join facebook page

Sunday, 26 July 2015

Aj 26-07-2015 Daily Prothom Alo Bhundhu Shovay Amar Golpo

নীল ক্যাফের ভালোবাসা
সোহানুর রহমান

আরিস সবে কফির কাপের চুমুক দিয়েছে। ঠিক এমন সময় নাবিলার মেসেজ এল।
—তোর কি আমার স্ট্যাটাস চুরি করা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই?
—আছে তো।
—আছে মানে?
—হ্যাঁ, তোর স্ট্যাটাসে লাইক দেওয়া। এটাও তো একটা কাজ, কী বলিস? উত্তর দিয়ে আরিস মিটিমিটি হাসে।
—বুঝেছি, তুই কথা প্যাঁচাবি। বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখ, আকাশে কী সুন্দর একটা চাঁদ!
—তুই তো কেবল চাঁদটাই দেখলি, চাঁদের মধ্যে কালো বর্ণে কী লেখা, সেটা দেখলি না।
—কী লেখা?
—সেখানে লেখা নাবিলার নাকটা এভারেস্টের চেয়ে কম নয়। হা হা হা ।
—ইউ, তুই আমাকে পচালি, আমার নাক এভারেস্টের মতো? আমাকে যদি দেখতি তাহলে বুঝতি আমার নাক কত কিউট।
—একটা সেলফি তুলে পাঠিয়ে দে, দরকার হলে ফেসবুকে আপ করে পুরো দেশকে দেখাব।
—হয়েছে, পাম মারিস না। আমি গেলাম।
—দোস্ত, একটা পিক দে না, কতকাল আর এমন পিকচারবিহীন থাকবি।
—যতকাল পিকচার না দিচ্ছি, ততকাল। নাবিলা ফেসবুক থেকে চলে যেতেই আরিস নাবিলার টাইমলাইনে ঢোকে। ফেসবুকে নাবিলার সঙ্গে পরিচয়। একসময় ভালো বন্ধুত্ব। আরিস মনে মনে ভাবল, আজব মেয়ে, কোনো ছবিই দেয়নি। তা ছাড়া সব ইনফরমেশনই অনলি মি করা। কেবল ডলের ছবি দেওয়া কতগুলো। বড় ডল, ছোট ডল, অদ্ভুত। ইদানীং নাবিলাকে খুব ভাবছে আরিস। ফেসবুকে তো আরও অনেক বন্ধু আছে কিন্তু নাবিলা কেন? অচেনা একটা মেয়ে, যাকে কোনো দিন দেখেনি। এমনও তো হতে পারে আইডিটা ফেইক। নাহ্, ফেইক হতে পারে না, আরিস নিজেকে ধমক দেয়। আরিস দুষ্টুমি করেই নাবিলার ইনবক্সে টেক্সট করে।È‘নাবিলা, আমি বোধ হয় তোর প্রেমে পড়ে গেছি। সারাক্ষণ কেবল তোকেই ভাবি, স্যরি তোমাকেই ভাবি। উত্তরের আশা করে লাভ নেই। আমি জানি, তুমিও আমায় ভালোবাসো।’ দুষ্টুমি করে দিলেও কেমন যেন ভয় লাগছে। সারা রাত আর ফেসবুকে ঢোকেনি, তার পরদিনও না। তিন দিন পর ফেসবুকে ঢুকে শক্ট হলো আরিস। কোনো উত্তর দেয়নি নাবিলা, আরও অদ্ভুত ব্যাপার এই তিন দিন ফেসবুকে আর কোনো স্ট্যাটাস দেয়নি ও। এমন তো কখনো হয় না। এরপর আরও অনেক দিন কেটে গেল। নাবিলা ফেসবুকে নেই, অকারণেই ওর টাইমলাইন ঘাঁটাঘাঁটি করে আরিস। অদেখা মেয়েটির জন্য এমন লাগছে কেন? তাহলে কি সত্যি ভালোবেসে ফেলেছে নাবিলাকে? হয়তো-বা...। আরিস অনেক ভেবে একটা টেক্সট করে নাবিলাকে। ‘প্রথমটা দুষ্টুমি হলেও এখন সিরিয়াস বলছি, আমি তোমাকে সত্যি ভালোবাসি। তোমার শূন্যতা আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। যে ফেসবুকে তুমি নেই, সেখানে আমার থাকাটাও বেমানান।
আমি তোমার জন্য নীল ক্যাফেতে অপেক্ষা করব। আসবে কি না পুরোটাই তোমার ইচ্ছে...।’
এরপর প্রতিটি বিকেল যেন নীল ক্যাফের কাচের জানালাগুলোতে ভালোবাসার আলপনা আঁকত। আরও পনেরো দিন কেটে গেল কিন্তু নাবিলা আসেনি। এক বৃষ্টিভেজা বিকেলে আরিস ক্যাফেতে বসে আছে। ঝিরঝির বৃষ্টি তখনো পড়ছিল। ঠিক বৃষ্টি মাথায় নিয়ে একটি মেয়ে প্রবেশ করল ক্যাফেতে। সোজা এসে বসল আরিসের সামনের চেয়ারটাতে। আরিস কিছু বলার আগেই বলল, ‘নাবিলা, তোমার চুরি করা স্ট্যাটাসের একমাত্র মালিক।’ মুহূর্তেই আরিস যেন নিজেকে ফিরে পেল।
—নাবিলা...।
—ইয়েস, কোনো সন্দেহ?
—ফেসবুকে ছিলে না কেন?
—তোমাকে বাজিয়ে দেখলাম, সত্যি ভালোবাসো কি না।
—কী বুঝলে? বুঝলাম, এখানে অন্তত চুরিটা নেই।
এই বলে নাবিলা হেসে উঠল। আরিস তাকিয়ে রইল ওর মুগ্ধ করা মুখটির দিকে। বাইরে তখন বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে।



