১৯ অক্টোবর ২০১৪, রবিবার daily nayadiganta Abokash a amar lakha
মৃত পুতুলের দ্বীপ
সোহানুর রহমান অনন্ত
ভূত শব্দটি শুনলেই কেমন গা ছমছম করে ওঠে আমাদের। কল্পনায় আমরা এঁকে ফেলি একটি ভৌতিক পরিবেশ। এ তো গেল কল্পনার কথা, আর সেই ভয়ের পরিবেশটি যদি আপনি বাস্তবে দেখেন, তাহলে কেমন হবে? হ্যাঁ, আজ পরিচয় করিয়ে দেবো মেক্সিকোর মৃত পুতুলের দ্বীপের সাথে। বছরের পর বছর ধরে যে দ্বীপ রহস্যের বেড়াজালে ঢেকে আছে। অনেক বছর আগের কথা, এক পরিবার সেই দ্বীপে বাস করত। এক দিন তিন শিশু পুতুল নিয়ে খেলা করছিল। নির্জন দ্বীপটিতে খেলতে খেলতেই তিনজনের একজন নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক খোঁজা হয় কিন্তু কোথাও হদিস পাওয়া যায় না। পরে দ্বীপের পাশের একটি খালে পাওয়া গেল মৃতদেহ। এর পর থেকে মানুষের মনে এক আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এই দ্বীপকে গিরে। অনেকেই অনেক রকম কথা বলতে থাকে। পরে মেয়েটির বাবা মেয়েটির খেলার সব পুতুল ফেলে দেয় সেই খালের পানিতে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো পুতুলগুলো বেশির ভাগ ঢেউয়ের সাথে থেকে যায় দ্বীপটির আশপাশে। পুতুলগুলো তত দিনে প্রায় ভগ্নাংশে পরিণত হয়েছে। কোনোটার মাথা নেই, কোনোটার নেই চোখ। স্থানীয় লোকজন ভয়ে আর সেখানে পা বাড়ায় না। অনেকেই রাতে সেখান থেকে ভয়ানক চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেত। এই দ্বীপটি মেক্সিকো সিটি থেকে ১৭ মাইল দেিণ জোকিমিলকো জেলায় অবস্থিত। দ্বীপটির আশপাশে কেউ ভুল করেও যেত না। এর অনেক বছর পর ডন জুলিয়ান সানতানা নামে এক যাজক নির্জনে তপস্যা করার জন্য দ্বীপটিকে বেছে নিয়েছিলেন। তার ধারণা ছিল, এখানে তাকে কেউ বিরক্ত করবে না। কিন্তু তার ধারণা সম্পূর্ণ ভুল হয়ে যায়। কারণ দ্বীপটিতে থাকা অবস্থায় সেই মৃত মেয়েটির আত্মা বারবার তার সামনে এসে দাঁড়ায়। হাসে এবং পুতুল চেয়ে বায়না ধরে। জুলিয়ান প্রথমে বিষয়টি এরিয়ে গেলেও একটা সময় মেয়েটির বায়না রাখতে রাজি হয়। কিন্তু মেয়েটি যেমন তেমন পুতুল নেবে না। বীভৎস সব পুতুল চেয়ে বসে। জুলিয়ান তাতেই রাজি হয়ে যায়। মানুষের কাছ থেকে নষ্ট পুতুল সংগ্রহ করতে থাকে, যা দেখতে ভয়ঙ্কর। জঙ্গলে এনে গাছের ডালের সাথে এগুলো বেঁধে রাখে। মেয়েটির আত্মা খুশি হয়। জুলিয়ান এমনি করে হাজারো পুতুল এনে নির্জন দ্বীপের গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। একটা সময় মৃত পুতুলের রাজ্যে পরিণত হয় দ্বীপটি। যে দিকে চোখ পড়ে কেবল মৃত পুতুল। যদিও দ্বীপটাতে কেউ যেত না, তারপর কেউ কেউ বিশ্বাস করত, দ্বীপটিতে এখনো মৃত শিশুটির আত্মা ঘোরাঘুরি করে। রাতের অন্ধকারে দ্বীপটির দিকে তাকালো হুট করে মনে হয় আগুন জ্বলে ওঠে, আবার মুহূর্তেই নিভে যায়। মাঝে মধ্যে শোনা যায় গা হিম করা ভুতুড়ে আওয়াজ। বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, পুতুলগুলোর মধ্যেই সেই আত্মাটি বসত করে। এ ছাড়া ঘটে যেতে থাকে একের পর এক রহস্যময় ঘটনা। অবশেষে মেক্সিকান সরকার দ্বীপটিকে ন্যাশনাল হেরিটেজ ঘোষণা করে। এই দ্বীপে যেন আবারো মানুষের আনাগোনা শুরু হয় সেই কারণে, দ্বীপকে পরিষ্কার-পরিচ্ছ
ন্ন
করে পর্যটন অঞ্চল বানানোর উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এত সব রহস্য শোনার পর
পর্যটকেরা আর আসতে চায় না মৃত পুতুলের দ্বীপে। একে একে সব চেষ্টাই ব্যর্থ
হয়। একবার স্থানীয় এক বাসিন্দা একটি বড় নৌকা দ্বীপের কাছে ভেসে থাকতে দেখে।
পরে সে আরো কিছু মানুষকে ডেকে দেখালে তারা এগিয়ে যায়। মজার ব্যাপার হলো
কাছে গিয়ে তারা কোনো নৌকাই দেখতে পায়নি। এভাবেই একের পর এক রহস্য জš§ দিতে
থাকে এই দ্বীপটি। সর্বশেষ যে ঘটনাটি জানা যায়, তা হলোÑ জুলিয়ান তার ভাইয়ের
ছেলেকে নিয়ে সেই দ্বীপের কাছে মাছ ধরছিলেন। তার চোখ চলে যাচ্ছিল বারবার সেই
