join facebook page

Tuesday, 11 August 2015

01-08-2015 Daily Prothom Alo Chutirdin_ amar lekha

অভিমানী
সোহানুর রহমান

তুই কি এখন ছাদে উঠতে পারবি? ফিসফিস করে বলল রূপা। কেন? বৃষ্টি হচ্ছে। দেখছি জানালা দিয়ে। দেখা আর ছুঁয়ে দেখা এক কথা নয়, রূপা আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করে। যদি অসুস্থ হয়ে পড়ি। রূপা হাসল, তারপর বলল, বোকা ছেলে, বৃষ্টি ছুঁয়ে দেখলে কেউ অসুস্থ হয়! আমি তো বৃষ্টি হলেই হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দেখি। আমি যুক্তি না খুঁজে ছাদে উঠে পড়লাম। ইলশেগুঁড়ি হচ্ছে, রূপার মতো আমি অত রোমান্টিক না, তাই বিরক্তি লাগছিল। ধমকের স্বরে বললাম, তোর মাথায় কি মাঝরাতে ভূত চেপেছে? আমার ঘুম নষ্ট করে ফাজলামো করছিস, তাই না। আচ্ছা বল তো প্রতিদিন রাতে আমার এভাবে ঘুম কেন নষ্ট করিস? তোর ঘুম আসে না বলে জগতের আর কেউ কি ঘুমাতে পারবে না? বোধ করি আমার কঠোর গলা শুনে রূপা স্থির হয়ে গেল। কেবল কানে আসছিল বড় বড় নিশ্বাস ফেলার শব্দ। তারপর ওপাশ থেকে টুট করে লাইনটা কেটে দিল।
এরপর অনেক বৃষ্টিবেলা কাটিয়েছি, রূপা আর ফোন করেনি। বিরক্ত করেনি কারণে অকারণে। কদম ফুল হাতে দাঁড়াতে বলেনি স্টেশন রোডের বকুলগাছটার নিচে। রূপার অভিমান আর আমার কঠোরতা দুজনকেই দুই প্রান্তে নিয়ে গেল। এখনো মাঝে মাঝে রূপাকে দেখি, রিকশায় খোলা চুল বাতাসে ভাসিয়ে ভার্সিটিতে যায়। আর আমি টং দোকানের চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে, তাকিয়ে থাকি। চোখে চোখ পড়ে, তারপর না দেখার ভান করে দুজনই অন্যদিকে তাকিয়ে ফেলি। দুজনের দূরত্ব বেশি নয়, কিন্তু অভিমানের গভীরতা অনেক বেশি। খুব বেশি।
ঢাকা।

No comments:

Post a Comment