Rohosho Potrika july issue 2015

Monojogot July Issue Moner janalay amar lekha

Aj 29-06-2015 Daily bangladesh protidine-ar Rokomari rommo te 2ta
Aj 28-06-2015 Daily ittafaq-ar fun magazine Thattay
Aj 28-06-2015 Daily ittafaq-ar fun magazine Thattay
Aj 28-06-2015 Abokah-a

নয়নাভিরাম নিঝুমদ্বীপ

সোহানুর রহমান অনন্ত

সুন্দরের এক অপূর্ব লীলাভূমির নাম নিঝুমদ্বীপ। নয়নাভিরাম সৌন্দর্য, প্রাকৃতিক সম্পদ আর অপার সম্ভাবনায় সমৃদ্ধ বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে জেগে ওঠা দ্বীপ নিঝুমদ্বীপ। আয়তনে খুব বড় না হলেও প্রকৃতি তার নিজ হাতে অপরূপ সাজে সাজিয়েছে দ্বীপটিকে। জোয়ার-ভাটার এই দ্বীপের এক পাশ ঢেকে আছে সাদা বালুতে, অন্য পাশে সৈকত। খোলা মাঠ, বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ যেন দিগন্তে গিয়ে মিশে গেছে। চোখ জুড়ানো নকশিকাঁথার মতো বিছিয়ে থাকা সবুজ ঘাসের ওপর হরিণের ছোটাছুটি দৃষ্টি কেড়ে নেয়। এই বনে সরকারি হিসাবে প্রায় ৪০ হাজারের মতো হরিণ আছে। জানা যায়, ১৯৭৮ সালে এ দ্বীপের কেওড়া বনে ছেড়ে দেয়া হয় চার জোড়া চিত্রা হরিণ। তার থেকেই সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে হরিণের সংখ্যা। মায়াবী হরিণের পাল যে রঙ-তুলিতে আঁকা শিল্পীর হাতের ছবি। দ্বীপের বন ও ফসলের মাঠে ঘুরে বেড়ায় হরিণের দল। শীতকালে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আগত হাজার হাজার পাখির কারণে এখানে রীতিমতো পাখির মেলা বসে যায়, পুরো দ্বীপ তখন পাখির রাজ্যে পরিণত হয়। অন্যান্য সময় বনের কিচিরমিচির পাখির শব্দ, আর ভেসে আসা বাতাসে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চাইবেন প্রকৃতির মাঝে। সাদা বালুতে ঝাঁকে ঝাঁকে লাল কাঁকড়ার বিচরণ। যে সাদা ক্যানভাসে আঁকা প্রকৃতির অপূর্ব এক ছবি। নিঝুমদ্বীপ একটি ছোট্ট দ্বীপ। নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত নিঝুমদ্বীপ। এক দিকে মেঘনা নদী আর তিন দিকে বঙ্গোপসাগর ঘিরে রেখেছে। নিঝুমদ্বীপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো মাইলের পর মাইল জুড়ে কেওড়া বন আর সেই বনের পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা চিত্রা হরিণ। জানা যায়, ১৯৪০-এর দশকে এই দ্বীপটি আস্তে আস্তে জেগে ওঠে। কেওড়া-গেওয়া বনে সমৃদ্ধ সুন্দর একটি দ্বীপ। ১৯৭০ সালে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পর দুর্যোগকবলিত এক জাহাজ থেকে ভেসে আসে দ্বীপে কয়েক বাক্স কমলা। চরে কমলা পড়ে থাকতে দেখে জেলে ও রাখালেরা এ দ্বীপের নাম রাখে কমলার চর। তবে নিঝুমদ্বীপের পূর্ব নাম ছিল চর-ওসমান। জানা যায় ওসমান নামের একজন বাথানিয়া তার মহিষের বাথান নিয়ে প্রথম নিঝুম দ্বীপে বসত গড়েন। তখন এই নামেই এর নামকরণ হয়েছিল। পরে হাতিয়ার সংসদ সদস্য আমিরুল ইসলাম কালাম এই নাম বদলে নিঝুমদ্বীপ নামকরণ করেন। সেই থেকে নিঝুমদ্বীপ হিসেবেই এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের আগ পর্যন্ত কোনো লোকবসতি ছিল না, তাই দ্বীপটি নিঝুমই ছিল। পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি নিঝুমদ্বীপে জনবসতি শুরু হয়। মূলত হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়ন হতে কিছু জেলে পরিবার প্রথম নিঝুমদ্বীপে আসে। অস্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এ দ্বীপের মাটি চিকচিকে বালুকাময়, তাই জেলেরা নিজ থেকে নামকরণ করে বালুর চর। এই দ্বীপটিতে মাঝে মাঝে বালুর ঢিবি বা টিলার মতো ছিল বিধায় স্থানীয় লোকজন এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বলেও ডাকত। বর্তমানে নিঝুমদ্বীপ নাম হলেও স্থানীয় লোকেরা এখনো এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বলেই সম্বোধন করে। নিঝুমদ্বীপের বর্তমান আয়তন প্রায় ৯২ বর্গকিলোমিটার। এর উত্তর অংশে রয়েছে বন্দরটিলা। দ্বীপের ৭০ ভাগ মানুষ মৎস্যজীবী ও ৩০ ভাগ কৃষিজীবী। গভীর সমুদ্র ও নদীতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছধরে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বসবাসকারীরা থাকে আতঙ্কিত। তবুও জীবিকার টানে তাদের গভীর সমুদ্রে পারি জমাতে হয়। দ্বীপের চতুর্দিকে বিশাল মৎস্যভাণ্ডার। নানা রকম মাছ ধরা পড়ে জেলেদের জালে। তবে বর্ষার সময় সবচেয়ে বেশি মাছ ধরা পড়ে। বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রলারে করে এসে জেলেরা এই দ্বীপের চার পাশ ঘিরে মাঝ ধরার উৎসবে মেতে ওঠে। নিঝুমদ্বীপ দিনের আলোয় যতটা সুন্দর রাতের নিস্তব্ধতায় ততটাই আকর্ষণীয়। চন্দ্রালোকে জোয়ার-ভাটায় এর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য এক স্বর্গীয় অনুভূতি সৃষ্টি করে। জ্যোৎস্নার আলোয় বেলাভূমিতে সাগরের ফেনীল ঊর্মীমালা আছড়ে পড়ার অপূর্ব দৃশ্য কাউকে আলোড়িত না করে পারে না। সাদাটে রুপালি অর্ধেক চাঁদের আলো যে এতটা সুন্দর হতে পারে, তা হয়তো নিঝুমদ্বীপে না গেলে বুঝতেই পারবেন না। দ্বীপের দণিপ্রান্ত থেকে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত অবলোকন করা যায়। নিঝুমদ্বীপে খালগুলোর মধ্যে চৌধুরীর খাল, পটকাখালী খাল, সোয়ানখালী খাল, ডুবাই খাল, ধামসাখালী খাল, ভট্রোখালী খাল, কাউনিয়া খাল, লেংটা খাল। খালের জলে হরিণের পানি পানের দৃশ্য এবং পাখিদের স্নান করা ইত্যাদি পর্যটকদের রোমাঞ্চিত করবে। সে দৃশ্য স্বচে না দেখলে কল্পনা করাও অসম্ভব। সমুদ্র পাড়ে ১২ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত, সৈকতে এরা ভ্রমণবিলাসীদের মনে আনন্দ ছড়ায়। শীতের মওসুমই হচ্ছে নিঝুমদ্বীপ ভ্রমণের সবচেয়ে ভালো সময়। কেননা এ সময় সাগর শান্ত থাকে। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে নিঝুমদ্বীপের খ্যাতি দিনকে দিন বেড়েই চলছে। যাতায়াত ব্যবস্থাও এখন সহজ হয়ে যাওয়ায় নিঝুমদ্বীপ এখন পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকেই আপনি চাইলে নিঝুমদ্বীপে যেতে পারেন। আর উপভোগ করতে পারেন অপার সৌন্দর্যে ঘেরা নিঝুমদ্বীপকে

