আজ ০৮-২-২০১৫ দৈনিক নয়াদিগন্তের অবকাশে জীবনের বাঁকে বাঁকেতে আমার লেখা> যদিও অনাকাঙ্খিতভাবে লেখকের নামটা ভুল দিয়ে ফেলেছে।
জীবনের বাঁকে বাঁকে
রিক্ত জীবন
এসএসসির আগের কথা। আমরা তখন জাকির স্যারের কাছে কোচিং করতাম। আমাদের একই ব্যাচে ছিল মোনালিসা। মোনালিসা এত বেশি সেজে আসত যে আমরা ওকে মেকাপ সুন্দরী বলতাম। মাঝে মাঝে খুব রেগে যেত, যদিও রাগটা বেশিক্ষণের নয়। বারটা ঠিক মনে নেই, একদিন বৃষ্টিমুখর দিনে নোমানের সাইকেলের পেছনে বসে কোচিংয়ে যাচ্ছিলাম। আমার হাতে ছাতা, নোমান চালাচ্ছিল। হঠাৎ দেখলাম মোনালিসা একা একা ভিজে কোচিংয়ে যাচ্ছে। আমি নোমানকে সাইকেল থামাতে বললাম। নোমান সাইকেল থামাতেই আমি ছাতা নিয়ে মোনালিসার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমাকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠল মোনালিসা। আমি নীরব কণ্ঠে বললাম, তুই এমন করে বৃষ্টিতে ভিজলে ঠাণ্ডা লাগবে তো। মোনালিসা আমার দিকে তাকিয়ে এক টুকরো হাসি দিলো। বৃষ্টির জলে কাজল ধুয়ে গেছে, সাদামাটা চোখ দু’টি আমার দিকে তাকিয়ে। দু’জন পাশাপাশি হাঁটছি, সামনে একটি কসমেটিকের দোকানে কিছুক্ষণের জন্য দাঁড়ালাম। বৃষ্টি আরো বেড়ে গেছে। মোনালিসা কিছু চুড়ি নেড়ে চেড়ে দেখছিল।
আমার দিকে তাকিয়ে বলল, তোর কাছে বিশ টাকা হবে?। হবে, কেন? চুড়ি কিনব। আমি পছন্দ করে দিই?। হেসে বলল দে। সেই দিনটার কথা আমি কখনোই ভুলতে পারব না। এর পর থেকে মোনালিসা কেমন যেন হয়ে গেল। আগের মতো সেজে কোচিংয়ে আসে না। আড়চোখে দেখি ও আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। চোখে চোখ পড়লে মিটি মিটি হাসে। কোচিংয়ের শেষ দিন আমাকে বলল, তোকে কিছু কথার বলার ছিল। কিন্তু আমি ব্যস্ততা দেখিয়ে আর শুনিনি। পরীক্ষা শেষ হলো, আবার একদিন দেখা হলো মোনালিসার সাথে। আমার দিকে তাকিয়ে বলল, আমরা এই এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছি। কেন? বাবার ট্রান্সফার হয়েছে। তোকে একটা কথা বলার ছিল। কেন যেন সেদিনও শুনতে পারিনি ওর কথাটা। তারপর আর ওর সাথে দেখা হয়নি। একদিন বিকেলে মোনালিসার বান্ধবী মৌ এসে একটা খাম দিয়ে যায় আমায়। মোনালিসা দিয়েছে। খুলে দেখি বিশ টাকার একটা নোট, তার মধ্যে লেখা, ‘এই লেখাটা যখন তুমি পড়বে, তখন তোমার থেকে আমি অনেক দূরে। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসতাম, বাসি, এবং বেসে যাবো।
তুমি সবই বুঝতে কেবল আমার মনের ভাষাটুকু বুঝলে না। ভালো থেকো, তোমার ভালো থাকাটা অনেক জরুরি’, ইতি মোনালিসা। এরপর আর কখনো মোনালিসার সাথে আমার দেখা হয়নি। তবে সেই বিশ টাকার নোটের চিঠিটা আজো রয়ে গেছে স্মৃতি হয়ে। রয়ে গেছে অবেলার রিক্ত অনুভূতিটা। মাঝে মাঝে নিজেকেই প্রশ্ন করি, কেন মোনালিসার কথাগুলো বুঝতে পারলাম না। উত্তর মেলে না, জানি এর উত্তর কোনো দিনও মিলবে না। া
