। এদের ফণা সব সাপের চেয়ে বড়। এরা খুব বড় শিকার করতে পারে। গোখরা সাপ একবার কামড়ে ধরলে সহজে ছাড়ে না। এটি তেমন দ্রুতগামী সাপ নয়। বনজঙ্গলেই এদের বেশি চলাফেরা। তবে ভালো খবর হলো, গোখরা সাপের বিষ স্নায়ুরোগ আলঝেইমার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে। ভারত এবং বিশ্বের অনেক দেশে গোখরা সাপ চোখে পড়ে। া
বিশ্বের সেরা বিষধর সাপ
সোহানুর রহমান অনন্ত
সাপ নিয়ে আমাদের যতটা না কৌতূহল, তার চেয়ে বেশি ভয়। পৃথিবীতে বছরে প্রায় এক লাখ মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়। প্রায় ৬০০ প্রজাতির বিষধর সাপ রয়েছে বিশ্বে। লিখেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত
বিভিন্ন প্রজাতির বিষধর সাপ পৃথিবীময় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। বিশেষ করে এন্টার্কটিকা ছাড়া বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই জলে-স্থলে কম-বেশি সাপের বসবাস রয়েছে। অন্যান্য প্রাণী থেকে সাপ কিছুটা ভিন্ন স্থান দখল করে আছে তাদের বিষের কারণে। ছোট থেকে শুরু করে বড় যে রকম সাপই হোক না কেন, প্রচণ্ড সাহসী মানুষকে ভয় পাইয়ে দিতে পারে এক মুহূর্তে। সাপ নিয়ে আমাদের যতটা না কৌতূহল, তার চেয়ে বেশি ভয়। বিভিন্ন রকম সাপ আমাদের চোখে পড়ে। তার মধ্যে এমনও কিছু সাপ আছে যেগুলোর দৈর্ঘ্য, রঙ ও বিষের কারণে অন্যতম। পৃথিবীতে বছরে প্রায় এক লাখ মানুষ সাপের দংশনে মারা যায়। প্রায় ৬০০ প্রজাতির বিষধর সাপ রয়েছে বিশ্বে। আজ তেমনই কিছু বিষধর সাপের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো।
১. স্থল তাইপেন (Inland Taipan)
বিশ্বের বিষধর সাপ হিসেবে স্থল তাইপেন শীর্ষে রয়েছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম : Oxyuranus microlepidotus. এ সাপটি দেখতে হালকা বাদামি রঙের। গোখরো সাপের চেয়েও এর বিষ ৫০ গুণ বেশি বিষাক্ত। এই সাপ অস্ট্রেলিয়ায় বেশি চোখে পড়ে। হিংস্র সাপটি এক ছোবলে প্রায় ১১০ মিলিগ্রাম বিষ নির্গত করতে পারে। এই সাপের কামড়ে একটি মানুষের মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে ৪০-৪৫ মিনিটই যথেষ্ট।
২. টাইগার সাপ (Tiger Snake)
টাইগার সাপ লম্বায় ৭ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। এটি বিষধর সাপের মধ্যে অন্যতম স্থান দখল করে আছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম : Notechis scutatus। নদী, সমুদ্র, বিশেষ করে উপকূলীয় স্থান এরা পছন্দ করে। এর গায়ের রঙ হালকা কালচে বাদামি ও ডোরাকাটা। এর বিষ রক্ত ও মস্তিষ্ক অকার্য করে দেয়ার মতা রাখে।
৩. ডেথ অ্যাডার (Death Adder)
আপনি যদি বনজঙ্গলে শিকার করতে পছন্দ করেন, তাহলে ডেথ অ্যাডার সম্পর্কে আপনার ভালো ধারণা থাকতে হবে। কেননা, সাপটি গাছের আড়ালে শিকারের আশায় লুকিয়ে থাকে। হুট করে আপনি যদি ওর সামনে পড়েন তাহলেই হয়েছে। মুহূর্তেই আপনার ওপর আক্রমণ করে বসবে। সাপটি দেখতে যতটা শান্ত, মূলত এটি ততটা শান্ত নয়। এর গায়ের রঙ লাল ও হুলুদ মিশ্রিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম : Acanthophis antarcticus.
৪. ডেজার্ট হর্ন
ভাইপার ডেজার্ট হর্ন ভাইপার মূলত ছদ্মবেশী সাপের মধ্যে অন্যতম। এ সাপের দুই চোখের ওপর দুটো ছোট ছোট শিং থাকে। এরা কোনাকুনিভাবে লাফিয়ে উঠে কামড়ে ধরতে পারে। শিকার করার জন্য এরা ছদ্মবেশ ধরে। কিন্তু তার মধ্যে যদি কোনো মানুষ সামনে পড়ে যায়, তাহলে ভয় না পেয়ে উল্টো আক্রমণ করে বসে। মধ্যপাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় এই সাপ বেশি চোখে পড়ে।
৫. ইস্টার্ন ব্রাউন স্নেক
অত্যন্ত বিষধর এই সাপ বাড়ির আনাচে-কানাচে বা মাঠঘাটে থাকে। ইঁদুরের লোভে প্রায়ই এরা বের হয় এবং শিকার করার জন্য ওঁৎ পেতে থাকে। এদের কামড় অত্যন্ত ভয়াবহ।
৬. চাপুল আইল্যান্ডের কালো টাইগার সাপ (Chappell Island Black tiger snake)-এর নাম কালো টাইগার হলেও মূলত এর রঙটিই শুধু কালো। এর শরীরে বাঘের মতো কোনো ডোরাকাটা দাগ নেই। বিষধর এ সাপের বৈজ্ঞানিক নাম : Notechis serventyi. সাপটি খুব দ্রুত দৌড়াতে পারে এবং উপকূলীয় স্থানে বেশি বসবাস করে। এরা লম্বায় ছয় ফুটের মতো হয়।
৭. গোয়ার্ডার (Gwardar)
দুর্ধর্ষ ও আক্রমণাত্মক সাপ হলো গোয়ার্ডার। এর গায়ের রঙ বাদামি বর্ণের। এর বসবাস অস্ট্রেলিয়ায়। বিষধর সাপের মধ্যে গোয়ার্ডার অন্যতম। একটি গোয়ার্ডার এক ছোবলে প্রায় ৩ মিলিগ্রাম বিষ ছাড়তে পারে, যা রক্ত ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়ার মতা রাখে। বৈজ্ঞানিক নাম : Pseudonaja nuchalis।
৮. জংলি গোখরা (Forest Cobra)
গোখরা সাপ বনজঙ্গলে থাকতে পছন্দ করে। এরা লম্বায় অনেক বড় হয় এবং বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। এরা সহজেই এক গাছ থেকে অন্য গাছে চলাফেরা করতে পারে। এদের ফণা সব সাপের চেয়ে বড়। এরা খুব বড় শিকার করতে পারে। গোখরা সাপ একবার কামড়ে ধরলে সহজে ছাড়ে না। এটি তেমন দ্রুতগামী সাপ নয়। বনজঙ্গলেই এদের বেশি চলাফেরা। তবে ভালো খবর হলো, গোখরা সাপের বিষ স্নায়ুরোগ আলঝেইমার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে। ভারত এবং বিশ্বের অনেক দেশে গোখরা সাপ চোখে পড়ে। া
Aj 01-12-2014 daily bangladesh potidina-ar rokomari rommo-ta amr lakha<< porun r biya korun
শীতে বিয়ে করার সুবিধা
দিল্লিকা লাড্ডু। হ্যাঁ ভাই ঠিকই ধরছেন। বিয়ের কথা বলা হচ্ছে। শীত আর বিয়ের সঙ্গে মুধুর একটা সম্পর্ক জড়িয়ে আছে। বুদ্ধিমানরা শীতে বিয়ে করে কেন? সেটাই জানাচ্ছেন- সোহানুর রহমান অনন্ত
* অতিরিক্ত বাজার করতে হবে না : শীত এলেই অনেকের ঠোঁট ফাটার সমস্যা হয়, আবার কারও বাতের ব্যারাম চেইত্তা যায়, অনেকের প্রেসার দিনে একশোবার আপ-ডাউন করে। আর সেই কারণে অনেক মানুষই বেশি খেতে পারে না। আর বেশি খেতে না পাড়া মানে আপনার বাড়তি বাজারের টাকাটা বেচে গেল।
* মৌসুমী ফল কেনার টেনশন নেই : গরম কালের মতো শীতে আম, লিচুর অতো বাম্পার ফলন নেই, তাই ফল কেনার ঝামেলাও নেই। একান্ত দরকার হলে ফল নয় বরং বাম্পার সবজি ফুলকপি নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে চলে যান। এত বড় সাইজের ফুল পেয়ে কার না মন ভালো হয়? পছন্দ না হলেও সমস্যা নেই রান্না করে খেয়ে ফেলা যাবে।
* কারেন্ট বিল বেঁচে যায় : শীতকালে এমনিতেই ফ্যান চলে না, তার ওপর নতুন বউ ঘরে থাকলে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর একটা তাড়া থাকে বলে গুজব আছে। তাই তাড়াতাড়ি ঘুমানো মানে, সব লাইট-টিভি বন্ধ। আর সেই কারণে আপনার বিলটাও কম আসবে। বিশ্বাস না হলে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
* মশারি টানানোর ক্যাচাল নেই : নতুন বউয়ের দিকে তাকালে এমনিতেই মাথার নেটওয়ার্ক হারিয়ে যায়। যেহেতু ঋতুটা শীতের তাই আপনার নেটওয়ার্ক হারাক আর তার-খাম্বা হারাক। আপনি যত অলসই হোন না কেন, মশারি টানানো নিয়ে আপনার কোনো চিন্তা নেই। কারণ কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমালে মশা কামড়ানোর আর কোনো চান্স নেই।
* প্রাইভেট কার খরচ বাঁচে : বিয়েবাড়িতে যেতে হলে পাবলিক একটু বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। গরম হলে তো একজনের সঙ্গে আরেকজনের গা লাগতেই লাফিয়ে উঠে। তাই গাড়ি নিতে হয় বেশি। বাট শীতকালে বিয়ে করলে আপনি, সব পাবলিকরে গাদাগাদি করে এক গাড়িতে ঢুকিয়ে দিতে পারবেন। এর জন্য বেশি গাড়ি ভাড়া করার দরকার নেই।
* চাঙ্গা ব্যবসা : শীতকালে বিয়ে হলে সবচেয়ে বেশি উপহার পাওয়া যায় কম্বল। অতিরিক্ত কম্বল বিক্রির ব্যবসা করতে পারেন।
শীতে বিয়ে করার সুবিধা
দিল্লিকা লাড্ডু। হ্যাঁ ভাই ঠিকই ধরছেন। বিয়ের কথা বলা হচ্ছে। শীত আর বিয়ের সঙ্গে মুধুর একটা সম্পর্ক জড়িয়ে আছে। বুদ্ধিমানরা শীতে বিয়ে করে কেন? সেটাই জানাচ্ছেন- সোহানুর রহমান অনন্ত
* অতিরিক্ত বাজার করতে হবে না : শীত এলেই অনেকের ঠোঁট ফাটার সমস্যা হয়, আবার কারও বাতের ব্যারাম চেইত্তা যায়, অনেকের প্রেসার দিনে একশোবার আপ-ডাউন করে। আর সেই কারণে অনেক মানুষই বেশি খেতে পারে না। আর বেশি খেতে না পাড়া মানে আপনার বাড়তি বাজারের টাকাটা বেচে গেল।
* মৌসুমী ফল কেনার টেনশন নেই : গরম কালের মতো শীতে আম, লিচুর অতো বাম্পার ফলন নেই, তাই ফল কেনার ঝামেলাও নেই। একান্ত দরকার হলে ফল নয় বরং বাম্পার সবজি ফুলকপি নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে চলে যান। এত বড় সাইজের ফুল পেয়ে কার না মন ভালো হয়? পছন্দ না হলেও সমস্যা নেই রান্না করে খেয়ে ফেলা যাবে।
* কারেন্ট বিল বেঁচে যায় : শীতকালে এমনিতেই ফ্যান চলে না, তার ওপর নতুন বউ ঘরে থাকলে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর একটা তাড়া থাকে বলে গুজব আছে। তাই তাড়াতাড়ি ঘুমানো মানে, সব লাইট-টিভি বন্ধ। আর সেই কারণে আপনার বিলটাও কম আসবে। বিশ্বাস না হলে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
* মশারি টানানোর ক্যাচাল নেই : নতুন বউয়ের দিকে তাকালে এমনিতেই মাথার নেটওয়ার্ক হারিয়ে যায়। যেহেতু ঋতুটা শীতের তাই আপনার নেটওয়ার্ক হারাক আর তার-খাম্বা হারাক। আপনি যত অলসই হোন না কেন, মশারি টানানো নিয়ে আপনার কোনো চিন্তা নেই। কারণ কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমালে মশা কামড়ানোর আর কোনো চান্স নেই।
* প্রাইভেট কার খরচ বাঁচে : বিয়েবাড়িতে যেতে হলে পাবলিক একটু বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। গরম হলে তো একজনের সঙ্গে আরেকজনের গা লাগতেই লাফিয়ে উঠে। তাই গাড়ি নিতে হয় বেশি। বাট শীতকালে বিয়ে করলে আপনি, সব পাবলিকরে গাদাগাদি করে এক গাড়িতে ঢুকিয়ে দিতে পারবেন। এর জন্য বেশি গাড়ি ভাড়া করার দরকার নেই।
* চাঙ্গা ব্যবসা : শীতকালে বিয়ে হলে সবচেয়ে বেশি উপহার পাওয়া যায় কম্বল। অতিরিক্ত কম্বল বিক্রির ব্যবসা করতে পারেন।
Thursday, 27 November 2014
Aj 01-11-2014 daily kalar kanta fun magazine gorardim-a amar lakha
সেরা সাপোর্টার প্রমাণ করবেন যেভাবে
চলছে বাংলাদেশ-জিম্বা
বুয়ে
ক্রিকেট ম্যাচ। আর এই খেলা উপলক্ষে নিজেকে যেভাবে সেরা টাইগারদের
সাপোর্টার প্রমাণ করবেন সেটাই জানাচ্ছেন সোহানুর রহমান অনন্ত এঁকেছেন মাসুম
পোস্টারিং করুন
নির্বাচন এলে আমাদের দেশের নেতারা যেমন পোস্টারিং করে, তেমনি আপনি বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়ের সঙ্গে নিজের ছবিযুক্ত পোস্টার দেয়ালে দেয়ালে টানিয়ে দিন। প্রয়োজনে ব্যানারও টানাতে পারেন রাস্তার মোড়ে মোড়ে। চাইলে বিশাল সাইজের বিলবোর্ড ভাড়া করেও পোস্টারিং করতে পারেন। প্রতিটি দেয়ালে আপনার ছবিযুক্ত পোস্টার যদি দেখা যায়, নিশ্চয়ই পাবলিক আপনাকে সেরা সাপোর্টার ভাবতে বাধ্য হবে।
ম্যাচিং করুন
বাইরে বের হওয়ার আগে নিজের পোশাক থেকে সব কিছু বাংলাদেশ দলের জার্সি কালারের সঙ্গে ম্যাচ করে ফেলুন। দরকার হলে গাড়ি-বাড়ি সব কিছু কালার করে ফেলুন। যাতে কেউ আপনার বাড়ির সামনে দিয়ে গেলে বা ভেতরে ঢুকলে বুঝতেই না পারে এটা বাড়ি না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। আমার মনে হয়, এমনটা করতে পারলে অবশ্যই নিজেকে সেরা সাপোর্টার হিসেবে প্রমাণ করতে পারবেন।
উপহার দিন
যারা আপনার সঙ্গে বাংলাদেশ দলকে সাপোর্ট করবে, তাদের একটা করে স্ক্র্যাচ কার্ড দিন। যাতে বিভিন্ন রকমের পুরস্কার পাওয়া যাবে। সঙ্গে এক কাপ করে চা ফ্রি তো আছেই। এমনটা করতে পারলে সবার মুখে মুখে সেরা সাপোর্টার হিসেবে আপনার নাম রটে যাবে।
নাম চেঞ্জ করে ফেলুন
সাময়িকভাবে আকিকা ছাড়াই নিজের পছন্দের সাকিব কিংবা মাশরাফির নাম নিজের নামের জায়গায় বসিয়ে দিন এবং সবাইকে বলুন এই এক মাস আপনাকে এই নামে ডাকতে। ফেসবুকেও একই কাজ করতে পারেন। রাস্তাঘাটে সবাই যখন আপনাকে সেই নামে ডাকবে, আশপাশের পাবলিক অবশ্যই আপনাকে গ্রেট সাপোর্টার মনে করবে।
আয়োজন করুন
ফুটবল খেলার মতো ক্রিকেট খেলা দেখার জন্যও বড় মাপের আয়োজন করুন। এলাকায় ঘুরে ঘুরে মাইকিং করুন। জানিয়ে দিন, অমুক ভাইয়ের সৌজন্যে বড় পর্দায় খেলা দেখানোর আয়োজন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসার ব্যবস্থা করা আছে। দেখবেন, আপনার আয়োজনে মানুষের ঢল নেমেছে। ভবিষ্যতে রাজনীতি করার ইচ্ছা থাকলে খেলা শেষে একটু লেকচারও মেরে দিতে পারেন।
অনেকগুলো টিকিট কিনুন
খেলা দেখতে গিয়ে একসঙ্গে অনেকগুলো টিকিট কেটে ফেলুন এবং ফাঁকা সিটগুলোর মাঝের সিটে বসে আরাম করে খেলা দেখুন। পাবলিক যখন দেখবে আপনি একাই এতগুলো টিকিট কিনে খেলা দেখছেন, তখন আপনাকে সেরা সাপোর্টার ভাববেই।
সেরা সাপোর্টার প্রমাণ করবেন যেভাবে
চলছে বাংলাদেশ-জিম্বা
পোস্টারিং করুন
নির্বাচন এলে আমাদের দেশের নেতারা যেমন পোস্টারিং করে, তেমনি আপনি বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়ের সঙ্গে নিজের ছবিযুক্ত পোস্টার দেয়ালে দেয়ালে টানিয়ে দিন। প্রয়োজনে ব্যানারও টানাতে পারেন রাস্তার মোড়ে মোড়ে। চাইলে বিশাল সাইজের বিলবোর্ড ভাড়া করেও পোস্টারিং করতে পারেন। প্রতিটি দেয়ালে আপনার ছবিযুক্ত পোস্টার যদি দেখা যায়, নিশ্চয়ই পাবলিক আপনাকে সেরা সাপোর্টার ভাবতে বাধ্য হবে।
ম্যাচিং করুন
বাইরে বের হওয়ার আগে নিজের পোশাক থেকে সব কিছু বাংলাদেশ দলের জার্সি কালারের সঙ্গে ম্যাচ করে ফেলুন। দরকার হলে গাড়ি-বাড়ি সব কিছু কালার করে ফেলুন। যাতে কেউ আপনার বাড়ির সামনে দিয়ে গেলে বা ভেতরে ঢুকলে বুঝতেই না পারে এটা বাড়ি না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। আমার মনে হয়, এমনটা করতে পারলে অবশ্যই নিজেকে সেরা সাপোর্টার হিসেবে প্রমাণ করতে পারবেন।
উপহার দিন
যারা আপনার সঙ্গে বাংলাদেশ দলকে সাপোর্ট করবে, তাদের একটা করে স্ক্র্যাচ কার্ড দিন। যাতে বিভিন্ন রকমের পুরস্কার পাওয়া যাবে। সঙ্গে এক কাপ করে চা ফ্রি তো আছেই। এমনটা করতে পারলে সবার মুখে মুখে সেরা সাপোর্টার হিসেবে আপনার নাম রটে যাবে।
নাম চেঞ্জ করে ফেলুন
সাময়িকভাবে আকিকা ছাড়াই নিজের পছন্দের সাকিব কিংবা মাশরাফির নাম নিজের নামের জায়গায় বসিয়ে দিন এবং সবাইকে বলুন এই এক মাস আপনাকে এই নামে ডাকতে। ফেসবুকেও একই কাজ করতে পারেন। রাস্তাঘাটে সবাই যখন আপনাকে সেই নামে ডাকবে, আশপাশের পাবলিক অবশ্যই আপনাকে গ্রেট সাপোর্টার মনে করবে।
আয়োজন করুন
ফুটবল খেলার মতো ক্রিকেট খেলা দেখার জন্যও বড় মাপের আয়োজন করুন। এলাকায় ঘুরে ঘুরে মাইকিং করুন। জানিয়ে দিন, অমুক ভাইয়ের সৌজন্যে বড় পর্দায় খেলা দেখানোর আয়োজন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসার ব্যবস্থা করা আছে। দেখবেন, আপনার আয়োজনে মানুষের ঢল নেমেছে। ভবিষ্যতে রাজনীতি করার ইচ্ছা থাকলে খেলা শেষে একটু লেকচারও মেরে দিতে পারেন।
অনেকগুলো টিকিট কিনুন
খেলা দেখতে গিয়ে একসঙ্গে অনেকগুলো টিকিট কেটে ফেলুন এবং ফাঁকা সিটগুলোর মাঝের সিটে বসে আরাম করে খেলা দেখুন। পাবলিক যখন দেখবে আপনি একাই এতগুলো টিকিট কিনে খেলা দেখছেন, তখন আপনাকে সেরা সাপোর্টার ভাববেই।
আজ ০৯-১১-১৪ দৈনিক নয়াদিগন্তের অবকাশে আমার লেখা
শীতে কোথায় বেড়াবেন
সোহানুর রহমান অনন্ত
আমরা ভ্রমণ বলতেই কক্সবাজার বুঝি। কিন্তু আপনি হয়তো জানেনই না আপনার জেলাতেই আছে দেখার মতো অনেক কিছু। তাই অনেক কম খরচে কাছের জায়গাটাই ঘুরতে পারেন পরিবার-পরিজন নিয়ে।
লিখেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত
শীত মানেই ঘুরে বেড়ানোর এক উপযুক্ত সময়। বিশেষ করে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এই সময়টা সবচেয়ে উপযুক্ত। ছেলেমেয়ের স্কুল-কলেজের পরীক্ষাও শেষ হয়ে যায়। তাই কিছুটা অবসরও পাওয়া যায়। সারা বছর বিভিন্ন কাজের চাপে জীবন যখন একঘেয়েমি হয়ে আসে। মন চায় একটু ভিন্নতা। তাই শীত এলেই বেরিয়ে পড়েন ভ্রমণপিপাসুরা। ঘুরে বেড়ানো এক ধরনের শখ। আবার ডাক্তারি মতে, নির্দিষ্ট সময় পরপর সব মানুষেরই বেড়ানো উচিত। এতে শরীর-মন উভয়ই ভালো থাকে। এ ছাড়া এর মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন সহজ হয়ে যায়। অনেক কিছু জানা হয়ে যায়। এ কারণে বছর শেষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা
ন
আয়োজন করে শিক্ষাসফরের। অনেকে ভ্রমণের জন্য স্থান নির্ধারণে বিপাকে পড়েন।
কোথায় যাবেন? কেন যাবেন? কিভাবে যাবেন? এ প্রশ্নই যেন ঘুরপাক খায়। এ ছাড়া
আমাদের দেশে কোথায় কোনো দর্শনীয় স্থান আছে তা-ও ভালোভাবে জানা হয়ে ওঠে না।
তাই দেখা হয় না অনেক কিছুই। কিন্তু স্বল্প খরচে এই শীতে আপনিও ঘুরে আসতে
পারেন আপনার পছন্দের স্থানে। ঘুরে বেড়ানোর জন্য আগে যা প্রয়োজন তা হলো,
মানসিক প্রস্তুতি। আবার নিজস্ব পছন্দ অপছন্দের ব্যাপারটাও মুখ্য। কেউ সাগর
পছন্দ করেন তো কেউ পছন্দ করেন পাহাড়। কেউ আবার প্রাচীন ইতিহাসের দিকে ঝুঁকে
যান। আসলে বেড়ানোর আনন্দ হচ্ছে নিজের ওপর। সব কিছুই আপনাকে মুগ্ধ করবে যদি
আপনি সেভাবেই প্রস্তুতি নেন। আমাদের দেশেই দেখার মতো অনেক কিছু আছে। যদিও
আমরা ভ্রমণ বলতেই কক্সবাজার বুঝি। কিন্তু আপনি হয়তো জানেনই না আপনার
জেলাতেই আছে দেখার মতো অনেক কিছু। তাই অনেক কম খরচে কাছের জায়গাটাই ঘুরতে
পারেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। উন্নত বিশ্বে তো শিক্ষার্থীরা সামার ভ্যাকেশনে
পার্টটাইম জব করে শুধু ভ্রমণের জন্য। যদিও আমাদের দেশে এই সংস্কৃতিটা এখনো
সেভাবে গড়ে ওঠেনি। বই পড়ার ক্ষেত্রেও আমরা তাই অনেক পিছিয়ে। তাদের দেশে
ভ্রমণ মানেই জ্ঞান আরোহণ। এ ছাড়া বেড়ানোর সময় তারা প্রচুর বই সাথে নিয়ে
যায়। তবে আমাদের দেশেও এখন সংস্কৃতি বদলে যাচ্ছে। জ্ঞান আরোহণের জন্য আমরাও
বদলে যাচ্ছি সময়ের সাথে।
বাংলার সব জেলাই সুন্দর। একেবারে ছবির মতো। কিন্তু নানান ব্যস্ততার মাঝে ঘুরে বেড়ানো আর হয়ে ওঠে না। যদিও বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায় ভ্রমণপিপাসুদের সংখ্যা বেড়েছে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা
এবং নিরাপত্তা পেলে এই সংখ্যা আরো বাড়বে। তবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না
যে আমরা বিশ্বের কাছে আমাদের পর্যটন শিল্প সেভাবে তুলে ধরতে পারিনি। যদিও
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্র
সৈকত কক্সবাজার আমাদের দেশেই অবস্থিত। কিন্তু এই শীতে বেড়াবেন কোথায়?