27-08-2015 Daily somokal-ar Shinibar-ar chiti-ta amar lekha special thanks- jobayer raju<<>>>>

মোনালিসার হাসি

-সোহানুর রহমান অনন্ত
ফার্মগেট থেকে মেয়েটি উঠল, চোখে কালো সানগ্গ্নাস। আমার পাশের সিটটা খালি দেখে বসে পড়ল। দামি একটা পারফিউমের ঘ্রাণ থেমে থেমে আমার নাকে আসছিল। সুন্দরী মেয়েদের পাশে বসে জার্নি করার অভ্যাস নেই তাই বেশ অস্বস্তি লাগছিল। কিছুদূর আসতেই মেয়েটি মিষ্টি রিনরিনে গলায় বলল, 'আমি কি জানালার পাশের সিটে বসতে পারি?'
সেকেন্ড কয়েক চিন্তা করলাম। কী চিন্তা করলাম নিজেও জানি না। উঠে সিটটা দিয়ে দিলাম। মেয়েটি ব্যাগ থেকে একটা বই বের করল। হুমায়ূন স্যারের বই, 'আজ হিমুর বিয়ে'। কয়েক পৃষ্ঠা নাড়াচাড়া করে বন্ধ করে দিল। সুন্দর মুখটিতে ক্লান্তির ছাপ। কথা বলার একটা ইচ্ছা আমার ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছে। সাহস করে বলেই ফেললাম, 'বইটা দেখতে পারি?' মেয়েটি পাল্টা প্রশ্ন না করে এগিয়ে দিল। পড়ার এক ফাঁকে লক্ষ্য করলাম, মেয়েটি সিটে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। চশমাটা চুলের রাজ্যে আটকা পড়ে আছে। বইটা পড়তে পড়তে কখন যে পল্টন চলে এলাম টের পাইনি। হেলপার পল্টন বলতেই লাফিয়ে বাস থেকে নেমে পড়লাম। কিছুদূর আসতেই মনে হলো, আরে বইটা তো আমার না! বাসটা তখন জিপিও সিগন্যালে আটকে ছিল। দৌড়ে গিয়ে দেখি মেয়েটি তখনও ঘুমাচ্ছে। জানালা দিয়ে আমি ডাক দিলাম, 'এই যে, শুনতে পাচ্ছেন, আপনার বইটা।' মেয়েটি চমকে উঠল। বইটা আমার হাত থেকে নিয়ে ব্যাগে রাখল। আমি সরি বলার আগেই মেয়েটি বলল, 'ধন্যবাদ।' আরও কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল। তখনই সিগন্যাল ছেড়ে দিল। মেয়েটি তাকিয়ে ছিল ...। অদ্ভুত সুন্দর একটা হাসি দেখছিলাম ওর ঠোঁটের কোণে। ঠিক যেন মোনালিসার হাসি

Aj 22-06-2015 Daily somokal-ar pachall-a
শনিবার, ২০ জুন ২০১৫

পড়ন্ত বিকেলের ভালোবাসা

সোহানুর রহমান অনন্ত

অল্প করে হলেও নায়লাকে আমার ভালোলাগে। রোজ বিকেলে স্টেশন রোডে ওর কারণেই বসে থাকি। এক নজর দেখব বলে, আজো বসে আছি। প্রাইভেট শেষ করে এই পথেই ফিরবে নায়লা। একা নয় সঙ্গে আর দুজন থাকবে, একটি ছেলে এবং আরেকজন মেয়ে। সঙ্গের মেয়েটি কথা বেশি বলে, হাঁটার গতির চেয়ে কথার কথা গতি বেশি।

মাঝখানে নায়লা চুপ করে শুনে যায়। কথার খই ফুটে না, কিন্তু ওর দিকে তাকালে আমার মনের ভেতর ভালোবাসার ফুল ফুটে অকারণে। দুপুর থেকেই মেঘলা আকাশ। বেশ রোমান্টিক একটা বিকেল বলতেই হবে। দূর থেকে নায়লাকে দেখে উঠে দাঁড়ালাম। প্রতিদিনই এভাবে দাঁড়িয়ে যাই। পেছনের পকেটে একটি ফুল, টকটকে লাল গোলাপ ফুল। নায়লা খুব কাছাকাছি চলে আসে এবং পাশ কাটিয়ে চলে যায়। ভুল করে একবার তাকায় আমার দিকে।

আমার চোখ তখন এক জোড়া পৃথিবীর মতো নায়লাকে নিয়ে হারিয়ে যেতে চায়। নায়লা চলে যায়, পেছনের পকেট থেকে গোলাপটা বের করে ওর উদ্দেশে রেখে দেই রেল লাইনের ওপর। খাণিক বাদেই ট্রেন এসে ক্ষতবিক্ষত করে দেয় গোলাপটাকে। আমি তাকিয়ে থাকি আর ভাবি, এই একটা জায়গা স্রষ্টা গভীর থেকে গভীরতম দুর্বলতা দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে আমায়। কেন যেন নায়লার চোখে চোখ রেখে ভালোবাসার কথাটা বলতে পারি না। আর পারি না বলেই বিন্দু থেকে সিন্দুতে পরিণত হচ্ছে সেই ভালোবাসাটুকু।

২.