জীবনের বাঁকে বাঁকে
রিক্ত জীবন
এসএসসির আগের কথা। আমরা তখন জাকির স্যারের কাছে কোচিং করতাম। আমাদের একই ব্যাচে ছিল মোনালিসা। মোনালিসা এত বেশি সেজে আসত যে আমরা ওকে মেকাপ সুন্দরী বলতাম। মাঝে মাঝে খুব রেগে যেত, যদিও রাগটা বেশিক্ষণের নয়। বারটা ঠিক মনে নেই, একদিন বৃষ্টিমুখর দিনে নোমানের সাইকেলের পেছনে বসে কোচিংয়ে যাচ্ছিলাম। আমার হাতে ছাতা, নোমান চালাচ্ছিল। হঠাৎ দেখলাম মোনালিসা একা একা ভিজে কোচিংয়ে যাচ্ছে। আমি নোমানকে সাইকেল থামাতে বললাম। নোমান সাইকেল থামাতেই আমি ছাতা নিয়ে মোনালিসার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমাকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠল মোনালিসা। আমি নীরব কণ্ঠে বললাম, তুই এমন করে বৃষ্টিতে ভিজলে ঠাণ্ডা লাগবে তো। মোনালিসা আমার দিকে তাকিয়ে এক টুকরো হাসি দিলো। বৃষ্টির জলে কাজল ধুয়ে গেছে, সাদামাটা চোখ দু’টি আমার দিকে তাকিয়ে। দু’জন পাশাপাশি হাঁটছি, সামনে একটি কসমেটিকের দোকানে কিছুক্ষণের জন্য দাঁড়ালাম। বৃষ্টি আরো বেড়ে গেছে। মোনালিসা কিছু চুড়ি নেড়ে চেড়ে দেখছিল।
আমার দিকে তাকিয়ে বলল, তোর কাছে বিশ টাকা হবে?। হবে, কেন? চুড়ি কিনব। আমি পছন্দ করে দিই?। হেসে বলল দে। সেই দিনটার কথা আমি কখনোই ভুলতে পারব না। এর পর থেকে মোনালিসা কেমন যেন হয়ে গেল। আগের মতো সেজে কোচিংয়ে আসে না। আড়চোখে দেখি ও আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। চোখে চোখ পড়লে মিটি মিটি হাসে। কোচিংয়ের শেষ দিন আমাকে বলল, তোকে কিছু কথার বলার ছিল। কিন্তু আমি ব্যস্ততা দেখিয়ে আর শুনিনি। পরীক্ষা শেষ হলো, আবার একদিন দেখা হলো মোনালিসার সাথে। আমার দিকে তাকিয়ে বলল, আমরা এই এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছি। কেন? বাবার ট্রান্সফার হয়েছে। তোকে একটা কথা বলার ছিল। কেন যেন সেদিনও শুনতে পারিনি ওর কথাটা। তারপর আর ওর সাথে দেখা হয়নি। একদিন বিকেলে মোনালিসার বান্ধবী মৌ এসে একটা খাম দিয়ে যায় আমায়। মোনালিসা দিয়েছে। খুলে দেখি বিশ টাকার একটা নোট, তার মধ্যে লেখা, ‘এই লেখাটা যখন তুমি পড়বে, তখন তোমার থেকে আমি অনেক দূরে। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসতাম, বাসি, এবং বেসে যাবো।
তুমি সবই বুঝতে কেবল আমার মনের ভাষাটুকু বুঝলে না। ভালো থেকো, তোমার ভালো থাকাটা অনেক জরুরি’, ইতি মোনালিসা। এরপর আর কখনো মোনালিসার সাথে আমার দেখা হয়নি। তবে সেই বিশ টাকার নোটের চিঠিটা আজো রয়ে গেছে স্মৃতি হয়ে। রয়ে গেছে অবেলার রিক্ত অনুভূতিটা। মাঝে মাঝে নিজেকেই প্রশ্ন করি, কেন মোনালিসার কথাগুলো বুঝতে পারলাম না। উত্তর মেলে না, জানি এর উত্তর কোনো দিনও মিলবে না। া
No comments:
Post a Comment