join facebook page

Saturday, 3 October 2015

13-09-2015 Ittafaq-er fun magazine thattay

ঢাকা বসবাসের অযোগ্য হওয়ার কারণ
আইডিয়া সোহানুর রহমান অনন্ত ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ইং
l
আঁকা রবিউল ইসলাম সুমন l

আপনি না বললেন ভোটের পর ডোবা সংরক্ষণ করবেন, এখন আপনিই সেটা ভরাট করে পাঁচ তলা বাড়ি বানাইতাছেন?

চিন্তা কইরা দেখলাম এইসব ডোবায় মশা বংশবিস্তার করতে পারে। তাই ভরাট করে ফেললাম। আমি তো আবার আপনাগো ভালোটাই চাই।

আব্বা বিয়া তো আরও দুইদিন পর। এখনি আমরা বরযাত্রী নিয়া রওনা হইতাছি কোন দুঃখে?

ওরে নালায়েক, ঢাকার যানজট একবার পড়লে বিয়ে তো দূরের বিবাহ বার্ষিকীতেও পৌঁছাতে পারবি না।

আপনার এলাকা এত নোংরা, রাস্তার পাশে ময়লা ফেলতে ফেলতে পাহাড় বানিয়ে ফেলেছে তারপরও কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না?

এটাই তো সিস্টেমের খেইল, মানুষ পয়সা দিয়ে মাটির পাহাড় দেখতে যায়, কয়দিন পর ময়লার পাহাড় দেখতে আমার এলাকায় আইব। কী বুঝলেন!

নেতা আপনার ছোট ভাই তো রাস্তার পাশের সব গাছ কাইট্টা ফালাইছে, আপনি কিছু একটা করেন।

ঠিকই তো করছে, যে পরিমাণ ঝড়-তুফান হইতাছে তাতে কহন কার উপর গাছ ভাইঙা পড়ে... আমার ভাই তো দিল দরদি।

আমাদের শেষ প্রশ্ন ভাঙাচোরা রাস্তা নিরসনে আপনার ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা কী?

কোনো পরিকল্পনা নাই, আপাতত আমি পরিবার-পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত



আজ ১৩-০৯-২০১৫ দৈনিক প্রথম আলো' বন্ধুর সভায় আমার গল্প
ভুল ভালোবাসা
সোহানুর রহমান
আড়চোখে তাকায় রূপা, আজও বাসার সামনে দঁাড়িয়ে আছে ছেলেটা। মোটা ফ্রেমের চশমার আড়ালে শান্ত দুটো চোখ তাকিয়ে থাকে। রূপা রিকশা নিয়ে চলে যায়। পেছন ফিরে তাকায় একবার। ছেলেটি ঠিক তেমনি দঁাড়িয়ে আছে। বেশ কয়েক দিন হলো ছেলেটি ফলো করছে রূপাকে, কিন্তু কেন? ছেলেটি কি তাহলে ভালোবাসে রূপাকে? যদি বেসে থাকে তাহলে সাহস করে বলে ফেললেই তো পারে। ভিতুর ডিম একটা, ফোন নম্বর চাইতে সাহস না থাকুক, ফেসবুক আইডিটা তো চাইতে পারে। অদ্ভুত।
ছেলেটিকে নিয়ে কি বান্ধবীদের সঙ্গে আলাপ করা যায়? নাহ, পচাবে। বলবে এমন একটা ছেলের প্রেমে পড়েছিস। তাহলে একটা স্ট্যাটাস...নাহ, সেখানেও সমস্যা আছে, সবাই জেনে যেতে পারে। তাহলে কী করবে এখন, বিষয়টা তো হজম করতেও পারছে না। ছেলেটির চোখ তো নয় যেন ঘায়েল করার যন্ত্র। মুখ টিপে হাসে রূপা। পরদিন সকাল থেকেই বৃষ্টি, কয়েক দিন আগে হলেও ভার্সিটিতে যেত না।
মেঘলা দিন খুব ভালো লাগে ওর। কিন্তু আজকের বিষয়টা ভিন্ন, বাইরে যে বেরোতেই হবে। রূপা আজ শাড়ি পরেছে, হুমায়ূন স্যারের রূপার মতো নীল শাড়ি। আচ্ছা ছেলেটি কি হলুদ পাঞ্জাবি পরবে আজ? কী জানি। বাইরে বেরোতেই চোখে পড়ল, দুটো কদম ফুল হাতে ছেলেটি দঁাড়িয়ে। রূপা ছেলেটির দিকে এগিয়ে গেল।
রূপাকে এভাবে আসতে দেখে ছেলেটি অপ্রস্তুত হয়ে গেল। কাছে গিয়ে বলল, ‘আপনি একটা ভিতুর ডিম।’ ‘মানে?’
একটা সহজ বাংলা উচ্চারণ মুখ ফুটে বলতে পারেন না।ছেলেটি বলল, ‘ইয়ে মানে আপনি যা ভাবছেন তা নয়।ঠিক সেই মুহূর্তে আরেকটা রিকশা এসে দঁাড়ায় সেখানে। ছেলেটি সে দিকে হেঁটে চলে যায়।
রূপা তাকিয়ে দেখে, রিকশায় একটি মেয়ে বসে আছে। ছেলেটি, মেয়েটির হাতে ফুলগুলো দিয়ে রিকশায় উঠে বসল। মানে এত দিন যা ভেবেছে তা সবই ভুল।
ছেলেটি অন্য কারও জন্য এখানে অপেক্ষা করে। আর কি না... বড় বড় বৃষ্টির ফোঁটা রিক্ত মনটাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে। চোখের জল আর বৃষ্টির জল দুটো একই সঙ্গে ঝরে পড়ছে মাটিতে