অনেকটা বেলা করে ঘুম থেকে উঠলাম। মা কখন এক কাপ রেখে গেছে তা বলা মুশকিল। উঠে দেখি চায়ের কাপটা আস্ত বরফের টুকরের মতো ঠাণ্ডা হয়ে আছে। ফ্রেশ হয়ে বের হতে যাব এমন সময় মা বলল, সকালে বাবা এসেছিল। কেন এসেছিল জানতে চাইলে মা বলল, টাকা চাইতে। কিসের টাকা। মা ফুফিয়ে কেঁদে উঠে। তারপর শান্ত কণ্ঠে বলে, জানি না। আমার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে সম্পর্কে অবনতি ঘটে।

শুনেছি আজকাল পাকা জুয়াড়ি হয়ে উঠেছেন। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে পড়লাম। শিক্ষিত বেকারদের মানুষে তিন নম্বর চোখে দেখে। তিন নম্বর চোখ মানে মনের চোখ অর্থাৎ খারাপ-ভালোর মাঝামাঝি। চায়ের দোকানে বসলে অনেকের চায়ের অফার করে। কিন্তু টিউশনির সময় চলে যায় বলে আর আড্ডা দেয়া হয় না জমিয়ে। যে বাড়িতে আমি টিউশনি করি তার তিন বাড়ি পার হলেই নায়লাদের বাড়ি। মাঝে মাঝে পা টিপে যাওয়া হয়, ছাদের এক কোণে নায়লা দাঁড়িয়ে থাকে। মুখের ওপর পড়ন্ত রোদের আল্পনা, আমাকে শিহরিত করে। আর এগুতে পারি না, পা আটকে আসে। আজো আকাশ মেঘলা, তবে গতকালকের মতো নয়। একটু বেশি, বেশি মানে অনেক বেশি। বিকেলই রাজ্যের অন্ধকার নেমে এসেছে স্টেশনের আশপাশে। আমি বসে আছি, পেছনের পকেটে গোলাপ, টকটকে লাল গোলাপ।

৩.

অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও নায়লার মুখ দেখতে পেলাম না। অকারণে বৃষ্টির কবলে পড়লাম। বাইকটা স্টার্ট করতেই বৃষ্টির সঙ্গে আরেকটা শব্দ যোগ হলো। গটগটগট….গট। চৌরাস্তার দিকে ছুটলাম, মায়ের জন্য ওষুধ নিতে হবে। বৃষ্টিতে এসে আবার থেমে গেলো, টিএনটি স্কুলের সামনে বাবার সঙ্গে দেখা হয়ে গেলো। ল্যাম্পের আলোর নিচে বসে আছে। বাইকটা থামিয়ে বাবার সামনে গিয়ে বসলাম, আমাকে দেখে লজ্জিত কণ্ঠে বলল, তোর কাছে বিশটা টাকা হবে। কেন প্রশ্ন করার আগেই পকেট থেকে টাকাটা দিয়ে দিলাম। টাকাটা দিয়ে আমি জিজ্ঞেস করার আগেই বাবা বলল, আজ জুয়া খেলতে গিয়ে তোর মায়ের দেয়া আংটিটা হেরে গেছি। বাবার চোখের কোণে এক টুকরো বৃষ্টি দেখতে পেলাম।

আমার কাছ থেকে টাকাটা নিয়ে বাবা উঠে দাঁড়ালেন। বার কয়েক বাড়িতে যাওয়ার কথা বললাম, কিন্তু তিনি যেতে রাজি নন। পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে টানতে টানতে চলে গেলেন ধোঁয়া উঠা ট্রেনের মতো। বুকের বাম পাশটায় খুব ব্যথা অনুভব করতে লাগলাম। বাইক নিয়ে আবার চললাম চৌরাস্তার দিকে।

৪.