দ্বীপটির দিকে। হঠাৎ তিনি একটি শব্দ শুনতে পান এবং ভাতিজাকে বলেন, ‘পানির
নিচ থেকে আমাকে কারা যেন ডাকছে তাদের কাছে যাওয়ার জন্য। জুলিয়ানের কথা শুনে
চমকে ওঠে ভাতিজা এবং তাৎণিক তারা সেখান থেকে চলে আসেন। কিন্তু বিধির বিধান
, কিছু দিন পরই ওই দ্বীপের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় জুলিয়ানের মৃতদেহ।
ভৌতিক মৃত পুতুল দ্বীপের রহস্য আজো রহস্যই রয়ে গেছে। বিজ্ঞান আজো এর কোনো
ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। প্রকৃতির নিয়মে অনেক কিছুই ঘটে যায়, যা আমরা কেউ
বিশ্বাস করি, কেউ করি না।
মৃত পুতুলের দ্বীপ
সোহানুর রহমান অনন্ত
ভূত শব্দটি শুনলেই কেমন গা ছমছম করে ওঠে আমাদের। কল্পনায় আমরা এঁকে ফেলি একটি ভৌতিক পরিবেশ। এ তো গেল কল্পনার কথা, আর সেই ভয়ের পরিবেশটি যদি আপনি বাস্তবে দেখেন, তাহলে কেমন হবে? হ্যাঁ, আজ পরিচয় করিয়ে দেবো মেক্সিকোর মৃত পুতুলের দ্বীপের সাথে। বছরের পর বছর ধরে যে দ্বীপ রহস্যের বেড়াজালে ঢেকে আছে। অনেক বছর আগের কথা, এক পরিবার সেই দ্বীপে বাস করত। এক দিন তিন শিশু পুতুল নিয়ে খেলা করছিল। নির্জন দ্বীপটিতে খেলতে খেলতেই তিনজনের একজন নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক খোঁজা হয় কিন্তু কোথাও হদিস পাওয়া যায় না। পরে দ্বীপের পাশের একটি খালে পাওয়া গেল মৃতদেহ। এর পর থেকে মানুষের মনে এক আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এই দ্বীপকে গিরে। অনেকেই অনেক রকম কথা বলতে থাকে। পরে মেয়েটির বাবা মেয়েটির খেলার সব পুতুল ফেলে দেয় সেই খালের পানিতে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো পুতুলগুলো বেশির ভাগ ঢেউয়ের সাথে থেকে যায় দ্বীপটির আশপাশে। পুতুলগুলো তত দিনে প্রায় ভগ্নাংশে পরিণত হয়েছে। কোনোটার মাথা নেই, কোনোটার নেই চোখ। স্থানীয় লোকজন ভয়ে আর সেখানে পা বাড়ায় না। অনেকেই রাতে সেখান থেকে ভয়ানক চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেত। এই দ্বীপটি মেক্সিকো সিটি থেকে ১৭ মাইল দেিণ জোকিমিলকো জেলায় অবস্থিত। দ্বীপটির আশপাশে কেউ ভুল করেও যেত না। এর অনেক বছর পর ডন জুলিয়ান সানতানা নামে এক যাজক নির্জনে তপস্যা করার জন্য দ্বীপটিকে বেছে নিয়েছিলেন। তার ধারণা ছিল, এখানে তাকে কেউ বিরক্ত করবে না। কিন্তু তার ধারণা সম্পূর্ণ ভুল হয়ে যায়। কারণ দ্বীপটিতে থাকা অবস্থায় সেই মৃত মেয়েটির আত্মা বারবার তার সামনে এসে দাঁড়ায়। হাসে এবং পুতুল চেয়ে বায়না ধরে। জুলিয়ান প্রথমে বিষয়টি এরিয়ে গেলেও একটা সময় মেয়েটির বায়না রাখতে রাজি হয়। কিন্তু মেয়েটি যেমন তেমন পুতুল নেবে না। বীভৎস সব পুতুল চেয়ে বসে। জুলিয়ান তাতেই রাজি হয়ে যায়। মানুষের কাছ থেকে নষ্ট পুতুল সংগ্রহ করতে থাকে, যা দেখতে ভয়ঙ্কর। জঙ্গলে এনে গাছের ডালের সাথে এগুলো বেঁধে রাখে। মেয়েটির আত্মা খুশি হয়। জুলিয়ান এমনি করে হাজারো পুতুল এনে নির্জন দ্বীপের গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। একটা সময় মৃত পুতুলের রাজ্যে পরিণত হয় দ্বীপটি। যে দিকে চোখ পড়ে কেবল মৃত পুতুল। যদিও দ্বীপটাতে কেউ যেত না, তারপর কেউ কেউ বিশ্বাস করত, দ্বীপটিতে এখনো মৃত শিশুটির আত্মা ঘোরাঘুরি করে। রাতের অন্ধকারে দ্বীপটির দিকে তাকালো হুট করে মনে হয় আগুন জ্বলে ওঠে, আবার মুহূর্তেই নিভে যায়। মাঝে মধ্যে শোনা যায় গা হিম করা ভুতুড়ে আওয়াজ। বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, পুতুলগুলোর মধ্যেই সেই আত্মাটি বসত করে। এ ছাড়া ঘটে যেতে থাকে একের পর এক রহস্যময় ঘটনা। অবশেষে মেক্সিকান সরকার দ্বীপটিকে ন্যাশনাল হেরিটেজ ঘোষণা করে। এই দ্বীপে যেন আবারো মানুষের আনাগোনা শুরু হয় সেই কারণে, দ্বীপকে পরিষ্কার-পরিচ্ছ
No comments:
Post a Comment