join facebook page

Thursday, 27 November 2014

আজ ০৯-১১-১৪ দৈনিক নয়াদিগন্তের অবকাশে আমার লেখা

শীতে কোথায় বেড়াবেন
সোহানুর রহমান অনন্ত

আমরা ভ্রমণ বলতেই কক্সবাজার বুঝি। কিন্তু আপনি হয়তো জানেনই না আপনার জেলাতেই আছে দেখার মতো অনেক কিছু। তাই অনেক কম খরচে কাছের জায়গাটাই ঘুরতে পারেন পরিবার-পরিজন নিয়ে।



লিখেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত





শীত মানেই ঘুরে বেড়ানোর এক উপযুক্ত সময়। বিশেষ করে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এই সময়টা সবচেয়ে উপযুক্ত। ছেলেমেয়ের স্কুল-কলেজের পরীক্ষাও শেষ হয়ে যায়। তাই কিছুটা অবসরও পাওয়া যায়। সারা বছর বিভিন্ন কাজের চাপে জীবন যখন একঘেয়েমি হয়ে আসে। মন চায় একটু ভিন্নতা। তাই শীত এলেই বেরিয়ে পড়েন ভ্রমণপিপাসুরা। ঘুরে বেড়ানো এক ধরনের শখ। আবার ডাক্তারি মতে, নির্দিষ্ট সময় পরপর সব মানুষেরই বেড়ানো উচিত। এতে শরীর-মন উভয়ই ভালো থাকে। এ ছাড়া এর মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন সহজ হয়ে যায়। অনেক কিছু জানা হয়ে যায়। এ কারণে বছর শেষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা
ন আয়োজন করে শিক্ষাসফরের। অনেকে ভ্রমণের জন্য স্থান নির্ধারণে বিপাকে পড়েন। কোথায় যাবেন? কেন যাবেন? কিভাবে যাবেন? এ প্রশ্নই যেন ঘুরপাক খায়। এ ছাড়া আমাদের দেশে কোথায় কোনো দর্শনীয় স্থান আছে তা-ও ভালোভাবে জানা হয়ে ওঠে না। তাই দেখা হয় না অনেক কিছুই। কিন্তু স্বল্প খরচে এই শীতে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন আপনার পছন্দের স্থানে। ঘুরে বেড়ানোর জন্য আগে যা প্রয়োজন তা হলো, মানসিক প্রস্তুতি। আবার নিজস্ব পছন্দ অপছন্দের ব্যাপারটাও মুখ্য। কেউ সাগর পছন্দ করেন তো কেউ পছন্দ করেন পাহাড়। কেউ আবার প্রাচীন ইতিহাসের দিকে ঝুঁকে যান। আসলে বেড়ানোর আনন্দ হচ্ছে নিজের ওপর। সব কিছুই আপনাকে মুগ্ধ করবে যদি আপনি সেভাবেই প্রস্তুতি নেন। আমাদের দেশেই দেখার মতো অনেক কিছু আছে। যদিও আমরা ভ্রমণ বলতেই কক্সবাজার বুঝি। কিন্তু আপনি হয়তো জানেনই না আপনার জেলাতেই আছে দেখার মতো অনেক কিছু। তাই অনেক কম খরচে কাছের জায়গাটাই ঘুরতে পারেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। উন্নত বিশ্বে তো শিক্ষার্থীরা সামার ভ্যাকেশনে পার্টটাইম জব করে শুধু ভ্রমণের জন্য। যদিও আমাদের দেশে এই সংস্কৃতিটা এখনো সেভাবে গড়ে ওঠেনি। বই পড়ার ক্ষেত্রেও আমরা তাই অনেক পিছিয়ে। তাদের দেশে ভ্রমণ মানেই জ্ঞান আরোহণ। এ ছাড়া বেড়ানোর সময় তারা প্রচুর বই সাথে নিয়ে যায়। তবে আমাদের দেশেও এখন সংস্কৃতি বদলে যাচ্ছে। জ্ঞান আরোহণের জন্য আমরাও বদলে যাচ্ছি সময়ের সাথে।



বাংলার সব জেলাই সুন্দর। একেবারে ছবির মতো। কিন্তু নানান ব্যস্ততার মাঝে ঘুরে বেড়ানো আর হয়ে ওঠে না। যদিও বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায় ভ্রমণপিপাসুদের সংখ্যা বেড়েছে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা পেলে এই সংখ্যা আরো বাড়বে। তবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে আমরা বিশ্বের কাছে আমাদের পর্যটন শিল্প সেভাবে তুলে ধরতে পারিনি। যদিও বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার আমাদের দেশেই অবস্থিত। কিন্তু এই শীতে বেড়াবেন কোথায়? একেবারে পরিচিত বেশি ভ্রমণের স্থান কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি বা সিলেট। কিন্তু এ ছাড়া বাংলাদেশে দেখার মতো অনেক জায়গা আছে। এখানে তুলনামূলক কম পরিচিত বেড়ানোর স্পটের তালিকা দেয়া হলোÑ



নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান



বাংলার তাজমহল, সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর, রূপগঞ্জ রাজবাড়ী।



মুন্সীগঞ্জের দর্শনীয় স্থান



ইদ্রাকপুর দুর্গ, প্রাচীন বৌদ্ধবিহার।



মানিকগঞ্জের দর্শনীয় স্থান



বালিয়াটি জমিদারবাড়ী



নরসিংদীর দর্শনীয় স্থান



উয়ারী বটেশ্বর, লটকন বাগান।



গাজীপুরের দর্শনীয় স্থান



ভাওয়াল রাজবাড়ি, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, সফিপুর আনসার একাডেমি, জাগ্রত চৌরঙ্গী।



কিশোরগঞ্জ দর্শনীয় স্থান



ঐতিহাসিক জঙ্গলবাড়ী, দিল্লীর আখড়া, শোলাকিয়া ঈদগাহ ও হাওর অঞ্চল।



ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান



কাজী নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত ত্রিশাল, শিমলা দারোগাবাড়ি, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, জাদুঘর, সোমেশ্বর বাবুর রাজবাড়ি, কিশোর রায় চৌধুরীর ভবন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আলেক জান্ডার ক্যাসেল, আনন্দমোহন কলেজ, দুর্গাবাড়ী, কেল্লা তাজপুর ইত্যাদি।



টাঙ্গাইলের দর্শনীয় স্থান



রসনাবিলাসীদের জন্য উপভোগ্য সুস্বাদু চমচম (পোড়াবাড়ি), আতিয়া মসজিদ, শাহ্ আদম কাশ্মিরির মাজার- দেলদুয়ার, পরীর দালান, খামার পাড়া মসজিদ ও মাজার- গোপালপুর, ঝরোকা, সাগরদিঘি, পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি, বঙ্গবন্ধু সেতু, এলেঙ্গা রিসোর্ট, যমুনা রিসোর্ট।



শেরপুরের দর্শনীয় স্থান



মধুটিলা ইকোপার্ক, গজনী ইকো পার্ক, ঘাগড়া লঙ্কার মসজিদ, রাজার পাহাড়, নাকুগাঁও স্থলবন্দর, বারোমারী ধর্মপল্লী, নকলার নারায়ণখোলা বেড়শিমুলগাছ, ঝিনাইগাতীর মরিয়মনগর ধর্মপল্লী, আড়াইআনি জমিদারদের শীষ মহল।



জামালপুরের দর্শনীয় স্থান



দেওয়ানগঞ্জ সুগার মিলস, লাউচাপড়া পিকনিক স্পট, গান্ধী আশ্রম, দারকি, যমুনা ফার্টিলাইজার।



নেত্রকোনার দর্শনীয় স্থান



এঁকেবেঁকে কংশ ও সোমেশ্বরী নদী, বিজয়পুর চিনামাটি পাহাড়, রানীখং মিশন, টংক শহীদ স্মৃতি সৌধ, কমলা রানী দীঘির ইতিহাস, সাত শহীদের মাজার, কলমাকান্দা, হজরত শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী (র:)-এর মাজার শরীফ, সুসং দুর্গাপুরের জমিদারবাড়ি, টংক আন্দোলনের স্মৃতিসৌধ, সাধু যোসেফের ধর্মপল্লী, রাশমণি স্মৃতিসৌধ, কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কমপ্লেক্স, নলিয়া জোড়বাংলা মন্দির।



ফরিদপুরের দর্শনীয় স্থান



মথুরাপুরের দেউল, কবি জসীমউদ্দীনের বাড়ি।



গোপালগঞ্জ দর্শনীয় স্থান



বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ, কোর্ট মসজিদ, বিলরুট ক্যানেল, কোটাল দুর্গ, বহলতলী মসজিদ।



শরীয়তপুরের দর্শনীয় স্থান



ফতেহজংপুর দুর্গ, মুঘল আমলের বিলাসখান মসজিদ, মহিষের দীঘি, দণি বালুচর মসজিদ, হাটুরিয়া জমিদারবাড়ি, মানসিংহের বাড়ি।



রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান



পদ্মাতীরে নির্মিত শাহ মখদুমের মাজার, পুঠিয়া রাজবাড়ি, শিবমন্দির, বড়কুঠি, গোবিন্দ মন্দির, গোপাল মন্দির, দোলমঞ্চ, লালকুঠি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, শিরোইল মন্দির, বরেন্দ্র জাদুঘর, বাঘমারা রাজবাড়ি, ভুবনেশ্বর মন্দির, রাধাকৃষ্ণের ঝুলন মন্দির ইত্যাদি।



চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান



নুসরাত শাহ্ নির্মিত সোনা মসজিদ, ঐতিহাসিক কানসাট। এ ছাড়া মহানন্দা নদী পার হওয়ার পরই পথের দুই ধারে তরুণ বাহারি আমের বাগান।



