join facebook page

Monday, 1 June 2015

০২-০৬-২০১৫ দৈনিক কালের কণ্ঠের ঘোড়ার ডিম-এর লিড আইডিয়া..
2-06-2015 daily kalar kantha-ar Gorar dim-a

সবাইকে জানাতে হলে
আপনি এ প্লাস পেয়েছেন, এ খবর পুরো জাতিকে তো জানাতেই হবে। তবে জানানো তো আর অত সহজ কাজ নয়। তার জন্য কিছু বুদ্ধি খাটাতে হবে। কী সেই বুদ্ধি, জানাচ্ছেন সোহানুর রহমান অনন্ত

টি-শার্টের মাধ্যমে

যেহেতু পাবলিককে আপনি জানাবেন আপনি এ প্লাস পেয়েছেন, সেহেতু মুখ না ব্যবহার করে টি-শার্টের সামনে-পেছনে বড় করে এ প্লাস লিখে নিতে পারেন। এমনভাবে লিখবেন, যাতে পাবলিক দেখেই বুঝতে পারে এটা আপনার রেজাল্ট। ব্যস, এবার রাস্তা দিয়ে হাঁটুন, যেদিকে পাবলিক সেখানেই আপনি এবং আপনার টি-শার্ট।

ফেসবুকের মাধ্যমে

ফেসবুকের কভার ও প্রোফাইল পিকচারে 'এ প্লাস' দিয়ে ফেলুন। এরপর সেগুলো ইচ্ছামতো ট্যাগ করুন বন্ধুদের। এভাবে একজনের থেকে হাজারজনের কাছে চলে যাবে আপনার ট্যাগ। আর সবাই জানতে পারবেন আপনি একজন বিশুদ্ধ এ প্লাস পাওয়া কৃতী ছাত্র।

স্টিকারের মাধ্যমে

নিজের ছবিযুক্ত স্টিকার বানিয়ে ফেলুন। এরপর সেটি আপনার ফ্ল্যাটের সামনে-অর্থাৎ দরজার সামনে লাগিয়ে দিন। যারা আপনার ফ্ল্যাটে আসবে অথবা আপনার ফ্ল্যাটের সামনে দিয়ে নামবে, তারা সবাই সেটি দেখতে পাবে। এবং আপনি যে এ প্লাস পেয়েছেন, সেটা জনে জনে রটে যাবে।

Aj 24-05-2015 Abokash-a

মানবপাচার

সোহানুর রহমান অনন্ত

একজন মানুষের স্বপ্ন অনেক বড় হয়। তার এই স্বপ্নের মাঝে থাকে তার পরিবার। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে যখন নিজেই পড়ে যান জীবন মরণের মাঝখানে ঠিক তখনই সেই স্বপ্ন পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে। সাগরের প্রতিটি ঢেউয়ের সাথে স্বপ্নগুলো আস্তে আস্তে দূরে সরে যায়। এটা কোনো উপন্যাসের ভূমিকা নয়, বাস্তব। এভাবেই স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে অবৈধ পথে বিদেশে যাওয়া অনেক বাংলাদেশী ভাসছে সাগরের জলে। দালালদের খপ্পরে পড়ে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টাকালে সাগরে ভেসে বেড়ানো কিংবা জঙ্গলে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করার কথা এখন সবার মুখে মুখে। মানবপাচার করে অনেক পাচারকারী আবার কোটিপতি বনে গেছেন। গরিবের সরলতার সুযোগ নিয়ে দালালেরা হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা, যা দেখার কেউ নেই। ভালো উপার্যনের আশায় সমুদ্রপথে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে স্বপ্নের দেশ মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে। কিন্তু শুরু যতটা না সুন্দর হয় শেষটা হয় তার চেয়েও কঠিন। তারা জানে না এটা খুবই দীর্ঘ ও বিপজ্জনক যাত্রা। যখন এই চিরসত্যটি তারা বুঝতে পারেন তখন আর ফেরার পথ নেই। মানবপাচারে জড়িত রয়েছে রোহিঙ্গাসহ তিন শতাধিক স্থানীয় ও বহিরাগত দালাল। এমনটা অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে। হঠাৎ করে গণমাধ্যমে বিষয়টি চলে আসায় বিভিন্ন দেশের প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। সমুদ্রে ভেসে থাকা বিভিন্ন নৌকায় আটকে পড়াদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই বাংলাদেশী। দালালদের খপ্পরে পড়ে তাদের জীবন প্রদীপও নিভতে বসেছে। নৌকা ডুবিতে প্রাণ হারিয়েছেও অনেকে, উদ্ধাদের কোনো ব্যবস্থা নেই। এর কিছুদিন আগে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে মারা যান অনেক অবৈধ অভিবাসী। সেই ঘটনার পর ইউরোপীয় দেশগুলো নড়েচড়ে বসে। তারা এগিয়ে আসে মানবপাচার বন্ধে এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। অর্ধেক বাংলাদেশী হলেও বাকি অর্ধেক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গারা বাঙালি। দেশটিতে বিভিন্ন সময় রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা, লুণ্ঠনসহ নানা নির্যাতন চালিয়ে আসছে উগ্রপন্থী বৌদ্ধরা। নির্যাতনের শিকার হয়ে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে অন্যান্য দেশে। জানা যায়, বিদেশগামী এসব মানুষকে প্রায়ই আটকে রেখে পরিবার বা বন্ধুদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে পাচারকারীরা। না খেয়ে বন্দী অবস্থাতেই অনেকে মারা যায়। এভাবেই পাচারকারীরা নাকের ডগায় বসে সাধারণ মানুষের জীবনকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। জাতিসঙ্ঘের মতে, জানুয়ারি থেকে মার্চে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ বঙ্গোপসাগর থেকে যাত্রা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার উদ্দেশে। দিন দিন এর হার বেড়েই চলছে। তাদের মধ্যে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ রয়েছে। আর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়ার জন্য তারা বিদেশে পাড়ি জমান অবৈধ পথে। তাদের ধারণা, উন্নত কোনো একটি দেশে যেতে পারলে তাদের জীবনযাত্রা পাল্টে যাবে। দালালের খপ্পরে পড়ে অনেকেই বিক্রি কয়ে দেয় নিজের পৈতৃক সম্পত্তি। দালালের হাতে তুলে দেয় টাকা। ট্রলারে গভীর সমুদ্রে পাড়ি জমান। অনেক মানুষ একসাথে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। খাবার চাইতে গেলে উল্টো নির্যাতনের শিকার হতে হয়। অর্থনৈতিক কারণে দেশান্তরী হওয়া এসব মানুষের তখন আর কিছুই করার থাকে না। আবার চালকহীন নৌযানে সাগরের বুকে মৃত্যুর দিন গুনছেন অনেকে।
মালাক্কা প্রণালী ও এর আশপাশে সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছেন হাজার হাজার বাংলাদেশী ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম। অন্য দিকে ইন্দোনেশীয় সরকারের প থেকে গত সোমবার নৌকায় অবস্থানকারী শতাধিক বিদেশগামীকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি থাইল্যান্ডের সীমান্তসংলগ্ন জঙ্গলে গোপন নির্যাতন শিবির ও বেশ কয়েকটি কবরের সন্ধান পায় দেশটির পুলিশ। সেই খবর পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লে উঠে আসে মানবপাচারের ব্যাপারটি। এ ঘটনার পর থেকেই দেশটির আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনী মানবপাচারের সাথে জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। সাগরে ভাসমান এই মানুষের অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। খাবার-পানির অভাবে বেঁচে থেকেও তারা প্রায় মৃত্য। এসব মানুষকে উদ্ধার করতে সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজন এবং দালালদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত বিচার করা। অবৈধ পথে যাতে কেউ বিদেশ গমন করতে না পারে সে দিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। উপকূলীয় মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের সবার মনে রাখা উচিত প্রতিটি মানুষের জীবনই মূল্যবা