২৩-০৯-২০১৫ দৈনিক যুগান্তরে স্বজন-সমাবেশ পাতায়.....অাঁকার কাজটা উত্তম দাদাই করেছে....|
বৃষ্টির গন্ধ
সোহানুর রহমান অনন্ত |
কালভাটের নিচে মস্ত বড় জলের আয়না। মাথা নিচু করে তাকায় নন্দিনী। কালো জলে সুন্দর মুখটাও কালো দেখাচ্ছে, মাথার ওপর শরতের আকাশ। বৃষ্টি পড়ছে। রাস্তায় জমে থাকা জলে বৃষ্টির সাদা ফুল ফুটে। বাসের জন্য অপেক্ষা করছে নন্দিনী, হাতের ভাঁজে হুমায়ূন আহমেদের গল্প সমগ্র। বৃষ্টির গন্ধ ক্লান্ত মনটাকে শীতল করে দিচ্ছে। পড়াশোনা-চাকরি সবমিলিয়ে বছরে অন্য সময় বেশ ব্যস্ত থাকতে হয় নন্দিনীকে। ঈদ এলেই কেবল বাড়িতে যায়। বিয়েটা করি করি করেও করা হল না, বয়স বাড়ছে খামোখা। হঠাচোখ আটকে যায় সামনের দিকে। শোভন রিকশায় করে যাচ্ছে, পাশে একটা মেয়ে বসা। হলুদ ল্যাম্পের আলোয় শোভনের মুখটি চিনতে কষ্ট হয়নি নন্দিনীর। কিন্তু পাশে থাকা মেয়েটি কে? হতে পারে ওর গার্লফ্রেন্ড কিংবা স্ত্রী। শোভনের হাতে দুটো লাল গোলাপ।
কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে রিকশাটা চলে গেল দৃষ্টির আড়ালে। নন্দিনী কল্পনায় ডুবে যায়, কলেজে এক বছরের সিনিয়র ছিল শোভন, প্রায় ক্লাস করার সময় নন্দিনী জানালা দিয়ে বাইরে তাকাত। শোভন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিত, মেহগনি গাছটার নিচে। যেদিন শোভন কলেজে আসত না, সবকিছু শূন্য মনে হতো নন্দিনীর কাছে। ভালো লাগার দিনগুলো খুব দ্রুত চলে যায়, তেমনি চলে গেল শোভনও পাস করে অন্য কোথাও। আজ এতটা বছর পরও শোভনকে ভুলতে পারেনি নন্দিনী। কে জানে হয়তো খুব বেশি ভালোবেসে ফেলেছিল শোভনকে।
তীব্র হর্ন বাজার শব্দে নিজেকে ফিরে পায় নন্দিনী, ওর সামনে বাস দাঁড়িয়ে আছে। চটপট বাসে ওঠে জানালা দিয়ে বাইরে তাকায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই মেনে নিতে হয়, এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
কিছু দূর যেতেই জটলা দেখতে পায়। অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে। মানুষের হৈচৈ কানে ভেসে এল, বিপরীতমুখী ট্রাক একটা রিকশাকে চাপা দিয়েছে, দুজন নিহত। নন্দিনী কৌতূহলী দৃষ্টি নিয়ে তাকায় বাইরের দিকে। রাস্তার পাশে উল্টে পড়ে আছে ভাঙাচোরা রিকশাটা, তাজা রক্তের ক্যানভাসে দুটো ক্ষতবিক্ষত গোলাপ চোখে পড়ে ওর