একেবারে পরিচিত বেশি ভ্রমণের স্থান কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান,
খাগড়াছড়ি বা সিলেট। কিন্তু এ ছাড়া বাংলাদেশে দেখার মতো অনেক জায়গা আছে।
এখানে তুলনামূলক কম পরিচিত বেড়ানোর স্পটের তালিকা দেয়া হলোÑ
নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
বাংলার তাজমহল, সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর, রূপগঞ্জ রাজবাড়ী।
মুন্সীগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
ইদ্রাকপুর দুর্গ, প্রাচীন বৌদ্ধবিহার।
মানিকগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
বালিয়াটি জমিদারবাড়ী
নরসিংদীর দর্শনীয় স্থান
উয়ারী বটেশ্বর, লটকন বাগান।
গাজীপুরের দর্শনীয় স্থান
ভাওয়াল রাজবাড়ি, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, সফিপুর আনসার একাডেমি, জাগ্রত চৌরঙ্গী।
কিশোরগঞ্জ দর্শনীয় স্থান
ঐতিহাসিক জঙ্গলবাড়ী, দিল্লীর আখড়া, শোলাকিয়া ঈদগাহ ও হাওর অঞ্চল।
ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান
কাজী নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত ত্রিশাল, শিমলা দারোগাবাড়ি, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, জাদুঘর, সোমেশ্বর বাবুর রাজবাড়ি, কিশোর রায় চৌধুরীর ভবন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আলেক জান্ডার ক্যাসেল, আনন্দমোহন কলেজ, দুর্গাবাড়ী, কেল্লা তাজপুর ইত্যাদি।
টাঙ্গাইলের দর্শনীয় স্থান
রসনাবিলাসীদের জন্য উপভোগ্য সুস্বাদু চমচম (পোড়াবাড়ি), আতিয়া মসজিদ, শাহ্ আদম কাশ্মিরির মাজার- দেলদুয়ার, পরীর দালান, খামার পাড়া মসজিদ ও মাজার- গোপালপুর, ঝরোকা, সাগরদিঘি, পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি, বঙ্গবন্ধু সেতু, এলেঙ্গা রিসোর্ট, যমুনা রিসোর্ট।
শেরপুরের দর্শনীয় স্থান
মধুটিলা ইকোপার্ক, গজনী ইকো পার্ক, ঘাগড়া লঙ্কার মসজিদ, রাজার পাহাড়, নাকুগাঁও স্থলবন্দর, বারোমারী ধর্মপল্লী, নকলার নারায়ণখোলা বেড়শিমুলগাছ, ঝিনাইগাতীর মরিয়মনগর ধর্মপল্লী, আড়াইআনি জমিদারদের শীষ মহল।
জামালপুরের দর্শনীয় স্থান
দেওয়ানগঞ্জ সুগার মিলস, লাউচাপড়া পিকনিক স্পট, গান্ধী আশ্রম, দারকি, যমুনা ফার্টিলাইজার।
নেত্রকোনার দর্শনীয় স্থান
এঁকেবেঁকে কংশ ও সোমেশ্বরী নদী, বিজয়পুর চিনামাটি পাহাড়, রানীখং মিশন, টংক শহীদ স্মৃতি সৌধ, কমলা রানী দীঘির ইতিহাস, সাত শহীদের মাজার, কলমাকান্দা, হজরত শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী (র:)-এর মাজার শরীফ, সুসং দুর্গাপুরের জমিদারবাড়ি, টংক আন্দোলনের স্মৃতিসৌধ, সাধু যোসেফের ধর্মপল্লী, রাশমণি স্মৃতিসৌধ, কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কমপ্লেক্স, নলিয়া জোড়বাংলা মন্দির।
ফরিদপুরের দর্শনীয় স্থান
মথুরাপুরের দেউল, কবি জসীমউদ্দীনের বাড়ি।
গোপালগঞ্জ দর্শনীয় স্থান
বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ, কোর্ট মসজিদ, বিলরুট ক্যানেল, কোটাল দুর্গ, বহলতলী মসজিদ।
শরীয়তপুরের দর্শনীয় স্থান
ফতেহজংপুর দুর্গ, মুঘল আমলের বিলাসখান মসজিদ, মহিষের দীঘি, দণি বালুচর মসজিদ, হাটুরিয়া জমিদারবাড়ি, মানসিংহের বাড়ি।
রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান
পদ্মাতীরে নির্মিত শাহ মখদুমের মাজার, পুঠিয়া রাজবাড়ি, শিবমন্দির, বড়কুঠি, গোবিন্দ মন্দির, গোপাল মন্দির, দোলমঞ্চ, লালকুঠি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, শিরোইল মন্দির, বরেন্দ্র জাদুঘর, বাঘমারা রাজবাড়ি, ভুবনেশ্বর মন্দির, রাধাকৃষ্ণের ঝুলন মন্দির ইত্যাদি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে র দর্শনীয় স্থান
নুসরাত শাহ্ নির্মিত সোনা মসজিদ, ঐতিহাসিক কানসাট। এ ছাড়া মহানন্দা নদী পার হওয়ার পরই পথের দুই ধারে তরুণ বাহারি আমের বাগান।
পাবনার দর্শনীয় স্থান
কিংবদন্তি নায়িকা সুচিত্রা সেনের বাড়ি, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন সেতু, ঈশ্বরদী ইপিজেড, নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল এবং ডাল ও আখ গবেষণা কেকোর্ট বিল্ডিং, অনুকূল ঠাকুরের আশ্রম, জোড়বাংলা, বিখ্যাত মানসিক হাসপাতাল, রায় বাহাদুরের গেটসহ অনেক পুরনো কীর্তি।
সিরাজগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদচিহ্ন পড়েছে সিরাজগঞ্জে শাহজাদপুরের কাচারি বাড়িতে। সিরাজগঞ্জের বড় আকর্ষণ যমুনা সেতু, বাণীকুঞ্জ, সিরাজীর মাজার, লোহারপুল, মক্কা আউলিয়া মসজিদ, নবরতœ মন্দির, শিবমন্দির জয়সাগর, মহাপুকুর আখড়া, এনায়েতপুর পীর সাহেবের মসজিদ। মিল্কভিটা, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তের ইকোপার্ক, বাঘাবাড়ী বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, বাঘাবাড়ী নদীবন্দর।
নওগাঁর দর্শনীয় স্থান
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য পতিসর, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, গদ্দল মহাবিহার, পতœীতলায় অবস্থিত দিব্যক স্মৃতিস্তম্ভ, নসরত শাহ নির্মিত কুশুম্বা মসজিদ, করোনেশন থিয়েটার, অনিমেষ লাহিড়ীর বাড়ি, পালবংশের স্মৃতি বহনকারী সাঁওতালপাড়া।
নাটোরের দর্শনীয় স্থান
চলনবিল, চলনবিল জাদুঘর, হাইতি বিল, নাটোর রাজবাড়ি, উত্তরা গণভবন, দয়ারামপুর রাজবাড়ি, লালপুরের বুধপাড়া কালীমন্দির।
বগুড়ার দর্শনীয় স্থান
ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়, শীলাদেবীর ঘাট, গোবিন্দভিটা, বেহুলা লখিন্দরের বাসরঘর। জয়পুরহাটের দর্শনীয় স্থান
আছরাঙ্গা দিঘি, লাকমা রাজবাড়ি, হিন্দা কসবা শাহী মসজিদ, শামুকখোল গ্রামতেলাল।
রংপুরের দর্শনীয় স্থান
কারমাইকেল কলেজ, তাজহাট জমিদারবাড়ি, মীরগঞ্জের দীঘি, লালবিবির সমাধিসৌধ, ফকিরনেতা মদিনীর কবর ও মোগল আমলের মসজিদ, মহীয়সী বেগম রোকেয়ার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ, শানবাঁধানো দীঘি, পীরগঞ্জের নীল দরিয়ার বিল, তারাবিবির মসজিদ, গঙ্গাচরার কুঠিপাড়ায় নীলকুঠি, পীরগাছায় দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়ি, ইটাকুমরার শিবেন্দ্র রায়ের রাজবাড়ি।
লালমনিরহাটের দর্শনীয় স্থান
তিস্তা ব্যারাজ, তিন বিঘা করিডোর ও দহগ্রাম-আংগরপোত া ছিটমহল, বুড়িমারী স্থলবন্দর, তিস্তা রেল সেতু।
ঠাকুরগাঁওয়ের দর্শনীয় স্থান
জামালপুর জমিদারবাড়ি জামে মসজিদ, রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি, হরিণমারীর আমগাছ, রাউতনগর সাঁওতাল পল্লী, গোরকুই কূপ।
পঞ্চগড়ের দর্শনীয় স্থান
বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, তেঁতুলিয়া, রকস মিউজিয়াম, মির্জাপুর শাহী মসজিদ আটোয়ারী, ভিতরগড় মহারাজার দীঘি, সমতল চা বাগান, দেবীগঞ্জের মহারাজার দীঘি ও ভিতরগড় দুর্গানগরী, আটোয়ারীর মির্জাপুরের ইমামবাড়া এবং তেঁতুলিয়ার জেলা পরিষদ ডাকবাংলো।
নীলফামারীর দর্শনীয় স্থান
সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ, দুন্দিবাড়ী স্লুইস গেট, নীলফামারী জাদুঘর, নীলসাগর, হরিশচন্দ্রের পাঠ, ধর্মপালের গড়, কুন্দপুকুর মাজার, ময়নামতির দুর্গ, ভীমের মায়ের চুলা ইত্যাদি।
কুড়িগ্রামের দর্শনীয় স্থান
চিলমারীর বন্দর, সাতভিটায় পাখির ভিটারাজারহাট, উলিপুরের মুন্সীবাড়ি, চান্দামারী মসজিদ, বঙ্গসোনাহাট ব্রিজ। া
শীতে কোথায় বেড়াবেন
সোহানুর রহমান অনন্ত
আমরা ভ্রমণ বলতেই কক্সবাজার বুঝি। কিন্তু আপনি হয়তো জানেনই না আপনার জেলাতেই আছে দেখার মতো অনেক কিছু। তাই অনেক কম খরচে কাছের জায়গাটাই ঘুরতে পারেন পরিবার-পরিজন নিয়ে।
লিখেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত
শীত মানেই ঘুরে বেড়ানোর এক উপযুক্ত সময়। বিশেষ করে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এই সময়টা সবচেয়ে উপযুক্ত। ছেলেমেয়ের স্কুল-কলেজের পরীক্ষাও শেষ হয়ে যায়। তাই কিছুটা অবসরও পাওয়া যায়। সারা বছর বিভিন্ন কাজের চাপে জীবন যখন একঘেয়েমি হয়ে আসে। মন চায় একটু ভিন্নতা। তাই শীত এলেই বেরিয়ে পড়েন ভ্রমণপিপাসুরা। ঘুরে বেড়ানো এক ধরনের শখ। আবার ডাক্তারি মতে, নির্দিষ্ট সময় পরপর সব মানুষেরই বেড়ানো উচিত। এতে শরীর-মন উভয়ই ভালো থাকে। এ ছাড়া এর মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন সহজ হয়ে যায়। অনেক কিছু জানা হয়ে যায়। এ কারণে বছর শেষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা
বাংলার সব জেলাই সুন্দর। একেবারে ছবির মতো। কিন্তু নানান ব্যস্ততার মাঝে ঘুরে বেড়ানো আর হয়ে ওঠে না। যদিও বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায় ভ্রমণপিপাসুদের সংখ্যা বেড়েছে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা
নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
বাংলার তাজমহল, সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর, রূপগঞ্জ রাজবাড়ী।
মুন্সীগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
ইদ্রাকপুর দুর্গ, প্রাচীন বৌদ্ধবিহার।
মানিকগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
বালিয়াটি জমিদারবাড়ী
নরসিংদীর দর্শনীয় স্থান
উয়ারী বটেশ্বর, লটকন বাগান।
গাজীপুরের দর্শনীয় স্থান
ভাওয়াল রাজবাড়ি, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, সফিপুর আনসার একাডেমি, জাগ্রত চৌরঙ্গী।
কিশোরগঞ্জ দর্শনীয় স্থান
ঐতিহাসিক জঙ্গলবাড়ী, দিল্লীর আখড়া, শোলাকিয়া ঈদগাহ ও হাওর অঞ্চল।
ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান
কাজী নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত ত্রিশাল, শিমলা দারোগাবাড়ি, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, জাদুঘর, সোমেশ্বর বাবুর রাজবাড়ি, কিশোর রায় চৌধুরীর ভবন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আলেক জান্ডার ক্যাসেল, আনন্দমোহন কলেজ, দুর্গাবাড়ী, কেল্লা তাজপুর ইত্যাদি।
টাঙ্গাইলের দর্শনীয় স্থান
রসনাবিলাসীদের জন্য উপভোগ্য সুস্বাদু চমচম (পোড়াবাড়ি), আতিয়া মসজিদ, শাহ্ আদম কাশ্মিরির মাজার- দেলদুয়ার, পরীর দালান, খামার পাড়া মসজিদ ও মাজার- গোপালপুর, ঝরোকা, সাগরদিঘি, পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি, বঙ্গবন্ধু সেতু, এলেঙ্গা রিসোর্ট, যমুনা রিসোর্ট।
শেরপুরের দর্শনীয় স্থান
মধুটিলা ইকোপার্ক, গজনী ইকো পার্ক, ঘাগড়া লঙ্কার মসজিদ, রাজার পাহাড়, নাকুগাঁও স্থলবন্দর, বারোমারী ধর্মপল্লী, নকলার নারায়ণখোলা বেড়শিমুলগাছ, ঝিনাইগাতীর মরিয়মনগর ধর্মপল্লী, আড়াইআনি জমিদারদের শীষ মহল।
জামালপুরের দর্শনীয় স্থান
দেওয়ানগঞ্জ সুগার মিলস, লাউচাপড়া পিকনিক স্পট, গান্ধী আশ্রম, দারকি, যমুনা ফার্টিলাইজার।
নেত্রকোনার দর্শনীয় স্থান
এঁকেবেঁকে কংশ ও সোমেশ্বরী নদী, বিজয়পুর চিনামাটি পাহাড়, রানীখং মিশন, টংক শহীদ স্মৃতি সৌধ, কমলা রানী দীঘির ইতিহাস, সাত শহীদের মাজার, কলমাকান্দা, হজরত শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী (র:)-এর মাজার শরীফ, সুসং দুর্গাপুরের জমিদারবাড়ি, টংক আন্দোলনের স্মৃতিসৌধ, সাধু যোসেফের ধর্মপল্লী, রাশমণি স্মৃতিসৌধ, কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কমপ্লেক্স, নলিয়া জোড়বাংলা মন্দির।
ফরিদপুরের দর্শনীয় স্থান
মথুরাপুরের দেউল, কবি জসীমউদ্দীনের বাড়ি।
গোপালগঞ্জ দর্শনীয় স্থান
বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ, কোর্ট মসজিদ, বিলরুট ক্যানেল, কোটাল দুর্গ, বহলতলী মসজিদ।
শরীয়তপুরের দর্শনীয় স্থান
ফতেহজংপুর দুর্গ, মুঘল আমলের বিলাসখান মসজিদ, মহিষের দীঘি, দণি বালুচর মসজিদ, হাটুরিয়া জমিদারবাড়ি, মানসিংহের বাড়ি।
রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান
পদ্মাতীরে নির্মিত শাহ মখদুমের মাজার, পুঠিয়া রাজবাড়ি, শিবমন্দির, বড়কুঠি, গোবিন্দ মন্দির, গোপাল মন্দির, দোলমঞ্চ, লালকুঠি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, শিরোইল মন্দির, বরেন্দ্র জাদুঘর, বাঘমারা রাজবাড়ি, ভুবনেশ্বর মন্দির, রাধাকৃষ্ণের ঝুলন মন্দির ইত্যাদি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে
নুসরাত শাহ্ নির্মিত সোনা মসজিদ, ঐতিহাসিক কানসাট। এ ছাড়া মহানন্দা নদী পার হওয়ার পরই পথের দুই ধারে তরুণ বাহারি আমের বাগান।
পাবনার দর্শনীয় স্থান
কিংবদন্তি নায়িকা সুচিত্রা সেনের বাড়ি, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন সেতু, ঈশ্বরদী ইপিজেড, নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল এবং ডাল ও আখ গবেষণা কেকোর্ট বিল্ডিং, অনুকূল ঠাকুরের আশ্রম, জোড়বাংলা, বিখ্যাত মানসিক হাসপাতাল, রায় বাহাদুরের গেটসহ অনেক পুরনো কীর্তি।
সিরাজগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদচিহ্ন পড়েছে সিরাজগঞ্জে শাহজাদপুরের কাচারি বাড়িতে। সিরাজগঞ্জের বড় আকর্ষণ যমুনা সেতু, বাণীকুঞ্জ, সিরাজীর মাজার, লোহারপুল, মক্কা আউলিয়া মসজিদ, নবরতœ মন্দির, শিবমন্দির জয়সাগর, মহাপুকুর আখড়া, এনায়েতপুর পীর সাহেবের মসজিদ। মিল্কভিটা, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তের ইকোপার্ক, বাঘাবাড়ী বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, বাঘাবাড়ী নদীবন্দর।
নওগাঁর দর্শনীয় স্থান
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য পতিসর, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, গদ্দল মহাবিহার, পতœীতলায় অবস্থিত দিব্যক স্মৃতিস্তম্ভ, নসরত শাহ নির্মিত কুশুম্বা মসজিদ, করোনেশন থিয়েটার, অনিমেষ লাহিড়ীর বাড়ি, পালবংশের স্মৃতি বহনকারী সাঁওতালপাড়া।
নাটোরের দর্শনীয় স্থান
চলনবিল, চলনবিল জাদুঘর, হাইতি বিল, নাটোর রাজবাড়ি, উত্তরা গণভবন, দয়ারামপুর রাজবাড়ি, লালপুরের বুধপাড়া কালীমন্দির।
বগুড়ার দর্শনীয় স্থান
ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়, শীলাদেবীর ঘাট, গোবিন্দভিটা, বেহুলা লখিন্দরের বাসরঘর। জয়পুরহাটের দর্শনীয় স্থান
আছরাঙ্গা দিঘি, লাকমা রাজবাড়ি, হিন্দা কসবা শাহী মসজিদ, শামুকখোল গ্রামতেলাল।
রংপুরের দর্শনীয় স্থান
কারমাইকেল কলেজ, তাজহাট জমিদারবাড়ি, মীরগঞ্জের দীঘি, লালবিবির সমাধিসৌধ, ফকিরনেতা মদিনীর কবর ও মোগল আমলের মসজিদ, মহীয়সী বেগম রোকেয়ার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ, শানবাঁধানো দীঘি, পীরগঞ্জের নীল দরিয়ার বিল, তারাবিবির মসজিদ, গঙ্গাচরার কুঠিপাড়ায় নীলকুঠি, পীরগাছায় দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়ি, ইটাকুমরার শিবেন্দ্র রায়ের রাজবাড়ি।