8-05-2015Dailysomokal_Pachall

আরও যেভাবে আন্দোলন করতে পারে

সোহানুর রহমান অনন্ত
আন্দোলনকারীরা গানে গানে আন্দোলন করতে পারে। এমন বেসুরা গলায় গান গাইতে হবে, যাতে বিরক্ত হয়ে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়।

বেলুন দিয়ে আন্দোলন
যেহেতু পুলিশের সামনে আন্দোলন করাটা ব্যাপক রিক্স হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাই বাতাসে ভেসে ভেসে আন্দোলন করা যেতে পারে। গ্যাস বেলুন দিয়ে পুলিশের মাথার ওপর উড়ে উড়ে আন্দোলন করতে পারে আন্দোলনকারীরা। এ ক্ষেত্রে মার খাওয়ার চান্স নেই।
অন্যদিকে সুবিধা হলো, ভূমিকম্প হলেও রিক্স নেই। তবে সমস্যা হলো, ভাসতে ভাসতে আবার ভূমিকম্পের দেশ জাপানে চলে না গেলেই হলো।

সুড়ঙ্গ খুঁড়ে আন্দোলন
আন্দোলনকারীরা সুড়ঙ্গ খুঁড়ে আন্দোলন করতে পারে। মাটির নিচ দিয়ে তারা আন্দোলন করবে। যেহেতু সুড়ঙ্গে পুলিশ প্রবেশ করতে পারবে না, তাই আন্দোলনকারীরাও আরামে আন্দোলন করে যেতে পারবে। মার খাওয়ার কোনো সুযোগই নেই।

স্প্রিংয়ের জ্যাকেট পরে
যেহেতু পুলিশের সামনে আন্দোলন করতে গেলে পুলিশ লাঠিপেটা করে। সে জন্য আন্দোলনকারীদের প্রয়োজন স্প্রিংয়ের জ্যাকেট। ব্যস, পুলিশ লাঠি দিয়ে আঘাত করতে গেলে উল্টো তার গায়েই সে আঘাত এসে লাগবে। ব্যস, এমনটা ঘটাতে পারলে আন্দোলনকারীদের মার খাওয়ার টেনশন নেই।

গানে গানে আন্দোলন
আন্দোলনকারীরা গানে গানে আন্দোলন করতে পারে। এমন বেসুরা গলায় গান গাইতে হবে, যাতে বিরক্ত হয়ে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। ব্যস, যত গান গাইবে তত মার খাওয়ার চান্স কম। সুতরাং গানে গানে আন্দোলন করা যেতেই পারে।

মনে মনে
এর কোনোটাই যদি সম্ভব না হয় তাহলে মনে মনে আন্দোলন করতে হবে। এটি সহজ ও সফল আন্দোলন। বাংলাদেশের বড় একটি রাজনৈতিক দলও মনে মনে আন্দোলন করে। তাই মনে মনে আন্দোলন ব্যর্থ হবে না। আর মারও খেতে হবে না আন্দোলনকারীদের