বৃষ্টি আবার শুরু হয়েছে। ওষুধ নিয়ে একটি কনফেকশনারির সামনে দাঁড়িয়ে আছি। একটা রিকশা এসে থামলে তারপর একটি মেয়ে দ্রুত এসে ঢুকলো কনফেকশনারিতে। এক মুহ‚র্তের জন্য আমার রক্ত চলাচল যেন বন্ধ হয়ে গেল।

নায়লা এখানে। আমাকে দেখে মার্বেলের মূর্তি হয়ে গেল নায়লা। আমি প্রশ্ন ছুড়ে দেয়ার আগেই বলল, আমার এক বান্ধবীর বার্থডেতে গিয়েছিলাম। তারপর বৃষ্টির কবলে পড়লাম, কাল আবার পরীক্ষা তাই আসতেই হলো। দেখুন তো রিকশা আর সামনে যাবে না, বড্ড বিপদে পড়ে গেছি। অভিমান আর হাসি মিশ্রিত কথাগুলো যেন তীরের মতো গেঁথে যাচ্ছিল আমার মনের দেয়ালে। বুঝতে পারলাম আজ কেন দেখিনি স্টেশন রোডে। হেসে বললাম, আপনার সমস্যা না থাকলে আমার সঙ্গে বাইক আছে, আপনাকে পৌঁছে দিতে পারি। কয়েক সেকেন্ড ভেবে মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলো নায়লা। আরো এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বৃষ্টির থামার কোনো নামগন্ধ পেলাম না। বাধ্য হয়ে বৃষ্টির মধ্যেই রওনা হলাম। যে মানুষটিকে নিয়ে এতদিন কল্পনা করেছি, বাস্তবে সে আমার পাশেই। অন্ধকার আর বৃষ্টি তার বুক চিরে আমার বাইক ছুটে চলছে। অদ্ভুত সুন্দর একটা পারফিউমের ঘ্রাণ পাচ্ছিলাম নায়লার শরীর থেকে। নায়লার বুকের ধুকধুক শব্দটা যেন স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলাম। সাহস করে বলতে চাইছিলাম কথাটা…ভালোবাসি বড্ড বেশি ভালোবাসি তোমায়।

৫.

এই রাস্তাটায় অনেক কাদা জমে আছে তাই চাইলেও জোরে চালাতে পারছি না। ঠিক সেই মুহ‚র্তে নায়লা ফিসফিস করে বলল, আপনাকে একটা কথা বলব?। শিউর বলুন। আপনি রোজ আমাকে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন না আমার বান্ধবীকে?।

কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললাম, তোমাকে। জানতাম। কিভাবে? মেয়েরা ছেলেদের মনের কথা বুঝতে পারে, সৃষ্টির আদি থেকে স্রষ্টা মেয়েদের মাঝে এই ক্ষমতাটা দিয়ে দিয়েছে। তাই। হু। তাহলে নিশ্চয় জানো কেন দাঁড়িয়ে থাকি?। হ্যাঁ জানি, কিন্তু সেটা সম্ভব নয়। আমার বুকের বাম পাশটা ছলাৎ করে উঠল। কেন সম্ভব নয়?। নায়লা চুপ করে রইল। জাস্ট এতটুকু বলল, আপনি আর স্টেশন রোডে দাঁড়িয়ে থাকবেন না। কারণ আপনাকে আমার ভালো লাগে না। আর কিছু বলার শক্তি পেলাম না। বৃষ্টির জলের সঙ্গে কখন যে চোখের জল মিশে গেছে বুঝতে পারিনি। নায়লাও আর কোনো কথা বলল না। ওর যা বলার বলে দিয়েছে। নায়লার বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে ফিরে আসার সময় নায়লা বলল, এক কাপ চা তো খেয়ে যান। ইচ্ছে হচ্ছিল না তবুও গেলাম, নায়লার মা সব শুনে ধন্যবাদ দিলেন। চা খেয়ে আর দেরি করলাম না।

বের হওয়ার সময় দেখলাম বারান্দা দিয়ে নায়লা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বৃষ্টির মধ্যে বাইক নিয়ে ছুটে চললাম। এরপর অনেক দিন স্টেশন রোডে যায়নি। কেন যেন খুব খারাপ লাগছিল। একা একা থাকতে চাইছলাম। জানালা দিয়ে একলা আকাশ দেখতাম। হঠাৎ একদিন একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এলো। রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে মিষ্টি রিনরিনে গলায় বলল, আমি নায়লা। অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম কি বলব বুঝতে পারছিলাম না। আপনি আজ বিকেলে স্টেশন রোডে আসবেন। কেন? বলেছি আসবেন, কি আসবেন না?। আসব। অনেক ধন্যবাদ, ফোনটা রেখে দিল আমাকে আশ্চর্য করে।

৬.