লালমনিরহাটের দর্শনীয় স্থান
তিস্তা ব্যারাজ, তিন বিঘা করিডোর ও দহগ্রাম-আংগরপোত
ঠাকুরগাঁওয়ের দর্শনীয় স্থান
জামালপুর জমিদারবাড়ি জামে মসজিদ, রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি, হরিণমারীর আমগাছ, রাউতনগর সাঁওতাল পল্লী, গোরকুই কূপ।
পঞ্চগড়ের দর্শনীয় স্থান
বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, তেঁতুলিয়া, রকস মিউজিয়াম, মির্জাপুর শাহী মসজিদ আটোয়ারী, ভিতরগড় মহারাজার দীঘি, সমতল চা বাগান, দেবীগঞ্জের মহারাজার দীঘি ও ভিতরগড় দুর্গানগরী, আটোয়ারীর মির্জাপুরের ইমামবাড়া এবং তেঁতুলিয়ার জেলা পরিষদ ডাকবাংলো।
নীলফামারীর দর্শনীয় স্থান
সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ, দুন্দিবাড়ী স্লুইস গেট, নীলফামারী জাদুঘর, নীলসাগর, হরিশচন্দ্রের পাঠ, ধর্মপালের গড়, কুন্দপুকুর মাজার, ময়নামতির দুর্গ, ভীমের মায়ের চুলা ইত্যাদি।
কুড়িগ্রামের দর্শনীয় স্থান
চিলমারীর বন্দর, সাতভিটায় পাখির ভিটারাজারহাট, উলিপুরের মুন্সীবাড়ি, চান্দামারী মসজিদ, বঙ্গসোনাহাট ব্রিজ। া
আজ ০৯-১১-১৪ দৈনিক নয়াদিগন্তের অবকাশে আমার লেখা
হেমন্তে নবান্ন উৎসব
সোহানুর রহমান
হেমন্তকে হচ্ছে শীতের পূর্বাভাস। ছয় ঋতুর এই দেশে প্রত্যেকটি ঋতুই আলাদা আলাদা রূপ বহন করে। এর মধ্যে হেমন্ত একেবারেই ভিন্ন একটি ঋতু। এর মাঝে যেমন বর্ষার লাবণ্যতা নেই, তেমনি নেই বসন্তের মতো বাহারি রূপ। হেমন্তের রঙ ধূসর। সাধারণত হেমন্তে দেখা যায় অখণ্ড নীল আকাশ। ভোরের নরম আলোয় টুপটাপ শিশির ঝরার শব্দ। মিষ্টি সোনালি রোদে মাঠজুড়ে আলো আঁধারের লুকোচুরি। দুপুরের রোদের স্নিগ্ধতা, সন্ধ্যায় বাঁশঝাড়ে পাখির কলকাকলি ভিন্নমাত্রার সৃষ্টি করে। কবির ভাষায় বলতে গেলে, হেমন্ত প্রিয়ার বাধনহারা চুলের মতোই উদাসীন। তাই একে বলা হয় অনুভবের ঋতু।
হেমন্তের আকাশ মেঘমুক্ত থাকে, তাই রাতের বেলা জ্যোৎস্নামাখা আকাশটা একেবারেই অন্য রকম পরিবেশ সৃষ্টি করে। গরমের তীব্রতা কমে গিয়ে শীত পড়তে শুরু করে। সকালবেলা দূরের গ্রামগুলো কুয়াশায় ঢেকে যায়। গাছিরা খেজুরগাছের মাথায় নরম অংশ কেটে প্রস্তুত রাখে রস সংগ্রহ করার জন্য। এ ছাড়া পাখিদের মিষ্টি সুর মন জুড়িয়ে দেয়। এক সময় বাংলা বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। কারণ ধান কাটার হিসেব ঠিকমতো রাখতেই বাংলা মাসের সূচনা হয়েছিল। হেমন্তের ফসল কাটাকে কেন্দ্র করেই নবান্ন উৎসবের সূচনা হয়। কৃষাণীরা নিজ আঙিনা লেপেপুঁছে পরিষ্কার করে নতুন ধান তোলার জন্য। কৃষকের চোখে নতুন ধানের রঙিন স্বপ্ন। কার্তিকের পর আসে সার্বজনীন লৌকিক উৎসব নবান্ন। বাড়িতে বাড়িতে রাতজেগে ধান নেয় কৃষক ও কৃষাণীরা। গোলা ভরে ওঠে নতুন ধানে। এ সময় তারা স্থানীয় বিভিন্ন গান করে থাকে। গান আর ধান নেয়ার শব্দ, দূর-দূরান্ত থেকে শোনা যায়। নতুন চালের ফিরনি-পায়েশ অথবা ীর তৈরি করে পাড়া-প্রতিবেশী কিংবা আত্মীয়স্বজনকে খাওয়ানো হয়। বাড়িতে বাড়িতে তখন নতুন চালের মিষ্টি গন্ধ। নবান্নে জামাতাকে নিমন্ত্রণ করা হয়। মেয়েকেও ‘নাইওর’ আনা হয়। গ্রাম্যজনপদে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় নবান্নের ধান তোলার মাধ্যমে। এ সময় গ্রামের পথে-প্রান্তরে অনেক রকম মেলা বসে, দূর-দূরান্ত থেকে সার্কাস পার্টি আসে, হয় যাত্রাপালা। দেশীয় নৃত্য, গানবাজনাসহ আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এ ছাড়া লাঠিখেলা, বাউলগান, নাগরদোলা, বাঁশি, শখের চুড়ি ইত্যাদি চোখে পড়ে। এ ঋতুতে ফোটে গন্ধরাজ, মল্লিকা, শিউলি, কামিনী, হিমঝুরি, দেবকাঞ্চন, রাজ অশোকসহ নানা জাতের ফুল। হেমন্ত বাংলা সাহিত্যের বিরাট একটি জায়গা দখল করে রেখেছে। যুগে যুগে কবিরা হেমন্ত ঋতু নিয়ে অনেক গান-কবিতা রচনা করে গেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য; রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবি কাজী নজরুল ইসলাম, সুফিয়া কামাল, জসীমউদ্দীন, জীবনানন্দ দাশ, গোলাম মোহাম্মদ এবং আরো অনেকে। এর মধ্যে কবি সুফিয়া কামালের ছড়া-কবিতা (হেমন্ত) প্রায় সবার মুখে মুখে শোনা যায়। সবুজ পাতার খামের ভেতর, হলুদ গাঁদা চিঠি লেখে কোন্ পাথারের ওপার থেকে, আনল ডেকে হেমন্তকে? হেমন্ত আমাদের গ্রামবাংলার চিরচেনা ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। হেমন্ত এলে প্রকৃতি ভিন্ন ধরনের সৌন্দর্যে সাজে। া
হেমন্তে নবান্ন উৎসব
সোহানুর রহমান
হেমন্তকে হচ্ছে শীতের পূর্বাভাস। ছয় ঋতুর এই দেশে প্রত্যেকটি ঋতুই আলাদা আলাদা রূপ বহন করে। এর মধ্যে হেমন্ত একেবারেই ভিন্ন একটি ঋতু। এর মাঝে যেমন বর্ষার লাবণ্যতা নেই, তেমনি নেই বসন্তের মতো বাহারি রূপ। হেমন্তের রঙ ধূসর। সাধারণত হেমন্তে দেখা যায় অখণ্ড নীল আকাশ। ভোরের নরম আলোয় টুপটাপ শিশির ঝরার শব্দ। মিষ্টি সোনালি রোদে মাঠজুড়ে আলো আঁধারের লুকোচুরি। দুপুরের রোদের স্নিগ্ধতা, সন্ধ্যায় বাঁশঝাড়ে পাখির কলকাকলি ভিন্নমাত্রার সৃষ্টি করে। কবির ভাষায় বলতে গেলে, হেমন্ত প্রিয়ার বাধনহারা চুলের মতোই উদাসীন। তাই একে বলা হয় অনুভবের ঋতু।
হেমন্তের আকাশ মেঘমুক্ত থাকে, তাই রাতের বেলা জ্যোৎস্নামাখা আকাশটা একেবারেই অন্য রকম পরিবেশ সৃষ্টি করে। গরমের তীব্রতা কমে গিয়ে শীত পড়তে শুরু করে। সকালবেলা দূরের গ্রামগুলো কুয়াশায় ঢেকে যায়। গাছিরা খেজুরগাছের মাথায় নরম অংশ কেটে প্রস্তুত রাখে রস সংগ্রহ করার জন্য। এ ছাড়া পাখিদের মিষ্টি সুর মন জুড়িয়ে দেয়। এক সময় বাংলা বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। কারণ ধান কাটার হিসেব ঠিকমতো রাখতেই বাংলা মাসের সূচনা হয়েছিল। হেমন্তের ফসল কাটাকে কেন্দ্র করেই নবান্ন উৎসবের সূচনা হয়। কৃষাণীরা নিজ আঙিনা লেপেপুঁছে পরিষ্কার করে নতুন ধান তোলার জন্য। কৃষকের চোখে নতুন ধানের রঙিন স্বপ্ন। কার্তিকের পর আসে সার্বজনীন লৌকিক উৎসব নবান্ন। বাড়িতে বাড়িতে রাতজেগে ধান নেয় কৃষক ও কৃষাণীরা। গোলা ভরে ওঠে নতুন ধানে। এ সময় তারা স্থানীয় বিভিন্ন গান করে থাকে। গান আর ধান নেয়ার শব্দ, দূর-দূরান্ত থেকে শোনা যায়। নতুন চালের ফিরনি-পায়েশ অথবা ীর তৈরি করে পাড়া-প্রতিবেশী কিংবা আত্মীয়স্বজনকে খাওয়ানো হয়। বাড়িতে বাড়িতে তখন নতুন চালের মিষ্টি গন্ধ। নবান্নে জামাতাকে নিমন্ত্রণ করা হয়। মেয়েকেও ‘নাইওর’ আনা হয়। গ্রাম্যজনপদে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় নবান্নের ধান তোলার মাধ্যমে। এ সময় গ্রামের পথে-প্রান্তরে অনেক রকম মেলা বসে, দূর-দূরান্ত থেকে সার্কাস পার্টি আসে, হয় যাত্রাপালা। দেশীয় নৃত্য, গানবাজনাসহ আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এ ছাড়া লাঠিখেলা, বাউলগান, নাগরদোলা, বাঁশি, শখের চুড়ি ইত্যাদি চোখে পড়ে। এ ঋতুতে ফোটে গন্ধরাজ, মল্লিকা, শিউলি, কামিনী, হিমঝুরি, দেবকাঞ্চন, রাজ অশোকসহ নানা জাতের ফুল। হেমন্ত বাংলা সাহিত্যের বিরাট একটি জায়গা দখল করে রেখেছে। যুগে যুগে কবিরা হেমন্ত ঋতু নিয়ে অনেক গান-কবিতা রচনা করে গেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য; রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবি কাজী নজরুল ইসলাম, সুফিয়া কামাল, জসীমউদ্দীন, জীবনানন্দ দাশ, গোলাম মোহাম্মদ এবং আরো অনেকে। এর মধ্যে কবি সুফিয়া কামালের ছড়া-কবিতা (হেমন্ত) প্রায় সবার মুখে মুখে শোনা যায়। সবুজ পাতার খামের ভেতর, হলুদ গাঁদা চিঠি লেখে কোন্ পাথারের ওপার থেকে, আনল ডেকে হেমন্তকে? হেমন্ত আমাদের গ্রামবাংলার চিরচেনা ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। হেমন্ত এলে প্রকৃতি ভিন্ন ধরনের সৌন্দর্যে সাজে। া
Aj 22-11-2014 daily nayadiganter priojon-a amar golpo
বুকপকেট
সোহানুর রহমান অনন্ত
ভাঁজ করা চিঠিটা সব সময় বুক পকেটে রাখে মুকুল। বেশ কয়েকবার ভেবেছে এটা চৈতিকে দিয়ে দেবে। কিন্তু সেই সুসময়টা যেন আসি আসি করেও আর আসে না। মুকুল চৈতির ছোট বোনকে পড়ায়। পড়ার ফাঁকে যতটুকু সম্ভব আড়চোখে তাকায় দরজার দিকে। পর্দার ফাঁকে মাঝে মাঝে চৈতির এপাশ-ওপাশ আসা যাওয়া চোখে পড়ে। কানটা খাড়া করে রাখে, চৈতির কণ্ঠ শোনার জন্য। মাঝে মাঝে চা হাতে চৈতি রুমে প্রবেশ করে। আসে কিন্তু দাঁড়ায় না এক মুহূর্তের জন্য। এ যেন উড়ে আসা এক টুকরো মেঘ। আজো মুকুল বুকপকেটে চিঠিটা সযতেœ নিয়ে প্রবেশ করেছে চৈতিদের বাসায়।
বুক পকেটে হাত রাখে মুকুল। রিকশাটা যেন খুব দ্রুত চলছে। আড়চোখে আবারো চৈতিকে দেখা, লাল টিপটার পাশ ঘেঁষে এক ফোঁটা ঘাম এসেছে জমেছে। যেন চাঁদের পাশে এক টুকুরো মেঘ। আমি জানি না আমার এই তাকানোটা চৈতি বুঝতে পেরেছে কি না। হঠাৎ চৈতি বলে ওঠে, স্যার, একটা কথা বলি?
মুকুল সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত হয়ে যায়। কাঁপাকাঁপা গলায় বলে কী কথা? একটা কথা জানেন তো, মেয়েরা ছেলেদের মনের কথা খুব সহজে বুঝতে পারে। আপনি বোধহয় আমাকে কিছু বলতে চাইছেন।
মুকুলের বুকটা ধপাস করে ওঠে। বুকপকেটে আবার ডান হাতটা রাখে। চৈতি আবার বলে ওঠে, কিছু বলছেন না যে?
ইয়ে মানে... তোমাকে একটা জিনিস দেবো, তবে কথা দাও এই বিষয়ে তুমি কাউকে কিছু বলবে না। চৈতি মুকুলের দিকে তাকাল। ওর কাজল কালো চোখে অমৃতের সুখ। হালকা মাথাটা নাড়িয়ে বলল, ওকে, বলব না।
মুকুল বুকপকেট থেকে চিঠিটা বের করে চৈতির হাতে দিয়ে দেয়। তারপর আর একটিবারের জন্যও লজ্জায় তাকাতে পারে না চৈতির দিকে। চৈতি মিটিমিটি হেসে বলে, পুরুষ মানুষের এতটা লজ্জা পাওয়া কি ঠিক? মুকুল কিছুই বলতে পারে না উত্তরে। চিঠিটা চৈতির হাতে সাহস করে দিতে পেরেছে, এটাই তার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। শেষবারের মতো মুকুল আড়চোখে চৈতির দিকে তাকায়। দেখে চৈতি মিটিমিটি হাসছে।
এখন রোজ একটি করে চিঠি বুকপকেটে করে নিয়ে আসে মুকুল। চৈতি চা দেয়ার নাম করে এসে চিঠিটা নিয়ে যায়। আবার সেগুলোর উত্তর দেয়। চমৎকার করে গুছিয়ে লেখে প্রতিটি লাইন। যেন একটি লাইনই একটি ভালোবাসার গল্প। চৈতির জীবনানন্দ দাশের কবিতা পছন্দ। মুকুল তাই জীবনানন্দের কবিতার লাইন কেটে চিঠিটা আরো বড় করে দেয়। এভাবেই জীবনের কিছুটা বেলা কেটে গেছে মুকুলের। বুকপকেটটা যেন ভালোবাসার ডাকবাক্স। প্রতিটি চিঠি জমা থাকে তার ভেতর। সেদিন বিকেলে বাসায় ঢুকতেই দেখে। কী একটা বিষয় নিয়ে চৈতির মা চৈতিকে খুব বকাঝকা করছে। মুকুলকে দেখে অবশ্য তাড়া ভেতরের রুমে চলে যায়। নূপুরের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনতে পায় মুকুল।
চৈতিকে এলাকার একটি ছেলে বেশ কিছু দিন ধরে বিরক্ত করছে। কিন্তু চৈতির মায়ের ধারণা, এতে চৈতিও যোগ আছে। সে কারণেই বকাঝকা করছে। কথাটা শুনে কিছুক্ষণের জন্য চুপ হয়ে যায় মুকুল। সে দিনের পর থেকেই চৈতির মা চৈতির বিয়ে দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে। ঘটনাচক্রে মুকুল নিজেই সাহস করে প্রস্তাব দেয়। চৈতির মা এতে আর আপত্তি করে না। সব কিছুই চলছিল সাজানো গোছানো। হঠাৎ বিয়ের দুই দিন আগে চৈতি নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়, কিন্তু কোথাও নেই। মুকুল মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। বুকের বাম পাশটায় চিনচিনে ব্যথা অনুভব করে। ১০ দিন পর চৈতিকে পাওয়া যায় ঢাকার উত্তরায়। চৈতি ধর্ষিত হয়েছে।
সে দিন কলেজ থেকে ফেরার পথে চৈতিকে তুলে নিয়ে যায়, এলাকার বখাটে সেই ছেলেটি। তারপর উত্তরায় একটি নির্জন ফ্যাটে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। সেখান থেকে চৈতি পালিয়ে যায় এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় লোকজন ওকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
জ্ঞান ফেরার পর এসবই বলেছে চৈতি। কিছুই লুকায়নি। চৈতির মা, আড়ালে ঢেকে নিয়ে সব কথাই বলে মুকুলকে। তিনি ভেবেছিলেন হয়তো মুকুল শোনার পরে বিয়েটা ভেঙে দেবে। এটা ভাবার যুক্তিগত কারণও আছে।
কোনো পুরুষ জেনেশুনে চায় না একজন ধর্ষিতাকে বিয়ে করতে। কথাগুলো শুনে মুকুল কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে। চৈতির মায়ের চোখে পানি, এমন দুর্দিন দেখতে হবে, তিনি কল্পনাও করেননি। মুকুল চৈতির মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে, আমাদের দেশে বেশির ভাগ নারী এমন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কিছু প্রকাশ হচ্ছে কিছু হচ্ছে না। এর জন্য অবশ্য সমাজের উঠতি বয়সের যুবকদের অবক্ষয়কই দায়ী।
একজন ধর্ষিতা সমাজের বাইরের কেউ নন। তাকে পুনরায় ভালোবেসে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব। চৈতিকে আমি ভালোবেসেছি, যেমনটা প্রথমে বেসেছিলাম তেমনটি এখনো বাসি এবং ভবিষ্যতেও বেসে যাবো।
মানুষের জীবনে অনেক রকম দুর্ঘটনা ঘটে। এসব মেনে নিয়েই মানুষকে এগিয়ে যেতে হয়। চৈতিকে ছেড়ে চলে গেলে আমার মন আমাকে কখনো সুখী হতে দেবে না। এই বলে মুকুল চৈতির বেডের দিকে পা বাড়াল। ঝাপসা চোখে চৈতির মা তাকিয়ে রইলেন মুকুলের দিকে। চৈতির মাথার কাছে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল মুকুল। চৈতি ঘুমিয়ে আছে। বুকপকেটে আজো একটা চিঠি রয়েছে। চৈতি বলেছে বিয়ের পরও রোজ একটি করে চিঠি দিতে হবে।
সাথে জীবনানন্দের কবিতা। মুকুল বুকপকেট থেকে চিঠিটা বের করে চৈতির বালিশের নিচে রাখে। তারপর নিঃশব্দে বেরিয়ে যায়। বুকের শূন্যতাটা মিটে গেছে চৈতির মুখ দেখে।
বারান্দায় দাঁড়াতেই মেঘলা আকাশটা চোখে পড়ল। মুকুল এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আকাশের দিকে।
বুকপকেট
সোহানুর রহমান অনন্ত
ভাঁজ করা চিঠিটা সব সময় বুক পকেটে রাখে মুকুল। বেশ কয়েকবার ভেবেছে এটা চৈতিকে দিয়ে দেবে। কিন্তু সেই সুসময়টা যেন আসি আসি করেও আর আসে না। মুকুল চৈতির ছোট বোনকে পড়ায়। পড়ার ফাঁকে যতটুকু সম্ভব আড়চোখে তাকায় দরজার দিকে। পর্দার ফাঁকে মাঝে মাঝে চৈতির এপাশ-ওপাশ আসা যাওয়া চোখে পড়ে। কানটা খাড়া করে রাখে, চৈতির কণ্ঠ শোনার জন্য। মাঝে মাঝে চা হাতে চৈতি রুমে প্রবেশ করে। আসে কিন্তু দাঁড়ায় না এক মুহূর্তের জন্য। এ যেন উড়ে আসা এক টুকরো মেঘ। আজো মুকুল বুকপকেটে চিঠিটা সযতেœ নিয়ে প্রবেশ করেছে চৈতিদের বাসায়।
বুক পকেটে হাত রাখে মুকুল। রিকশাটা যেন খুব দ্রুত চলছে। আড়চোখে আবারো চৈতিকে দেখা, লাল টিপটার পাশ ঘেঁষে এক ফোঁটা ঘাম এসেছে জমেছে। যেন চাঁদের পাশে এক টুকুরো মেঘ। আমি জানি না আমার এই তাকানোটা চৈতি বুঝতে পেরেছে কি না। হঠাৎ চৈতি বলে ওঠে, স্যার, একটা কথা বলি?
