আজ ০৮-২-২০১৫ দৈনিক নয়াদিগন্তের অবকাশে আমার লেখা
ঘুরে আসুন কুয়াকাটা
সোহানুর রহমান অনন্ত
ঘুরে বেড়ানো পছন্দ করে না, এমন মানুষ পাওয়া যাবে না একটিও। সবাই কম-বেশি ঘুরতে পছন্দ করে। বিভিন্ন জায়গায়, কাছে কিংবা দূরে, মানুষ হারিয়ে যেতে চায় অজানার মাঝে। শীত এমনই একটি ঋতু, যে ঋতুতে ঘুরেফিরে মানুষ বেশ স্বাছন্দ্য বোধ করে। আর তাই আপনি চাইলে চলে যেতে পারেন বাংলাদেশের দণি প্রান্তে সাগরকন্যা খ্যাত অপরূপ এক জায়গা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে। সুন্দর পরিবেশ এবং সমুদ্রের অপরূপ দৃশ্য দেখে মনটাকেও চাঙ্গা করতে পারেন প্রতি মুহূর্তে। শীতে আপনার প্রতিটি সময়ই কাটবে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশের মাঝে। জীবনের ব্যস্ততা ছেড়ে কিছুণের জন্য হলেও প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে পারবেন। একই সৈকত থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখার মতো জায়গা দ্বিতীয়টি আর নেই। সৈকতের পূর্ব প্রান্তে গঙ্গামতির বাঁক থেকে সূর্যোদয় সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা যায়। শীতে তাই পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে কুয়াকাটাতে।
১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমুদ্র সৈকতে বেশির ভাগ জায়গায় নারকেলগাছের সারি, যার অপরূপ দৃশ্য আপনার দৃষ্টি কারবে সহজে। শীতল বাতাস, আর জলের কলতান আপনার মনোজগতে ভিন্ন অনুভূতি সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য ভিন্নমাত্রা তৈরি করে। এ ছাড়া সমুদ্র সৈকতের পশ্চিম দিকে আছে জেলেপল্লী। সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা বসবাস করে এই পল্লী। তাদের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম এই মাছ ধরা। শুঁটকি পল্লী নামেও জায়গাটি বেশ খ্যাত। বিভিন্ন সময় ধরে সাগর থেকে ধরে আনা মাছ দিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়। তারপর সেগুলো বিক্রি করা হয় খদ্দেরের কাছে। শুঁটকিপল্লীর কাছাকাছি গেলেই বাতাসে ভেসে আসা শুঁটকির গন্ধই জায়গাটির পরিচয় করিয়ে দেয়। ভালো মানের শুঁটকি তাই সব সময় কিনতে পাওয়া যায় এখানে। এ ছাড়া গঙ্গামতির জঙ্গল
পূর্ব দিকে গেলেই চোখে পড়ে। দূর থেকেই চোখে পড়ে নানা রকম গাছে ভরা জঙ্গল। এই জঙ্গলেই পাখি, বানরসহ বিভিন্ন প্রাণী বসবাস করে। প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য আর পাখির কলতান আপনাকে মুগ্ধ করবে। স্থানীয় লোকজন গজমতির জঙ্গল বলেও এই বনকে ডেকে থাকে। আরো আছে ফাতরার বন, পশ্চিম পাশের নদীর পার হলেই ফাতরার বন শুরু, তেমন কোনো হিংস্র প্রাণীর বসবাস নেই, চাইলেই আপনি তাই যেতে পারেন সেখানে ইঞ্জিনচালিত নৌকার মাধ্যমে। এ ছাড়া কাঁকড়ার দ্বীপ, ক্রাব আইল্যান্ডে স্পিডবোটে করে যেতে পারেন। আরো আছে কেরানিপাড়া, যেখানে গেলে আপনি রাখাইন নারীদের প্রধান কাজ কাপড় বুনন দেখতে পারবেন। মনোরম ও সুন্দর কারুকার্যের কাপড় আপনার দৃষ্টি কারতে সম। তাদের বানানো চাদরও অনেক বিখ্যাত। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো কুয়াকাটার কুয়া। কথিত আছে, এই কুয়ার নাম অনুসারেই এই জায়গার নাম রাখা হয় কুয়াকাটা। ১৯৭৮ সালে বর্মি রাজা রাখাইনদের মাতৃভূমি আরাকান দখল করেন।
কোনো পথ না পেয়ে রাখাইনরা নতুন জায়গার সন্ধান করতে থাকে এবং চলার পথে এ জায়গাটির খোঁজ পায় এবং এখানে বসতি শুরু করে। আস্তে আস্তে তারা জায়গাটি বাসযোগ্য
করে গড়ে তোলে। মিষ্টিপানির প্রয়োজনে একটি কুয়া খনন করেন এবং এরপর থেকেই আস্তে আস্তে জায়গাটির নাম কুয়াকাটা হয়ে যায়। প্রাচীন এই কুয়াটি
রাখাইনদের বাসস্থল কেরানিপাড়ার শুরুতেই অবস্থিত। অনেকেই সেখানে ভিড় করেন কুয়াটিকে এক নজর দেখার জন্য।
অপরূপ সুন্দরের লীলাভূমি এই সাগরকন্যা কুয়াকাটা, যার সৌন্দর্য শুধু দেশের মানুষই না, বিদেশীদেরও মুগ্ধ করে। বিভিন্নভাবে নদীপথ কিংবা
সড়কপথ হয়ে আপনি কুয়াকাটায় যেতে পারবেন। সেখানে থাকা-খাওয়ার মনোরম পরিবেশের হোটেলও রয়েছে। তাই হাতে কিছু সময় নিয়ে
রিয়ে যেতে পারেন সৌন্দর্যের মাঝে।
বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারেন সব ব্যস্ততাকে ঝেড়ে ফেলে। সাগরকন্যার প্রকৃতির মাঝে
আপনার প্রতিটি মূহূর্তই কাটবে আনন্দের মাঝে
ঘুরে আসুন কুয়াকাটা
সোহানুর রহমান অনন্ত
ঘুরে বেড়ানো পছন্দ করে না, এমন মানুষ পাওয়া যাবে না একটিও। সবাই কম-বেশি ঘুরতে পছন্দ করে। বিভিন্ন জায়গায়, কাছে কিংবা দূরে, মানুষ হারিয়ে যেতে চায় অজানার মাঝে। শীত এমনই একটি ঋতু, যে ঋতুতে ঘুরেফিরে মানুষ বেশ স্বাছন্দ্য বোধ করে। আর তাই আপনি চাইলে চলে যেতে পারেন বাংলাদেশের দণি প্রান্তে সাগরকন্যা খ্যাত অপরূপ এক জায়গা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে। সুন্দর পরিবেশ এবং সমুদ্রের অপরূপ দৃশ্য দেখে মনটাকেও চাঙ্গা করতে পারেন প্রতি মুহূর্তে। শীতে আপনার প্রতিটি সময়ই কাটবে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশের মাঝে। জীবনের ব্যস্ততা ছেড়ে কিছুণের জন্য হলেও প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে পারবেন। একই সৈকত থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখার মতো জায়গা দ্বিতীয়টি আর নেই। সৈকতের পূর্ব প্রান্তে গঙ্গামতির বাঁক থেকে সূর্যোদয় সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা যায়। শীতে তাই পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে কুয়াকাটাতে।
