16-08-2014 daily borar kagoj
জলের ছায়া
ভোরের কাগজ : ১৬/০৮/২০১৪
ঢেউগুলো বারবার আছড়ে পড়ছে লঞ্চের গায়ে। লঞ্চের এক পাশে বসে আছে রিয়া। তাকিয়ে আছে পদ্মা নদীর দিকে। এই জলে এক সময় কতো সাঁতার কেটেছে, কতো পা ভিজিয়ে বসে সময় কাটিয়েছে। অথচ ইদানীং কেন যেন এই জলকেই ভয় করতে শুরু করেছে। ব্যাগটা আরো কাছে টেনে নেয়। রিয়া রাজুর জন্য আজ ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে। দীর্ঘ দুই বছরের ফোনেই প্রেম। কেউ কাউকে দেখেনি আজো। হঠাৎ করে রিয়ার বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ায় দুজন ঠিক করলো পালিয়ে বিয়ে করবে। রাজু শ্রীনগর থাকে, পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। বাবা-মাকে ছেড়ে আসার কারণে রিয়ার মনটা একটু খারাপ। তবে রাজুর কথা ভেবে এক অন্যরকম আনন্দ লাগছে। অপেক্ষা আর সাইছে না কখন লঞ্চ ছাড়বে। একে একে যাত্রীতে ভরে গেলো লঞ্চটি। চারপাশে কোলাহল, তিল ধারণের জায়গা নেই। খুব জোরে লঞ্চের হর্ন বেজে উঠলো তারপর আস্তে আস্তে লঞ্চটা ছুটে চললো মাওয়া ঘাটের দিকে।
২.
রিয়ার সামনে সাত আট বছরের একটি ছেলে। গাড়ি নিয়ে খেলা করতে করতে বলছে, বাজান সামনের ঈদে কিন্তু দুইটা নতুন জামা কিনে দিতি হইবো। ছেলেটির বাবা হেসে বললো, দেবো বাবা তোরে দুইটাই কিনি দিমু। রিয়ার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল একটু ছাদে যাওয়ার কিন্তু এতো মানুষ হয়েছে যে, ছাদেও দাঁড়াবার জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকতে হলো। একজন লোক এসে বললো আফা পানি লাগবো, ঠা-া পানি? এক বোতল পানি কিনে নিলো। খুব ক্ষুধা লেগেছে, সঙ্গে বেশি টাকাও নেই। বোতল থেকে একটু পানি হাতে নিয়ে মুখে ছিটিয়ে নিলো। সাইড ব্যাগ থেকে আয়নাটা বের করে নিজের মুখটা দেখলো একবার। তাড়াহুড়ার কারণে একটু সাজতেও পারেনি। এই ভেবে ঠোঁটের কোণে এক টুককো হাসি ফুটে উঠলো।
৩.
কেন যেন খুব খারাপ লাগছিল রিয়ার কাছে। হয়তো সবাইকে ছেড়ে আসার এক কষ্ট এটা। লঞ্চের মধ্যে একা একা চুপ থাকাটা আরো কষ্টকর। কারো সঙ্গে কথা বলতে পারলে ভালো হতো। রিয়ার পাশের সিটে একটি ছেলে বয়স পনেরোর কাছাকাছি। রিয়া ইচ্ছে করেই কথা বললো, কি নাম তোমার?। ছেলেটি প্রথমে চমকে উঠলেও বলতে লাগলো, চান মিয়া গ্রামের পোলাপান মাঝে মাঝে চান্দু বলে খেপায়। যাইতাছি বড় ভাইয়ের কাছে, মায় মুড়ির মোয়া আর পিঠা বানায়া দিছে। রিয়া হেসে উঠলো, প্রশ্ন একটা করলে ছেলেটি এক সঙ্গে অনেকগুলো উত্তর দেয়। চলার পথে কতো বিচিত্র লোকের দেখা মেলে। কতো লোক লঞ্চের মধ্যে, কেউ যাচ্ছে ভাইয়ের কাছে, কেউবা যাচ্ছে স্ত্রীর কাছে, কেউবা বাবা-মাকে ছেড়ে
কর্মের খোঁজে। ফোনটা বেজে উঠলো। রাজুর ফোন, হ্যালো, আমি মাওয়া ঘাটে আছি লঞ্চ আসতে আর কতোক্ষণ লাগবো?। আমি কি করে বলবো, আমি তো কিছুই চিনি না। আচ্ছা আসো আমি ঘাটেই আছি। তোমার জন্য একটা শাড়ি কিনছি, এইডা পইরাই আমগো বিয়া হইবো। রিয়া হেসে উঠলো রাজুর কথা শুনে।
৪.
