Aj 14-12-14 daily nayadiganta Abokash
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
সোহানুর রহমান অনন্ত
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলাদেশ যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে মেধা ও মননে, সে জন্য বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আসন্ন পরাজয়ের প্রতিহিংসা আগাম চরিতার্থ করতে তারা বেছে নিয়েছিল ঘৃণ্য এই কৌশল। লিখেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত আজ ১৪ ডিসেম্বর। গভীর বেদনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক দুই দিন আগে আসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। আমরা স্মরণ করি জাতির সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের, স্বাধীনতাসংগ্রা
মের
সূচনা থেকে শুরু করে চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক আগমুহূর্ত পর্যন্ত যাদের আমরা
হারিয়েছি। এই হারানোর তালিকা একেবারে ছোট নয়। আবার সে রাতে আমরা যাদেও
হারিয়েছি তাদের অনেকেই নিখোঁজ। পরে তাদের লাশও পাওয়া যায়নি। বহু বছর তারা
বেঁচে আছেন না মরে গেছেনÑ তা-ও জানা ছিল না। আমরা এই দিনে হারিয়েছি জাতির
শ্রেষ্ঠ সন্তান অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, জহির রায়হান, ড. মোফাজ্জল হায়দার
চৌধুরী, রাশেদুল হাসান, ড. আনোয়ার পাশা, সাংবাদিক সিরাজুদ্দিন হোসেন,
শহীদুল্লাহ কায়সার, নিজামুদ্দীন আহমেদ, গিয়াসউদ্দিন আহমদ, ডা. ফজলে রাব্বী,
ডা. আলীম চৌধুরী, নাজমুল হক, আ ন ম গোলাম মোস্তফা, সুরকার আলতাফ মাহমুদ,
সাহিত্যিক সেলিনা পারভীন, দানবীর শিানুরাগী রণদাপ্রসাদ সাহা, গোবিন্দচন্দ্র
দেব প্রমুখ। পাকিস্তান বিজয়ের ঠিক দুই দিন আগে আমাদের জাতিকে চিরতরে পঙ্গু
করে দিতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও বিভিন্ন স্থান থেকে শিক,
সাংবাদিক, চিকিৎসক, সংস্কৃতিকর্মীসহ
বিভিন্ন পেশার বরেণ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে নিদারুণ
যন্ত্রণা দিয়ে রায়েরবাজার ও মিরপুরে তাদের হত্যা করে। এই দু’টি স্থান এখন
বধ্যভূমি হিসেবে সংরতি। মুক্তিযুদ্ধের শেষলগ্নে, ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের
মধ্যে অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং
ইনস্টিটিউটে নির্যাতনের পর রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর কবরস্থানে নিয়ে
হত্যা করে। কিন্তু কেন এই নির্মম হত্যাকাণ্ড? কারণ তারা জানত তাদের চরম
বিপর্যয় আসন্ন, তারা দাঁড়িয়ে আছে পরাজয়ের কিনারে, তখনই তারা সেই পরিকল্পনা
কার্যকর করে। তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যায় চোখ বেঁধে, সবাইকে হত্যা
করে তারা স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে হত্যা করার পাশবিক আনন্দ লাভ করে।
বুদ্ধিজীবীদের হত্যা ঘটনাটির এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, দেশেরই কিছু মানুষ তা
ঘটানোর েেত্র মূল ভূমিকা পালন করে। বলার অপেক্ষা রাখে না দেশদ্রোহীদের
সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া পাকিস্তানি হানাদারদের পে এতটা ব্যাপক এবং ল্যভেদী
হত্যাযজ্ঞ চালানো সম্ভব ছিল না। শহীদুল্লাহ কায়সারের মতো সাংবাদিক-সাহিত্ যিক আমরা আর কোথায় পাবো? কে আর আমাদের উপহার দিতে পারবেন সারেং বউ বা সংশপ্তক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
বাংলার অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী সাহিত্যভারতী খেতাব পেয়েছিলেন
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। একই বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ার পাশার কবিতা
ছাপা হয়েছিল বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত কবিতা পত্রিকায়। রাইফেল রোটি আওরাত নামে
যে উপন্যাস তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলার সময়ই লিখেছেন, তার কি কোনো তুলনা হয়?
এরাই ছিলেন আমাদের জাতির গৌরব, মেধাবী মানুষ, সবচেয়ে যোগ্য পেশাজীবী। কেউ
চিকিৎসক, কেউ প্রকৌশলী, কেউ লেখক, কেউ সাংবাদিক। আলতাফ মাহমুদের মতো
সুরকার, গণসঙ্গীতশিল্পী,
যিনি ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের সুর দিয়েছিলেন,
তার বিকল্প কোথায়? কোথায় বিকল্প পাবো দানবীর শিানুরাগী রণদাপ্রসাদ সাহার?
জহির রায়হানের জীবন থেকে নেয়া ছবিটিই বলে দেয় কতটা মেধাবী ছিলেন তিনি। তাই
১৪ ডিসেম্বর মানেই বিশাল এক শূন্যতা। যে শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। এ
ছাড়া আছে গোবিন্দচন্দ্র দেব, ডা. আলীম চৌধুরী, সাংবাদিক সিরাজুদ্দিন হোসেন,
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, ডা. আজহারুল হক, অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, সাংবাদিক
সেলিনা পারভীন, হাজারও নাম। একাত্তরে যারা শহীদ হয়েছেন, আর তাদের মধ্যে
অনেককেই ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তালিকা ধরে। সবচেয়ে বড় কথা তারা জাতির
শ্রেষ্ঠসন্তানদে র শুধু মেরেই
শান্ত হয়নি। বরং তাদের মেরে ফেলার আগে যে নির্যাতন করা হয় তা গা শিউরে ওঠার
মতো। এসব নির্যাতনের অনেক গল্পই হয়তো আমাদের অজানা। তাদের পরিবার আজো সেই
নির্যাতনের মর্মব্যথার কথা ভুলতে পারে না। ভুলতে পারার কথাও না। আমাদের
হাজারও বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী হারানোর তি আমরা আজো অনুভব করি, সে অভাব পূরণ
হওয়ার নয় জানি। আমাদের যে এতটা বছর লেগে যাচ্ছে উন্নতির সিঁড়িতে পা রাখতে,
বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড তার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। জাতির এই শ্রেষ্ঠ
সন্তানদের আত্মত্যাগ আজ আমাদেরও জেগে ওঠার হাতিয়ার। তরুণ প্রজন্ম শ্রদ্ধার
সাথে তাদের স্মরণ করে সামনে এগিয়ে যাবে, এটাই হোক আজকের অঙ্গীকার। া - See
more at: http:// www.dailynayadig anta.com/ details.php?naya diganta=OTM3MjE %3D&s=MjI%3D&c= NzY%3D#sthash.z agZg2FH.dpuf
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
সোহানুর রহমান অনন্ত
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলাদেশ যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে মেধা ও মননে, সে জন্য বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আসন্ন পরাজয়ের প্রতিহিংসা আগাম চরিতার্থ করতে তারা বেছে নিয়েছিল ঘৃণ্য এই কৌশল। লিখেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত আজ ১৪ ডিসেম্বর। গভীর বেদনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক দুই দিন আগে আসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। আমরা স্মরণ করি জাতির সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের, স্বাধীনতাসংগ্রা
No comments:
Post a Comment