মুকুল সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত হয়ে যায়। কাঁপাকাঁপা গলায় বলে কী কথা? একটা কথা জানেন তো, মেয়েরা ছেলেদের মনের কথা খুব সহজে বুঝতে পারে। আপনি বোধহয় আমাকে কিছু বলতে চাইছেন।
মুকুলের বুকটা ধপাস করে ওঠে। বুকপকেটে আবার ডান হাতটা রাখে। চৈতি আবার বলে ওঠে, কিছু বলছেন না যে?
ইয়ে মানে... তোমাকে একটা জিনিস দেবো, তবে কথা দাও এই বিষয়ে তুমি কাউকে কিছু বলবে না। চৈতি মুকুলের দিকে তাকাল। ওর কাজল কালো চোখে অমৃতের সুখ। হালকা মাথাটা নাড়িয়ে বলল, ওকে, বলব না।
মুকুল বুকপকেট থেকে চিঠিটা বের করে চৈতির হাতে দিয়ে দেয়। তারপর আর একটিবারের জন্যও লজ্জায় তাকাতে পারে না চৈতির দিকে। চৈতি মিটিমিটি হেসে বলে, পুরুষ মানুষের এতটা লজ্জা পাওয়া কি ঠিক? মুকুল কিছুই বলতে পারে না উত্তরে। চিঠিটা চৈতির হাতে সাহস করে দিতে পেরেছে, এটাই তার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। শেষবারের মতো মুকুল আড়চোখে চৈতির দিকে তাকায়। দেখে চৈতি মিটিমিটি হাসছে।
এখন রোজ একটি করে চিঠি বুকপকেটে করে নিয়ে আসে মুকুল। চৈতি চা দেয়ার নাম করে এসে চিঠিটা নিয়ে যায়। আবার সেগুলোর উত্তর দেয়। চমৎকার করে গুছিয়ে লেখে প্রতিটি লাইন। যেন একটি লাইনই একটি ভালোবাসার গল্প। চৈতির জীবনানন্দ দাশের কবিতা পছন্দ। মুকুল তাই জীবনানন্দের কবিতার লাইন কেটে চিঠিটা আরো বড় করে দেয়। এভাবেই জীবনের কিছুটা বেলা কেটে গেছে মুকুলের। বুকপকেটটা যেন ভালোবাসার ডাকবাক্স। প্রতিটি চিঠি জমা থাকে তার ভেতর। সেদিন বিকেলে বাসায় ঢুকতেই দেখে। কী একটা বিষয় নিয়ে চৈতির মা চৈতিকে খুব বকাঝকা করছে। মুকুলকে দেখে অবশ্য তাড়া ভেতরের রুমে চলে যায়। নূপুরের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনতে পায় মুকুল।
চৈতিকে এলাকার একটি ছেলে বেশ কিছু দিন ধরে বিরক্ত করছে। কিন্তু চৈতির মায়ের ধারণা, এতে চৈতিও যোগ আছে। সে কারণেই বকাঝকা করছে। কথাটা শুনে কিছুক্ষণের জন্য চুপ হয়ে যায় মুকুল। সে দিনের পর থেকেই চৈতির মা চৈতির বিয়ে দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে। ঘটনাচক্রে মুকুল নিজেই সাহস করে প্রস্তাব দেয়। চৈতির মা এতে আর আপত্তি করে না। সব কিছুই চলছিল সাজানো গোছানো। হঠাৎ বিয়ের দুই দিন আগে চৈতি নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়, কিন্তু কোথাও নেই। মুকুল মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। বুকের বাম পাশটায় চিনচিনে ব্যথা অনুভব করে। ১০ দিন পর চৈতিকে পাওয়া যায় ঢাকার উত্তরায়। চৈতি ধর্ষিত হয়েছে।
সে দিন কলেজ থেকে ফেরার পথে চৈতিকে তুলে নিয়ে যায়, এলাকার বখাটে সেই ছেলেটি। তারপর উত্তরায় একটি নির্জন ফ্যাটে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। সেখান থেকে চৈতি পালিয়ে যায় এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় লোকজন ওকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
জ্ঞান ফেরার পর এসবই বলেছে চৈতি। কিছুই লুকায়নি। চৈতির মা, আড়ালে ঢেকে নিয়ে সব কথাই বলে মুকুলকে। তিনি ভেবেছিলেন হয়তো মুকুল শোনার পরে বিয়েটা ভেঙে দেবে। এটা ভাবার যুক্তিগত কারণও আছে।
কোনো পুরুষ জেনেশুনে চায় না একজন ধর্ষিতাকে বিয়ে করতে। কথাগুলো শুনে মুকুল কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে। চৈতির মায়ের চোখে পানি, এমন দুর্দিন দেখতে হবে, তিনি কল্পনাও করেননি। মুকুল চৈতির মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে, আমাদের দেশে বেশির ভাগ নারী এমন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কিছু প্রকাশ হচ্ছে কিছু হচ্ছে না। এর জন্য অবশ্য সমাজের উঠতি বয়সের যুবকদের অবক্ষয়কই দায়ী।
একজন ধর্ষিতা সমাজের বাইরের কেউ নন। তাকে পুনরায় ভালোবেসে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব। চৈতিকে আমি ভালোবেসেছি, যেমনটা প্রথমে বেসেছিলাম তেমনটি এখনো বাসি এবং ভবিষ্যতেও বেসে যাবো।
মানুষের জীবনে অনেক রকম দুর্ঘটনা ঘটে। এসব মেনে নিয়েই মানুষকে এগিয়ে যেতে হয়। চৈতিকে ছেড়ে চলে গেলে আমার মন আমাকে কখনো সুখী হতে দেবে না। এই বলে মুকুল চৈতির বেডের দিকে পা বাড়াল। ঝাপসা চোখে চৈতির মা তাকিয়ে রইলেন মুকুলের দিকে। চৈতির মাথার কাছে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল মুকুল। চৈতি ঘুমিয়ে আছে। বুকপকেটে আজো একটা চিঠি রয়েছে। চৈতি বলেছে বিয়ের পরও রোজ একটি করে চিঠি দিতে হবে।
সাথে জীবনানন্দের কবিতা। মুকুল বুকপকেট থেকে চিঠিটা বের করে চৈতির বালিশের নিচে রাখে। তারপর নিঃশব্দে বেরিয়ে যায়। বুকের শূন্যতাটা মিটে গেছে চৈতির মুখ দেখে।
বারান্দায় দাঁড়াতেই মেঘলা আকাশটা চোখে পড়ল। মুকুল এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আকাশের দিকে।
Aj 16-11-2014 daily nayadiganter Abokash-a amar lakha
তারুণ্যের ক্যারিয়ার কলসেন্টার
সোহানুর রহমান অনন্ত
বর্তমান সময়ে চাকরি পাওয়া অনেকটা প্রতিযোগিতার মতো। এখানে যে যত বেশি নিজের যোগ্যতা ও মেধাকে কাজে লাগাতে পারবে, চাকরির দৌড়ে সে তত এগিয়ে থাকবে। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, কোন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করব সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে
ভুগি।
আর এ কারণেই অনেক সময় আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি না বা দেরি করে ফেলি।
আপনার ল্য ঠিক রাখতে পারলে চাকরি পাওয়া তেমন কঠিন ব্যাপার নয়। নিজেকে মেলে
ধরতে পারলে চাকরিই আপনাকে খুঁজে নেবে। বর্তমান তরুণ-তরুণীদের মাঝে স্মার্ট ও
চ্যালেঞ্জিং পেশা হিসেবে কল সেন্টারে ক্যারিযার গড়ার প্রবণতা উল্লেখযোগ্য
হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে আপনি নিজেকে তুলে ধরতে পারবেন খুব সহজেই। পেশা
হিসেবে কলসেন্টারের জবকে দারুণভাবে উপভোগ করতে পারবেন। এখানে চাকরি করতে
হলে যে আপনাকে অনেক সুন্দরী হতে হবে এমন কিন্তু নয়। সুন্দর করে গুছিয়ে কথা
বলতে পারা, ভালো ইংরেজি জানা, নিজেকে সব সময় পরিপাটি রাখা এবং
আত্মবিশ্বাসের সাথে কাজ করতে পারলেই আপনার জন্য এ পেশা মোটেও কষ্টের নয়।
আধুনিক প্রযুক্তির যুগে কল সেন্টার ক্যারিয়ার গড়ার জন্য সুন্দর একটি
মাধ্যম। পড়াশোনার পাশাপাশি খুব সহজেই আপনি এ কাজটি করতে পারেন। তাই
ছাত্রছাত্রীরা কলসেন্টারে জব করে এগিয়ে যেতে পারেন স্বাচ্ছন্দ্যে।
বাংলাদেশে কলসেন্টারের ক্যারিয়ার সম্ভাবনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর এর
মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক বেকার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
তবে কলসেন্টার সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে অনেকেই পিছিয়ে যাচ্ছেন এই পেশা থেকে।
তবে এটা মনে রাখা উচিত, কলসেন্টার সত্যিকার অর্থেই অনেক বড় কাজের সুযোগ
সৃষ্টি করছে এবং সব েেত্রই। আর তাই আস্তে আস্তে কলসেন্টারের প্রয়োজনীয়তা
সবাই বুঝতে পারছেন। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এর ভবিষ্যৎ নিঃসন্দেহে
ভালো। কলসেন্টার সাধারণত ২৪ ঘণ্টাই সার্ভিস দিয়ে থাকে। কায়েন্টদের বিভিন্ন
তথ্য দেয়াই হচ্ছে এই কলসেন্টারের ল্য। এখানে সব শ্রেণীর শিতি জনগোষ্ঠীই
যুক্ত হতে পারবে। কলসেন্টারে আবার পার্টটাইম চাকরি করারও ব্যবস্থা রয়েছে।
পার্টটাইম এবং ফুল টাইম দুটোর জন্য আলাদা আলাদা সেলারি স্কেল রয়েছে।
ফুলটাইম ডিউটির জন্য ন্যূনতম ১২ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা আর পার্টটাইম
ডিউটির জন্য ন্যূনতম ছয় হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়। তবে আপনি কাজ
ভালো করলে সেলারি অনেক সময় এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, এই
পেশায় আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন। যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে বিদেশী
কোম্পানিগুলোতেও ভালো বেতনে
চলে যেতে পারেন। তবে সব কথার মূলকথা হলো, কাজটাকে ভালোবেসে করতে হবে।
কলসেন্টার হতে পারে শিতি তারুণ্যের স্মার্ট ও চ্যালেঞ্জিং পেশা। তাই এখানে
ভবিষ্যৎ গড়ার সম্ভাবনাও অনেকটা বেশি। বিভিন্ন জায়গায় কলসেন্টারের
ট্রেনিং দিয়ে থাকে। ট্রেনিং শেষ করে আপনিও চলে আসতে পারেন কলসেন্টারের চ্যালেঞ্জিং পেশায়। া
তারুণ্যের ক্যারিয়ার কলসেন্টার
সোহানুর রহমান অনন্ত
বর্তমান সময়ে চাকরি পাওয়া অনেকটা প্রতিযোগিতার মতো। এখানে যে যত বেশি নিজের যোগ্যতা ও মেধাকে কাজে লাগাতে পারবে, চাকরির দৌড়ে সে তত এগিয়ে থাকবে। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, কোন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করব সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে
ট্রেনিং দিয়ে থাকে। ট্রেনিং শেষ করে আপনিও চলে আসতে পারেন কলসেন্টারের চ্যালেঞ্জিং পেশায়। া
aj 17-11-2014 daily bangladesh potidine-ar rokomari tommo-ta amar lakha idea<< nij dayetta porun<<>>><
লোকাল বাসে যেভাবে সিট পাবেন
লোকাল বাসে সিট পাওয়াটা হাতে আকাশের চাঁদ পাওয়ার মতো। পাবলিকের গুঁতাগুঁতি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা এছাড়া পকেটমার তো সদা জাগ্রত আছেই। তো কী করলে সিট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, জানাচ্ছেন- সোহানুর রহমান অনন্ত
পিঁপড়া নিয়ে উঠুন : গাড়িতে উঠার সময় কিছু পিঁপড়া নিয়ে উঠুন, তারপর সবার অগোচরে দুই একটা সিটে বসা আদমির উপর ছেড়ে দিন। দেখবেন কামড় খেয়ে ব্যাটা শুধু সিট-ই ছাড়বে না, চিল্লাপাল্লা করে বাসও ত্যাগ করবে। আর আপনি সেই সুযোগে সিটে বসে পড়বেন।
চেয়ার সঙ্গে রাখুন : সিট পাওয়াটা এত মুশকিল হলে নিজেই একটি চেয়ার সঙ্গে রাখুন। তারপর বাসে উঠে দাঁড়িয়ে না থেকে চেয়ারে বসে পড়ুন ব্যস মামলা ফিনিস।
হেলপারকে আত্মীয় বানিয়ে ফেলুন : হেলপারকে বানিয়ে বানিয়ে কথা বলে দুঃসম্পর্কের আত্মীয় হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিন। ঠিকমতো গুছিয়ে কথা বলতে পারলে। সিটও পাবেন ভাড়াটাও বেচে যাবে।
লোকাল বাসে যেভাবে সিট পাবেন
লোকাল বাসে সিট পাওয়াটা হাতে আকাশের চাঁদ পাওয়ার মতো। পাবলিকের গুঁতাগুঁতি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা এছাড়া পকেটমার তো সদা জাগ্রত আছেই। তো কী করলে সিট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, জানাচ্ছেন- সোহানুর রহমান অনন্ত
পিঁপড়া নিয়ে উঠুন : গাড়িতে উঠার সময় কিছু পিঁপড়া নিয়ে উঠুন, তারপর সবার অগোচরে দুই একটা সিটে বসা আদমির উপর ছেড়ে দিন। দেখবেন কামড় খেয়ে ব্যাটা শুধু সিট-ই ছাড়বে না, চিল্লাপাল্লা করে বাসও ত্যাগ করবে। আর আপনি সেই সুযোগে সিটে বসে পড়বেন।
চেয়ার সঙ্গে রাখুন : সিট পাওয়াটা এত মুশকিল হলে নিজেই একটি চেয়ার সঙ্গে রাখুন। তারপর বাসে উঠে দাঁড়িয়ে না থেকে চেয়ারে বসে পড়ুন ব্যস মামলা ফিনিস।
হেলপারকে আত্মীয় বানিয়ে ফেলুন : হেলপারকে বানিয়ে বানিয়ে কথা বলে দুঃসম্পর্কের আত্মীয় হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিন। ঠিকমতো গুছিয়ে কথা বলতে পারলে। সিটও পাবেন ভাড়াটাও বেচে যাবে।
Aj 03-11-2014 daily nayadiganter Abokash-a
প্লানচেট
সোহানুর রহমান অনন্ত
আপনি জানেন এ ব্যক্তিটি মারা গেছে, যদি কোনো কিছুর মাধ্যমে মারা যাওয়া সেই ব্যক্তিটি আবার আপনার সামনে এসে দাঁড়ায় তখন আপনার মনের অবস্থা কেমন হবে? হয়তো আপনি ভাবছেন এটি কেবলই কল্পনায় বা ছবিতে সম্ভব। আপনার ধারণা ভুল, কেননা এটি বাস্তবেও সম্ভব। প্লানচেটের মাধ্যমে মানুষের আত্মাকে হাজির করা কি যায়! কথা বলা যায় মৃত ব্যক্তির সাথে। যুগ যুগ অনেক জায়গা, অনেকেই প্লানচেটের মাধ্যমে আত্মার সাথে যোগাযোগ করেছে। বিজ্ঞান যদিও প্লানচেটকে বিশ্বাস করে না, তবুও এমনটিই বিশ্বের অনেক জায়গা ঘটে চলেছে। মৃত মানুষের সাথে কথা বলা, মৃত মানুষের সাথে যোগাযোগ।
ধারণা করা হয়, ১৮৮৩ সালে ইউরোপীয় দেশগুলোতে সর্বপ্রথম প্লানচেটের গবেষণা ও ব্যবহার শুরু হয়। তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করত একজন ব্যক্তি মারা গেলেও তাকে কিছু নিয়মকানুন ব্যবহার করে ডেকে আনা সম্ভব। আত্মার সাথে কথা বলা সম্ভব। প্লানচেট করার বেশ কিছু নিয়মকানুন আছে। বিশেষ করে একলা ঘরে, (রাত হলে ভালো হয়) দরজা বন্ধ করে নিতে হবে। প্লানচেট করতে হলে প্রথমে একটি বোর্ডের দরকার হয়। দুই দিকে ছোট ছোট ক্যাস্টরদানা থাকায় বোর্ডটি সুবিধামতো চক্রাকারে ঘুরতে পারে। ঠিক ঘরের মাঝখানে বোর্ডটিকে রাখতে হবে। বোর্ডের মাঝখানে ছোট্ট একটি ছিদ্র থাকে, সেই ছিদ্রে কল বা পেনসিল ঢোকানো থাকে। অবশ্যই সেই কলম বা পেনসিলকে কাগজের ওপর স্পর্শ করতে হবে। ভালোভাবে যাতে নাড়ানো যায় সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। এটিকে মূলত বলা হয় প্রেতচক্র। প্লানচেট করতে হলে বেজোড় সংখ্যা থাকা জরুরি। চোখ বন্ধ অবস্থায় হাতের আঙুল ছুঁয়ে ধ্যানে যেভাবে বসে সেভাবে বসতে হবে। পরে মনে মনে আত্মাকে স্মরণ করতে হবে। এর ফলে পৃথিবীতে আসা বিদেহী আত্মাগুলো এসে উপস্থিত হয়।
এবং নিজেদের মধ্যে একের পর এক প্রশ্ন এবং উত্তর চলতে থাকে।
প্লানচেট বা প্রেতচক্র নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে বা হচ্ছে। এটি নিয়ে বিজ্ঞানীদেরও রয়েছে ভিন্ন মত। কেউ বলেন এর যুক্তিসঙ্গত কোনো প্রমাণ নেই, এটি নিছক একটি খেলা মাত্র। আবার অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন, প্রেতচক্র কিছু কৌশল, যার মাধ্যমে আত্মারা উপস্থিত হতে পারে। একটি মানুষ মারা গেলে সে আবার কিভাবে ফিরে আসতে পারে, সেটা আমাদের কাছে রহস্য। তবে বিদেহি আত্মাকে কাজে লাগিয়ে অনেক ওঝা, সন্ন্যাসীরা কাজ হাসিল করে থাকে, যা মানুষের কাছে কালুজাদু নামে বেশ পরিচিত। া
প্লানচেট
সোহানুর রহমান অনন্ত