হঠাৎ করেই লঞ্চটা কেমন দুুলে উঠলো। আকাশটা মেঘলা, নদীটাও কেমন ফুলে উঠেছে। ভয়ে বুকটা কেঁপে উঠলো রিয়ার। সামনের সিটে বসা একজন মহিলা বলতে লাগলো লাইলাহা ইল্লালাৃ। এই আপনারা সবাই দোয়া পড়েন। গাড়ি নিয়ে খেলতে থাকা ছেলেটা মায়ের কোলে ঘুমিয়ে গেছে। পাশে থাকা ছেলেটা নিজের ব্যাগ গুচ্ছাচ্ছে। মাওয়া ঘাট নাকি চলে এসেছে, ওই যে দেখা যায়। ছোট ছোট ঘরগুলো, দোকানগুলো। ঢেউগুলো কেমন আছড়ে পড়তে লাগলো লঞ্চের বুকে। পদ্মার এমন ঢেউ রিয়ার এর আগে কখনো দেখা হয়নি। কেন যেন খুব ভয় করতে লাগলো। কিসের ভয় সে নিজেও জানে না। আর একটু, এইতো চলে এসেছে, ভালোবাসার মানুষটির কাছে।
আর একটুৃ। হঠাৎ একটা বড় ঢেউ আসতেই লঞ্চটা হালকাভাবে এক পাশ কাত হয়ে গেলো। আঁতকে উঠলো লঞ্চের মানুষ। ঘুমন্ত শিশুটির ঘুম ভেঙে গেলো। নামার প্রস্তুতি যারা নিচ্ছিল তারা ভয়ে হতবাক হয়ে গেলো। লঞ্চে পানি উঠে গেলো। ভয়ে সবাই বাঁচাও বাঁচাও বলে এক পাশে চলো এলো। আর তখনি ঘটলো অপ্রত্যাশিত সেই ঘটনাটি। আরেকটা ঢেউয়ের দোলানিতে লঞ্চটা বাম দিকে পুরোপুটি কাত হয়ে গেলো। রিয়ার চারপাশে এক ভয়ানক চিৎকার বাঁচার করুণ আর্তনাদ। রিয়া বের হতে গিয়েও পারলো না জামার একটা সাইড আটকে গেছে সিটের পাশে লাগানো পেরেকের মধ্যে। সেকেন্ডের মধ্যে সব আশা, সব স্বপ্ন ডুবে গেরো পদ্মা ঘোলা জলে। বাঁচার চেষ্টাও এক সময় বিফলে গেলো। আস্তে আস্তে লঞ্চের সঙ্গেই রিয়াসহ আরো অনেকে তলিয়ে যেতে লাগলো গভীরে, আরো গভীরেৃঅনেক গভীরে।
৫.