Abokash 17-05-2015

বাঙালির প্রিয় মধুমাস

সোহানুর রহমান অনন্ত

বাঙালির মধুমাস জ্যৈষ্ঠ এসে গেছে। বাহারি রঙের ফলে ছেয়ে গেছে বাজারগুলো। গ্রামের হাটবাজারে এখন মিষ্টি ফলের গন্ধ। প্রচণ্ড গরমে রসাল ফল আপনাকে শুধু চাঙাই করবে না, নিমেষেই মনকে ভালো করে দেবে। ফল প্রকৃতির এক অপূর্ব উপহার। ফল পছন্দ করে না, এমন মানুষ নেই বললেই চলে। বিভিন্ন জেলা ফলের জন্য বিখ্যাত হয়ে রয়েছে যুগ যুগ ধরে। সাধ্যের মধ্যে যে যার মতো ফল কিনে মনের তৃপ্তি মেটাচ্ছে। গ্রামের মতো শহরের বিভিন্ন জায়গায় দোকানিরা ফলের দোকান সাজিয়ে বসেছেন। দূর-দূরান্ত থেকে এরই মধ্যে আসতে শুরু করেছে মধুমাসের নানা জাতের ফল। দেশী ফলের পাশাপাশি অনেকে আবার বিদেশী ফল সাজিয়ে রেখেছেন। তবে দেশী ফলের কদর বিন্দুমাত্র কমেনি তাতে। মধুমাসের ফলগুলো হচ্ছে- আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস, কাঁচা তাল, জামরুল, তরমুজ, পেয়ারা, আতা, করমচা, জাম্বুরা, কাউফল, গোলাপজাম, কামরাঙা, লটকন, টেপাফল, তেঁতুল, গাব, নোনা, বেথুন, ডেউয়াসহ আরো কত কী!

বাঁশখালী, চন্দনাইশ-সাতকানিয়ার চরাঞ্চল, পটিয়ার চক্রশালা, বোয়ালখালীর করলডেঙ্গা পাহাড়ি এলাকা, এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু কিছু পাহাড়ি অঞ্চলে তরমুজের চাষ হয়। এসব এলাকা থেকে পাইকারেরা নগরে সরবরাহ করেন তরমুজ। তারপর শুরু হয় বিক্রি। গরমে তরমুজের চাহিদাও অনেক। তবে মধুমাস বলতে গেলে আমের কথাই সবার আগে আসে। এরই মধ্যে বাজারে শোভা পাচ্ছে পাকা টসটসে আম। সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, নাটোর, ঈশ্বরদী থেকে গুটি আম, মোহনভোগ, গোপালভোগসহ বাহারি নামে বিভিন্ন আমে বাজার সয়লাব। ভারতীয় গুটি আম গোবিন্দভোগ, হিমসাগর পাওয়া যাচ্ছে বৈশাখের শুরু থেকেই। এ ছাড়া রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া, হিমসাগর, গোপালভোগ, লক্ষ্মণভোগ মধুমাসকে পরিপূর্ণ করবে। আর এর পরই আসবে সে অঞ্চলের ফজলি আম। একেকজনের পছন্দ একেক রকম। কেউ আম খেতে ভালোবাসে, কেউ আবার কাঁঠাল। পরিবারের কর্তাকে তাই বিপদে পড়তে হয়। বছরের অন্য মাসগুলোর তুলনায় জ্যৈষ্ঠ মাসে ফল সবচেয়ে বেশি হয়।

রসে টইটম্বুর মওসুমি ফলের ম ম ঘ্রাণে ভরে ওঠে ফলের আড়তগুলো। আবহমান বাংলার অনেক ঐহিত্য রয়েছে এই মধুমাসকে নিয়ে। মেয়ের বাবা রসাল ফল নিয়ে মেয়ে আনতে যান তার শ্বশুরবাড়ি। ফল দিয়ে মেয়ে-জামাই এবং পরিবারের অন্যদের দাওয়াত দিয়ে আসেন। জ্যৈষ্ঠ মাসে জামাই না এলে মধুমাসই পরিপূর্ণ হবে না, এমনটিই তাদের চিন্তাভাবনা। মেয়ের জামাই বেড়াতে এলে আম, দুধ, কাঁঠাল আরো কত কী খেতে দেন! ঝড় হোক আর রোদে মাঠঘাঠ শুকিয়ে যাক, আম-কাঁঠাল নিয়ে মেয়েবাড়িতে যেতেই হবে। এর সাথে গ্রামের অনেকটা সম্মানও জড়িয়ে থাকে। গ্রামের লোকজনের নিজেদের গাছ থাকায় খুব কম জিনিসই কিনে খেতে হয়। তার পরও যাদের নেই তারাও থেমে থাকে না। বাজার থেকে কিনে এনে পরিবারের সবাইকে নিয়ে খেতে বসে। এই সময় গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। কোথাও কোথাও মওসুমি ফলের মেলা বসে। তখন মনে হয় বাংলার প্রকৃতি যেন সেজেছে রসের হাঁড়ি নিয়ে। তবে বিশেষ করে আমগাছে ঢিল দেয়া অথবা আম চুরি করা নিয়ে প্রত্যেক মানুষের জীবনেই ভিন্ন অভিজ্ঞতা রয়েছে। গ্রামের মতো রাজধানীতে মওসুমি ফলের মেলা বসে। বিশেষ করে আমের মেলা সবার দৃষ্টি কাড়ে।