আপনি জানেন এ ব্যক্তিটি মারা গেছে, যদি কোনো কিছুর মাধ্যমে মারা যাওয়া সেই ব্যক্তিটি আবার আপনার সামনে এসে দাঁড়ায় তখন আপনার মনের অবস্থা কেমন হবে? হয়তো আপনি ভাবছেন এটি কেবলই কল্পনায় বা ছবিতে সম্ভব। আপনার ধারণা ভুল, কেননা এটি বাস্তবেও সম্ভব। প্লানচেটের মাধ্যমে মানুষের আত্মাকে হাজির করা কি যায়! কথা বলা যায় মৃত ব্যক্তির সাথে। যুগ যুগ অনেক জায়গা, অনেকেই প্লানচেটের মাধ্যমে আত্মার সাথে যোগাযোগ করেছে। বিজ্ঞান যদিও প্লানচেটকে বিশ্বাস করে না, তবুও এমনটিই বিশ্বের অনেক জায়গা ঘটে চলেছে। মৃত মানুষের সাথে কথা বলা, মৃত মানুষের সাথে যোগাযোগ।
ধারণা করা হয়, ১৮৮৩ সালে ইউরোপীয় দেশগুলোতে সর্বপ্রথম প্লানচেটের গবেষণা ও ব্যবহার শুরু হয়। তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করত একজন ব্যক্তি মারা গেলেও তাকে কিছু নিয়মকানুন ব্যবহার করে ডেকে আনা সম্ভব। আত্মার সাথে কথা বলা সম্ভব। প্লানচেট করার বেশ কিছু নিয়মকানুন আছে। বিশেষ করে একলা ঘরে, (রাত হলে ভালো হয়) দরজা বন্ধ করে নিতে হবে। প্লানচেট করতে হলে প্রথমে একটি বোর্ডের দরকার হয়। দুই দিকে ছোট ছোট ক্যাস্টরদানা থাকায় বোর্ডটি সুবিধামতো চক্রাকারে ঘুরতে পারে। ঠিক ঘরের মাঝখানে বোর্ডটিকে রাখতে হবে। বোর্ডের মাঝখানে ছোট্ট একটি ছিদ্র থাকে, সেই ছিদ্রে কল বা পেনসিল ঢোকানো থাকে। অবশ্যই সেই কলম বা পেনসিলকে কাগজের ওপর স্পর্শ করতে হবে। ভালোভাবে যাতে নাড়ানো যায় সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। এটিকে মূলত বলা হয় প্রেতচক্র। প্লানচেট করতে হলে বেজোড় সংখ্যা থাকা জরুরি। চোখ বন্ধ অবস্থায় হাতের আঙুল ছুঁয়ে ধ্যানে যেভাবে বসে সেভাবে বসতে হবে। পরে মনে মনে আত্মাকে স্মরণ করতে হবে। এর ফলে পৃথিবীতে আসা বিদেহী আত্মাগুলো এসে উপস্থিত হয়।
এবং নিজেদের মধ্যে একের পর এক প্রশ্ন এবং উত্তর চলতে থাকে।
প্লানচেট বা প্রেতচক্র নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে বা হচ্ছে। এটি নিয়ে বিজ্ঞানীদেরও রয়েছে ভিন্ন মত। কেউ বলেন এর যুক্তিসঙ্গত কোনো প্রমাণ নেই, এটি নিছক একটি খেলা মাত্র। আবার অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন, প্রেতচক্র কিছু কৌশল, যার মাধ্যমে আত্মারা উপস্থিত হতে পারে। একটি মানুষ মারা গেলে সে আবার কিভাবে ফিরে আসতে পারে, সেটা আমাদের কাছে রহস্য। তবে বিদেহি আত্মাকে কাজে লাগিয়ে অনেক ওঝা, সন্ন্যাসীরা কাজ হাসিল করে থাকে, যা মানুষের কাছে কালুজাদু নামে বেশ পরিচিত। া
Tuesday, 28 October 2014
১৯ অক্টোবর ২০১৪, রবিবার daily nayadiganta Abokash a amar lakha
মৃত পুতুলের দ্বীপ
সোহানুর রহমান অনন্ত
ভূত শব্দটি শুনলেই কেমন গা ছমছম করে ওঠে আমাদের। কল্পনায় আমরা এঁকে ফেলি একটি ভৌতিক পরিবেশ। এ তো গেল কল্পনার কথা, আর সেই ভয়ের পরিবেশটি যদি আপনি বাস্তবে দেখেন, তাহলে কেমন হবে? হ্যাঁ, আজ পরিচয় করিয়ে দেবো মেক্সিকোর মৃত পুতুলের দ্বীপের সাথে। বছরের পর বছর ধরে যে দ্বীপ রহস্যের বেড়াজালে ঢেকে আছে। অনেক বছর আগের কথা, এক পরিবার সেই দ্বীপে বাস করত। এক দিন তিন শিশু পুতুল নিয়ে খেলা করছিল। নির্জন দ্বীপটিতে খেলতে খেলতেই তিনজনের একজন নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক খোঁজা হয় কিন্তু কোথাও হদিস পাওয়া যায় না। পরে দ্বীপের পাশের একটি খালে পাওয়া গেল মৃতদেহ। এর পর থেকে মানুষের মনে এক আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এই দ্বীপকে গিরে। অনেকেই অনেক রকম কথা বলতে থাকে। পরে মেয়েটির বাবা মেয়েটির খেলার সব পুতুল ফেলে দেয় সেই খালের পানিতে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো পুতুলগুলো বেশির ভাগ ঢেউয়ের সাথে থেকে যায় দ্বীপটির আশপাশে। পুতুলগুলো তত দিনে প্রায় ভগ্নাংশে পরিণত হয়েছে। কোনোটার মাথা নেই, কোনোটার নেই চোখ। স্থানীয় লোকজন ভয়ে আর সেখানে পা বাড়ায় না। অনেকেই রাতে সেখান থেকে ভয়ানক চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেত। এই দ্বীপটি মেক্সিকো সিটি থেকে ১৭ মাইল দেিণ জোকিমিলকো জেলায় অবস্থিত। দ্বীপটির আশপাশে কেউ ভুল করেও যেত না। এর অনেক বছর পর ডন জুলিয়ান সানতানা নামে এক যাজক নির্জনে তপস্যা করার জন্য দ্বীপটিকে বেছে নিয়েছিলেন। তার ধারণা ছিল, এখানে তাকে কেউ বিরক্ত করবে না। কিন্তু তার ধারণা সম্পূর্ণ ভুল হয়ে যায়। কারণ দ্বীপটিতে থাকা অবস্থায় সেই মৃত মেয়েটির আত্মা বারবার তার সামনে এসে দাঁড়ায়। হাসে এবং পুতুল চেয়ে বায়না ধরে। জুলিয়ান প্রথমে বিষয়টি এরিয়ে গেলেও একটা সময় মেয়েটির বায়না রাখতে রাজি হয়। কিন্তু মেয়েটি যেমন তেমন পুতুল নেবে না। বীভৎস সব পুতুল চেয়ে বসে। জুলিয়ান তাতেই রাজি হয়ে যায়। মানুষের কাছ থেকে নষ্ট পুতুল সংগ্রহ করতে থাকে, যা দেখতে ভয়ঙ্কর। জঙ্গলে এনে গাছের ডালের সাথে এগুলো বেঁধে রাখে। মেয়েটির আত্মা খুশি হয়। জুলিয়ান এমনি করে হাজারো পুতুল এনে নির্জন দ্বীপের গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। একটা সময় মৃত পুতুলের রাজ্যে পরিণত হয় দ্বীপটি। যে দিকে চোখ পড়ে কেবল মৃত পুতুল। যদিও দ্বীপটাতে কেউ যেত না, তারপর কেউ কেউ বিশ্বাস করত, দ্বীপটিতে এখনো মৃত শিশুটির আত্মা ঘোরাঘুরি করে। রাতের অন্ধকারে দ্বীপটির দিকে তাকালো হুট করে মনে হয় আগুন জ্বলে ওঠে, আবার মুহূর্তেই নিভে যায়। মাঝে মধ্যে শোনা যায় গা হিম করা ভুতুড়ে আওয়াজ। বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, পুতুলগুলোর মধ্যেই সেই আত্মাটি বসত করে। এ ছাড়া ঘটে যেতে থাকে একের পর এক রহস্যময় ঘটনা। অবশেষে মেক্সিকান সরকার দ্বীপটিকে ন্যাশনাল হেরিটেজ ঘোষণা করে। এই দ্বীপে যেন আবারো মানুষের আনাগোনা শুরু হয় সেই কারণে, দ্বীপকে পরিষ্কার-পরিচ্ছ
ন্ন
করে পর্যটন অঞ্চল বানানোর উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এত সব রহস্য শোনার পর
পর্যটকেরা আর আসতে চায় না মৃত পুতুলের দ্বীপে। একে একে সব চেষ্টাই ব্যর্থ
হয়। একবার স্থানীয় এক বাসিন্দা একটি বড় নৌকা দ্বীপের কাছে ভেসে থাকতে দেখে।
পরে সে আরো কিছু মানুষকে ডেকে দেখালে তারা এগিয়ে যায়। মজার ব্যাপার হলো
কাছে গিয়ে তারা কোনো নৌকাই দেখতে পায়নি। এভাবেই একের পর এক রহস্য জš§ দিতে
থাকে এই দ্বীপটি। সর্বশেষ যে ঘটনাটি জানা যায়, তা হলোÑ জুলিয়ান তার ভাইয়ের
ছেলেকে নিয়ে সেই দ্বীপের কাছে মাছ ধরছিলেন। তার চোখ চলে যাচ্ছিল বারবার সেই
দ্বীপটির দিকে। হঠাৎ তিনি একটি শব্দ শুনতে পান এবং ভাতিজাকে বলেন, ‘পানির
নিচ থেকে আমাকে কারা যেন ডাকছে তাদের কাছে যাওয়ার জন্য। জুলিয়ানের কথা শুনে
চমকে ওঠে ভাতিজা এবং তাৎণিক তারা সেখান থেকে চলে আসেন। কিন্তু বিধির বিধান
, কিছু দিন পরই ওই দ্বীপের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় জুলিয়ানের মৃতদেহ।
ভৌতিক মৃত পুতুল দ্বীপের রহস্য আজো রহস্যই রয়ে গেছে। বিজ্ঞান আজো এর কোনো
ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। প্রকৃতির নিয়মে অনেক কিছুই ঘটে যায়, যা আমরা কেউ
বিশ্বাস করি, কেউ করি না।
মৃত পুতুলের দ্বীপ
সোহানুর রহমান অনন্ত
ভূত শব্দটি শুনলেই কেমন গা ছমছম করে ওঠে আমাদের। কল্পনায় আমরা এঁকে ফেলি একটি ভৌতিক পরিবেশ। এ তো গেল কল্পনার কথা, আর সেই ভয়ের পরিবেশটি যদি আপনি বাস্তবে দেখেন, তাহলে কেমন হবে? হ্যাঁ, আজ পরিচয় করিয়ে দেবো মেক্সিকোর মৃত পুতুলের দ্বীপের সাথে। বছরের পর বছর ধরে যে দ্বীপ রহস্যের বেড়াজালে ঢেকে আছে। অনেক বছর আগের কথা, এক পরিবার সেই দ্বীপে বাস করত। এক দিন তিন শিশু পুতুল নিয়ে খেলা করছিল। নির্জন দ্বীপটিতে খেলতে খেলতেই তিনজনের একজন নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক খোঁজা হয় কিন্তু কোথাও হদিস পাওয়া যায় না। পরে দ্বীপের পাশের একটি খালে পাওয়া গেল মৃতদেহ। এর পর থেকে মানুষের মনে এক আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এই দ্বীপকে গিরে। অনেকেই অনেক রকম কথা বলতে থাকে। পরে মেয়েটির বাবা মেয়েটির খেলার সব পুতুল ফেলে দেয় সেই খালের পানিতে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো পুতুলগুলো বেশির ভাগ ঢেউয়ের সাথে থেকে যায় দ্বীপটির আশপাশে। পুতুলগুলো তত দিনে প্রায় ভগ্নাংশে পরিণত হয়েছে। কোনোটার মাথা নেই, কোনোটার নেই চোখ। স্থানীয় লোকজন ভয়ে আর সেখানে পা বাড়ায় না। অনেকেই রাতে সেখান থেকে ভয়ানক চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেত। এই দ্বীপটি মেক্সিকো সিটি থেকে ১৭ মাইল দেিণ জোকিমিলকো জেলায় অবস্থিত। দ্বীপটির আশপাশে কেউ ভুল করেও যেত না। এর অনেক বছর পর ডন জুলিয়ান সানতানা নামে এক যাজক নির্জনে তপস্যা করার জন্য দ্বীপটিকে বেছে নিয়েছিলেন। তার ধারণা ছিল, এখানে তাকে কেউ বিরক্ত করবে না। কিন্তু তার ধারণা সম্পূর্ণ ভুল হয়ে যায়। কারণ দ্বীপটিতে থাকা অবস্থায় সেই মৃত মেয়েটির আত্মা বারবার তার সামনে এসে দাঁড়ায়। হাসে এবং পুতুল চেয়ে বায়না ধরে। জুলিয়ান প্রথমে বিষয়টি এরিয়ে গেলেও একটা সময় মেয়েটির বায়না রাখতে রাজি হয়। কিন্তু মেয়েটি যেমন তেমন পুতুল নেবে না। বীভৎস সব পুতুল চেয়ে বসে। জুলিয়ান তাতেই রাজি হয়ে যায়। মানুষের কাছ থেকে নষ্ট পুতুল সংগ্রহ করতে থাকে, যা দেখতে ভয়ঙ্কর। জঙ্গলে এনে গাছের ডালের সাথে এগুলো বেঁধে রাখে। মেয়েটির আত্মা খুশি হয়। জুলিয়ান এমনি করে হাজারো পুতুল এনে নির্জন দ্বীপের গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। একটা সময় মৃত পুতুলের রাজ্যে পরিণত হয় দ্বীপটি। যে দিকে চোখ পড়ে কেবল মৃত পুতুল। যদিও দ্বীপটাতে কেউ যেত না, তারপর কেউ কেউ বিশ্বাস করত, দ্বীপটিতে এখনো মৃত শিশুটির আত্মা ঘোরাঘুরি করে। রাতের অন্ধকারে দ্বীপটির দিকে তাকালো হুট করে মনে হয় আগুন জ্বলে ওঠে, আবার মুহূর্তেই নিভে যায়। মাঝে মধ্যে শোনা যায় গা হিম করা ভুতুড়ে আওয়াজ। বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, পুতুলগুলোর মধ্যেই সেই আত্মাটি বসত করে। এ ছাড়া ঘটে যেতে থাকে একের পর এক রহস্যময় ঘটনা। অবশেষে মেক্সিকান সরকার দ্বীপটিকে ন্যাশনাল হেরিটেজ ঘোষণা করে। এই দ্বীপে যেন আবারো মানুষের আনাগোনা শুরু হয় সেই কারণে, দ্বীপকে পরিষ্কার-পরিচ্ছ
আজ ২৭-১০-২০১৪ চাঁদপুর কণ্ঠ সাহিত্য পাতায় আমার কবিতা
যদি ফিরে পেতাম
সোহানুর রহমান অনন্ত
যদি ফিরে পেতাম, বারোটি বছর আগের সেই দিনগুলো
শেষ রাতের ঝাপসা আঁধারের মাঝে
জীবন স্রোতের মুখে সে সুখগুলো আজ এলোমেলো
যন্ত্রণার সুর হয়ে নিশিদিন বাজে।
যদি ফিরে পেতাম, প্রিয়ার সেই হাসিমাখা মুখ
নীরব প্রেমের ছন্দগুলো সেই
ডুকরে ওঠা মনের মাঝে আছে শুধু দুঃখ
সবি আছে, কী যেন কী নেই।
যদি ফিরে পেতাম, গল্প লেখা সেই সময়টাকে
নিশি জেগে লেখা কবিতার মিল
হারিয়ে ফেলেছি সব হারিয়ে যাওয়ার বাঁকে
শরতের সাদা মেঘ, হয়ে গেছে নীল।
যদি ফিরে পেতাম, না বলা সেই সুপ্ত অনুভব
চোখ ভরে হাজারো কল্প দেখা
অস্তরবির মতোই হারিয়ে গেছে সব
এতোটা পথ জুড়ে কেবল আমি একা।
জানি পাবো না ফিরে, হয়তো সবি মিছে আশা
হারানো দিনগুলো কেউ কি ফিরে পায়
মিছে মিছে আজ খুঁজে বেড়াই কত ভালাবাসা
বুঝি না, মনের ঘরটা অগোছানোই থেকে যায়।
যদি ফিরে পেতাম
সোহানুর রহমান অনন্ত
যদি ফিরে পেতাম, বারোটি বছর আগের সেই দিনগুলো
শেষ রাতের ঝাপসা আঁধারের মাঝে
জীবন স্রোতের মুখে সে সুখগুলো আজ এলোমেলো
যন্ত্রণার সুর হয়ে নিশিদিন বাজে।
যদি ফিরে পেতাম, প্রিয়ার সেই হাসিমাখা মুখ
নীরব প্রেমের ছন্দগুলো সেই
ডুকরে ওঠা মনের মাঝে আছে শুধু দুঃখ
সবি আছে, কী যেন কী নেই।
যদি ফিরে পেতাম, গল্প লেখা সেই সময়টাকে
নিশি জেগে লেখা কবিতার মিল
হারিয়ে ফেলেছি সব হারিয়ে যাওয়ার বাঁকে
শরতের সাদা মেঘ, হয়ে গেছে নীল।
যদি ফিরে পেতাম, না বলা সেই সুপ্ত অনুভব
চোখ ভরে হাজারো কল্প দেখা
অস্তরবির মতোই হারিয়ে গেছে সব
এতোটা পথ জুড়ে কেবল আমি একা।
জানি পাবো না ফিরে, হয়তো সবি মিছে আশা
হারানো দিনগুলো কেউ কি ফিরে পায়
মিছে মিছে আজ খুঁজে বেড়াই কত ভালাবাসা
বুঝি না, মনের ঘরটা অগোছানোই থেকে যায়।
Aj 12-10-2014 daily nayadiganter Abokash-a amar lakha
হয়ে উঠুন গ্রাফিক্স ডিজাইনার
সোহানুর রহমান অনন্ত
ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পারেন গ্রাফিক্স ডিজাইনকে। এখানে যেমন আপনি কাজের অফুরন্ত সুযোগ পাবেন, তেমনি ভালো কাজ দেখিয়ে দেশী-বিদেশী সব জায়গা থেকে সুনাম পেতে পারেন। লিখেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত
বর্তমান যুগ প্রতিযোগিতার যুগ। তাই চাকরি পাওয়া অনেকটা সোনার হরিণ। তবে মেধা ও বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন একজন সফল ব্যক্তি। ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পারেন গ্রাফিক্স ডিজাইনকে। এখানে যেমন আপনি কাজের অফুরন্ত সুযোগ পাবেন, তেমনি ভালো কাজ দেখিয়ে দেশী-বিদেশী সবখান থেকে সুনাম অর্জন করতে পারেন। এটি এক দিকে যেমন সম্মানীয় পেশা, অন্য দিকে যুগোপযোগী। সারা বিশ্বে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের চাহিদা অনেক। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে কী লাগে।
শুরুতেই জেনে নেই গ্রাফিক্স ডিজাইনার কে? গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো আর্টের মাধ্যম। যিনি গ্রাহকের চাহিদানুযায়ী বেশ কিছু কালার, আইডিয়া, টাইপফেস, ইমেজ এবং অ্যানিমেশন ব্যবহারের মাধ্যমে তার চাহিদা পূরণ করতে সম হন। মোটকথা নিজের আইডিয়া এবং কম্পিউটারের টুলস ব্যবহার করে যিনি নতুন নতুন ডিজাইন তৈরি করেন, তিনিই গ্রাফিক্স ডিজাইনার।
কম্পিউটার গ্রাফিক্স শাস্ত্রটিকে নিচের চারটি প্রধান শাখায় ভাগ করা সম্ভব :
১. জ্যামিতি : বিভিন্ন জ্যামিতিক তল কিভাবে উপস্থাপন ও প্রক্রিয়া করা হবে, তার গবেষণা
২. অ্যানিমেশন : দৃশ্যমান বস্তুর চলন (motion) কিভাবে উপস্থাপন ও পরিবর্তন করা যায়, তার গবেষণা
৩. রেন্ডারিং : আলোর পরিবহন কিভাবে অ্যালগারিদমের মাধ্যমে সৃষ্টি করা যায়, তার আলোচনা।
৪. ইমেজিং : ছবি আয়ত্তকরণ (image acquisition) এবং ছবি সম্পাদনা (image editing)
গ্রাফিক্স ডিজাইনারের আয় :