শাড়িটার দিকে বারবার তাকাচ্ছে রাজু। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে পকেট থেকে ফোনটা বের করলো। রিয়াকে ফোন করতেই দেখলো ফোন অফ। এমনটা তো হওয়ার কথা না। এক দুশ্চিন্তার ছাপ পড়লো রাজুর মুখে। মেয়েটি কিছুই চেনে না কোনো বিপদ হয়নি তো?। ঠিক সেই মুহূর্তেই মানুষের ছোটাছুটি চোখে পড়লো। একজন দৌড়াতে দৌড়তে বলছে হে মাবুদ কি দেখলাম, এতোগুলা তাজা জান শেষ হইয়া গেলো চোখের পলকে। বুকটা কেঁপে উঠলো রাজুর। দোকান থেকে বের হতেই দেখে সবাই মাওয়া ঘাটের দিকে যাচ্ছে। রাজুও ছুটতে লাগলো। সবার দৃষ্টি উত্তাল পদ্মার মাঝের সাদা অংশটুর দিকে। কি হয়েছে জানতে চাইলে একজন বিস্তারিত বলে। রাজু আবারো ফোন করে রিয়াকে। ফোন বন্ধ। পাগলের মতো এক এক করে ফোন দিতে থাকে।
এক সময় কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়ে মাটিতে। আমার সব শেষ হয়ে গেলো। ঘোলা জলে রাজু নিজের ছায়াটুকু দেখলো যার পাশে ভালোবাসার মানুষটি থাকার কথা সে আজ নেই। অশ্রু জলে তাকিয়ে রইলো নদীর দিকে। বছরের পর বছর এমনটাই ঘটে চলছে। অবহেলায় ঝরে যাচ্ছে কতো প্রাণ। তবুও প্রশাসনের টনক নড়ে না, আসে না কোনো নিয়মকানুন। রাজুর মতো হয়তো কারো ভালোবাসার মানুষ, কারো বুকের মানিক, কারো একমাত্র উপাজর্ন করার ব্যক্তি, চান মিয়ার মতো ভাইয়ের কাছে ছোট কোনো কিশোর, অথবা রিয়ার মতো নতুন স্বপ্ন বোনা মানুষটি হারিয়ে গেছে। এভাবে আর কতোদিনৃ। অশ্রু চোখে রাজু তাকিয়ে থাকে পদ্মার দিকে। উত্তাল পদ্মা তখনো শান্ত হয়নি।
সোহানুর রহমান অনন্ত, ঢাকা
জলের ছায়া
ভোরের কাগজ : ১৬/০৮/২০১৪
ঢেউগুলো বারবার আছড়ে পড়ছে লঞ্চের গায়ে। লঞ্চের এক পাশে বসে আছে রিয়া। তাকিয়ে আছে পদ্মা নদীর দিকে। এই জলে এক সময় কতো সাঁতার কেটেছে, কতো পা ভিজিয়ে বসে সময় কাটিয়েছে। অথচ ইদানীং কেন যেন এই জলকেই ভয় করতে শুরু করেছে। ব্যাগটা আরো কাছে টেনে নেয়। রিয়া রাজুর জন্য আজ ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে। দীর্ঘ দুই বছরের ফোনেই প্রেম। কেউ কাউকে দেখেনি আজো। হঠাৎ করে রিয়ার বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ায় দুজন ঠিক করলো পালিয়ে বিয়ে করবে। রাজু শ্রীনগর থাকে, পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। বাবা-মাকে ছেড়ে আসার কারণে রিয়ার মনটা একটু খারাপ। তবে রাজুর কথা ভেবে এক অন্যরকম আনন্দ লাগছে। অপেক্ষা আর সাইছে না কখন লঞ্চ ছাড়বে। একে একে যাত্রীতে ভরে গেলো লঞ্চটি। চারপাশে কোলাহল, তিল ধারণের জায়গা নেই। খুব জোরে লঞ্চের হর্ন বেজে উঠলো তারপর আস্তে আস্তে লঞ্চটা ছুটে চললো মাওয়া ঘাটের দিকে।
২.