অন্য দিকে রসাল লিচু দেখে লোভ সামলানো দায়। ছোট বড় সাইজের লিচুর দাম চড়া হলেও ক্রেতার সংখ্যা থাকে বেশি। কারণ, বছরের এই সময়টাতে কেবল এমন রসাল ফলের স্বাদ নেয়া যায়। মাগুরা, ঠাকুরগাঁও, রংপুর ও ঢাকার অদূরের সোনারগাঁও অঞ্চলের লিচু অনেক আগে থেকেই বাজারে আসতে শুরু করে। ব্যবসায়ীদের চোখে-মুখে আনন্দ লণীয়। কারণ, বছরের এই সময়টাতেই সবচেয়ে বেশি ফল বিক্রি হয়। দিনাজপুরের লিচু বাজারে আসতে একটু দেরি হয়। বড় সাইজের লিচুগুলোর বাজারে খুব কদর। তবে আম মোটামুটি পাওয়া গেলেও লিচু খুব দ্রুত ফুরিয়ে যায়। কারণ, সব ফলের চেয়ে লিচু আর আমের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। বাসস্ট্যান্ড কিংবা টারমিনালগুলোয় এসব ফল সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। বাজারের পাশাপাশি নগরীর অলিগলির মধ্যেও ঝুড়িতে করে অল্পদামে ফল বিক্রি হয়। গ্রীষ্মে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত জনসাধারণের প্রাণ জোড়াচ্ছে ফলগুলো। তবে যারা একেবারে নিম্নশ্রেণীর, তাদের জন্য মধুমাস অনেকটা দুঃস্বপ্নের মতোই। বিশেষ করে পথশিশুরা মধুমাস থেকে বঞ্চিত হয়। তবে অনেক সমাজসেবী আবার দলবদ্ধ হয়ে পথশিশুদের মাঝে আম বিলিয়ে দিচ্ছে। এতে তাদের মাঝেও মধুমাসের এক অন্যরকম উৎসব সৃষ্টি হয়। এভাবে যদি আরো অনেকে এগিয়ে আসে, তবে হয়তো কাউকেই আর এই রসাল ফল খাওয়া থেকে বাদ পড়তে হবে না। এ মাসটি সবার প্রিয় মাস।

ফলকে অনেক দিন তরতাজা রাখার জন্য ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। এটি মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। যদিও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে, তারপরও ফরমালিন দেয়া থেমে নেই। জানা যায়, কাঁঠাল কাঁচা অবস্থায় সংগ্রহ করে বাগানেই বিষাক্ত ইথিলিন দিয়ে পাকানো হয়। তবুও মধুফল বলে কথা। তাপদাহের যন্ত্রণায় জনমনে একটু শীতলতার পরশ ও প্রশান্তি মধুমাসের এই মধুফলে। তাই মানুষ খেয়ে যাচ্ছে তাদের প্রিয় মধুফল। তবে কিছু বিষয় ল করলে আপনি নিজেই ফরমালিনযুক্ত ফল শনাক্ত করতে পারবেন। বাজারে গিয়ে কিভাবে বুঝবেন ফলে ফরমালিন আছে কি না? প্রথমেই ল করুন আমের গায়ে মাছি বসছে কি না। কেননা ফরমালিনযুক্ত আমে মাছি বসবে না। আমটি যদি ফরমালিনমুক্ত হয় অবশ্যই তাতে মাছি বসবে। ল করুন আমের গায়ে সাদাটে ভাব আছে কি না, যদি থাকে তবে ভাববেন ফলটি ফরমালিনমুক্ত। কারণ ফলে যখন ফরমালিন দেয়া হয় তখন সেটি ঝকঝকে সুন্দর টসটসে দেখায়। একেবারে দাগহীন আম দেখলে কিনবেন না, কারণ গাছপাকা আমের ত্বকে দাগ পড়বেই। ওষুধ দিয়ে পাকানো হলে আমের শরীর হয় মসৃণ ও সুন্দর। আম নাকের কাছে নিয়ে ভালো করে শুঁকে কিনুন। গাছপাকা আম হলে অবশ্যই বোটার কাছে ঘ্রাণ থাকবে। ওষুধ দেয়া আম হলে কোনো গন্ধ থাকবে না কিংবা বাজে গন্ধ থাকবে। আম মুখে দেয়ার পর যদি দেখেন কোনো সৌরভ নেই কিংবা আমে টক-মিষ্টি কোনো স্বাদই নেই, বুঝবেন যে আমে ওষুধ দেয়া। আম কেনা হলে কিছুণ রেখে দিন। এমন কোথাও রাখুন যেখানে বাতাস চলাচল করে না। গাছপাকা আম হলে গন্ধে ম ম করে চার পাশ। ওষুধ দেয়া আমে এই মিষ্টি গন্ধ হবেই না। তবে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো যদি আপনি বুঝতে পারেন কিংবা জানতে পারেন কোনো বিক্রেতা ফরমালিনযুক্ত ফল বিক্রি করছে। তবে কাছের পুলিশকে জানান কিংবা মোবাইল কোর্টকে জানাতে পারেন; এতে সবাই উপকৃত হবে। মধুমাসের মধুর রসে বাহারি সব ফলের গন্ধ ঝরে, তাই ফলের রসে টইটম্বুর চার পাশ। জ্যৈষ্ঠ আসে ঘ্রাণের মধুমাসের সাজ। তাই মধুমাসের টসটসে ফলের রসে ভরে উঠুক সবার প্রাণ।
sranontojugantor@gmail.com

17-5-2015 Thattay
18-05-2015 daily somokal-ar pachall-a

ভূমিকম্প আতঙ্ক!