হয়তো আপনি জানতে চাইবেন একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের আয় কত হতে পারে? বাংলাদেশে গ্রাফিক্স ডিজাইনে ডিপ্লোমাধারীর বেতন মাসে সাধারণত ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। তবে ব্যাচেলর ফাইন আর্টসে ব্যাচেলর ডিগ্রিধারীদের বেতন মাসিক এক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে হলে যে শিাগত যোগ্যতা খুব বেশি দরকার তা কিন্তু নয়। তবে শিক্ষা থাকাটা জরুরি। যেহেতু কাজগুলো আপনাকে কম্পিউটারে করতে হবে এবং বিভিন্ন সাইটে ইংরেজিমাধ্যমে কথা আদান-প্রদান করতে হবে। সাধারণত আপনি অল্প শিতি হলেও গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে মাসে ১০-২০ হাজার টাকা আয় করতে পারে। আগেই বলেছি, বিশ্বে গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রচুর কদর রয়েছে।
আপনি চাইলে ঘরে বসে অনলাইনের
মাধ্যমেও বায়ারদের সাথে কাজ করতে পারেন। অনলাইনে আপনি একটি লোগো ডিজাইন করলে পাঁচ থেকে শুরু করে দুই হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে। অনলাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইনের বেশ কিছু জনপ্রিয় সাইট হলো : ৯৯ ডিজাইন’স ডটকম, ফ্রিল্যান্সার কনটেস্ট, ওডেস্ক। এসব সাইটে
আপনি বিভিন্ন কাজ পাবেন। কাজ যত ক্রিয়েটিভি হবে তত বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাবে। জাতীয় যুব উন্নয়ন কেন্দ্র এবং বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গ্রাফিক্স ডিজাইনের ওপর কোর্স চালু করে থাকে। এখান থেকে আপনি কোস শেষ করে চাকরি পেতে পারেন খুব সহজে। গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন একেবারে সহজে।
হয়ে উঠুন গ্রাফিক্স ডিজাইনার
সোহানুর রহমান অনন্ত
ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পারেন গ্রাফিক্স ডিজাইনকে। এখানে যেমন আপনি কাজের অফুরন্ত সুযোগ পাবেন, তেমনি ভালো কাজ দেখিয়ে দেশী-বিদেশী সব জায়গা থেকে সুনাম পেতে পারেন। লিখেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত
বর্তমান যুগ প্রতিযোগিতার যুগ। তাই চাকরি পাওয়া অনেকটা সোনার হরিণ। তবে মেধা ও বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন একজন সফল ব্যক্তি। ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পারেন গ্রাফিক্স ডিজাইনকে। এখানে যেমন আপনি কাজের অফুরন্ত সুযোগ পাবেন, তেমনি ভালো কাজ দেখিয়ে দেশী-বিদেশী সবখান থেকে সুনাম অর্জন করতে পারেন। এটি এক দিকে যেমন সম্মানীয় পেশা, অন্য দিকে যুগোপযোগী। সারা বিশ্বে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের চাহিদা অনেক। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে কী লাগে।
শুরুতেই জেনে নেই গ্রাফিক্স ডিজাইনার কে? গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো আর্টের মাধ্যম। যিনি গ্রাহকের চাহিদানুযায়ী বেশ কিছু কালার, আইডিয়া, টাইপফেস, ইমেজ এবং অ্যানিমেশন ব্যবহারের মাধ্যমে তার চাহিদা পূরণ করতে সম হন। মোটকথা নিজের আইডিয়া এবং কম্পিউটারের টুলস ব্যবহার করে যিনি নতুন নতুন ডিজাইন তৈরি করেন, তিনিই গ্রাফিক্স ডিজাইনার।
কম্পিউটার গ্রাফিক্স শাস্ত্রটিকে নিচের চারটি প্রধান শাখায় ভাগ করা সম্ভব :
১. জ্যামিতি : বিভিন্ন জ্যামিতিক তল কিভাবে উপস্থাপন ও প্রক্রিয়া করা হবে, তার গবেষণা
২. অ্যানিমেশন : দৃশ্যমান বস্তুর চলন (motion) কিভাবে উপস্থাপন ও পরিবর্তন করা যায়, তার গবেষণা
৩. রেন্ডারিং : আলোর পরিবহন কিভাবে অ্যালগারিদমের মাধ্যমে সৃষ্টি করা যায়, তার আলোচনা।
৪. ইমেজিং : ছবি আয়ত্তকরণ (image acquisition) এবং ছবি সম্পাদনা (image editing)
গ্রাফিক্স ডিজাইনারের আয় :
হয়তো আপনি জানতে চাইবেন একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের আয় কত হতে পারে? বাংলাদেশে গ্রাফিক্স ডিজাইনে ডিপ্লোমাধারীর বেতন মাসে সাধারণত ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। তবে ব্যাচেলর ফাইন আর্টসে ব্যাচেলর ডিগ্রিধারীদের বেতন মাসিক এক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে হলে যে শিাগত যোগ্যতা খুব বেশি দরকার তা কিন্তু নয়। তবে শিক্ষা থাকাটা জরুরি। যেহেতু কাজগুলো আপনাকে কম্পিউটারে করতে হবে এবং বিভিন্ন সাইটে ইংরেজিমাধ্যমে কথা আদান-প্রদান করতে হবে। সাধারণত আপনি অল্প শিতি হলেও গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে মাসে ১০-২০ হাজার টাকা আয় করতে পারে। আগেই বলেছি, বিশ্বে গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রচুর কদর রয়েছে।
আপনি চাইলে ঘরে বসে অনলাইনের
মাধ্যমেও বায়ারদের সাথে কাজ করতে পারেন। অনলাইনে আপনি একটি লোগো ডিজাইন করলে পাঁচ থেকে শুরু করে দুই হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে। অনলাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইনের বেশ কিছু জনপ্রিয় সাইট হলো : ৯৯ ডিজাইন’স ডটকম, ফ্রিল্যান্সার কনটেস্ট, ওডেস্ক। এসব সাইটে
আপনি বিভিন্ন কাজ পাবেন। কাজ যত ক্রিয়েটিভি হবে তত বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাবে। জাতীয় যুব উন্নয়ন কেন্দ্র এবং বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গ্রাফিক্স ডিজাইনের ওপর কোর্স চালু করে থাকে। এখান থেকে আপনি কোস শেষ করে চাকরি পেতে পারেন খুব সহজে। গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন একেবারে সহজে।
যে লিখতে পারে সে আঁকতেও পারে<<< আজ ১৪-১০-২০১৪ দৈনিক সমকালে আমার গল্প নন্দিনী<<< অলংকরনটাও আমার করা>>>
নন্দিনী
সোহানুর রহমান অনন্ত
কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি জানালা দিয়ে ঘরে এসে পড়ল। কাঁসর ঘণ্টার শব্দ শোনা যাচ্ছে পাশের বাড়ি থেকে। এই হিন্দু পাড়ার মধ্যে মুসলিম বাড়ি হিসেবে প্রথমে আমাদের বাড়িটিই নজরে আসে। বাবা সরকারি উঁচু শ্রেণীর চাকরিজীবী, চাকরি করলেও নিজে একটা ব্যবসা করেন আর সেই কারণেই বেশিরভাগ দেশের বাইরে কাটান। পড়াশোনা শেষ করেছি বছরখানেক আগে। বাবার অগাধ সম্পত্তি, একমাত্র ছেলে আমি, তাই তেমন একটা টেনশন নেই। আমাদের নিচতলায় নতুন দম্পতি ভাড়াটিয়া এসেছে। মেয়েটির নাম নন্দিনী, অদ্ভুত মেয়ে। পছন্দ বলতে কিছু নেই। বিয়ে করেছে কি একটা বুড়ো আদমিকে। নন্দিনীকে প্রথম যেদিন দেখি, কেন যেন চোখ ফেরাতে পারছিলাম না। শ্যামলা বর্ণের মেয়েটির টানাটানা চোখ সত্যি পুরুষদের ঘায়েল করার যন্ত্র। বোধ করি নন্দিনীকে একনজর দেখার জন্যই দিনে বেশ কয়েকবার ওপর থেকে নিচে আর নিচ থেকে ওপরে উঠি। কখনও দেখতে পাই কখনও বা পাই না। এটা ভালোলাগা থেকে কি-না জানি না। তবে নন্দিনীকে দেখলে ভালো লাগে। শিহরণ জাগে, বুকের ভেতর কাঁসর ঘণ্টা বাজে।
২.
হাত বাড়িয়ে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টির স্পর্শ নিলাম। নন্দিনী কীভাবে যেন বুঝতে পেরেছে আমি ওকে আড় চোখে দেখি। তাই এখন আর জানালার কাছে তেমন একটা দাঁড়ায় না। আমার খুব কষ্ট লাগে, একটা টান অনুভব করি ওর জন্য। মধ্যরাতে ডুকরে কেঁদে উঠি। কেন এমন হয়? তার উত্তর নন্দিনী। নিজেকে বোঝাতে চাই, একে তো মেয়েটি সনাতন ধর্মাবলম্বী তার ওপর বিবাহিত। কিন্তু মন যে এই শব্দগুলোর বিপরীত। ভালোবাসা কি জাত দেখে হয়? এসব হাজারো প্রশ্ন একাকার হয় মনের মধ্যে। দরজাটা খুলে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেলাম। নন্দিনীর ঘরের দরজা হালকাভাবে খোলা তাতে বোঝা যায় না ভেতরের কিছু। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আবার ওপরে ওঠার জন্য পা বাড়ালাম। পেছন থেকে মিষ্টি একটা শব্দ, শুনুন।
আমি চমকে পেছনে ফিরে তাকালাম। নন্দিনী দাঁড়িয়ে আছে, কপালে বড় একটা টিপ, সিঁদুরের লাল রঙে চোখ জুড়িয়ে যায়। সবশেষে আবার সেই কাজল কালো টানাটানা চোখ। আমি যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম। নন্দিনী বলে উঠল, আপনাকে একটা কথা বলি? আমি কেবল মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ-সূচক উত্তর দিলাম। ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছিলাম। অপ্রত্যাশিতভাবে
ই
নন্দিনী বলে ওঠে, আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন? নন্দিনীর এমন কথায় থতমত খেয়ে
যাই। আমার নীরবতা দেখে নন্দিনী মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলল, আপনার চোখে এত
ভয় কেন? ভয় পেলে তো ভালোবাসা শক্তি হারিয়ে ফেলে। আরেক টুকরো মিষ্টি হাসি
দিয়ে নন্দিনী ঘরের দরজা লাগিয়ে দিল। আর আমি হয়ে গেলাম পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী
মানুষ। সে রাতটায় একটুও চোখের পাতা এক করতে পারিনি। সারাক্ষণ নন্দিনীকে
ভেবেছি। অনেকটা বেশি ভেবেছি।
৩.
এরপর থেকে নন্দিনীর সঙ্গে চোখে চোখে প্রেম শুরু হলো। অল্পতে গড়িয়ে গেল অনেক দূর। জেনেছি এই বিয়েতে নন্দিনীর মত ছিল না। নন্দিনীর বাবা-মা জোর করেই এই বুড়োর সঙ্গে বিয়ে দিয়েছে। গ্রামে এমন অনেক কিছুই সম্ভব। সে যাই হোক আমাদের প্রেম যে আমার ফ্যামিলি মেনে নেবে না সেটা খুব ভালো করে জানি আমি। জানে নন্দিনীও। শুধু জানে না ভালোবাসা নামক অদৃশ্য মায়াটি। এক শরতের বিকেলে নন্দিনী আমার হাতে হাত রেখে বলল, চলো আমরা অনেক দূর পালিয়ে যাই। আমি কেবল ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম, কোথায় যাব?। অনেক দূর, যেখানে তোমার আমার মাঝখানে কেউ দেয়াল হতে পারবে না। নন্দিনীর কথাটা অনেক ভালো লেগেছিল। ওর ঠোঁটের কোণের তিলটা ছুঁয়ে বলেছিলাম। হারিয়ে যাব, হারিয়ে যাওয়ার মাঝে, যদি তুমি পাশে থাক। নন্দিনীর সেই মায়াভরা হাসি।
৪.
কয়েক দিন ধরেই নন্দিনীর সঙ্গে দেখা হচ্ছে না। নন্দিনীর স্বামী অসুস্থ, সারাক্ষণ স্বামীর কাছেই থাকে। আমি দাঁড়িয়ে থাকি দরজার ওপাশে, মাঝে মাঝে শুনতে পাই, নন্দিনীর পায়ের শব্দ। কিন্তু নন্দিনীর মুখ দেখতে পাই না। নির্ঘুম রাত কাটে, চোখের কোণে একরাশ জল নিয়ে। শরতের শেষ বিকেলে নন্দিনী ওর স্বামীকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা হয়। ডাক্তারে ওদের ভক্তি নেই, গ্রামের কবিরাজদের দিয়েই নাকি সব রোগ সাড়ানো যায়। আমি তাকিয়েছিলাম নন্দিনীর দিকে। নন্দিনী কেবল একবার তাকিয়েছিল আমার দিকে, জল ছলছল চোখে। তারপর চোখ ফিরিয়ে নেয়। নন্দিনী চলে যায় আর ফেরেনি। কত শরৎ আসে কত শরৎ যায় নন্দিনী আর আসে না। নন্দিনী চলে যাওয়ার পর নন্দিনীর বাবা একবার এসেছিল, ঘর ভাড়া এবং জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমি সাহস করে জিজ্ঞেস করেছিলাম নন্দিনীর কথা। উত্তরে শুনেছিলাম, এখান থেকে যাওয়ার পর নন্দিনীর অসুস্থ স্বামী মারা যায়। এবং নন্দিনীর মামা ওকে কলকাতা নিয়ে গিয়ে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেয়। লোকটি যেমন তাড়াহুড়া করে এলো তেমন তাড়াহুড়া করেই বেরিয়ে গেল। আমি এক পা এগিয়ে নন্দিনী যে ঘরটিতে ছিল সেদিকে তাকালাম। আমার চোখ দিয়ে তখনআমার চোখ দিয়ে তখন বৃষ্টি ঝড়ছিল। মনের মধ্যে থেমে থেমে ভেজে উঠছিল নন্দিনীর মায়ামাখা হাসির শব্দ।
নন্দিনী
সোহানুর রহমান অনন্ত
কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি জানালা দিয়ে ঘরে এসে পড়ল। কাঁসর ঘণ্টার শব্দ শোনা যাচ্ছে পাশের বাড়ি থেকে। এই হিন্দু পাড়ার মধ্যে মুসলিম বাড়ি হিসেবে প্রথমে আমাদের বাড়িটিই নজরে আসে। বাবা সরকারি উঁচু শ্রেণীর চাকরিজীবী, চাকরি করলেও নিজে একটা ব্যবসা করেন আর সেই কারণেই বেশিরভাগ দেশের বাইরে কাটান। পড়াশোনা শেষ করেছি বছরখানেক আগে। বাবার অগাধ সম্পত্তি, একমাত্র ছেলে আমি, তাই তেমন একটা টেনশন নেই। আমাদের নিচতলায় নতুন দম্পতি ভাড়াটিয়া এসেছে। মেয়েটির নাম নন্দিনী, অদ্ভুত মেয়ে। পছন্দ বলতে কিছু নেই। বিয়ে করেছে কি একটা বুড়ো আদমিকে। নন্দিনীকে প্রথম যেদিন দেখি, কেন যেন চোখ ফেরাতে পারছিলাম না। শ্যামলা বর্ণের মেয়েটির টানাটানা চোখ সত্যি পুরুষদের ঘায়েল করার যন্ত্র। বোধ করি নন্দিনীকে একনজর দেখার জন্যই দিনে বেশ কয়েকবার ওপর থেকে নিচে আর নিচ থেকে ওপরে উঠি। কখনও দেখতে পাই কখনও বা পাই না। এটা ভালোলাগা থেকে কি-না জানি না। তবে নন্দিনীকে দেখলে ভালো লাগে। শিহরণ জাগে, বুকের ভেতর কাঁসর ঘণ্টা বাজে।
২.
হাত বাড়িয়ে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টির স্পর্শ নিলাম। নন্দিনী কীভাবে যেন বুঝতে পেরেছে আমি ওকে আড় চোখে দেখি। তাই এখন আর জানালার কাছে তেমন একটা দাঁড়ায় না। আমার খুব কষ্ট লাগে, একটা টান অনুভব করি ওর জন্য। মধ্যরাতে ডুকরে কেঁদে উঠি। কেন এমন হয়? তার উত্তর নন্দিনী। নিজেকে বোঝাতে চাই, একে তো মেয়েটি সনাতন ধর্মাবলম্বী তার ওপর বিবাহিত। কিন্তু মন যে এই শব্দগুলোর বিপরীত। ভালোবাসা কি জাত দেখে হয়? এসব হাজারো প্রশ্ন একাকার হয় মনের মধ্যে। দরজাটা খুলে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেলাম। নন্দিনীর ঘরের দরজা হালকাভাবে খোলা তাতে বোঝা যায় না ভেতরের কিছু। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আবার ওপরে ওঠার জন্য পা বাড়ালাম। পেছন থেকে মিষ্টি একটা শব্দ, শুনুন।
আমি চমকে পেছনে ফিরে তাকালাম। নন্দিনী দাঁড়িয়ে আছে, কপালে বড় একটা টিপ, সিঁদুরের লাল রঙে চোখ জুড়িয়ে যায়। সবশেষে আবার সেই কাজল কালো টানাটানা চোখ। আমি যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম। নন্দিনী বলে উঠল, আপনাকে একটা কথা বলি? আমি কেবল মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ-সূচক উত্তর দিলাম। ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছিলাম। অপ্রত্যাশিতভাবে
৩.
এরপর থেকে নন্দিনীর সঙ্গে চোখে চোখে প্রেম শুরু হলো। অল্পতে গড়িয়ে গেল অনেক দূর। জেনেছি এই বিয়েতে নন্দিনীর মত ছিল না। নন্দিনীর বাবা-মা জোর করেই এই বুড়োর সঙ্গে বিয়ে দিয়েছে। গ্রামে এমন অনেক কিছুই সম্ভব। সে যাই হোক আমাদের প্রেম যে আমার ফ্যামিলি মেনে নেবে না সেটা খুব ভালো করে জানি আমি। জানে নন্দিনীও। শুধু জানে না ভালোবাসা নামক অদৃশ্য মায়াটি। এক শরতের বিকেলে নন্দিনী আমার হাতে হাত রেখে বলল, চলো আমরা অনেক দূর পালিয়ে যাই। আমি কেবল ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম, কোথায় যাব?। অনেক দূর, যেখানে তোমার আমার মাঝখানে কেউ দেয়াল হতে পারবে না। নন্দিনীর কথাটা অনেক ভালো লেগেছিল। ওর ঠোঁটের কোণের তিলটা ছুঁয়ে বলেছিলাম। হারিয়ে যাব, হারিয়ে যাওয়ার মাঝে, যদি তুমি পাশে থাক। নন্দিনীর সেই মায়াভরা হাসি।
৪.