১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমুদ্র সৈকতে বেশির ভাগ জায়গায় নারকেলগাছের সারি, যার অপরূপ দৃশ্য আপনার দৃষ্টি কারবে সহজে। শীতল বাতাস, আর জলের কলতান আপনার মনোজগতে ভিন্ন অনুভূতি সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য ভিন্নমাত্রা তৈরি করে। এ ছাড়া সমুদ্র সৈকতের পশ্চিম দিকে আছে জেলেপল্লী। সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা বসবাস করে এই পল্লী। তাদের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম এই মাছ ধরা। শুঁটকি পল্লী নামেও জায়গাটি বেশ খ্যাত। বিভিন্ন সময় ধরে সাগর থেকে ধরে আনা মাছ দিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়। তারপর সেগুলো বিক্রি করা হয় খদ্দেরের কাছে। শুঁটকিপল্লীর কাছাকাছি গেলেই বাতাসে ভেসে আসা শুঁটকির গন্ধই জায়গাটির পরিচয় করিয়ে দেয়। ভালো মানের শুঁটকি তাই সব সময় কিনতে পাওয়া যায় এখানে। এ ছাড়া গঙ্গামতির জঙ্গল
পূর্ব দিকে গেলেই চোখে পড়ে। দূর থেকেই চোখে পড়ে নানা রকম গাছে ভরা জঙ্গল। এই জঙ্গলেই পাখি, বানরসহ বিভিন্ন প্রাণী বসবাস করে। প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য আর পাখির কলতান আপনাকে মুগ্ধ করবে। স্থানীয় লোকজন গজমতির জঙ্গল বলেও এই বনকে ডেকে থাকে। আরো আছে ফাতরার বন, পশ্চিম পাশের নদীর পার হলেই ফাতরার বন শুরু, তেমন কোনো হিংস্র প্রাণীর বসবাস নেই, চাইলেই আপনি তাই যেতে পারেন সেখানে ইঞ্জিনচালিত নৌকার মাধ্যমে। এ ছাড়া কাঁকড়ার দ্বীপ, ক্রাব আইল্যান্ডে স্পিডবোটে করে যেতে পারেন। আরো আছে কেরানিপাড়া, যেখানে গেলে আপনি রাখাইন নারীদের প্রধান কাজ কাপড় বুনন দেখতে পারবেন। মনোরম ও সুন্দর কারুকার্যের কাপড় আপনার দৃষ্টি কারতে সম। তাদের বানানো চাদরও অনেক বিখ্যাত। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো কুয়াকাটার কুয়া। কথিত আছে, এই কুয়ার নাম অনুসারেই এই জায়গার নাম রাখা হয় কুয়াকাটা। ১৯৭৮ সালে বর্মি রাজা রাখাইনদের মাতৃভূমি আরাকান দখল করেন।
কোনো পথ না পেয়ে রাখাইনরা নতুন জায়গার সন্ধান করতে থাকে এবং চলার পথে এ জায়গাটির খোঁজ পায় এবং এখানে বসতি শুরু করে। আস্তে আস্তে তারা জায়গাটি বাসযোগ্য
করে গড়ে তোলে। মিষ্টিপানির প্রয়োজনে একটি কুয়া খনন করেন এবং এরপর থেকেই আস্তে আস্তে জায়গাটির নাম কুয়াকাটা হয়ে যায়। প্রাচীন এই কুয়াটি
রাখাইনদের বাসস্থল কেরানিপাড়ার শুরুতেই অবস্থিত। অনেকেই সেখানে ভিড় করেন কুয়াটিকে এক নজর দেখার জন্য।
অপরূপ সুন্দরের লীলাভূমি এই সাগরকন্যা কুয়াকাটা, যার সৌন্দর্য শুধু দেশের মানুষই না, বিদেশীদেরও মুগ্ধ করে। বিভিন্নভাবে নদীপথ কিংবা
সড়কপথ হয়ে আপনি কুয়াকাটায় যেতে পারবেন। সেখানে থাকা-খাওয়ার মনোরম পরিবেশের হোটেলও রয়েছে। তাই হাতে কিছু সময় নিয়ে
রিয়ে যেতে পারেন সৌন্দর্যের মাঝে।
বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারেন সব ব্যস্ততাকে ঝেড়ে ফেলে। সাগরকন্যার প্রকৃতির মাঝে
আপনার প্রতিটি মূহূর্তই কাটবে আনন্দের মাঝে
No comments:
Post a Comment