পাবনার দর্শনীয় স্থান



কিংবদন্তি নায়িকা সুচিত্রা সেনের বাড়ি, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন সেতু, ঈশ্বরদী ইপিজেড, নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল এবং ডাল ও আখ গবেষণা কেকোর্ট বিল্ডিং, অনুকূল ঠাকুরের আশ্রম, জোড়বাংলা, বিখ্যাত মানসিক হাসপাতাল, রায় বাহাদুরের গেটসহ অনেক পুরনো কীর্তি।



সিরাজগঞ্জের দর্শনীয় স্থান



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদচিহ্ন পড়েছে সিরাজগঞ্জে শাহজাদপুরের কাচারি বাড়িতে। সিরাজগঞ্জের বড় আকর্ষণ যমুনা সেতু, বাণীকুঞ্জ, সিরাজীর মাজার, লোহারপুল, মক্কা আউলিয়া মসজিদ, নবরতœ মন্দির, শিবমন্দির জয়সাগর, মহাপুকুর আখড়া, এনায়েতপুর পীর সাহেবের মসজিদ। মিল্কভিটা, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তের ইকোপার্ক, বাঘাবাড়ী বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, বাঘাবাড়ী নদীবন্দর।



নওগাঁর দর্শনীয় স্থান



বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য পতিসর, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, গদ্দল মহাবিহার, পতœীতলায় অবস্থিত দিব্যক স্মৃতিস্তম্ভ, নসরত শাহ নির্মিত কুশুম্বা মসজিদ, করোনেশন থিয়েটার, অনিমেষ লাহিড়ীর বাড়ি, পালবংশের স্মৃতি বহনকারী সাঁওতালপাড়া।



নাটোরের দর্শনীয় স্থান



চলনবিল, চলনবিল জাদুঘর, হাইতি বিল, নাটোর রাজবাড়ি, উত্তরা গণভবন, দয়ারামপুর রাজবাড়ি, লালপুরের বুধপাড়া কালীমন্দির।



বগুড়ার দর্শনীয় স্থান



ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়, শীলাদেবীর ঘাট, গোবিন্দভিটা, বেহুলা লখিন্দরের বাসরঘর। জয়পুরহাটের দর্শনীয় স্থান



আছরাঙ্গা দিঘি, লাকমা রাজবাড়ি, হিন্দা কসবা শাহী মসজিদ, শামুকখোল গ্রামতেলাল।



রংপুরের দর্শনীয় স্থান



কারমাইকেল কলেজ, তাজহাট জমিদারবাড়ি, মীরগঞ্জের দীঘি, লালবিবির সমাধিসৌধ, ফকিরনেতা মদিনীর কবর ও মোগল আমলের মসজিদ, মহীয়সী বেগম রোকেয়ার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ, শানবাঁধানো দীঘি, পীরগঞ্জের নীল দরিয়ার বিল, তারাবিবির মসজিদ, গঙ্গাচরার কুঠিপাড়ায় নীলকুঠি, পীরগাছায় দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়ি, ইটাকুমরার শিবেন্দ্র রায়ের রাজবাড়ি।



লালমনিরহাটের দর্শনীয় স্থান



তিস্তা ব্যারাজ, তিন বিঘা করিডোর ও দহগ্রাম-আংগরপোতা ছিটমহল, বুড়িমারী স্থলবন্দর, তিস্তা রেল সেতু।



ঠাকুরগাঁওয়ের দর্শনীয় স্থান



জামালপুর জমিদারবাড়ি জামে মসজিদ, রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি, হরিণমারীর আমগাছ, রাউতনগর সাঁওতাল পল্লী, গোরকুই কূপ।



পঞ্চগড়ের দর্শনীয় স্থান



বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, তেঁতুলিয়া, রকস মিউজিয়াম, মির্জাপুর শাহী মসজিদ আটোয়ারী, ভিতরগড় মহারাজার দীঘি, সমতল চা বাগান, দেবীগঞ্জের মহারাজার দীঘি ও ভিতরগড় দুর্গানগরী, আটোয়ারীর মির্জাপুরের ইমামবাড়া এবং তেঁতুলিয়ার জেলা পরিষদ ডাকবাংলো।



নীলফামারীর দর্শনীয় স্থান



সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ, দুন্দিবাড়ী স্লুইস গেট, নীলফামারী জাদুঘর, নীলসাগর, হরিশচন্দ্রের পাঠ, ধর্মপালের গড়, কুন্দপুকুর মাজার, ময়নামতির দুর্গ, ভীমের মায়ের চুলা ইত্যাদি।



কুড়িগ্রামের দর্শনীয় স্থান



চিলমারীর বন্দর, সাতভিটায় পাখির ভিটারাজারহাট, উলিপুরের মুন্সীবাড়ি, চান্দামারী মসজিদ, বঙ্গসোনাহাট ব্রিজ। া

No comments:

Post a Comment