পড়ন্ত বিকেলে একলা দাঁড়িয়ে আছি স্টেশন রোডে দাঁড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণ পর একটা রিরশা এসে থামলে কিছুদূর। নায়লা এসেছে, হালকা লালচে রঙের একটা শাড়ি পরে। কপালে বড় একটা টিপ। আমার কাছে এসে বলল, হাঁ করে দাঁড়িয়ে আছেন কেন চলুন। কোথায়? আজ রেললাইনের পথ ধরে অনেক দূর হেঁটে যাব। মানে?। মানে বুঝতে হবে না। এই বলে নায়লা আমার হাতটা ধরল। তারপর বলল, আমার গোলাপ কোথায়।

আমি হেসে বললাম, সেদিনের পর থেকে আর গোলাপ কিনিনি। বাট আমি কিনেছি, এই বলে নায়লা একটা গোলাপ আমার হাতে দিয়ে বলল, আসলেই তুমি একটা বোকা। আমি না বলেছি বলে আর দাঁড়াবে না, কত কষ্ট হয়েছে তোমাকে না দেখতে পেরে। পড়ন্ত বিকেলে রোদটা আবার এসে পড়েছে নায়লার মুখের ওপর। আর আমার বুকের ভেতর নীরব শিহরণ।

Aj 8-06-2015 Daily somokal-ar pachall-a amar lekha idea
Aj 08-06-2015 Daily bangladesh protidin-ar rokomari rommo-te

ভাব দেখে বুঝে নিন
কোনো একটা কিছু চাওয়ার আগে শিরোনামটা কেমন হতে পারে তা লক্ষণ দেখেই বোঝা যায়,
তেমনি কিছু লক্ষণ তুলে ধরেছেন- সোহানুর রহমান অনন্ত

বউ শপিংয়ে যেতে চাইলে : ইহা পৃথিবীর চির সত্য একখান গবেষণা। আপনি প্রতিদিন অফিস থেকে এসে ঠাণ্ডা পানি এবং চা পান আর না পান যেদিন আপনার বউ শপিংয়ে যাওয়ার চিন্তা করবে ঠিক তার আগের দিন রাতেই আপনি ঘরে প্রবেশ করতেই চা, ঠাণ্ডা পানি পেয়ে যাবেন। শুধু তাই নয়, আপনার চেহারার দিকে তাকিয়ে বলবে, কাজ করতে করতে শরীরের কী হাল করেছ। ওহ! তোমাকে নিয়ে আমার কত্ত টেনশন। যাই হোক আসল কথা বলি, পাশের বাড়ির ভাবী আজ একটা দামি শাড়ি কিনে এনেছে দাম বেশি নয় মাত্র ২০ হাজার টাকা। কাল আমরাও শপিংয়ে যাব তুমি কিন্তু না করতে পারবে না জানু পাখি।

পরিশেষ : এমন হার্ট ব্রেকফেল খাওয়া কাজ করার পর এই কথা বললে 'না' শব্দটাই আপনি ভুলে যাবেন।



প্রেমিকা চাইনিজে যেতে চাইলে : সারা জীবন আপনাকে মিসকল দিলেও সেদিন ঠিকই আপনাকে সরাসরি ফোন করবে ডেটিংয়ে আসার জন্য। তারপর মুখের অঙ্গভঙ্গি একেক রকম করে বলবে। রোজ রোজ বাদাম খেয়ে তো ডায়রিয়া হয়ে যাবে। গতকাল রাতে স্বপ্ন দেখলাম তুমি আমাকে চাইনিজ খাওয়াচ্ছ। জানো তো আমার আবার স্বপ্ন পূরণ না হলে অস্থির অস্থির লাগে। চোখে ঝিরঝির দেখি। বাবু চল চাইনিজে যাই। হো হো হো।

পরিশেষ : ভাই আমার সাধ্য নেই না করার আপনি পারলে না করেন।

বাড়িওয়ালা ভাড়া বাড়াতে চাইলে : আমার বাসায় আলো বাতাস আনলিমিটেড। দেখতাছেন না মহল্লায় পানি সংকট দেখা দিলেও আমার বাড়িতে প্রশান্ত মহাসাগরের মতো পানি টলমল করে সারাক্ষণ। কোনো প্রকার চিল্লা-পাল্লা তো নাই টিকটিকির শব্দও নাই। আমি হইলাম একেবারে শান্তিপ্রিয় একজন বাড়িওয়ালা। তা কথা হইল ভাড়াটা আগামী মাস থেকে আরেক দফা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার মনে হয় এত শান্তিতে থাকার পর আপনার কোনো আপত্তি থাকবে না।

পরিশেষ : এটা শোনার পর অশান্তি কয়দিন বিরাজ করে সেটাই দেখার বিষয়।



বন্ধু টাকা ধার চাইলে : বন্ধু আমি হইলাম তোমার ছোটবেলার ফ্রেন্ড। সবাই তোরে ঠকাইলেও আমি কিন্তু কোনো দিন ঠকাই নাই। তো বন্ধু একটা জিনিস তোরে দিতেই হইব। বেশি না মাত্র পাঁচ হাজার টাকা দিবি।