নিউজ হেডলাইনের মতো ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে, শোনা যাচ্ছে বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ। এসব খবরে যথারীতি আমজনতা কাঁপুনি আতঙ্কে ভুগছে। গবেষণা করেছেন সোহানুর রহমান অনন্ত
ভূমিকম্প নিয়ে বাড়িওয়ালাদের টেনশন বেশি
ভাড়াটিয়া : ভূমিকম্প হইলেও আপনার বাসায় কোনো রিক্স নাই এইডা সিউর দিয়া কেমনে কইতাছেন?
ভাড়িওয়ালা : ডরাইয়েন না, বাড়ির চারপাশের মাটিতে বড় বড় পেরেক মাইরা দিছি, ভূমিকম্প হইলেও মাটি ফাটার কোনো চান্স নাই। ভাড়া নিলে নিরাপদে থাকতে পারবেন।

ভূমিকম্প আতঙ্কে জনগণ
১ম ব্যক্তি : ভাই ভূমি...!
২য় ব্যক্তি : খাইছেরে! আবার ভূমিকম্প হইতাছে নাকি? কেবলার মতো দাঁড়ায়া না থাইক্কা আমার লগে দৌড় দেন।
১ম ব্যক্তি : দুর মিয়া, আমি তো জানতে চাইছিলাম ভূমি অফিসটা কোন দিকে। আপনি তো পুরাটা শোনার আগেই ডরাইয়া গেলেন।

ঘর ফাঁকা মানে চোরদের উৎসব
১ম চোর : কী এমন মন্ত্র শিখলি যেটা উচ্চারণ করলেই বাড়িঘর ফাঁকা হইয়া যায়! চাপা মারতাছো মনে হইতাছে।
২য় চোর : বেশি কিছু না, দরজার সামনে গিয়ে খালি চিল্লাই কবি ভূমিকম্প! ব্যস, ঘর এমনিতেই ফাঁকা হইয়া যাইবো, তারপর ইচ্ছা মতো লুট করতি পারবি।

রাজধানীবাসী টেনশনে আছে
বস : কী ব্যাপার উত্তম সাহেব, মাস শেষ না হতেই বেতন অগ্রিম চাচ্ছেন, আপনার ঘটনা কী?
২য় জন : স্যার, বেতন কি আর স্বাদে চাইতাছি। যেই হারে ভূমিকম্প হইতাছে, পরে যদি নেওয়ার আর সুযোগ না পাই


01-06-2015 Daily bangladesh protidin-ar Rokomari rommo-te

যাহার জন্য প্রযোজ্য...
সোহানুর রহমান অনন্ত

সুন্দরীর চোখ :

রাস্তা দিয়ে আপনি চলাফেরা করার সময় অনেক সুন্দরী মেয়ের সামনে পড়েন। মেয়েরা আপনার দিকে তাকিয়ে চোখের পাপড়ি ফেললেই ভাববেন না সে আপনাকে চোখ মেরেছে। কারণ এটা ওই মেয়ের চোখের সমস্যাও হতে পারে। তাই ভুল করে হিরো সাজতে গিয়ে বিপদে পড়তে পারেন।

স্ত্রীর চোখ :

বউয়ের চোখ পড়তে না পেরে মিষ্টি কথায় ভুলেও ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ড দেবেন না। যদি একবার এই ভুল করে ফেলেন তাহলে দুই দিন পর থালা নিয়ে রাস্তায় বের হতে হবে।

পাওনাদারের চোখ :

পাওনাদার চোখের ভাষা না বুঝলে আপনি সব সময় তার থেকে দূরে থাকতে চান। কিন্তু চুম্বক শক্তির মতো আপনি যেখানে যান পাওনাদার সেখানেই হাজির হয়। তাই পাওনাদারের সামনে পড়লেই তাকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করুন। তারপর ত্যানা প্যাঁচাল শুরু করুন। চাইলে বেসুরা গানও গাইতে পারেন।