কয়েক দিন ধরেই নন্দিনীর সঙ্গে দেখা হচ্ছে না। নন্দিনীর স্বামী অসুস্থ, সারাক্ষণ স্বামীর কাছেই থাকে। আমি দাঁড়িয়ে থাকি দরজার ওপাশে, মাঝে মাঝে শুনতে পাই, নন্দিনীর পায়ের শব্দ। কিন্তু নন্দিনীর মুখ দেখতে পাই না। নির্ঘুম রাত কাটে, চোখের কোণে একরাশ জল নিয়ে। শরতের শেষ বিকেলে নন্দিনী ওর স্বামীকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা হয়। ডাক্তারে ওদের ভক্তি নেই, গ্রামের কবিরাজদের দিয়েই নাকি সব রোগ সাড়ানো যায়। আমি তাকিয়েছিলাম নন্দিনীর দিকে। নন্দিনী কেবল একবার তাকিয়েছিল আমার দিকে, জল ছলছল চোখে। তারপর চোখ ফিরিয়ে নেয়। নন্দিনী চলে যায় আর ফেরেনি। কত শরৎ আসে কত শরৎ যায় নন্দিনী আর আসে না। নন্দিনী চলে যাওয়ার পর নন্দিনীর বাবা একবার এসেছিল, ঘর ভাড়া এবং জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমি সাহস করে জিজ্ঞেস করেছিলাম নন্দিনীর কথা। উত্তরে শুনেছিলাম, এখান থেকে যাওয়ার পর নন্দিনীর অসুস্থ স্বামী মারা যায়। এবং নন্দিনীর মামা ওকে কলকাতা নিয়ে গিয়ে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেয়। লোকটি যেমন তাড়াহুড়া করে এলো তেমন তাড়াহুড়া করেই বেরিয়ে গেল। আমি এক পা এগিয়ে নন্দিনী যে ঘরটিতে ছিল সেদিকে তাকালাম। আমার চোখ দিয়ে তখনআমার চোখ দিয়ে তখন বৃষ্টি ঝড়ছিল। মনের মধ্যে থেমে থেমে ভেজে উঠছিল নন্দিনীর মায়ামাখা হাসির শব্দ।
Monday, 22 September 2014
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪> Daily Bangladesh Potidine>রকমারি
রম্য
ফেসবুকে নতুনত্ব
সোহানুর রহমান অনন্ত
* কাজী অফিস : দিনকে দিন ফেসবুক-এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে, পাবলিক এখন পারলে খাওয়া-দাওয়াটাও ফেসবুকে করে। যেহেতু এখানে লাখ লাখ মানুষের আনাগোনা তাই ফেসবুকে কাজী অফিস খোলা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি পাত্র-পাত্রীর ছবি ও বায়োডাটা থাকবে এবং পছন্দমতো পাত্র বা পাত্রীকে যাচাই-বাছাই করে বিয়ে করতে পারবে। এমনটা করলে মন্দ হয় না।
* সেরা লাইক সুন্দরী : টিভি রিয়েলিটি শো-এর পাশাপাশি ফেসবুকেও সেরা সুন্দরী খোঁজা যেতে পারে। যেভাবে সারা দিন তরুণীরা সেলিব্রেটিদের মতো ছবি আপলোড মারে, তাতে এমনটা করা যেতেই পারে। কমেন্ট ও লাইকের মাধ্যমে সেরা ফেসবুক লাইক সুন্দরী নির্বাচিত করা যেতে পারে। এমনটা করলে ফেসবুক নতুন মাত্রা পাবে।
* অটো ঝগড়া অ্যাপস : ফেসবুক মানেই হাসাহাসি ঝগড়া। সরকারি দল-বিরোধী দল, বউ-স্বামী, প্রেমিক-প্রেমিক া
ইত্যাদির ঝগড়া। কিন্তু ঝগড়ার সময় অনেকেই দিক হারিয়ে ফেলেন, অথবা কথা খুঁজে
পান না। তাই তাদের জন্য ঝগড়া অ্যাপস বের করা যেতে পারে। এই অ্যাপস অটো
ঝগড়ার উত্তর দেবে। সুতরাং নো চিন্তা ডু ঝগড়া।
* আঁতেল কবি নির্বাচন : ফেসবুকে কিছু আঁতেল কবি আছে, যারা সারা দিন আজাইরা কবিতা ও স্ট্যাটাস আপলোড মারে। তাদের দিয়ে ফেসবুক আঁতেল কবি নির্বাচন করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে তারা তাদের কবিতা দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান তৈরি করে পোস্ট দেবে এবং ফেসবুক ভোটের মাধ্যমে একজন আঁতেল কবি নির্বাচিত করা যেতে পারে। যার কবিতা দিয়ে বই বের করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে আঁতেলদের আজাইরা পোস্ট মারা কমে যাবে।
* ফেসবুক সিরিয়াল : একঘেয়েমি চ্যাট করতে করতে অনেকেই বিরক্ত হয়ে যান। তাই ফেসবুকেও সিরিয়ালের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে চ্যাট করার পাশাপাশি সিরিয়াল দেখেও পাবলিক বিনোদন পাবে।
ফেসবুকে নতুনত্ব
সোহানুর রহমান অনন্ত
* কাজী অফিস : দিনকে দিন ফেসবুক-এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে, পাবলিক এখন পারলে খাওয়া-দাওয়াটাও ফেসবুকে করে। যেহেতু এখানে লাখ লাখ মানুষের আনাগোনা তাই ফেসবুকে কাজী অফিস খোলা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি পাত্র-পাত্রীর ছবি ও বায়োডাটা থাকবে এবং পছন্দমতো পাত্র বা পাত্রীকে যাচাই-বাছাই করে বিয়ে করতে পারবে। এমনটা করলে মন্দ হয় না।
* সেরা লাইক সুন্দরী : টিভি রিয়েলিটি শো-এর পাশাপাশি ফেসবুকেও সেরা সুন্দরী খোঁজা যেতে পারে। যেভাবে সারা দিন তরুণীরা সেলিব্রেটিদের মতো ছবি আপলোড মারে, তাতে এমনটা করা যেতেই পারে। কমেন্ট ও লাইকের মাধ্যমে সেরা ফেসবুক লাইক সুন্দরী নির্বাচিত করা যেতে পারে। এমনটা করলে ফেসবুক নতুন মাত্রা পাবে।
* অটো ঝগড়া অ্যাপস : ফেসবুক মানেই হাসাহাসি ঝগড়া। সরকারি দল-বিরোধী দল, বউ-স্বামী, প্রেমিক-প্রেমিক
* আঁতেল কবি নির্বাচন : ফেসবুকে কিছু আঁতেল কবি আছে, যারা সারা দিন আজাইরা কবিতা ও স্ট্যাটাস আপলোড মারে। তাদের দিয়ে ফেসবুক আঁতেল কবি নির্বাচন করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে তারা তাদের কবিতা দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান তৈরি করে পোস্ট দেবে এবং ফেসবুক ভোটের মাধ্যমে একজন আঁতেল কবি নির্বাচিত করা যেতে পারে। যার কবিতা দিয়ে বই বের করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে আঁতেলদের আজাইরা পোস্ট মারা কমে যাবে।
* ফেসবুক সিরিয়াল : একঘেয়েমি চ্যাট করতে করতে অনেকেই বিরক্ত হয়ে যান। তাই ফেসবুকেও সিরিয়ালের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে চ্যাট করার পাশাপাশি সিরিয়াল দেখেও পাবলিক বিনোদন পাবে।
১৫-০৯-২০১৪ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর রকমারি রম্যতে আমার লেখা টিপস& মিস করলে চলবে না ভায়া...........
.
৬টি টিপস একটি নিখোঁজ
সবাই চিপায় পড়ে গেলে টিপস খোঁজেন কীভাবে পরিস্থিতির সামাল দেবেন। কোন পরিস্থিতিতে কী করবেন তা দেখে নিন একনজরে। লিখেছেন- সোহানুর রহমান অনন্ত
প্রেমিকা যদি অন্য মেয়ের হাত ধরতে দেখে ফেলে যা বলবেন :
- ইয়ে মানে জান, আসলে মেয়েটি চোখে দেখে না, তাই হাত ধরে রাস্তা পার করে দিলাম, জানই তো আমি আবার দিল দরদি। ব্যস দেখবেন আপনার প্রেমিকা মোমের মতো গলে গেছে। মেয়েরা আবার পরোপকারী বয়ফ্রেন্ড পছন্দ করে।
বউ যদি সারাক্ষণ হিন্দি সিরিয়াল দেখে তাহলে যা করবেন :
- বউয়ের মোবাইলে ৫০০ টাকা লোড করে দেবেন। তারপর ওমুককে ফোন দাও তমুককে ফোনে বলে, মোবাইলে বিজি করে দেবেন। দেখবেন সে আজাইরা কথা বলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, এ সুযোগে আপনি আরামে টিভি দেখতে পারবেন।
ছুটি বেশি কাটালে বসকে যা বলবেন :
- স্যার আপনি তো আসল খবরই জানেন না। আমার বউ বলছে সপ্তাহে তিন দিন মার্কেটে নিয়ে যেতে। আর বাকি চার দিন রেস্টুরেন্টে খাবার খাওয়াতে। তাই ছুটির ওপরে থাকি আরকি। এই যে তিন দিনের কথা বলে এক সপ্তাহ পার করে দিলাম সেটাও কিন্তু ওই যে সাত দিনের শিডিউল দেখে।
পাওনাদার টাকা চাইলে, যা করবেন :
- আরে ভাই টাকা পাইবেন ভালো কথা, আগে বাসায় আসেন। আপনারে আগে খাওয়ামু তারপর টাকা দিমু। ব্যস বাসায় নিয়ে কিছু খাইয়ে দিন। যদি বুয়ার রান্নায় গণ্ডগোল থাকে তাহলে তো কথাই নেই। আপনার কাছে টাকা চাওয়া তো দূরের কথা, আপনাকে দেখলেই পালাবে।
বন্ধুদের খাওয়ার জন্য যা বলবেন :
- খাইতে চাইছ ভালো কথা, তোরা খাবি না তো কে খাইব? কিন্তু কথা হলো ভুল কইরা মানিব্যাগটা বাসায় ফালাইয়া আইছি, এহন তোদের থেকে কেউ ইমার্জেন্সি টাকা ধার দিলেই খাবারের ব্যবস্থা করতে পারি। দেখবেন খাওয়ার কথা এমনিতেই ভুলে গেছে।
৬টি টিপস একটি নিখোঁজ
সবাই চিপায় পড়ে গেলে টিপস খোঁজেন কীভাবে পরিস্থিতির সামাল দেবেন। কোন পরিস্থিতিতে কী করবেন তা দেখে নিন একনজরে। লিখেছেন- সোহানুর রহমান অনন্ত
প্রেমিকা যদি অন্য মেয়ের হাত ধরতে দেখে ফেলে যা বলবেন :
- ইয়ে মানে জান, আসলে মেয়েটি চোখে দেখে না, তাই হাত ধরে রাস্তা পার করে দিলাম, জানই তো আমি আবার দিল দরদি। ব্যস দেখবেন আপনার প্রেমিকা মোমের মতো গলে গেছে। মেয়েরা আবার পরোপকারী বয়ফ্রেন্ড পছন্দ করে।
বউ যদি সারাক্ষণ হিন্দি সিরিয়াল দেখে তাহলে যা করবেন :
- বউয়ের মোবাইলে ৫০০ টাকা লোড করে দেবেন। তারপর ওমুককে ফোন দাও তমুককে ফোনে বলে, মোবাইলে বিজি করে দেবেন। দেখবেন সে আজাইরা কথা বলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, এ সুযোগে আপনি আরামে টিভি দেখতে পারবেন।
ছুটি বেশি কাটালে বসকে যা বলবেন :
- স্যার আপনি তো আসল খবরই জানেন না। আমার বউ বলছে সপ্তাহে তিন দিন মার্কেটে নিয়ে যেতে। আর বাকি চার দিন রেস্টুরেন্টে খাবার খাওয়াতে। তাই ছুটির ওপরে থাকি আরকি। এই যে তিন দিনের কথা বলে এক সপ্তাহ পার করে দিলাম সেটাও কিন্তু ওই যে সাত দিনের শিডিউল দেখে।
পাওনাদার টাকা চাইলে, যা করবেন :
- আরে ভাই টাকা পাইবেন ভালো কথা, আগে বাসায় আসেন। আপনারে আগে খাওয়ামু তারপর টাকা দিমু। ব্যস বাসায় নিয়ে কিছু খাইয়ে দিন। যদি বুয়ার রান্নায় গণ্ডগোল থাকে তাহলে তো কথাই নেই। আপনার কাছে টাকা চাওয়া তো দূরের কথা, আপনাকে দেখলেই পালাবে।
বন্ধুদের খাওয়ার জন্য যা বলবেন :
- খাইতে চাইছ ভালো কথা, তোরা খাবি না তো কে খাইব? কিন্তু কথা হলো ভুল কইরা মানিব্যাগটা বাসায় ফালাইয়া আইছি, এহন তোদের থেকে কেউ ইমার্জেন্সি টাকা ধার দিলেই খাবারের ব্যবস্থা করতে পারি। দেখবেন খাওয়ার কথা এমনিতেই ভুলে গেছে।
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪>Daily bangladesh potidine rokomari rommo-ta amar lakha
ফরমালিন ঠেকাতে
আমাদের চারপাশে এখন ফরমালিনের ছড়াছড়ি। ফল থেকে শুরু করে মাছ, সবজি সব জায়গাতেই ফ্রি হিসেবে মেলে ফরমালিন বিষ। তবে ফরমালিন না দিয়েও সব কিছু কীভাবে তরতাজা পেতে পারি সেটাই জানাচ্ছে- সোহানুর রহমান অনন্ত
রাস্তার গর্তে মাছ চাষ
শহরে ভাঙা ও গর্তওলা রাস্তার অভাব নেই। সেই গর্তগুলো মাসের পর মাস, বছরের পর বছর এমনিতেই পড়ে থাকে। তাই সেখানে মাছ চাষ করা যেতে পারে। ক্রেতারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে মাছ পছন্দ করবে আর বিক্রেতারা তাজা মাছ ধরে দেবে। এ ক্ষেত্রে ফরমালিন ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই।
ছাদে চাষ পদ্ধতি
অনেক বাড়ির ছাদ ফাঁকা পড়ে থাকে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে চুরি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আলো বাতাস দুটোই পাওয়া যাবে। ক্রেতারা একেবারে ছাদ থেকে তাজা সবজি কিনবে। একদিকে বাড়িওলারা যেমন লাভবান হবে অন্যদিকে ফরমালিন ব্যবহার করতে হবে না।
ক্যাটালগ পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে বিক্রেতারা ফলের ক্যাটালগ নিয়ে বসে থাকবে। ক্রেতারা সেই ক্যাটালগ দেখবে এবং ফল পছন্দ করবে। দরদাম ঠিক হলে, একেবার বাগান থেকে ফল সাপ্লাই দেবে, যেহেতু সরাসরি গাছ থেকে ফলটা আসবে সেহেতু ফরমালিনের ব্যবহার কোনোভাবে দরকার নেই।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে বিক্রেতা গাড়ি দিয়ে ঘুরে ঘুরে মাছ বিক্রি করবে। যেহেতু গাড়িটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, মাছ নষ্ট বা পচে যাওয়ার কোনো চান্স নেই। আর বিক্রেতাও এক জায়গায় না বসে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতে পারবে।
রাস্তার পাশে ফল গাছ পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে রাস্তার পাশগুলোতে ফলের চারা রোপণ করতে হবে। প্রতিটি গাছের মালিক গাছে ফল হওয়া মাত্রই বিভিন্ন রেট দিয়ে বিক্রি শুরু করবে। এতে একদিকে যেমন ফরমালিন মুক্ত ফল পাওয়া যাবে অন্যদিকে গাছে গাছে ভরে উঠবে আমাদের চারপাশ।
ফরমালিন ঠেকাতে
আমাদের চারপাশে এখন ফরমালিনের ছড়াছড়ি। ফল থেকে শুরু করে মাছ, সবজি সব জায়গাতেই ফ্রি হিসেবে মেলে ফরমালিন বিষ। তবে ফরমালিন না দিয়েও সব কিছু কীভাবে তরতাজা পেতে পারি সেটাই জানাচ্ছে- সোহানুর রহমান অনন্ত
রাস্তার গর্তে মাছ চাষ
শহরে ভাঙা ও গর্তওলা রাস্তার অভাব নেই। সেই গর্তগুলো মাসের পর মাস, বছরের পর বছর এমনিতেই পড়ে থাকে। তাই সেখানে মাছ চাষ করা যেতে পারে। ক্রেতারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে মাছ পছন্দ করবে আর বিক্রেতারা তাজা মাছ ধরে দেবে। এ ক্ষেত্রে ফরমালিন ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই।
ছাদে চাষ পদ্ধতি
অনেক বাড়ির ছাদ ফাঁকা পড়ে থাকে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে চুরি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আলো বাতাস দুটোই পাওয়া যাবে। ক্রেতারা একেবারে ছাদ থেকে তাজা সবজি কিনবে। একদিকে বাড়িওলারা যেমন লাভবান হবে অন্যদিকে ফরমালিন ব্যবহার করতে হবে না।
ক্যাটালগ পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে বিক্রেতারা ফলের ক্যাটালগ নিয়ে বসে থাকবে। ক্রেতারা সেই ক্যাটালগ দেখবে এবং ফল পছন্দ করবে। দরদাম ঠিক হলে, একেবার বাগান থেকে ফল সাপ্লাই দেবে, যেহেতু সরাসরি গাছ থেকে ফলটা আসবে সেহেতু ফরমালিনের ব্যবহার কোনোভাবে দরকার নেই।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে বিক্রেতা গাড়ি দিয়ে ঘুরে ঘুরে মাছ বিক্রি করবে। যেহেতু গাড়িটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, মাছ নষ্ট বা পচে যাওয়ার কোনো চান্স নেই। আর বিক্রেতাও এক জায়গায় না বসে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতে পারবে।
রাস্তার পাশে ফল গাছ পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে রাস্তার পাশগুলোতে ফলের চারা রোপণ করতে হবে। প্রতিটি গাছের মালিক গাছে ফল হওয়া মাত্রই বিভিন্ন রেট দিয়ে বিক্রি শুরু করবে। এতে একদিকে যেমন ফরমালিন মুক্ত ফল পাওয়া যাবে অন্যদিকে গাছে গাছে ভরে উঠবে আমাদের চারপাশ।
চাঁদপুর, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ২১
ফুলপরীদের খেলাঘর
সোহানুর রহমান অনন্ত
অর্পাদের
বাগানে অনেক রকমের ফুল গাছ আছে। নানা রঙ আছে ফুলের আছে অনেক রকম সৌরভ।
অর্পার বাবার ফুল খুব পছন্দ। অর্পা ক্লাস ফোরে উঠেছে এবার। সময় পেলেই অর্পা
ফুল বাগানে খেলতে বের হয়, মাথার জুটি বাতাসে দুলিয়ে। রুনু কে ডাক দেয়,
আমার সাথে খেলবে যদি আয়। রুনু অর্পাদের কাজের বুয়ার মেয়ে। টাকার অভাবে
পড়াশোনা করতে পারেনা তাই মায়ের সাথে বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে। বয়সে অর্পার
সমান একটু চিকন, কালো। মাথার চুলগুলো এলোমলো, হাসলে হলদে দাঁতগুলো বেরিয়ে
আসে। রুনু অর্পার সাথে খেলুক এটা অর্পার মায়ের পছন্দ নয়। এ নিয়ে প্রায় সময়
রুনুকে বকাঝোঁকা করে অর্পার আম্মু। অর্পা ওর আম্মুকে বুঝাতে চায় একা একা
কি খেলা করা যায় নাকি তাছাড়া রুনুর সাথে মিশলে সমস্যাটা কি? আম্মু বলেন
কম্পিউটারে গেম খেল অথবা রূপকথার বই পড় আর ছোটলোকদের সাথে মিশলে তুমিও
ছোটলোক হয়ে যাবে। ধনি গরিবের ব্যবধান অর্পার কাছে ভাল লাগে না। সবচে বড়
পরিচয় হচ্ছে আমরা মানুষ আর এই চিরসত্য কথাটাই মাকে বোঝানো যায় না।
কম্পিউটারে সারাদিন গেম খেলতে ভাল লাগেনা অর্পার, ভাল লাগেনা সারাদিন বই
পড়তে। ভাল লাগে সবুজ ঘাসের পাটিতে বসে রুনুর সাথে বউ পুতুল খেলতে। ফুল
বাগানে প্রজাপতির মতো হাত দুটি তুলে উড়ে বেড়াতে। সেদিন বিকেল বেলা অর্পার
আম্মু ঘুমিয়ে আছে। অর্পা চুপি চুপি গিয়ে রুনুকে খবর দেয়, আয় আমরা ফুল
বাগানে খেলতে যাই। রুনুও বারণ করে কিন্তু অর্পা শোনে না। সে জানায় ওর আম্মু
এখন ঘুমাচ্ছে। রুনু খেলতে যায় অর্পার সাথে। দু'জন মিলে বউ পুতুল খেলে।
অর্পার আম্মু বিষয়টা দেখে ফেলে এবং রুনুকে সেদিন অনেক মারধোর করে। অর্পা ওর
আম্মুকে অনেক করে বোঝাতে চেয়েছে, রুনুর কোনে দোষ নেই সব দোষ অর্পার কিন্তু
অর্পার আম্মু সেদিকে কান দেয়নি। সেদিন রাতে অর্পার একটুও ঘুম হয়নি সারারাত
কেঁদে কাটিয়েছে। সেদিনের পর থেকে রুনু আর অর্পার কাছে আসে না। দু'তিন দিন