পরিশেষ : কী কমু ভাই আমি নিজেই এই রোগে আক্রান্ত।

Aj 07-06-2015 Daily ittafaq-ar fun magazine thattay
Therapy<<<>>>03-06-2015

গরমে তাহাদের অবদান

সোহানুর রহমান অনন্ত

গরমে কার বেশি অবদান, এমনটা নিয়ে
যদি কোনো পুরস্কার দেয়া হতো,তাহলে
তারা কী বক্তব্য দিতো, সেটাই জানাচ্ছে সোহানুর রহমান অনন্ত

ফ্রিজ : বন্ধুগণ, আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, আমরা বারো মাসই সেবা প্রদান করে থাকি। যদিও শীতকালে আমাদের ব্যবহার কম হয়। কিন্তু গরমকালে তো আমাদের দম ফেলার টাইম নাই। আমরা আছি বলেই ঠাণ্ডা পানি খেয়ে কলিজা ঠাণ্ডা করেন। স্বস্তি পান, নইলে আপনাদের কী যে হতো।

হাতপাখা : বলদ ফ্রিজ অমন চিক্কুর পাইরা লাভ নাই। তুমি তো আছো আরেকজনের ঘাড়ের ওপর। কারেন্ট না থাকলে তো নিজেই গরমে অজ্ঞান হয়ে পড়ো। আর আমাকে দেখছো। আমি গরম বাতাসকে কনভার্ট করে ঠাণ্ডা করি। আমার জন্য কোনো কারেন্টের প্রয়োজন হয় না। অতএব এই গরমে তোমার চেয়ে আমার অবদান অনেক বেশি।

লেবুর শরবত : বললেই হলো, আমাদের শাখা যদি প্রতিটি রাস্তার পাশে না থাকত, তাহলে কী হতো একবার ভেবে দেখুন। আমাদের দাম অল্প কিন্তু আমরা প্রচণ্ড গরমে কলিজা ঠাণ্ডা করে থাকি। মানুষ আমাদের খাওয়ার জন্য লাইন দেয়। শুধু মানুষ না, মশা মাছিও লাইন মারে। এইবার চিন্তা কইরা দেখেন, আমাদের জনপ্রিয়তা কেমন। অতএব এই গরমে আমাদের অবদানই সবচেয়ে বেশি।

বিদ্যুৎ : তোমাদের কথা শুনলে হাসি, গরমে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলাম আমি। আমি না থাকলে মানুষের মনে শান্তি থাকে না। এই গরমে আমার দেখা পাওয়া মানে, সোনার হরিণ পাওয়ার মতো। তাই গরমে সবচেয়ে বেশি অবদান আমিই রাখি।

কুল পাউডার : কথা শুনে আর কী কইতাম, বিদ্যুৎ মিয়া তুমি তো চোরের মতো পালিয়ে থাকো। তোমার অবস্থান হলো ৫ মিনিটের জন্য এসে পাঁচ ঘণ্টার জন্য হারিয়ে যাওয়া। আমার কথা সবাই জানে, আমি এক দিকে যেমন ঠাণ্ডা রাখি অন্য দিকে গরমের ঘামের গন্ধটাকেও ছড়াতে দেই না। তাই অবদানটা তো আমারই বেশি হইলো।

এসি : চুপ থাক্ চুলকাইন্না পাইডার, তোমরা চুলাচুলি করে যা ইচ্ছে তাই বলো। গরমে আমার চেয়ে বেশি অবদান কেউই রাখে না। অফিস, বাড়ি সব জায়গায় আমার জনপ্রিয়তা, আমি বন্ধ থাকলে তো মানুষের চিল্লাপাল্লা শুরু হইয়া যায়। সুতরাং চিক্কুর পাইরা কোনো লাভ নাই।

পানি : গরমে যে আমার অবদান সবচেয়ে বেশি এটা তো সবাই জানে। বেশি গরম লাগলেই সবাই আমাদের দিয়ে গোসল করে ঠাণ্ডা হয়। আমাকে পান করে শরীরের পানিশূনতা পূরণ করে। যে যত লেকচারই মারুক না কেন, আমার অবদান কইলাম সবার চাইতে বেশি।

আইসক্রিম : সবার বকবক তো শুনলাম, এইবার আমারটা শোন, আমি কি গরমে অবদানটা কম রাখি নাকি। আমি যেমন স্বাদযুক্ত তেমন ঠাণ্ডাও। গরমে ঠাণ্ডার পাশাপাশি মানুষের মনও ভালো করতে পারি। তাইলে আমার অবদানটাই বা কম কিসের।