২৯ মে ২০১৫,শুক্রবার- দিগন্ত সাহিত্য-patay>>><<<special thanks #Jobayer_Raju_ke

ঝড়

সোহানুর রহমান

স্টেশন রোডের বনলতা ক্যাফের সামনে আসতেই ঝুপঝুপ বৃষ্টি শুরু হলো। বাইকটা রেখে একটি কনফেকশনারিতে দাঁড়ালাম। শিলাবৃষ্টি, সেই সাথে আকাশে মেঘের গুড়–ম গুড়–ম শব্দ। সিগ্ধ বিকেলটা কখন যে মেঘের আড়ালে হারিয়ে গেছে বলা মুশকিল। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৪টা বেজে কুড়ি। বাসায় যাওয়া জরুরি। অথচ ঝড়, বড় বড় শিলাবৃষ্টি, সেই সাথে হাড়কাঁপানো বাতাস। হাত বাড়িয়ে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টির স্পর্শ নিই। খুব ইচ্ছে হচ্ছিল ভিজতে, মনের দেয়াল ভেজাতে। বৃষ্টি একটু ধরে এলো। আর কিছুক্ষণ পরই সন্ধ্যা নেমে যাবে। সুতরাং ৩৩৬ নাম্বার বাড়িটির সামনে পানি জমার আগেই যেতে হবে আমাকে। বাইক স্টার্ট করে ছুটলাম। কিছুদূর যেতেই আবার ঝুপঝুপ বৃষ্টি শুরু হলো। এবার আর কোথাও আশ্রয় নিলাম না। বৃষ্টির কাছে নিজেকে সঁপে দিলাম। মন্দ লাগছিল না ভিজতে। ল্যাম্পপোস্টের আলোয় ৩৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালাম। ভাগ্যভালো ততটা পানি এখনো জমেনি রাস্তায়। সিঁড়ি বেয়ে উঠে পড়লাম পাঁচতলায়। ঘরের মধ্যে ঢুকতেই লোডশেডিং। তোয়ালে দিয়ে মাথা মোছার সময় অনুভব করলাম শরীরটা কেমন গরম হয়ে আসছে। জ্বর আসবে নাতো? দূর! কত বৃষ্টিতে ভিজেছি আমি, কখনো তো সেইভাবে জ্বরটর আসেনি। কিছুক্ষণের মধ্যে মাথাটা কেমন ভারী হয়ে গেল, শীতল একটি অনুভূতি হতে লাগল। আমার ধারণা ভুল প্রমাণ করে তাপিয়ে জ্বর এলো। কত তা না মেপে বলা মুশকিল। নতুন বাড়িতে উঠেছি সবে, বদলি চাকরিটাও নতুন। এখনো মাইনে পাইনি, তাই ঘরের জিনিসপত্রও কেনা হয়নি। ভাঙা চকিটাতে শুয়ে পড়লাম একটি চিকন কাঁথা গায়ে দিয়ে। জ্বর যে ক্রমে বেড়েই চলছে টের পাচ্ছি। একসময় মনে হলো জ্বরে বোধহয় মরেই যান। ৮টা নাগাদ বৃষ্টি থেমে গেল। অন্ধকার একটি ঘরে পড়ে রইলাম আমি। অমাবস্যার অন্ধকার যেন আরো অন্ধকারে দিয়েছে আমাকে।
জ্বরে আমার সারা শরীর পুড়ে যাচ্ছে। কিন্তু একটি জিনিস ভেবে আমি খুব অবাক হচ্ছি। ভাঙা চকিতে আমি খুব আরামে শুয়ে আছি। আমার মাথার নিচে কে যেন একটি নরম বালিশ গুঁজে দিয়েছে। চিকন কাঁথার বদলে একটি মোটা কম্বল দিয়ে আমার সারা শরীর ঢাকা। এমন সময় খেয়াল হলো অমাবস্যার রাতে কী করে জানি ঘরটা চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠল! ঘরজুড়ে মিষ্টি একটা গন্ধ। ঠিক সেই মুহূর্তে একটি শীতল হাত, কে যেন আমার কপালের ওপর রাখল। বুঝলাম আমার কপালে জলপট্টি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কে দিচ্ছে? এই শহরে তো আমার আপন বলতে কেউ নেই। তা ছাড়া ঢাকার ফ্যাটগুলো তো আরো অদ্ভুত। কেউ কারো খবর নেয় না। তাহলে আমার মাথার কাছে বসে আছে কে? বুঝতে পারছিলাম এটা কোনো নারীর হাত। ঠিক সেই মুহূর্তে মনে হলো গলাটা কেমন শুকিয়ে গেছে, এক গ্লাস পানি যদি পান করা যেত। এমনটা যখন ভাবছি, আমার মাথার কাছে বসে থাকা মেয়েটি উঠে দাঁড়াল। ঝাপসা চোখে আমি দেখলাম খানিক বাদেই মেয়েটি আমার সামনে এসে দাঁড়াল। পানির গ্লাস এগিয়ে দিলো। অদ্ভুত, আমি মেয়েটির মুখ দেখতে পাচ্ছি না। মাথাটা একটু তুলে ঢকঢক করে গিলে ফেললাম। ঠিক সেই মুহূর্তে একটি কণ্ঠ আমার কান্তি দূর করে দিলো। মেয়েটি বলল, আমাকে চিন্তে পেরেছ? চেহারায় চিন্তে না পারলেও কণ্ঠটা আমার চেনা, অনেক দিনের চেনা। মেয়েটি আবার বলল, চিন্তে পারোনি, তাই না। আমি আলতো করে বললাম, কে, নীলা? হ্যাঁ, আমি তোমার নীলা। নীলা... এতদিন পর কোত্থেকে? নীলার কোনো জবাব নেই। আজ থেকে তিন বছর আগে নীলাকে বিয়ে করেছিলাম ভালোবেসে। ছোট্ট সুখের সংসার ছিল আমার। অভাব ছিল বটে, কিন্তু সুখ ছিল। সবই ঠিক ছিল। তারপরও কোথায় যেন একটা অঙ্ক ভুল হয়ে গেল। একদিন অফিস থেকে ফিরে দেখি, নীলা বাসায় নেই। ছোট্ট একটি চিরকুট চোখে পড়ল। তাতে লেখা, আমাকে খোঁজার বৃথা চেষ্টা করে লাভ নেই। আমি তোমার জীবন থেকে চলে যাচ্ছি। শুধু ভালোবাসা দিলেই হয় না, ভালোবাসা ছাড়াও নারীর অনেক চাওয়া-পাওয়া থাকে। তোমার সামান্য রোজগারে তো পেট চালানোই দায়। চিরকুট শেষ হওয়ার আগেই চোখ দিয়ে বৃষ্টি ঝরেছিল। কালচৈত্রের বৃষ্টি।
নীলার কণ্ঠ ভারী হয়ে এসেছে, আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি।
ক্ষমা...?।
হ্যাঁ, ক্ষমা। তোমাকে কষ্ট দিয়ে আমি সুখী হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু জানো, সুখী তো আমি হতেই পারিনি; বরং দুঃখের চোরাবালিতে আটকে গেছি।
তোমার ক্ষমা চাইতে হবে না। তোমার প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই।
সত্যি বলছো তুমি?
হ্যাঁ সত্যি, হাজারবার সত্যি।
যাক এবার আমি শান্তি পাবো।
শরীরটা এখন একটু ভালো লাগছে। ছলছল চোখে নীলা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। চোখের কোণ বেয়ে জল ঝরে পড়ছে মাঝে মাঝে। তুমি কাঁদছো কেন? পাগলি মেয়ে কোথাকার। সত্যি, তোমার প্রতি আমার কোনো রাগ নেই। তুমি অনেক বড় মনের একজন মানুষ, আমি অকৃতজ্ঞ। না হলে তোমাকে ছেড়ে অন্য কারো হাত ধরে চলে যেতে পারতাম না।
আমি কিছুই বলতে পারলাম না। পুরনো ভালোবাসা আবার যেন নতুন করে মরুভূমির বুকে আছড়ে পড়েছে। হঠাৎই চোখটা ঝাপসা হয়ে এলো। নীলার সুন্দর মুখটা আস্তে আস্তে ঝাপসা হয়ে আসছে। খুব ইচ্ছে হচ্ছিল, নীলার দিকে তাকিয়ে থাকতে। কিন্তু চোখ দুটো মেলতেই পারছিলাম না। কখন যে অচেতন হয়েছি নিজেও জানি না।
বাইরে প্রচণ্ড ঝড়, চোখ দুটো মেলতেই নীলা... নীলা বলে বেশ কয়েকবার ডাকলাম। কোনো সাড়াশব্দ নেই। আমার শরীরে একফোঁটা জ্বর নেই। বালিশের কাছেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিউলি ফুল চোখে পড়ল। নীলার খুব পছন্দের ফুল শিউলি। পুরো ঘর তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম, কোথাও নীলা নেই। হঠাৎ যেন আমি স্বজ্ঞানে ফিরে এলাম। নীলা তো আমার নতুন বাড়ির ঠিকানা জানে না, আসবে কী করে! আর দরজাও তো ভেতর থেকে লাগানো। সবকিছুই কেমন এলোমেলো মনে হতে লাগল। কিছুই মেলাতে পারছি না। বৃষ্টি একটু কমে এলে, বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। নিউ মার্কেটে নীলার চাচাতো ভাইয়ের দোকান আছে। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, নীলা কেমন আছে? আমার কথা শুনে ভদ্রলোক বললেন, আপনি কিছুই জানেন না!
কী জানব।
আরে নীলা তো গত সপ্তাহ দুয়েক আগে মারা গেছে। ডেলিভারি কেস, বাঁচানো গেল না। শুনে যেন মার্বেলের মূর্তি হয়ে গেলাম