পর কাজের বুয়া কাজ ছেড়ে গ্রামে চলে যায়। সঙ্গে চলে যায় রুনু। অর্পার খুব
কষ্ট হয় রুনুকে বিদায় দিতে। তারপর থেকে শুরু হয় অর্পার একলা জীবন। খেলার
কোন সাথী নেই, একলা একলা ফুল বাগানে হেঁটে বেড়ায় অর্পা। বউ পুতুলগুলো পড়ে
থাকে গাছের নিচে। একদিন মাঝ রাতে অর্পার হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়। ফুল বাগানে
কারা যেন কথা বলছে। আস্তে আস্তে বিছানায় উঠে বসে অর্পা। জানালা দিয়ে উকি
দেয়। কতগুলো ছোট ছোট মেয়ে। লম্বায় অর্পার সমান, ফুল বাগানে খেলা করছে।
অর্পা দরজা খুলে ফুল বাগানে চলে যায়। গিয়ে দেখে ওর বউ পুতুল দিয়ে মেয়েগুলো
খেলা করছে। অর্পা কাছে গিয়ে বলে কে তোমরা? এখানে কি চাও? অর্পার কথায় ভয়
পেয়ে যায় মেয়ে গুলো। আমরা ফুলপরী। অর্পার এবার অবাক হয় তাইতো বলি তোমাদের
পিঠে পাখা কেন। বইয়ের মাঝে তোমাদের কথা অনেক পড়েছি। শুনেছি অনেক রূপকথাও।
ফুলপরীরা হেসে বলে, ঠিক আমাদের দিয়ে মানুষরা গল্প রচনা করে। তোমরা এখানে
রোজ খেলতে আসো? প্রশ্ন করে অর্পা। হ্যাঁ, এটাইতো আমাদের খেলাঘর।
আর্পা ওদের আরো কাছে গিয়ে বলে, আমাকে তোমাদের সাথে খেলতে নেবে? আমার কোন বন্ধু নেই, কেউ আমার সাথে খেলতে চায় না। ফুলপরী বলল কেন নেবোনা, এসো আগে তোমাকে আমাদের বন্ধু বানাই। সেটা কিভাবে? তোমার পায়ে দু'টো রূপার নুপুর পরিয়ে দেবো, তাহলেই তুমি আমাদের বন্ধু হবে। দেখছো না আমাদের সবার পায়ে দু'টি করে নুপুর আছে। দু'টি সুন্দর রূপার নুপুর অর্পার পায়ে পরিয়ে দিল ক্ষুদে ফুল পরীরা। তারপর সবাই খেলায় মেতে উঠলো। খুব আনন্দ হলো, অর্পার মনের মাঝে। অনেকদিন পর খেলার সাথী জুটেছে ওর।
ঘুম ভাঙলো মায়ের ডাকে, অর্পা স্কুলের সময় হয়েছে। ঘুম ভাঙতেই অর্পা চমকে উঠে নিজেকে বিছানায় দেখে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৮টা বেজে কুঁড়ি মিনিট। গত রাতের সব কিছু স্বপ্ন মনে হয় অর্পার কাছে কিন্তু যখন পায়ের দিকে চোখ পড়ে অমনি দেখে পায়ে দু'টি রূপার নুুপুর। রৌদ্রের আলো খেলা করছে তার উপরে। অর্পা খুব খুশি হয়। রাতের বেলা আবার সে পরীদের খেলাঘরে গিয়ে খেলা করে। এভাবেই আনন্দে কাটে অর্পার প্রতিটি রাত।
আর্পা ওদের আরো কাছে গিয়ে বলে, আমাকে তোমাদের সাথে খেলতে নেবে? আমার কোন বন্ধু নেই, কেউ আমার সাথে খেলতে চায় না। ফুলপরী বলল কেন নেবোনা, এসো আগে তোমাকে আমাদের বন্ধু বানাই। সেটা কিভাবে? তোমার পায়ে দু'টো রূপার নুপুর পরিয়ে দেবো, তাহলেই তুমি আমাদের বন্ধু হবে। দেখছো না আমাদের সবার পায়ে দু'টি করে নুপুর আছে। দু'টি সুন্দর রূপার নুপুর অর্পার পায়ে পরিয়ে দিল ক্ষুদে ফুল পরীরা। তারপর সবাই খেলায় মেতে উঠলো। খুব আনন্দ হলো, অর্পার মনের মাঝে। অনেকদিন পর খেলার সাথী জুটেছে ওর।
ঘুম ভাঙলো মায়ের ডাকে, অর্পা স্কুলের সময় হয়েছে। ঘুম ভাঙতেই অর্পা চমকে উঠে নিজেকে বিছানায় দেখে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৮টা বেজে কুঁড়ি মিনিট। গত রাতের সব কিছু স্বপ্ন মনে হয় অর্পার কাছে কিন্তু যখন পায়ের দিকে চোখ পড়ে অমনি দেখে পায়ে দু'টি রূপার নুুপুর। রৌদ্রের আলো খেলা করছে তার উপরে। অর্পা খুব খুশি হয়। রাতের বেলা আবার সে পরীদের খেলাঘরে গিয়ে খেলা করে। এভাবেই আনন্দে কাটে অর্পার প্রতিটি রাত।
চাঁদপুর, শনিবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ২৯
অপরাধী
অপরাধী
সোহানুর রহমান অনন্ত
মানুষের
জীবনে কখন এসে দুর্দিন দেখা দেয় তা কেউ বলতে পারে না, বলতে পারেনি আদম
আলীও। তার জীবনে আজ দুর্দিন ভয়াবহ দুর্দিন যাচ্ছে। অথচ কিছুদিন আগেও তার
গোলাভরা ধান ছিলো, উঠোন জুড়ে ছিলো হাস-মুরগির বিচরণ, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর
জুড়ে ছিলো বড় বড় মাছের ছোটাছুটি ছিলো। কিন্তু আজ নেই কিছুই নেই আদম আলীর।
সর্বনাশা পদ্মার ভাঙ্গনে তার জীবন থেকে সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। চোখের সামনেই
বাপ-দাদার ভিটা মাটি ফসলের মাঠ এক এক করে হারিয়ে গেলো পদ্মার গহীন অথৈ জলে।
সবকিছু হারিয়ে নিঃশ্ব হয়ে ঢাকার শহরে পারি জমায় আদম আলী। সঙ্গে তার স্ত্রী
এবং দু' মেয়ে ১০ বছরের মণি ও ৭ বছরের মুক্তা। প্রথমে ঢাকায় এসে কাজের জন্য
দিশেহারা হয়ে যায় আদম আলী। পরে অনেক কষ্টে ইসলামপুর একটা মার্কেটে লেবারের
কাজ পায়। দিনে যা রোজগার হতো কোনো রকম দু মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে দু' মুঠো
ডাল-ভাত খেয়ে চলে যেতো কদম আলীর। এক সময় খুব আরামের বিছানায় শুয়ে দিন
কেটেছিলো আদম আলীর স্ত্রী কিন্তু আজ ঠাঁই হয়েছে কমলাপুর বস্তিতে। মাঝে মাঝে
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আদম আলীর বউ পড়শীদের কাছে বলে কে ভেবে ছিলো আল্লাহ্
আমাদের কপালে এমন কষ্ট লেইখা রাখছে। মেয়ে দুটো সারাক্ষণ রেল লাইনের রাস্তার
পাশে বসে খেলা করে, আর অপেক্ষায় থাকে কহন সন্ধ্যা হইবো আর বাপজান আইবো।
কদম আলীর কোনদিন রোজগার একটু বেশি হয়, কোনদিন আবার কম হয়, যেদিন বেশি হয়
সেদিন ছোট মেয়েটা মুক্তার জন্য পাকা কলা নিয়ে যায়। ছোট থেইকাই মুক্তা পাকা
কলার পাগল, আর বড় মেয়ে মণি ওর কোনো ইচ্ছা নেই। কম বেশি মণি সংসারের সব
কিছুই বুঝতে শিখেছে। বাপের অবস্থা ভালো করেই উপলব্ধি করছে মণি তাই ওর কোনো
বায়না নেই। এভাবেই আদম আলীর সংসার এক রকম দুঃখে কষ্টে চলে যাচ্ছিলো। একদিন
সন্ধ্যা বেলা গম্ভীর মুখে বাসায় ফিরে আদম আলী। এসে দেখে ছোট মেয়েটার ভীষণ
জ্বর, পাশে বসে ওর মা মাথায় জল পট্টি দিচ্ছে। কহন থেইকা ওর জ্বর? প্রশ্ন
করে আদম আলী। দুপুরের পর থেইকা জ্বর আইছে, আপনের মুখটা এতো শুকনা কেন? কোনো
খারাপ সংবাদ। না, মানে কাইল থেইকা দুই দিন হরতাল, হরতালে দিয়াতো আর
মার্কেট খুলবোনা আর মার্কেট না খুললো টেকা পয়সাও কামাইতে পারুম না। এর
মধ্যে আবার মাইয়াডার জ্বর আইছে অহন যে আমি কি করি। অতো চিন্তা কইরেন না
আল্লাহ একটা না একটা ব্যবস্থা কইরাই দিবো। মণি কই? আছে হয়তো রানুগো ঘরে
বইসা রানুর লগে কথা কইতাছে। আপনে কয়ডা ভাত খাইয়া ঘুমানতো সারাদিন অনেক
খাইট্টা আইছেন। হু, দাও দেহি কয়ডা ডাইল ভাত।
মাঝ রাতে হঠাৎ রানুর বাপ এসে আদম আলীরে ডেকে বললো কাইল থেইকা দুইদিন তো হরতাল, এইর মধ্যে তো কাজ কর্ম নাই চলো আমরা মিছিলে যাই হাজিরা দুইশো টাকা। আদম আলী মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলে না মিয়া মিছিল মিটিংয়ের ধারে কাছে যামু না। চিন্তা কইরা দেখো আদম দুই দিনে চাইরশো টেকা পাইবা না খেয়ে মরার চেয়ে তিন চাইর ঘণ্টা মিছিল কইরা যদি চাইরশো টেকা পাও তাতে মন্দ কি? আদম আলী কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। ঘরে আদরের মেয়ে মুক্তার জ্বর, চাল-ডালও নাই, ঘরে বসে থাকার চেয়ে মিছিলে গেলে মনে হয় ভালা অইবো, আমরা গরিবেরা কাজ না করলে তো আসলেই না খাইয়া মরুম। আদম আলী পাকা কথা দিয়ে দেয় রানুর বাপকে কাল সে মিছিলে যাচ্ছে। পরদিন আদম আলী মিছিলে যায়, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মাঝে প্রথম দিন হরতাল শেষ হয়। সন্ধ্যা বেলা মেয়ের জন্য ঔষধ নিয়ে আসে আদম আলী। মুক্তার অবস্থা এখন আগের চাইতে একটু ভালো। আদম আলীকে আসতে দেখেই মাথা তুলে মুক্তা বলে আমার জন্য কলা আনছো বাপজান? হু মা আনছি কলা আনছি আম আনছি। কি মজা মণি আপার লাইগা কিছু আনে নাই সব আমার লাইগা আনছ এই বলে মুক্তা বিছানা থেকে মাথা তুলে হাসে। মণি ঘরের এক কোণে দাঁড়িয়ে ছিলো, আদম আলী সেদিকে তাকিয়ে বলে তোর লাইগা কাইল কিছু আনুম নে মন খারাপ করিস্ না মা। আব্বা এই মিছিলে তোমার না গেলে অয় না? কি মারামারি হয় আমার ডর করে। ডর কিরে মা ঘরে বইসা থাকলে তোগোরে খাওয়াইবো কে? নে চাল আনছি ভাত রান্না কর ক্ষিধা লাগছে।
পরের দিন আবার হরতালে গেলো আদম আলী, আসার সময় মুক্তাকে বলে এসেছে আজ আবার ওর জন্য পাকা কলা নিয়ে যাবে। এ কথা শুনে খুব খুশি হয়েছিলো মুক্তা। আজকের হরতাল খুব ভয়াবহ চলছে, চারিদিকে গাড়ি ভাংচুর, পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছে। মিছিলের ঝাঁঝালো আওয়াজে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। হঠাৎ হরতালে পক্ষ বিপক্ষের মধ্যে মারামারি লেগে গেলো। দু চারটা বোমা ফুটলো, মানুষ দিগি�দিক ছুটতে লাগলো, কদম আলী কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েকটা যুবক এসে মারতে শুরু করলো। পুলিশ চেয়ে চেয়ে দেখলো সেই দৃশ্য পুলিশের দায়িত্বের কোনো ভূমিকা পালন করলো না। আদম আলী ছেলেগুলোর পা ধরে বলতে লাগলো বাবা গো আমারে ছাইড়া দাও পেটের জ্বালায় রাস্তায় নামছি, আমি গরির মানুষ সন্ত্রাসী না। ঘরে আমার অসুস্থ মেয়ে আমার পথ চেয়ে আছে, এ বলে আবার পুলিশের পায়ে গিয়া ধরলো। ভাইরা আমারে বাঁচান ওরা আমারে মাইরা ফালাইলো। পুলিশ কিছুই করলো না ওল্টো আরো আদম আলীর শার্ট টেনে ধরে ওদের হাতে তুলে দিলো। আদম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলতো লাগলো আমারে আর মাইরোনা মইরা যামু আর শয্য হইতাছে না। কিন্তু কে শুনে কার কথা নরপশুরা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাত করেই শান্ত� হয়নি। রাস্তার মধ্যে ফেলে মোটা লোহার শেকল দিয়ে মাথার মধ্যে কয়েক বার আঘাত করে ফেলে যায় আদম আলীকে। আদম আলীর রক্তে লাল হয়ে যায় রাস্তার ধুলো মাটিগুলো। আদম আলী চোখের সামনে আপছা আপছা আঁধার দেখতে পায়, ভেসে উঠে বড় মেয়েটির মুখ। (বাপজান তুমি মিছিলে যাইওনা আমার কেমন জানি ডর করে) সেই কচি সুর কানে বেজে উঠে। ছোট্ট মেয়েটির সেই মুখ ভারা হাসি, (বাপজান আমার লাইগা পাকা কলা আইনো, তাইলে আমার জ্বর ভালা অইয়া যাইবো) তারপর আস্তে আস্তে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে আদম আলীর। নিভে যাচ্ছে জীবন প্রদীপ নিভে যাচ্ছে, হাজার হাজার লোক ছুটে যাচ্ছে আদম আলীর ওপর দিয়ে, কেউবা হাতে কেউবা মুখের ওপর পায়ের চাপা দিয়ে। আদম আলী চিৎকার করে ওদের বললো আমারে তোমরা একটু বাঁচাও....বাঁচাও...কেউ শুনলোনা সেই ডাক। এক সময় চারিদিকের কোলাহলের মাঝে থেমে গেলো আদম আলীর চিৎকার। নিভে গেলো আদম আলীর জীবন প্রদীপ, সেই দৃশ্য দেখে আকাশটা বুঝি কষ্ট পেয়েছিলো, কষ্ট পেয়েছিলো মেঘেরা। তাইতো আদম আলীকে একটু ছুঁয়ে দেখার জন্য বৃষ্টি হয়ে নেমে এলো বৃষ্টির দল। বাতাস থেমে গিয়েছিলো কিছুক্ষণের জন্য, গোটা পৃথিবী নিঃশব্দে কেঁদেছিলো কিছুক্ষণের জন্য। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী কে, ক্ষুধার যন্ত্রণায় কেউ পথে বসে মরে কেউবা চেয়ে চেয়ে দেখে সেই দৃশ্য। তাই মনে আজ প্রশ্ন জাগে, আর কতদিন এভাবে পথে পথে নীরিহ গরির মানুষদের প্রাণ হারাতে হবে, দেশের এই অবস্থার জন্য কে অপরাধী। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমে এলো তবুও আদম আলী ফিরলো না ঘরে, ছোট্ট মেয়েটি বাবার অপেক্ষায় বসে আছে, কখন বাপজান আসবে পাকা কলা নিয়ে। কিন্তু কে তাকে বলবে তার বাবা যে আর কোনোদিনও ফিরবে না........কোনোদিনও না।
মাঝ রাতে হঠাৎ রানুর বাপ এসে আদম আলীরে ডেকে বললো কাইল থেইকা দুইদিন তো হরতাল, এইর মধ্যে তো কাজ কর্ম নাই চলো আমরা মিছিলে যাই হাজিরা দুইশো টাকা। আদম আলী মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলে না মিয়া মিছিল মিটিংয়ের ধারে কাছে যামু না। চিন্তা কইরা দেখো আদম দুই দিনে চাইরশো টেকা পাইবা না খেয়ে মরার চেয়ে তিন চাইর ঘণ্টা মিছিল কইরা যদি চাইরশো টেকা পাও তাতে মন্দ কি? আদম আলী কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। ঘরে আদরের মেয়ে মুক্তার জ্বর, চাল-ডালও নাই, ঘরে বসে থাকার চেয়ে মিছিলে গেলে মনে হয় ভালা অইবো, আমরা গরিবেরা কাজ না করলে তো আসলেই না খাইয়া মরুম। আদম আলী পাকা কথা দিয়ে দেয় রানুর বাপকে কাল সে মিছিলে যাচ্ছে। পরদিন আদম আলী মিছিলে যায়, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মাঝে প্রথম দিন হরতাল শেষ হয়। সন্ধ্যা বেলা মেয়ের জন্য ঔষধ নিয়ে আসে আদম আলী। মুক্তার অবস্থা এখন আগের চাইতে একটু ভালো। আদম আলীকে আসতে দেখেই মাথা তুলে মুক্তা বলে আমার জন্য কলা আনছো বাপজান? হু মা আনছি কলা আনছি আম আনছি। কি মজা মণি আপার লাইগা কিছু আনে নাই সব আমার লাইগা আনছ এই বলে মুক্তা বিছানা থেকে মাথা তুলে হাসে। মণি ঘরের এক কোণে দাঁড়িয়ে ছিলো, আদম আলী সেদিকে তাকিয়ে বলে তোর লাইগা কাইল কিছু আনুম নে মন খারাপ করিস্ না মা। আব্বা এই মিছিলে তোমার না গেলে অয় না? কি মারামারি হয় আমার ডর করে। ডর কিরে মা ঘরে বইসা থাকলে তোগোরে খাওয়াইবো কে? নে চাল আনছি ভাত রান্না কর ক্ষিধা লাগছে।
পরের দিন আবার হরতালে গেলো আদম আলী, আসার সময় মুক্তাকে বলে এসেছে আজ আবার ওর জন্য পাকা কলা নিয়ে যাবে। এ কথা শুনে খুব খুশি হয়েছিলো মুক্তা। আজকের হরতাল খুব ভয়াবহ চলছে, চারিদিকে গাড়ি ভাংচুর, পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছে। মিছিলের ঝাঁঝালো আওয়াজে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। হঠাৎ হরতালে পক্ষ বিপক্ষের মধ্যে মারামারি লেগে গেলো। দু চারটা বোমা ফুটলো, মানুষ দিগি�দিক ছুটতে লাগলো, কদম আলী কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েকটা যুবক এসে মারতে শুরু করলো। পুলিশ চেয়ে চেয়ে দেখলো সেই দৃশ্য পুলিশের দায়িত্বের কোনো ভূমিকা পালন করলো না। আদম আলী ছেলেগুলোর পা ধরে বলতে লাগলো বাবা গো আমারে ছাইড়া দাও পেটের জ্বালায় রাস্তায় নামছি, আমি গরির মানুষ সন্ত্রাসী না। ঘরে আমার অসুস্থ মেয়ে আমার পথ চেয়ে আছে, এ বলে আবার পুলিশের পায়ে গিয়া ধরলো। ভাইরা আমারে বাঁচান ওরা আমারে মাইরা ফালাইলো। পুলিশ কিছুই করলো না ওল্টো আরো আদম আলীর শার্ট টেনে ধরে ওদের হাতে তুলে দিলো। আদম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলতো লাগলো আমারে আর মাইরোনা মইরা যামু আর শয্য হইতাছে না। কিন্তু কে শুনে কার কথা নরপশুরা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাত করেই শান্ত� হয়নি। রাস্তার মধ্যে ফেলে মোটা লোহার শেকল দিয়ে মাথার মধ্যে কয়েক বার আঘাত করে ফেলে যায় আদম আলীকে। আদম আলীর রক্তে লাল হয়ে যায় রাস্তার ধুলো মাটিগুলো। আদম আলী চোখের সামনে আপছা আপছা আঁধার দেখতে পায়, ভেসে উঠে বড় মেয়েটির মুখ। (বাপজান তুমি মিছিলে যাইওনা আমার কেমন জানি ডর করে) সেই কচি সুর কানে বেজে উঠে। ছোট্ট মেয়েটির সেই মুখ ভারা হাসি, (বাপজান আমার লাইগা পাকা কলা আইনো, তাইলে আমার জ্বর ভালা অইয়া যাইবো) তারপর আস্তে আস্তে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে আদম আলীর। নিভে যাচ্ছে জীবন প্রদীপ নিভে যাচ্ছে, হাজার হাজার লোক ছুটে যাচ্ছে আদম আলীর ওপর দিয়ে, কেউবা হাতে কেউবা মুখের ওপর পায়ের চাপা দিয়ে। আদম আলী চিৎকার করে ওদের বললো আমারে তোমরা একটু বাঁচাও....বাঁচাও...কেউ শুনলোনা সেই ডাক। এক সময় চারিদিকের কোলাহলের মাঝে থেমে গেলো আদম আলীর চিৎকার। নিভে গেলো আদম আলীর জীবন প্রদীপ, সেই দৃশ্য দেখে আকাশটা বুঝি কষ্ট পেয়েছিলো, কষ্ট পেয়েছিলো মেঘেরা। তাইতো আদম আলীকে একটু ছুঁয়ে দেখার জন্য বৃষ্টি হয়ে নেমে এলো বৃষ্টির দল। বাতাস থেমে গিয়েছিলো কিছুক্ষণের জন্য, গোটা পৃথিবী নিঃশব্দে কেঁদেছিলো কিছুক্ষণের জন্য। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী কে, ক্ষুধার যন্ত্রণায় কেউ পথে বসে মরে কেউবা চেয়ে চেয়ে দেখে সেই দৃশ্য। তাই মনে আজ প্রশ্ন জাগে, আর কতদিন এভাবে পথে পথে নীরিহ গরির মানুষদের প্রাণ হারাতে হবে, দেশের এই অবস্থার জন্য কে অপরাধী। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমে এলো তবুও আদম আলী ফিরলো না ঘরে, ছোট্ট মেয়েটি বাবার অপেক্ষায় বসে আছে, কখন বাপজান আসবে পাকা কলা নিয়ে। কিন্তু কে তাকে বলবে তার বাবা যে আর কোনোদিনও ফিরবে না........কোনোদিনও না।
Subscribe to:
Posts (Atom)