join facebook page

Tuesday, 12 May 2015

11-04-2015 Daily prothom alo- Chutir Dine (ছুটির দিনে )-a amar lekha mini golpo>><<<<<<<<<<<<<<<<<<<

ইঁদুর ভূত
সোহানুর রহমান

নতুন ফ্ল্যাটে ওঠার পর বুঝতে পারলাম, আমরা ছাড়াও এখানে আরও কিছু বাসিন্দা থাকে। সেই বাসিন্দারা হলো ছোট ছোট ইঁদুর। রাতে আমরা যখন খাওয়াদাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ি, তখন ইঁদুরের দল বের হয় এবং পুরো ফ্ল্যাটে ছোটাছুটি করে। বাবা অনেক ওষুধ দিয়েছেন, কিন্তু চালাক ইঁদুরগুলো সে খাবারে মুখও দেয় না। প্রতিদিনই মায়ের হাতে বাবা বুকনি খান। তাই নতুন বাসা খুঁজে পেতে বাবা পেরেশান। বিপদটা আমার ওপরেও কম যায় না। বাবা মাঝেমধ্যেই রেগে বলে ওঠেন, ‘এই বজ্জাত ইঁদুর বড় সাংঘাতিক। হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালা এলেও নাস্তানাবুদ হয়ে যেত।’ বাবার কথা শুনে মাঝেমধ্যে হাসি পায়। সেদিন বাসায় ফিরে দেখি মামা এসেছেন গ্রামের বাড়ি থেকে। আমাকে দেখে বললেন, ‘ভাগনে দেখি বড় হয়ে গেছ।’ মামার একটা দোষ হলো তিনি অতিরিক্ত পান খান। তিনি কথা বলার সময় পানের পিক ছিটিয়ে সামনের আদমির অবস্থা খারাপ করে দেন। রাতে মামাকে আমার সঙ্গে ঘুমাতে দেওয়া হলো। মামা একা একা বকবক করেই যাচ্ছেন। এদিকে আমার ঘুমের বারোটা বাজছে। সব ঘরের লাইট নিভে যেতেই শুরু হলো ইঁদুরের রাজত্ব, মানে টুসটাস শব্দ। মামা ভয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এমন শব্দ কোথা থেকে আসে?’ বললাম, কী জানি, ভূতে করে হয়তো। ‘ভূত!’ মামার তখনই অজ্ঞান হওয়ার জোগাড়। দোয়া পড়ে মামা শুয়ে পড়লেন। হঠাৎ একটা ইঁদুর তার বেয়ে লাফিয়ে পড়ল মামার ওপর। ভয়ে ভূত ভূত বলে মামা লাফিয়ে খাট থেকে পড়লেন। মামার চিত্কার শুনে আব্বু-আম্মু ছুটে এলেন। ভয়ে তখনো মামা ঘামছেন। বিস্তারিত শুনে মা হেসে খুন। বললেন, ‘এগুলো সব ইঁদুরের কাণ্ড।’ কিন্তু মামা বিশ্বাস করতে চান না। তিনি আমতা আমতা করে বলেন, ‘আমি গ্রামের পোলা, ভূত আর ইঁদুরের পার্থক্য বুঝি না?’ মা বোঝাতে গিয়ে ব্যর্থ হলেন, ভিতু মামা পরদিনই ভূতের ভয়ে গ্রামে ফিরে গেলেন।
ঢাকা।

No comments:

Post a Comment