26-5-2015 Daily kalar kanther gorar dim-
25-05-2015 Daily somokal-ar pachall-a idea
25-05-2015 Daily somokal-ar pachall-a

পকেটে টাকা না থাকলে যেভাবে তেল মারবেন

অনেক সময় আমাদের পকেটে টাকা থাকে না, সেই কারণে মাঝে মাঝে অনেক ঝামেলার মধ্যে পড়তে হয় আমাদের। তবে এখন আর আপনাকে সেটা নিয়ে টেনশন করতে হবে না। পকেটে টাকা না থাকলে কীভাবে অন্যকে তেল মারবেন তারই ভেজালমুক্ত টিপস দিচ্ছেন সোহানুর রহমান অনন্ত

পকেট খালি থাকলে এলাকার বড় ভাইকে যেভাবে তেল মারবেন
আপনি তো ভাই এলাকার মা-বাপ, আপনি না থাকলে বুড়িগঙ্গায় সব তো ভাইসা যাইত। আপনারে একদিন না দেখলে মনে হয় চোখে লোডশেডিং হইয়া গেছে। এহন কথা হইলো ভাই, পকেটটা বেশ কয়েক দিন ধইরাই টুলেট লাগায়া ঘুরতাছি, আমি জানি আপনি মহান একজন ব্যক্তি তাই হাজার পাঁচেক টাকা দিয়ে ছোট ভাইরে বাধিত করেন।

পকেটে টাকা না থাকলে প্রেমিকাকে যেভাবে তেল মারবেন
ওহ জোস, জামাটায় তোমারে যা লাগছে না, একেবারে বুড়ির লাহান থক্কু পরীর লাহান। আমার তো মনে হয় এই জামাটা কোম্পানি স্বয়ং তোমার জন্যই বানাইছে। আয়নায় যদি তুমি একবার নিজেরে দেখতা তাইলে তো নিজেই হ্যাং হইয়া যাইতা। ক্যাটরিনা যদি মুখে আটাও মাখে তাও তোমার মতো সুন্দর লাগবো না। এই দেখ, তোমার রূপের জাদুতে পইড়া মানিব্যাগ আনতেই ভুইলা গেছি। তুমি চিন্তা কইর না, ভুল তো মানুষের একবারই হয়। আজকে তুমি চালায়া দাও, একদিনের মামলাই তো।

পকেটে টাকা না থাকলে বউকে যেভাবে তেল মারবেন
বক্করের মা, তুমি যতই কও তোমার বয়স পঁয়তালি্লশ আমার চোখে কিন্তু তা মনে হয় না। তোমারে দেখলে তো মনে হয় ২২ বছরের টগবগে সুন্দরী। তোমার হাসির কাছে তো সব হাসি ফেল। এই কারণেই তো দেখো বাইরে বের হলে আমি তোমাকে ছাড়া অন্য কোনো মেয়ের দিকে ভুলেও তাকাই না। আগের শাড়িগুলোতে তোমারে যা মানায় না। আমি তো চিন্তা করছি আগামী এক বছরে তোমারে নতুন কোনো শাড়ি কিন্না দিমু না। খামোখা নতুন শাড়িতে তোমারে কেমন না কেমন লাগে।