রিয়ার সামনে সাত আট বছরের একটি ছেলে। গাড়ি নিয়ে খেলা করতে করতে বলছে, বাজান সামনের ঈদে কিন্তু দুইটা নতুন জামা কিনে দিতি হইবো। ছেলেটির বাবা হেসে বললো, দেবো বাবা তোরে দুইটাই কিনি দিমু। রিয়ার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল একটু ছাদে যাওয়ার কিন্তু এতো মানুষ হয়েছে যে, ছাদেও দাঁড়াবার জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকতে হলো। একজন লোক এসে বললো আফা পানি লাগবো, ঠা-া পানি? এক বোতল পানি কিনে নিলো। খুব ক্ষুধা লেগেছে, সঙ্গে বেশি টাকাও নেই। বোতল থেকে একটু পানি হাতে নিয়ে মুখে ছিটিয়ে নিলো। সাইড ব্যাগ থেকে আয়নাটা বের করে নিজের মুখটা দেখলো একবার। তাড়াহুড়ার কারণে একটু সাজতেও পারেনি। এই ভেবে ঠোঁটের কোণে এক টুককো হাসি ফুটে উঠলো।
৩.
কেন যেন খুব খারাপ লাগছিল রিয়ার কাছে। হয়তো সবাইকে ছেড়ে আসার এক কষ্ট এটা। লঞ্চের মধ্যে একা একা চুপ থাকাটা আরো কষ্টকর। কারো সঙ্গে কথা বলতে পারলে ভালো হতো। রিয়ার পাশের সিটে একটি ছেলে বয়স পনেরোর কাছাকাছি। রিয়া ইচ্ছে করেই কথা বললো, কি নাম তোমার?। ছেলেটি প্রথমে চমকে উঠলেও বলতে লাগলো, চান মিয়া গ্রামের পোলাপান মাঝে মাঝে চান্দু বলে খেপায়। যাইতাছি বড় ভাইয়ের কাছে, মায় মুড়ির মোয়া আর পিঠা বানায়া দিছে। রিয়া হেসে উঠলো, প্রশ্ন একটা করলে ছেলেটি এক সঙ্গে অনেকগুলো উত্তর দেয়। চলার পথে কতো বিচিত্র লোকের দেখা মেলে। কতো লোক লঞ্চের মধ্যে, কেউ যাচ্ছে ভাইয়ের কাছে, কেউবা যাচ্ছে স্ত্রীর কাছে, কেউবা বাবা-মাকে ছেড়ে
কর্মের খোঁজে। ফোনটা বেজে উঠলো। রাজুর ফোন, হ্যালো, আমি মাওয়া ঘাটে আছি লঞ্চ আসতে আর কতোক্ষণ লাগবো?। আমি কি করে বলবো, আমি তো কিছুই চিনি না। আচ্ছা আসো আমি ঘাটেই আছি। তোমার জন্য একটা শাড়ি কিনছি, এইডা পইরাই আমগো বিয়া হইবো। রিয়া হেসে উঠলো রাজুর কথা শুনে।
৪.
হঠাৎ করেই লঞ্চটা কেমন দুুলে উঠলো। আকাশটা মেঘলা, নদীটাও কেমন ফুলে উঠেছে। ভয়ে বুকটা কেঁপে উঠলো রিয়ার। সামনের সিটে বসা একজন মহিলা বলতে লাগলো লাইলাহা ইল্লালাৃ। এই আপনারা সবাই দোয়া পড়েন। গাড়ি নিয়ে খেলতে থাকা ছেলেটা মায়ের কোলে ঘুমিয়ে গেছে। পাশে থাকা ছেলেটা নিজের ব্যাগ গুচ্ছাচ্ছে। মাওয়া ঘাট নাকি চলে এসেছে, ওই যে দেখা যায়। ছোট ছোট ঘরগুলো, দোকানগুলো। ঢেউগুলো কেমন আছড়ে পড়তে লাগলো লঞ্চের বুকে। পদ্মার এমন ঢেউ রিয়ার এর আগে কখনো দেখা হয়নি। কেন যেন খুব ভয় করতে লাগলো। কিসের ভয় সে নিজেও জানে না। আর একটু, এইতো চলে এসেছে, ভালোবাসার মানুষটির কাছে।
