join facebook page

Saturday, 3 October 2015

aj 15-8-15 daily prothom alo chutir din a.....

পুতুলঘর
আপডেট: ০১:১৬, আগস্ট ১৫, ২০১৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

অলংকরণ: তুলিআমার ঘরের প্রতিটি জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে নানা রঙের পুতুল। ছোট্ট ভাগনি আরিশার পুতুল খুব পছন্দ। আমার ঘরটাকে ঘর না বলে পুতুলের জাদুঘর বলা যায়। মাঝেমধ্যে আরিশা আমাকে সঙ্গে নিয়ে পুতুল খেলতে বসে। ক্ষণিকের জন্য যেন অতীতে হারিয়ে যাই, সেই ছোটবেলার পুতুল বিয়ের কথা মনে পড়ে। কত্ত খেলেছি এলাকার মেয়েদের সঙ্গে। আরিশা আমাকে বুঝিয়ে দেয় কীভাবে খেলতে হবে। আমি শান্ত বালকের মতো, সব বোঝার ভান করি। মেয়েটির আর কিছুতে ধ্যান-জ্ঞান নেই, শুধু পুতুল হলেই তার আর কিছু লাগে না। এভাবেই পুতুলঘরে দিনগুলো কাটছিল পুতুলের মতো। সেদিন বিকেলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে হলে ছবি দেখতে গিয়েছিলাম। অনেক রাত করে ফিরে দেখি আমার ঘরের তালা ভাঙা, ততক্ষণে যা বোঝার বুঝে গেছি। ঘরে ঢুকে দেখি সব এলোমেলো। বাসায় কেউ না থাকায় চোর ঢুকেছিল, টাকাপয়সা সব নিয়ে গেছে। নিয়ে গেছে আরিশার পুতুলগুলো। শুধু কয়েকটি পুতুল এখানে-সেখানে ছড়িয়ে আছে। পুতুলগুলোর জন্য আরিশা অনেক কেঁদেছিল। টাকাপয়সার চেয়ে পুতুলগুলোর জন্য আমারও খুব খারাপ লেগেছিল। অনেক বোঝালাম, এর চেয়ে বেশি পুতুল কিনে দেব। কিন্তু কে শোনে কার কথা। কাঁদতে কাঁদতে সে একসময় ঘুমিয়ে পড়ল।
পরদিন অনেকগুলো পুতুল কিনে দিলাম, কিন্তু কেন যেন ওর মুখে হাসি নেই। কেনই বা হাসি থাকবে। হয়েতা এত দিনের যত্নে রাখা পুতুলগুলো হারিয়ে গেছে সে কারণে। আমার পুতুলঘরে এখন আর আরিশার অট্টহাসির শব্দ শোনা যায় না। সেদিনের পর থেকে পুতুলঘরে নীরবতা নেমে এসেছে। অনেক বেশি নীরবতা।
সোহানুর রহমান

No comments:

Post a Comment