আপনার হাসি, কথা বলা সব কিছুই সুপারহিট। এই নেন স্যার, এক গ্গ্নাস পানি পান করেন। এসিডা একটু বাড়ায়া দিছি, এখনি সব ঠাণ্ডা হইয়া যাইবো।
পকেটে টাকা না থাকলে বসকে যেভাবে তেল মারবেন
বস, দেইখাই মনে হইতাছে আপনি বেশ টেনশনে আছেন। আসলে আপনি যখন টেনশনে থাকেন তখন আপনার মুখে সেইটা ফুইটা ওঠে। আমার দাদা কইছে একমাত্র মহান ব্যক্তিগো ক্ষেত্রেই এমনটা হয়ে থাকে। আসলেই আপনি মহান স্যার। আপনার হাসি, কথা বলা সব কিছুই সুপারহিট। এই নেন স্যার, এক গ্গ্নাস পানি পান করেন। এসিডা একটু বাড়ায়া দিছি, এখনি সব ঠাণ্ডা হইয়া যাইবো। আরেকটা কথা স্যার, আমার অগ্রিম বেতনের অ্যাপ্লিকেশনটা সঙ্গে নিয়া ঘুরতাছি, আপনার মতো মহান ব্যক্তি যদি একবার হাতের স্পর্শ দিতেন...।

পকেটে টাকা না থাকলে বন্ধুকে যেভাবে তেল মারবেন
দোস্ত, তুই তো আমার লেংটা কালের ফ্রেন্ড, তুই একমাত্র বন্ধু, যারে আমি সবচাইতে বেশি আপন মনে করি। কারণ তুই হইলি ভালো পোলা। তোর কথা কিন্তু আমি সবখানে বলি বুঝলি। এখন কথা হইলো বন্ধু, আমারে হাজার পাঁচেক টাকা ধার দিতে হইবো। না, করতে পারবি না। আমি কিন্তু তোর উপকারের কথা সবাইরে কমু। বুঝলি।

পকেটে টাকা না থাকলে বাড়িওয়ালাকে যেভাবে তেল মারবেন
চাচা, আপনার তো এটা বাড়ি না, স্বর্গ বুঝলেন। এমন সুন্দর বাড়ি তো আমি ঢাকা শহরে আর একখানও দেখি নাই। আপনি তো আসলেই রুচিশীল মানুষ। আপনার বাড়িতে থাকতে পেরে নিজেকে গর্বিত ভাড়াটিয়া মনে করতাছি। আপনার বাড়ির সুনাম কিন্তু রাষ্ট্র রাষ্ট্র হইয়া গেছে। আমিও নিজ দায়িত্বে আপনার বাড়িটা দেইখা রাখতাছি। এহন কথা হইলো চাচা, ভাবতাছি আপনারে সামনের মাসেই একলগে দুই মাসের ভাড়া দিমু। আর আমি তো জানি, এসব ভাড়া নিয়ে আপনার কোনো টেনশনই না

19-5-2015 Daily kalerkantho- Gorar Dim-a

ভূমিকম্প থেকে বাঁচতে
সোহানুর রহমান অনন্ত

বেলুনে ভেসে থাকুন : যেহেতু ভেসে থাকলে আপনাকে আর ভূমিকম্পের কবলে পড়তে হবে না। তাই বেলুন দিয়ে ভেসে থাকুন। এবার যত মাত্রার ভূমিকম্প হোক না কেন, আপনি থাকবেন নিরাপদ। তবে সমস্যা হলো, বেলুনে ভেসে ভেসে আবার ভূমিকম্পের দেশ জাপানে চলে যাইয়েন না। তাহলে চব্বিশ ঘণ্টাই কাঁপুনির ওপর থাকতে হবে।



মুখের ওপর বালিশ দিয়ে ঘুমান : যেহেতু রাতে ভূমিকম্প হলে আপনার টের পেতে অনেক সময় লেগে যাবে। তাই মাথার নিচে নয়, মুখের ওপর বালিশ দিয়ে ঘুমাতে পারেন। দরকার হলে একটার জায়গায় দুইটা বালিশ দিতে পারেন। এতে মুখের ওপর দেয়াল ধসে পড়লেও ক্ষতি হবার চান্স থাকবে না। দরকার হলে হেলমেট পরেও ঘুমাতে পারেন।



ড্যান্স শিখুন : ভাবছেন, এর সঙ্গে আবার ড্যান্স শেখার কী সম্পর্ক। কোনো না কোনো সম্পর্ক তো আছেই। ভূমিকম্প হলেই আমাদের মাথা ঘুরানি মারে। তাই ভূমিকম্প হতে দেখলেই ড্যান্স শুরু করে দেবেন। ব্যস, কোন দিক দিয়ে ভূমিকম্প হলো নিজেই টের পাবেন না।



বড় সিন্দুক বানান : মজবুত দেখে বড় মাপের একটা সিন্দুক বানান, যার মধ্যে আপনি অনায়াশে ঢুকে থাকতে পারবেন। ব্যস, ভূমিকম্প শুরু হলেই সিন্দুকের মধ্যে ঢুকে পড়ুন। আগে থেকেই সেখানে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা রাখুন। এবার আর কোনো চিন্তা নেই।



পায়ে স্প্রিং লাগান : এ পদ্ধতিতে ভূমিকম্প শুরু হলেই বাড়ির ছাদে উঠে পড়ুন। অবস্থা খারাপ দেখলে হয়তো আপনাকে ছাদ থেকে লাফ দিতে হতে পারে। আর সাধারণভাবে লাফ দিলে মরার চান্স শতভাগ। সুতরাং পায়ে যদি স্প্রিং লাগানো থাকে তাহলে আর কোনো ভয় নেই। যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে লাফিয়ে পড়ুন।

18-05-2015 daily prothom alo rosh alo