আর একটুৃ। হঠাৎ একটা বড় ঢেউ আসতেই লঞ্চটা হালকাভাবে এক পাশ কাত হয়ে গেলো। আঁতকে উঠলো লঞ্চের মানুষ। ঘুমন্ত শিশুটির ঘুম ভেঙে গেলো। নামার প্রস্তুতি যারা নিচ্ছিল তারা ভয়ে হতবাক হয়ে গেলো। লঞ্চে পানি উঠে গেলো। ভয়ে সবাই বাঁচাও বাঁচাও বলে এক পাশে চলো এলো। আর তখনি ঘটলো অপ্রত্যাশিত সেই ঘটনাটি। আরেকটা ঢেউয়ের দোলানিতে লঞ্চটা বাম দিকে পুরোপুটি কাত হয়ে গেলো। রিয়ার চারপাশে এক ভয়ানক চিৎকার বাঁচার করুণ আর্তনাদ। রিয়া বের হতে গিয়েও পারলো না জামার একটা সাইড আটকে গেছে সিটের পাশে লাগানো পেরেকের মধ্যে। সেকেন্ডের মধ্যে সব আশা, সব স্বপ্ন ডুবে গেরো পদ্মা ঘোলা জলে। বাঁচার চেষ্টাও এক সময় বিফলে গেলো। আস্তে আস্তে লঞ্চের সঙ্গেই রিয়াসহ আরো অনেকে তলিয়ে যেতে লাগলো গভীরে, আরো গভীরেৃঅনেক গভীরে।
৫.
শাড়িটার দিকে বারবার তাকাচ্ছে রাজু। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে পকেট থেকে ফোনটা বের করলো। রিয়াকে ফোন করতেই দেখলো ফোন অফ। এমনটা তো হওয়ার কথা না। এক দুশ্চিন্তার ছাপ পড়লো রাজুর মুখে। মেয়েটি কিছুই চেনে না কোনো বিপদ হয়নি তো?। ঠিক সেই মুহূর্তেই মানুষের ছোটাছুটি চোখে পড়লো। একজন দৌড়াতে দৌড়তে বলছে হে মাবুদ কি দেখলাম, এতোগুলা তাজা জান শেষ হইয়া গেলো চোখের পলকে। বুকটা কেঁপে উঠলো রাজুর। দোকান থেকে বের হতেই দেখে সবাই মাওয়া ঘাটের দিকে যাচ্ছে। রাজুও ছুটতে লাগলো। সবার দৃষ্টি উত্তাল পদ্মার মাঝের সাদা অংশটুর দিকে। কি হয়েছে জানতে চাইলে একজন বিস্তারিত বলে। রাজু আবারো ফোন করে রিয়াকে। ফোন বন্ধ। পাগলের মতো এক এক করে ফোন দিতে থাকে।
এক সময় কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়ে মাটিতে। আমার সব শেষ হয়ে গেলো। ঘোলা জলে রাজু নিজের ছায়াটুকু দেখলো যার পাশে ভালোবাসার মানুষটি থাকার কথা সে আজ নেই। অশ্রু জলে তাকিয়ে রইলো নদীর দিকে। বছরের পর বছর এমনটাই ঘটে চলছে। অবহেলায় ঝরে যাচ্ছে কতো প্রাণ। তবুও প্রশাসনের টনক নড়ে না, আসে না কোনো নিয়মকানুন। রাজুর মতো হয়তো কারো ভালোবাসার মানুষ, কারো বুকের মানিক, কারো একমাত্র উপাজর্ন করার ব্যক্তি, চান মিয়ার মতো ভাইয়ের কাছে ছোট কোনো কিশোর, অথবা রিয়ার মতো নতুন স্বপ্ন বোনা মানুষটি হারিয়ে গেছে। এভাবে আর কতোদিনৃ। অশ্রু চোখে রাজু তাকিয়ে থাকে পদ্মার দিকে। উত্তাল পদ্মা তখনো শান্ত হয়নি।
সোহানুর রহমান অনন্ত, ঢাকা
No comments:
Post a Comment